Wednesday 19 May 2021

দুই শ্রেনীর মানুষ ও আমাদের দেশ...

 দু' রকম মানুষ চোখে পড়ছে। এক শ্রেনী আতংকে আছে তটস্থ কিছু মানুষ। জাতি, ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা করোনা প্রকোপে মরছে। তবু সংখ্যা তত্ত্বের বিচারে সেটা একটু হলেও কমেছে। রোজ ভালো থাকার মন্ত্র খুঁজে চলেছে! কারুর কথায় চিন্তার কিছু নেই, যা ভালো লাগে তাই করতে হবে। কবিতা ভালোলাগে, সেতার বা গিটার বাজাও, দেশবাসীর অধিকারকে বড় মানো, যদিও সেটা করা অবশ্যই বিপজ্জনক, কেউ জানে না কার ঘাড়ে কখন রাজনৈতিক কোপ এসে পড়বে। কারুর জন্য ধর্না অথবা কোথাও হুজ্জুতি এগুলি ততক্ষণ ঠিক যতক্ষণ রাজার স্বপক্ষে কথা, বিপক্ষে হলেই কপালে দুঃখ। প্রগতির কোনো লেখা আজকাল-কার সোশাল মিডিয়াতে প্রকাশ করলে না খেয়ে মরতে হবে। ভয়ংকর বীভৎস জল্লাদদের হাত থেকে দেশকে এবং নিজেদেরকে বাঁচাতে চেষ্টা করছে সুস্থ সচেতন মানুষ। এইটা হচ্ছে এক প্যানিকড সম্প্রদায়।


আরেক শ্রেনী খুব রিল্যাক্সড। মোটেও চিন্তিত নয় মানুষের রোগ, মরক বা খুন নিয়ে। তারা দামি দামি গাড়ি চালাচ্ছে, দামি বাড়িতে থাকছে, দামি খাবার খাচ্ছে, দামি ক্লাবে যেতে পারছে না তো কি ক্লাবের পরিবেশ বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছে। ফরেন ট্রিপেও সুযোগ পেলে চলে যাচ্ছে। নাচছে, গাইছে, হৈ হল্লা করছে, আনন্দ করছে। নিজেদের আরাম আয়েশ, সাজগোজ, পয়সাকড়ি ওড়ানো নিয়ে ভীষণভাবে ব্যস্ত। তারা মনে করে তাদের ঘাবড়ানোর কিছু নেই। কারণ তারাই খাঁটি মনুষ্য জাতি, তারা বিশ্বাস করে নিজের শান্তিই নিজের ধর্ম। কি হবে এ দেশের...

সত্য সেলুকাস, বড় বিচিত্র এই দেশ!

হ্যাঁ, অস্বীকার করার উপায় নেই, এই মৃত্যু উপত্যকাই আমাদের দেশ। এখানে প্রতিদিন লাখো মানুষের ফুসফুস একা একা ছটফট করছে, একটুখানি অক্সিজেন ভিক্ষা চাইছে। বাতাস এখন বিষাক্ত, বাতাসে কিলবিল করছে লক্ষ কোটি ভাইরাস। একটু বিশুদ্ধ অক্সিজেনের জন্য আমাদের ভাঙাচোরা দোমড়ানো মুচরানো ফুসফুস কাতরাচ্ছে। কে দেবে আমাদের অক্সিজেন, তার ঠিক নেই! আমাদের পৃথিবী দখল করে নিয়েছে অদৃশ্য কিছু জীব। চারিদিকে শুধু মৃত্যু, চারিদিকে শুধু চিতার আগুন, চারিদিকে শুধু কবরের নিস্তব্ধতা। তবে এই মৃত্যুরাজ্যের হাল আমরা ছাড়বোনা, শেষ দেখে ছাড়ব। প্রয়োজনে আমরা চোখের জল ঢেলে আগুন নেভাবো, আবার বাসযোগ্য করবো এদেশটাকে, আবার উর্বর করবো এ মাটি, আবার পালন করবো জীবনের ঝলমলে সব উৎসব, করতেই হবে আমাদের!

©Uষস চttopadhyay~
তাং:- ১৯|৫|২১

No comments:

Post a Comment