tag:blogger.com,1999:blog-43701299605290338242024-03-19T18:00:41.446+05:30Ushas'Should 'PEACE' & 'LIFE' be words ONLY ...Ushashttp://www.blogger.com/profile/09838650528375231631noreply@blogger.comBlogger295125tag:blogger.com,1999:blog-4370129960529033824.post-11736750884910856312023-12-09T12:50:00.000+05:302023-12-09T12:50:05.646+05:30মাঝরাতের আতঙ্ক!..<p> </p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhIfQPsnp0RO4Vg7qZqzZ-sqQiT91giSY9DNxwytsgpiwvIhtntsmeBtwKgsPTBgsNcnDqWQdib5a9A2iRE7g7M_MsWYt7Kp6dd3oZpCtitpFyCt9uAO_Z6heuaFDRKHDNWHmya1HqT0TAP6-MteENutP-D4b3WR6UHBZFpkyYYAkJ8a0GoiKrEbteuF5l6/s1286/Screenshot_20231208-181028.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1286" data-original-width="837" height="320" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhIfQPsnp0RO4Vg7qZqzZ-sqQiT91giSY9DNxwytsgpiwvIhtntsmeBtwKgsPTBgsNcnDqWQdib5a9A2iRE7g7M_MsWYt7Kp6dd3oZpCtitpFyCt9uAO_Z6heuaFDRKHDNWHmya1HqT0TAP6-MteENutP-D4b3WR6UHBZFpkyYYAkJ8a0GoiKrEbteuF5l6/s320/Screenshot_20231208-181028.jpg" width="208" /></a></div><br /><p></p><p>কর্মসূত্রে প্রত্যেক ছ'মাস অন্তর বদলি অর্থাৎ জায়গার পরিবর্তন করতে হয়। দেশের নতুন নতুন স্থানে গিয়ে অফিসের অ্যাকোমোডেশন নয়তো ভাড়া বাড়িতেই উঠতে হয়, এবার অনেকের মতে কোনো বাড়ি দীর্ঘদিন ধরে খালি পড়ে থাকলে নাকি সেখানে খারাপ কিছু এসে থাকা আরম্ভ করে। আজকাল এসব বিশ্বাস করার সময় আর হয়ে ওঠে না। আমিও এসব বিশ্বাস করতাম না, যদি না আমার সাথে সেরকম কিছু ঘটত; </p><p>অফিসের কাছাকাছি হওয়ায় সেই পরিত্যক্ত বাড়িটা আমাকে ভাড়া নিতে না হতো। </p><p><br /></p><p>আমার বাড়িটা বেশ পছন্দ হয়েছিল স্বল্প বসতির এলাকায় হওয়ার জন্য; খালি ছোট ছোট ঘর-বাড়ি, পাহাড় আর বিভিন্ন জংলা গাছপালা আর খোলা আকাশের সমাবেশ, আমায় সেই ছোটবেলার মতো টেনে নিয়ে যায় হিমালয়ের কোলে। তবে পাহাড় বলতে অতো উঁচু উঁচু পাহাড় না হলেও ছোট টিলা বা ডুংগার বলা ভালো..</p><p>যাই হোক, ঘরে ওঠার কয়েক দিনের ভেতরেই সব গোছগাছ করে নিলাম। একা থাকি, নির্ঝঞ্ঝাট সব কিছু। সারাদিন অফিসে কাটিয়ে রাতটা খালি কাটাতে বাড়িতে আসা.. সপ্তাহ খানিক স্বাভাবিক ভাবেই কাটলো। এরপর এক রাতে রোজকার মতো অফিস থেকে ফিরে সব কাজ শেষ করে দরজা-জানলা বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম, এবার রাতে জানলায় আচমকা টোকা পড়ার শব্দে আমার ঘুমটা হঠাৎ ভেঙে গেল।</p><p><br /></p><p>পাহাড়ের অঞ্চলে রাত ১০টা মানেই শুনশান, সেখানে ঘড়িতে দেখলাম রাত ১২ টা ২০। ঘরের একমাত্র জানলাটা আমার খাটের সঙ্গে প্রায় লাগোয়া, ঘরের দরজার মুখোমুখি উল্টো পাশে। কে যেন ডাকছে ঘরের পেছন থেকে! যদ্দুর দেখেছি, জানলার ওপাশে মানুষহীন পরিত্যক্ত বাড়িটা ছাড়া আর কোনো ঘর নেই। একরাশ বিরক্তি নিয়ে জানলার দিকে তাকিয়ে রইলাম। টোকার শব্দ বদলে এবার কারো জোরে জোরে ধাক্কা দেওয়ার কারণে জানলাটা ঝনঝন করে কেঁপে উঠল। অতি প্রয়োজনের তাগিদে কেউ যেন জানলা খুলতে আবেদন করছে। আচমকা, অপ্রত্যাশিত এই ঝনঝন শব্দে বুকটা কেঁপে উঠল। ওপাশে যেই থাকুক না কেন, বেশ অধৈর্য পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, ক্রমাগত ঝনঝন করে কেঁপেই চলেছে জানলাটা। জানলা খোলার আগে আমি গলার আওয়াজ কিছুটা চড়িয়ে জিজ্ঞেস করলাম, 'কে ভাই?' সঙ্গে সঙ্গে জানলার কম্পন থেমে গেল। ক'য়েক মুহূর্ত কেটে গেল। কোনো সাড়া-শব্দও নেই। আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, 'হ্যালো.. কে ওখানে, কী চাই?' আমি জানলা খুলবো কি খুলবো না ভাবছি এমন সময় আমার বুক কাঁপিয়ে দিয়ে আবার ঝনঝন করে কাঁপতে লাগলো জানলাটা। খুব জরুরী প্রয়োজন ছাড়া এমন করে এত রাতে কেউ ডাকবে না! আমি বিছানা থেকেই জানলার তিনটে পার্টের মাঝখানেরটা ধিরে ধিরে খুলতে গেলাম, উৎসুক দৃষ্টিতে বাইরের দিকে তাকালাম।</p><p><br /></p><p>কিন্তু..</p><p><br /></p><p>কেউ নেই জানলার সামনে। আশ্চর্য্য! </p><p>এর মানে কী! বালিশের পাশ থেকে টর্চটা তুলে হাত বাইরে বের করে আলো এদিক সেদিক ঘোরালাম, সত্যিই কেউ নেই! জানলাটা বন্ধ করে আবার শুয়ে পড়লাম। বড়ো জোর দশ-পনেরো মিনিট কেটেছে বোধ হয়, চোখ পুরোপুরি লাগেনি। আবার জানলায় টোকার আওয়াজ পড়লো, পরের মুহূর্তেই ঝনঝন করে কাঁপতে লাগলো ওটা। এবার প্রচণ্ড রাগ হলো। জানলা খুলে বাইরে তাকালাম। সেই একই অবস্থা। কেউ নেই। এবার বিরক্তির পাশাপাশি রাগও অনুভব করলাম। এত রাতে কেউ রসিকতা করছে আমার সাথে! টর্চ হাতে নিয়ে দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে এলাম। মৃদু চাঁদের আলো, উঠোনের বাল্বের আলোতে উজ্জ্বল হয়ে আছে চারপাশ। এই দুতলা ঘরের উল্টোমুখে বাড়িওয়ালাদের থাকার ঘর। ওদের ঘরের সব আলো বন্ধ। শুনশান একটা ভাব। আশেপাশের সব বাড়িগুলোর ও একই অবস্থা। সামনে একটা লাঠি পড়ে থাকতে দেখে কী মনে করে তা হাতে নিয়ে ঘরের পেছনের দিকে চলে এলাম। উৎসুক ভাবে এদিক-সেদিক আলো ফেলে খুঁজে দেখলাম, কিন্তু কারও অস্তিত্বই পেলাম না।</p><p><br /></p><p>বিরক্তি নিয়ে ঘরে ফিরতে যাবো, হঠাৎ খেয়াল করলাম পাশের পরিত্যক্ত দু-তলা বাড়িটার বারান্দার লাগোয়া ঘরটায় আলো জ্বলছে। কিছুটা অবাক হলাম। কারণ যতটুকু জানি, এই বাড়িটা দীর্ঘদিন ধরে খালি পড়ে আছে। তাছাড়া এতক্ষণের ভেতরে, বেশ কয়েকবার বাড়িটার দিকে চোখ পড়েছিল আমার; কিন্তু, আলোটা আমার চোখে পড়েনি। আমার ঘরের জানলা দিয়ে তাকালেও পুরো বাড়িটাই প্রায় দেখা যায়। তখন জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে ও আলোটা দেখিনি। বাড়িতে কেউ উঠেছে বোধ হয়! টর্চের আলো গেটের উপর ফেলতেই অবাক হলাম। সেই আগেকার মতোই বড় পিতলের তালাটা লাগানো আছে ছিটকিনি-তে বাইরে থেকে। ওই রুমে তালা না খুলে কেউ ঢুকতে পারবে না। কেমন যেন একটা সন্দেহ হলো।</p><p><br /></p><p>আমি সন্তর্পণে বাড়িটার দিকে এগিয়ে গেলাম। বারান্দার ঘরটার একটা কাঠের জানলা বাইরের দেওয়ালের দিকে। ওটায় ধাক্কা দিয়ে জানতে চাইলাম, 'কে আছে ভেতরে?' কিছুটা ঘাবড়ে গেলাম ভেতরে কারও নড়াচড়ার শব্দ শুনে। খানিক পরেই খটখট আওয়াজ করে ওটা খুলে গেল। একটা মেয়ে, উৎসুক মুখ করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। মেয়েটার চাউনিতে কেমন অভিভূত হয়ে পড়লাম আমি। কম্পিত গলায় বললাম, 'ইয়ে মানে.. এই বাড়িতে কেউ থাকে বলে জানতাম না, আলো জ্বলছে দেখে অবাক হয়ে এখানে এলাম..!'</p><p><br /></p><p>মেয়েটা হাসিমুখে বলল, 'আজই আমরা এলাম! কিছুক্ষণ আগে..'</p><p><br /></p><p>'কিন্তু গেট বাইরে থেকে তালা দেওয়া যে!'</p><p><br /></p><p>'কই?'</p><p><br /></p><p>আমি ঘুরে বাড়ির গেটের দিকে আলো ফেলেই বিস্মিত হলাম। একটু আগেও দেখলাম বাইরে থেকে তালা দেওয়া কিন্তু এখন তালার কোনো চিহ্নই নেই! গেটটা সামান্য ফাঁক হয়েও আছে। মেয়েটার মুখ এখনো হাসি হাসি। বলল, 'এর আগের বার যখন এসেছিলাম আপনাকে তো দেখিনি! নতুন প্রতিবেশী নাকি আপনি?'</p><p><br /></p><p>'ওই ইয়ে.. মানে ওই ঘরটায় সপ্তাহ খানেক হবে উঠেছি। আপনাকে এত রাতে বিরক্ত করার জন্য দুঃখিত!' অপ্রস্তুত ভাবে জবাব দিলাম।</p><p><br /></p><p>'..জানলায় কারো ধাক্কার আওয়াজ পেয়ে বেরিয়েছিলেন বোধ হয়..!'</p><p><br /></p><p>আমি সামান্য মানসিক ধাক্কা খেলাম। 'আপনি জানলেন কী করে?'</p><p><br /></p><p>'আমিও যে ঝনঝন শব্দ শুনে জানলা খুলে বাইরে তাকিয়ে ছিলাম। আপনার জানলার পাশে একটা অদ্ভুত ছায়ার মতো কালো কিছু দেখে ভয় পেয়ে আবার জানলাটা বন্ধ করে দিয়েছি। তারপরে এই আপনি এলেন!'</p><p><br /></p><p>অদ্ভুত এক ভয়ের শিহরণ অনুভব করলাম আমি। মেয়েটা বলল, 'এসেছেন যখন ভালোই করেছেন, একটা উপকার করে দিয়ে যাবেন, প্লিজ? একটু ভেতরে আসুন..'</p><p><br /></p><p>এই বলে জানলাটা বন্ধ করে দিল হুট করে, আবার পরমুহূর্তেই বারান্দার আলো জ্বেলে উঠল। গেটটার অর্ধেক নিশ্ছিদ্র লোহা আর বাকি অংশ গ্রিলের হওয়ায়, বারান্দার আলো গেট ভেদ করে বাইরে আসছিল। আমি হতবুদ্ধির মতো দাঁড়িয়ে রইলাম কিছুক্ষণ। তারপর প্রবেশ করলাম ভেতরে ওনার আমন্ত্রণে, ওনারই সঙ্গে..</p><p><br /></p><p>পরিত্যাক্ত বাড়ি বলতে এটা খুব সাদা-মাটা একটা দু-তলা বাড়ি। দুটো বেডরুম পাশাপাশি। রুম থেকে বের হলেই ডান পাশে বাথরুম ঘর এবং বাম পাশে আরেকটা ছোট হল ঘর। যেই ঘরের জানলা খুলে মেয়েটা আমাকে আসতে আহ্বান করলো।</p><p><br /></p><p>বারান্দার ঘরটিতে উঁকি মেরে দেখলাম মেয়েটি নেই। আশ্চর্য্য! ডান পাশের বেডরুমের ভেতর থেকে ডাক এলো মেয়েটির মিষ্টি আওয়াজে, 'ভেতরে আসুন!' আমি কিছুটা সংকোচ নিয়ে দরজাটা খুলে ভেতরে ঢুকলাম। ঘরের বাল্ব বন্ধ। টর্চের আলোতে ঘরটা ভরে উঠল। আমার থেকে কয়েক হাত দূরেই মেয়েটা দাঁড়িয়ে আছে। মেয়েটা এগিয়ে এসে একটা চেয়ার ইঙ্গিত করে দেখিয়ে আমার হাতে একটা বাল্ব ধরিয়ে দিয়ে বলল, 'এটা একটু লাগিয়ে দিন না! এটার জন্যে খুবই জ্বালাতনে পড়েছি। পুরো বাড়িতে কোনো টর্চ নেই।' একুশ বাইশ বছরের একটা মেয়ে। শাড়ি পড়ে কেমন অপ্সরার মতো লাগছে তাকে। বুকের ধুকপুকানি সামান্য হলেও বেড়ে গেল।</p><p><br /></p><p>আমি চেয়ারে উঠে বাল্বটা লাগানোর চেষ্টা করলাম। বেশ উপরে হোল্ডার হওয়াতে সামান্য বেগ পেতে হলো। কাজটা করতে করতে কৌতূহল বশত জিজ্ঞেস করলাম, 'আপনি কী একা এসেছেন?' এবার আমার পুরো শরীর জমিয়ে দিয়ে একটা পুরুষালি গলা ঘর ভরে গমগম করে উঠল, 'আমরা একা কোথাও যাই না! তোরও একা অপরিচিত ঘরে ঢোকা উচিত হয়নি!' আমার হাত থেকে বাল্ব আর টর্চ দুটোই ফস্কে পড়ে গেল। আতঙ্কে শিউরে উঠে নিচে তাকালাম। টর্চটা বন্ধ হয়ে পুরো ঘর তিমিরে ডুবে গেল। তখনই মেয়েটা যেখানে দাঁড়িয়ে ছিল সেখান থেকেই জ্বলজ্বলে আগুনের শিখার মতো দুটো চোখ জ্বলে উঠল। সেই শিখার আলোতে যে মুখটা দেখলাম এটা কোনো মানুষের মুখ হতে পারে না! ওটার কোনো নাক কিংবা মুখ নেই! গোল মুখটার মাঝামাঝি ফুঁড়ে বেরিয়ে আছে দুটো আগুনের শিখার চোখ। গলার সামান্য নিচে একটা ফাঁক। মনে হলো ওটাই ওর মুখ। চিৎকার করার জন্য আমার সমস্ত শরীর জুড়ে চেষ্টা করে উঠল। </p><p><br /></p><p>চিৎকার করার চেষ্টা করলাম। কিন্তু গলা দিয়ে টুঁ শব্দটি বের হলো না। উল্টে পা ফস্কে চেয়ার থেকে মেঝেতে পড়ে গেলাম উপুড় হয়ে। অল্পের জন্য মাথাটা মেঝেতে ঠুকতে ঠুকতে ঠুকলো না। আমি ঘুরে মেয়েটার দিকে তাকালাম। ওটার চোখ থেকে বিচ্ছুরিত আলোই ওটার অবয়ব মেলে ধরলো আমার চোখের সামনে।</p><p><br /></p><p>ওটার লোমশ সারা শরীর গিজগিজ করছে অদ্ভুত এক প্রকার সাদা পোকায়। অনেকটা কেঁচোর মতো দেখতে ওগুলো। ওগুলো এগিয়ে আসছে আমার দিকে। ভয়ে আমার শরীর থরথর করে কাঁপছে, ওঠার চেষ্টা করতে গিয়ে বুঝলাম দুটো পা-ই বেশ ভালো রকম মচকে গেছে। পালানোর কোনো উপায় নেই.. কিন্তু কী এটা! ভ্রম..!</p><p><br /></p><p>এবার নিজের সব শক্তি খরচ করে একটা চিৎকার করলাম। নিজের মুখ থেকে বের হওয়া বিকট চিৎকার পুরো ঘরময় এমন ভাবে অনুরণন খেয়ে কেঁপে উঠল যে নিজেই চমকে উঠলাম। মেয়েটার হাত থেকে বাল্বটা নেওয়ার আগে হাতে করে আনা লাঠিটা মেঝেতে ফেলে ছিলাম। অন্ধকার হাঁতড়ে ওটার নাগাল পেলাম। অদ্ভুত প্রাণীটার শরীর ঝুঁকতে লাগলো আমার দিকে। লোমশ শরীরের আড়াল থেকে ওর দুটো হাত উন্মুক্ত হয়ে গেল আমার সামনে। লাঠিটা সজোরে এগিয়ে এনে আঘাত করলাম ওটার বুক বরাবর। ওটা অশরীরী নয়! সামান্য আর্তনাদ তুলে পিছিয়ে যেতে লাগলো ওটা পেছনে। আমি আবার চিৎকার করলাম। শরীরে সামান্য যে শক্তি ছিল তার সাথে কিছুটা সাহস সঞ্চয় করে হাতের উপর ভর দিয়ে মেঝে টেনে টেনে শরীরটাকে বারান্দায় এনে হাজির করলাম। বারান্দার বাল্বটাও বন্ধ হয়ে আছে। কয়েকজন মানুষের ছুটে আসার আওয়াজ পেলাম। আমার চিৎকার কাজে লেগেছে। আমার বাড়িওয়ালা সহ আশেপাশের অনেকেই গেটের সামনে এসে থমকে দাঁড়ালো। একসাথে কয়েকটা টর্চের আলো আমার চোখ ধাঁধিয়ে দিল।</p><p><br /></p><p>কিন্তু... </p><p><br /></p><p>তারা কেউ ভেতরে আসতে পারলো না। কারণ গেটটা বাইরে থেকে তালা দেওয়া। তারা বিস্মিত হয়ে বাইরে থেকে চেঁচাতে লাগলো, জানতে চাইলো কী করে আমি ভেতরে ঢুকলাম তালা না খুলে! আমাকে এমন কাহিল অবস্থায় দেখে তারাও ঘাবড়ে গেছে। অবশ্য, তারা বেশিক্ষণ লাগালো না তালাটি ভেঙে আমাকে উদ্বার করতে। কোনো জবাব দেওয়ার মতো অবস্থায় আমি ছিলাম না। চোখ দুটো বন্ধ করলাম। এক মৃত্যু আতঙ্ক আমার শরীরটাকে পুরোপুরি অবশ করে ফেলেছিল। </p><p><br /></p><p>পা দুটো সম্পূর্ণ ভালো হতে প্রায় মাস পেরিয়ে গেল। আমি অবশ্য ঘটনার পরের দিনই সেই ঘর, সেই এলাকা ছেড়ে ভয়েই এক প্রকার পালিয়ে এসেছিলাম। সেই বীভৎস, ভয়ঙ্কর চেহারা আর শরীরটা বা রাতের কথা যখনই মনে উদয় হতো, আমার গোটা শরীরটা কেঁপে উঠত। কত রাতে দুঃস্বপ্নে এসে যে আমার ঘুম ভাঙিয়ে দিয়েছিল ওই প্রাণীটা... কী বলব! এরপর থেকে আজ পর্যন্ত অন্ধকারের ভীতি দূর করতে পারিনি আমি, এখনো আলো জ্বেলে ঘুমাতে হয় আমাকে। </p><p><br /></p><p>যেই লোকগুলো সেইরাতে আমাকে উদ্ধার করেছিল তাদেরকে আমার কাহিনী বললে অনেকেই বিশ্বাস করতে পারেনি তখন, আবার আমিও যে কিভাবে বাড়িতে ঢুকেছিলাম সেই কিনারাও করতে পারেনি। অনেক বছর পর যখন সেই এলাকায় আবার ফিরে গিয়েছিলাম তখন জানতে পারি আমি চলে যাওয়ার পর থেকে ওই বাড়িটার উত্তরাধিকারীরা ওখানে ফিরে এসে পরিত্যক্ত বাড়িটা ভেঙে বহুতল বিল্ডিং করার আগে পর্যন্ত সেই বাড়ির আশেপাশের অনেক ঘরের লোকেরাই মাঝরাতে জানলায় টোকা বা ধাক্কানোর আওয়াজ পেয়েছিল। কেউ কেউ মাঝরাতে সেই পরিত্যক্ত বাড়ির ঘরে আলো জ্বালা অবস্থাতেও দেখেছে। কয়েকজন তো একটি রূপসী মেয়ের অবয়বও দেখেছিল খোলা জানালা দিয়ে। আমার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার কথা জেনে অনেকেই আগের থেকে সতর্ক থাকায় বিপদে পড়েনি যদিও.. </p><p><br /></p><p>অবশ্য, আমি যা দেখেছিলাম সেরাতে, সেই দৃশ্যটা অন্য কেউই দেখেনি। আমি চাইও না ওটা আর কেউ দেখুক। চাই না, যেন কারও ঘরের জানলায় মাঝরাতে পড়ুক অন্য জগতের, অচেনা কারও টোকা..! </p><p><br /></p><p><b>(সমাপ্ত) </b></p><p><b><br /></b></p><p><b>#মাঝরাতের_আতঙ্ক </b></p><p><b><br /></b></p><p><b>লেখা: #উষস_চট্টোপাধ্যায়</b></p>Ushashttp://www.blogger.com/profile/09838650528375231631noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-4370129960529033824.post-65834558578280545792023-12-02T15:59:00.000+05:302023-12-02T15:59:00.944+05:30সুইসাইডাল বক্স (শেষ পর্ব)..<p> </p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEg_NKsAqRD6NNB1UwF_TlrKV0VWxQGxMxQXm62wgLQz93vn_5EQM_LiFchyLJRFfAyFRFcm_nq6Pt_OBcgKxgooCaWi2tfgS5NXRgyvOmbBUE-bz_LK4vtKUrl41kLl6-vPBOMcmr7nb9vuMwlPNCdOwseeHplYNGwdj7jWo33twsHl8KR92k3y2PSfh-Kc/s1858/Picsart_23-12-02_15-48-56-479.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1858" data-original-width="1080" height="320" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEg_NKsAqRD6NNB1UwF_TlrKV0VWxQGxMxQXm62wgLQz93vn_5EQM_LiFchyLJRFfAyFRFcm_nq6Pt_OBcgKxgooCaWi2tfgS5NXRgyvOmbBUE-bz_LK4vtKUrl41kLl6-vPBOMcmr7nb9vuMwlPNCdOwseeHplYNGwdj7jWo33twsHl8KR92k3y2PSfh-Kc/s320/Picsart_23-12-02_15-48-56-479.jpg" width="186" /></a></div><br /><p></p><p><b>সুইসাইডাল বক্স</b></p><p><b>উষস চট্টোপাধ্যায় </b></p><p><b>পর্ব : ১০ / অন্তিম পর্ব</b></p><p><b>_____________________</b></p><p><br /></p><p>সবকিছু রিমার চোখের সামনে ভাসছে৷ রিমার মাথাটা ভীষণ ঘোরাচ্ছে৷ ভীষণ ক্লান্তি লাগছে, মনে হচ্ছে এই ঘাসের মধ্যেই শুয়ে পড়লে আরাম পেতো সে ....</p><p><br /></p><p>তারপরও সে সেখান থেকে উঠে দাঁড়ায়৷ ভালো লাগছে না এই খোলা হাওয়াও তার! মনের মধ্যে অশান্তি থাকলে কি আর খোলা হাওয়ায় মন জুড়ায়? </p><p><br /></p><p>কলেজ স্কোয়ারে-র কাছে সিগন্যালে গাড়িটা থেমে আছে৷ কিন্তু... এ..এ কীভাবে সম্ভব..?</p><p>গাড়ির জানালা দিয়ে রিমা স্পষ্ট দেখছে সমাপ্তি বই দামাদামি করছে৷ ফুটপাতের বইয়ের দোকানে দাঁড়ানো লাল শার্ট আর কালো প্যান্ট পরা ছেলেটা পুরো সমাপ্তি-ই তো! এই মুখ চিনতে রিমার ভুল হবার কথা নয়৷ তারপরও নিজের চোখ আবার কচলে নেয় রিমা৷ ভুল দেখছে না তো সে! না না...! এই তো সমাপ্তি ... সমাপ্তি কি তাহলে বেঁচে আছে, লোকের চোখে ফাঁকি দিতে ছেলের রূপ ধারণ করেছে কি!?</p><p><br /></p><p>রিমা দ্রুত গাড়ির দরজা খুলে ছেলেটির কাছে গিয়ে দাঁড়ায় ... </p><p><br /></p><p>তারপর গলায় একগাদা বিস্ময় নিয়ে বলে "সমাপ্তি না..."</p><p><br /></p><p>ছেলেটি রিমার দিকে ঘুরে তাকাতেই জ্ঞান হারিয়ে ধপাস করে সেখানে পরে যায় রিমা ...</p><p><br /></p><p>**********</p><p><br /></p><p>হঠাৎ করে এমন সব ঘটণা আমার সাথেই কেন হয় কে জানে! মেয়েটার এখনো জ্ঞান ফেরেনি৷ খুব বড়লোকের মেয়ে বোঝা যাচ্ছে৷ মেয়েটির বাবা এসেছে, তারপর থেকে এখানে ডাক্তার-নার্সদের ছোটাছুটি বেশ ভালোভাবেই বোঝা যাচ্ছে৷ </p><p><br /></p><p>আমি এখন এখানে বসে থাকবো না কি চলে যাবো সেটাও বুঝতে পারছি না; আমার আসলে কি করা উচিত? মেয়েটা বোধহয় তিতলী-র পরিচিত৷ আমাদের একই রকম চেহারা হওয়ায় ও আমাকেই তিতলী ভেবেছে৷ মৃত একজন মানুষকে চোখের সামনে জলজ্যান্ত দেখে বোধহয় মেয়েটা নিজেকে সামলাতে পারেনি৷ আমি ওকে এটুকুও বলার সুযোগ পেলাম না যে আমি সমাপ্তি নই বা ওর কোন রূপ ও ধারণ করিনি! আমি ওর-ই জমজ ভাই অমিত, সমাপ্তি নই..</p><p><br /></p><p>আমার ভীষণ মন খারাপ লাগছে৷ তিতলী আর আমার কলেজ পর্যন্ত একসাথেই পড়াশোনা ছিলো৷ তারপর তিতলী চান্স পেয়ে গেলো যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে, আর আমি ভর্তি হলাম অ্যামিটি কলেজে৷ কলেজ পর্যন্ত আমাদের বন্ধুবান্ধব সেম থাকলেও হায়ার স্টাডিতে গিয়ে ওর অনেক নতুন নতুন বন্ধু হয়েছিলো৷ ও যে রকম প্রানবন্ত মেয়ে ছিলো, সবার সাথে বন্ধুত্ব করতে পারতো এক নিমেষেই, এতই মিশুকে ছিলো!</p><p><br /></p><p>এই মেয়েটাও বোধহয় তিতলীর ফ্রেন্ড ই হবে৷ আমার বোধহয় ওর জ্ঞান ফেরা পর্যন্ত অপেক্ষা করাই উচিৎ!</p><p><br /></p><p>***********</p><p><br /></p><p>রিমার জ্ঞান ফিরলো দীর্ঘক্ষণ পর৷ রিমার বাবা ওর মাথার কাছেই বসে ছিলো৷ ভদ্রলোক কান্নাকাটি করেছেন চোখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে৷ চোখ মুখ কেমন ফুলে আছে! রিমা ধীরে ধীরে বললো "স..মা..প্তি.."</p><p><br /></p><p>রিমার বাবা ডেকে পাঠালেন সেই ছেলেটিকে, যে ছেলেটা ড্রাইভারের সাহায্য নিয়ে রিমাকে হাসপাতাল পর্যন্ত এনেছে! </p><p><br /></p><p>রিমা আর ছেলেটি এখন মুখোমুখি ...</p><p><br /></p><p>—কিন্তু.. এ কী করে সম্ভব, এ তো সমাপ্তির মুখ, পুরো সমাপ্তি!</p><p><br /></p><p>—আপনি ভুল করছেন৷ আমি অমিত ওরফে রণি, ওর জমজ ভাই৷ সমাপ্তি আমদের ছেড়ে চলে গেছে দু'বছর আগে ..</p><p><br /></p><p>এটুকু শুনতেই ডুকরে কেঁদে ওঠে রিমা৷ তারপর প্রথমবারের মতো নিজ মুখে তার বাবা আর রণির সামনে স্বীকার করে সবটা ...</p><p><br /></p><p>রণি যা স্বপ্নেও ভাবেনি, তাই হলো আজ! </p><p><br /></p><p>তার সামনে হাসপাতালের সাদা চাদরে ঢাকা দিয়ে শোয়ানো মেয়েটি আসলে তার বোন তিতলী-র খুনী! </p><p><br /></p><p>দুই হাত জোর করে ক্ষমাপ্রার্থনা করছে খুনী মেয়েটি! </p><p><br /></p><p>রিমার দিকে তাকিয়ে রণি বলে "তোমার কি মনে হয় না পুলিশের কাছে ব্যাপারটা বলা উচিত? নিজের ভাগের শাস্তিটা ভোগ না করলে শান্তি তে বাঁচতে পারবে তো..?" </p><p><br /></p><p>**********</p><p><br /></p><p>রিমার বাবা কাঁদছে.. </p><p><br /></p><p>সময়ের ব্যবধানে পুলিশ হাসপাতালে এসে স্টেটমেন্ট নিচ্ছে রিমার, সে আকুল হয়ে কাঁদছে..</p><p><br /></p><p>আরেকজন আজ উদাসীন হয়ে কাঁদছে, সে রণি, ওরফে আঁধার ...আজ সে জানে তার তিতলী কেন তাদের ছেড়ে চলে গেছে ..!</p><p><br /></p><p><b> (সমাপ্ত)</b></p><p><b><br /></b></p><p><b> #ধারাবাহিক_গল্প #সুইসাইডাল_বক্স #শেষ_পর্ব</b></p>Ushashttp://www.blogger.com/profile/09838650528375231631noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-4370129960529033824.post-31149272497034860062023-11-11T00:45:00.006+05:302023-11-28T11:26:52.931+05:30সুইসাইডাল বক্স (পর্ব: ৯)<p> </p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhUUrwqSXHE2myBhG6V4zFdxPS55HPyVSLnIIGjKSKJfcR3dDGXG9k3eOgGK5eIPIRCtLjCciXjTJtc-gqvfqbnLQIVY2m3OcUFhAW5Dv9eD2quVULdur6RKIZFVXzagSPbaByjXd8M_hdKfiVx7jVGV98VCAIl9xfzJ91j_gixW5B5KzFYPINbA0od1XdF/s779/Screenshot_20231111-004028.jpg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="703" data-original-width="779" height="289" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhUUrwqSXHE2myBhG6V4zFdxPS55HPyVSLnIIGjKSKJfcR3dDGXG9k3eOgGK5eIPIRCtLjCciXjTJtc-gqvfqbnLQIVY2m3OcUFhAW5Dv9eD2quVULdur6RKIZFVXzagSPbaByjXd8M_hdKfiVx7jVGV98VCAIl9xfzJ91j_gixW5B5KzFYPINbA0od1XdF/s320/Screenshot_20231111-004028.jpg" width="320" /></a></div><br /><p></p><p><b>সুইসাইডাল বক্স</b></p><p><b>উষস চট্টোপাধ্যায় </b></p><p><b>পর্ব : ৯</b></p><p>_____________________</p><p><br /></p><p><br /></p><p>"..সন্তানেরা মাঝে মধ্যে ভীষণ স্বার্থপর হয়, আপনার সন্তানেরা ও স্বার্থপরতা-র পরিচয় দিচ্ছে! যাদের জন্য আপনি জীবন দিয়ে দিচ্ছেন, তারা আপনাকে বোঝেও না৷ সে যাই হোক, আমি আপনার জায়গায় হলে প্রথমেই ওদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা বন্ধ করে দিতাম৷ আমার ধারনা, আপনি প্রতিদিন একাধিকবার চেষ্টা করেন তাদের সাথে কথা বলার৷ আমি বলবো, আপনি ওদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা বন্ধ করে দিন৷</p><p><br /></p><p>নিজের মতো করে বাঁচতে শিখুন, অনেক করেছেন অন্যদের জন্য; এবার নিজের জন্য কিছু করার সময়৷ সারাজীবন তো স্বামী-বাবা-সন্তানের হয়েই বাঁচলেন, জীবনের বাকী দিনগুলো না হয় স্বার্থপর মানুষ হয়ে বাঁচুন ... আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইলো "</p><p><br /></p><p>ম্যাসেজ সেন্ড করে আমি সজল অধিকারী-র আইডি ঘেঁটে ঘেঁটে তার দুই ছেলেমেয়ের আইডি বের করে ফেললাম৷ তারপর তাদের ম্যাসেজে লিখে দিলাম; </p><p><br /></p><p>"আপনার বাবা, একজন বাবা হবার আগেও একজন মানুষ৷ আপনাদের মতো সব চাহিদাই তারও আছে৷ সঙ্গীর প্রয়োজনীয়তাও আছে৷ মানসিক, শারীরিক দু'রকম চাহিদাই তার আছে৷ না কি বাবা বলে তার কোন চাহিদা থাকাটা অন্যায়? এভাবে দিনের পর দিন একজন বৃদ্ধ মানুষকে কষ্ট দিচ্ছেন, জানেন তো karma never loses an address! আজ যা আপনার বাবার সাথে করছেন ঠিক তাই আপনি ফেরত পাবেন না কে বলতে পারে? </p><p><br /></p><p>প্লিজ, আপনার বাবাকে বাবা না ভেবে একজন মানুষ হিসেবে ভাবুন আগে৷ মানুষটা কষ্ট পাচ্ছে, আপনি কি জানেন উনি ইদানীং আত্মহত্যার কথা ভাবছেন?"</p><p><br /></p><p>সেম ম্যাসেজ কপি করে ওনার দুই সন্তানকেই পাঠালাম৷ হয়তো আমার ম্যাসেজ খুলেও দেখবে না, স্প্যাম ম্যাসেজে পরে থাকবে৷ তারপরেও করলাম৷ </p><p><br /></p><p>সন্ধ্যায় অবাক হয়ে দেখলাম ম্যাসেজ এসেছে সজল বাবুর মেয়ের আইডি থেকে৷ আমাকে লিখেছেন </p><p><br /></p><p>"আঁধার, আপনার গ্রুপ সম্পর্কে আমি জানি৷</p><p><br /></p><p>আপনি যেভাবে বলছেন আমি আসলে ঠিক সেভাবে ভাবিনি, শুধু নিজের দিকটাই ভেবেছি৷ ভেবেছি, স্বামীর কাছে, শ্বশুড়বাড়ির কাছে ছোট হয়ে যাবো না তো? সবাই মন্দ বলবে ... আমি অধম সন্তান তাই বাবার কষ্টটা বুঝিনি৷ আমি অবশ্যই বাবার সাথে কথা বলবো৷ দাদাকেও বোঝাতে চেষ্টা করবো৷ </p><p><br /></p><p>আপনার গ্রুপটার জন্য খুব খারাপ লেগেছে৷ কেউ কিছু ভালো করতে চাইলে সবাই যেন তার পেছনেই লাগে৷ তবে আমার বিশ্বাস এমন একটা দুটো গ্রুপের চলে যাওয়া আপনার সদিচ্ছাকে শেষ করে দেবে না, আপনার জন্য শুভকামনা ..."</p><p><br /></p><p>আমি কিছু বললাম না, শুধু একটা স্মাইলি পাঠিয়ে দিলাম রিপ্লাই তে৷ উনি নিজেই যখন বুঝতে পেরেছেন আমার আর কথা বলার দরকার কি!</p><p><br /></p><p>পরদিন সকালে সজল বাবুর ম্যাসেজ পেলাম আবার৷ তিনি লিখেছেন- </p><p><br /></p><p>"আপনি বোধহয় এনজেল হয়ে এসেছেন আমার জীবনে.. আমার মেয়েটা একটু আগে আমাকে কল করেছিলো৷ খুব কাঁদলো, সরি বললো .. বললো ওর দাদাও আমার সাথে আবার যেন আগের মতো সহজ হয়ে যায় সেই ব্যবস্থা করবে৷ আপনি কি করেছেন জানি না, কিন্তু আমার মন বলছে এর পেছনে কলকাঠি আপনিই নেড়েছেন! নয়তো এত দিনেও যা পারিনি একদিনে তা কিভাবে হলো৷ আপনার জন্য অনেক অনেক ভালোবাসা থাকলো৷ এখন থেকে আমার প্রত্যেক প্রার্থনাতে আপনি থাকবেন ..."</p><p><br /></p><p>আমি এবার ও কিছু বললাম না৷ শুধু একটা স্মাইলি দিলাম৷ এবার আসলে আমার বলার কিছু ছিলোও না ..শুধু গলার কাছটায় কেমন যেন একটা দলা পাকানো অনুভূতি হলো৷ </p><p><br /></p><p>*********</p><p><br /></p><p>রিমা আজ বেরিয়েছে অনেক দিন পর৷ দীর্ঘদিন ঘরে থাকতে থাকতে রিমার নিঃশ্বাস কেমন বন্ধ হয়ে আসছিলো৷ আজ তাই গাড়িটা নিয়ে বের হয়েছে৷ ড্রাইভারকে নেওয়ার ইচ্ছে ছিলো না, কিন্তু তার একা বের হওয়ার উপর কঠিন নিষেধাজ্ঞা আছে তার বাবার.. </p><p><br /></p><p>কোথায় যাবে রিমা জানে না৷ ইউনিভার্সিটির দিকে যাওয়া যায়৷ সেকেন্ড ইয়ারের পর আর পড়াশোনা করেনি রিমা, আর কলেজেতে যায়নি৷ ওর কাছে ওই জায়গাটাই বিষাক্ত লাগতো ...</p><p><br /></p><p>হঠাৎ করে পড়াশোনা ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তে রিমার বাবা খুব রাগ করেছিলো৷ কিন্তু রিমা নিজের সিদ্ধান্তে অটল ছিলো৷ ও আর পড়বে না ...</p><p><br /></p><p>ইউনিভার্সিটিতে গিয়ে একটু খোলা জায়গা দেখে রিমা সেখানে ঘাসের উপর বসে পড়লো৷ ও যেখানে বসেছে সেখান থেকে সেই জায়গাটা দেখা যাচ্ছে যেখানে শৌভনিক আর সমাপ্তি বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতো৷ রিমা যেন সব দেখতে পারছে ... চোখের সামনে সবটাই কেমন যেন দৃশ্যমান! </p><p><br /></p><p>সেদিন যখন শৌভনিকের বুকের মধ্যে বরফের মতো মিশে যেতে দেখেছিলো সে সমাপ্তিকে, সেদিন ওর মাথায় যেন বিদ্যুৎ খেলে গিয়েছিলো; ন্যায়-অন্যায়, ভালো-মন্দ এ সবকিছুর উর্দ্ধে চলে গিয়েছিলো সে৷ মনের মধ্যে হিংসার দগদগে ঘা ... ভয়ঙ্কর সেই ঘায়ের যন্ত্রনা ... </p><p><br /></p><p>সেদিন বাড়ি ফিরে রিমা একটা সিদ্ধান্ত নেয়৷ যা হওয়ার হবে, এদের দুজনকে আলাদা সে করবেই ... সমাপ্তি-র একটা ছবি জোগাড় করে সে৷ তারপর সেই ছবিটাকে ফটোশপের নিপুন দক্ষতার সাথে জুড়ে দেয় আরেকটা ছেলের ছবি৷ তারপর একগাদা নোংরা কথা লেখে সমাপ্তির সম্পর্কে; প্রমান করতে সমাপ্তি চরিত্রহীন! সেই চিঠি সে টাইপ করে যাতে হাতের লেখা বোঝা না যায়৷ তারপর দু-কপি করে এক কপি পাঠায় শৌভনিকের কাছে আরেক কপি ওর বাড়িতে তার বাবার কাছে!</p><p><br /></p><p>শৌভনিক হয় তো ব্যাপারটাকে ইগনোর করতো, কিন্তু পরিবারের চাপে সে সমাপ্তির সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে৷ হাসিখুশি প্রাণোচ্ছ্বল সমাপ্তি এরপর থেকে একদম চুপচাপ হয়ে যায়! রিমা সেই নিষ্প্রাণ সমাপ্তি কে দেখে মনে মনে পুলকিত হয়ে যায়!</p><p><br /></p><p>রিমার মনের ক্ষতটা যেন ওদের আলাদা করেও শুকায়নি৷ এবার সে সমাপ্তির আরো একটা ছবি এডিট করে, নোংরা একটা ছবিতে রূপান্তরিত করে সেই সাধাসিধে সাধারণ ছবিকে৷ তারপর ক্লাসের প্রত্যেকটা ছেলেমেয়ের কাছে সেটা পৌঁছাবার ব্যবস্থা করে খুব যত্ন করে, যেন কেউ না বোঝে কাজটা কে করছে! </p><p><br /></p><p>রিমা ভেবেছিলো মেয়েটা এতে অপমানিত হবে! সবার কাছে ঘৃণার পাত্রী হবে, হলোও তাই ..</p><p><br /></p><p>কিন্তু এরপর কি হতে পারে একুশ বছরের রিমার মাথায় সে পর্যন্ত চিন্তা যায়নি৷ প্রচন্ড রকম অপমানিত হওয়ার পর সেই ধিক্কার, সেই ঘৃণা সহ্য করতে পারেনি সমাপ্তি ... ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে নিজের জীবনটা শেষ করে দিয়েছে সে... </p><p><br /></p><p>এত কিছুর পর শৌভনিকও তার হয়নি৷ শৌভনিক কে তার বাবা মা বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে সমাপ্তির মৃত্যুর পর৷ রিমা না পেয়েছে শৌভনিক কে, না পেয়েছে সুখ! শুধু হিংসার আগুনে জ্বলে-পুড়ে একটা তরতাজা প্রানের খুনী হয়েছে সে ...</p><p><br /></p><p>চলবে..</p><p><br /></p><p><b>#ধারাবাহিক_গল্প #সুইসাইডাল_বক্স #পর্ব_৯</b></p>Ushashttp://www.blogger.com/profile/09838650528375231631noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-4370129960529033824.post-75713408487347141422023-11-04T18:20:00.000+05:302023-11-04T18:20:57.431+05:30সুইসাইডাল বক্স (পর্ব: ৮)<p></p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEg5KR_12aOZUwuE7xaY6U2RAuy4GpEXFS0bNxdgshGAvm1H3G_7SHxpj_qulzN8YuvUul1wrWVpVcK_d-uzyEk56KGCyCPegH1kY4oQ_FTrMRaL8H6LbpBzMXrFHDR4e08YKElF9EFXffNcmqn0Zdjkwqco2-aAvMHWuCEAwHs-0uCuHiVEJM8zSDNeKUFw/s864/Screenshot_20231104-133137.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="783" data-original-width="864" height="290" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEg5KR_12aOZUwuE7xaY6U2RAuy4GpEXFS0bNxdgshGAvm1H3G_7SHxpj_qulzN8YuvUul1wrWVpVcK_d-uzyEk56KGCyCPegH1kY4oQ_FTrMRaL8H6LbpBzMXrFHDR4e08YKElF9EFXffNcmqn0Zdjkwqco2-aAvMHWuCEAwHs-0uCuHiVEJM8zSDNeKUFw/s320/Screenshot_20231104-133137.jpg" width="320" /></a></div><br /> <p></p><p><b>সুইসাইডাল বক্স</b></p><p><b>উষস চট্টোপাধ্যায় </b></p><p><b>পর্ব : ৮</b></p><p>_____________________</p><p><br /></p><p><br /></p><p>..গ্রুপটা বন্ধ করলেও ইনবক্সে ম্যাসেজ আসা বন্ধ হলো না৷ ফেসবুকে এখন আমার গ্রুপটা নিয়েই তোলপাড় চলছে৷ অনেকেই সাপোর্ট করে পোস্ট দিচ্ছে, তারা গ্রুপটি আবার ফিরে পেতে চায়৷ নেগেটিভ পোস্টেরও অভাব নেই৷ তারা বলছেন সবটাই ব্যবসা .. আমি মিতালী দি-কে বললাম সবটা৷ দিদি বলেছিলেন দেখো, গ্রুপ থামলেও আঁধারের পথচলা থামবে না৷ হলোও তাই৷ আসলেই অভিজ্ঞতা একটা বড় জিনিস৷ মিতালী গোস্বামী জীবন যুদ্ধে অভিজ্ঞ৷ আসলে একটু দেরি হলেও, আমি নক পেলাম আবার ..</p><p><br /></p><p>নক দিয়েছেন একজন মাঝ বয়সী ভদ্রলোক৷ নাম সজল অধিকারী৷ উনি লিখেছেন—</p><p><br /></p><p>"আপনার কথা এক বন্ধুর থেকে শুনেছি, এও শুনেছি সুইসাইড বক্স আপনি কখনোই বিক্রি করেননি৷ বরং আপনি সবার ভালো চেয়েছেন, আত্মহত্যার থেকে ফেরাতে চেয়েছেন এবং কয়েকবার সফলও হয়েছেন৷ আপনার উদ্দেশ্য মহৎ হলেও আসলে আপনার উপস্থাপনটা খানিকটা দৃষ্টিকটু ছিলো.. অন্তত যারা প্রথমবার দেখবে তাদের জন্য৷ কিছু মনে করবেন না, আমি শুধু আমার মনের কথাটাই বললাম৷ </p><p><br /></p><p>আমি সজল অধিকারী, সরকারী চাকুরিজীবী৷ বয়স ৫৮ বছর৷ হয়তো ভাবছেন এত বয়সী একজন মানুষ আপনাকে কেন ম্যাসেজ করলো! তার আগে বলে নিই, আমি ফেসবুক ব্যাপারটা এত ভালো বুঝি না, ছেলে-মেয়েরাই শিখিয়েছে৷ তবে, বেশ কিছু বছর যাবৎ, আমার ছেলে-মেয়েরা দেশের বাইরে থাকে৷ এখন ওদের ছবি দেখাই আমার প্রধান উদ্দেশ্য৷ ইদানীং আপনার গ্রুপ নিয়ে এত বেশি সবাই লিখছে যে আমিও দেখলাম৷ সেখান থেকেই আপনাকে জানা আসলে৷ যাই হোক, যে সুইসাইড বক্সের অস্তিত্বই নেই আমি সেটা কিনতে চাই না৷ তবে, এটাও ঠিক আজকাল আর বাঁচবার ইচ্ছে হয় না৷ </p><p><br /></p><p>আমার স্ত্রী গত হয়েছে পনেরো বছর আগে৷ দুই ছেলেমেয়ে আমার, ও কারোই প্রতিষ্ঠা বা বিয়ে দেখে যেতে পারেনি৷ ছেলেটা বিদেশে পড়তে গিয়ে সেখানেই স্থায়ী হয়ে গেলো৷ মেয়েটার বিয়ে দিয়েছিলাম দেশেই৷ চেয়েছিলাম একটা সন্তান অন্তত কাছে থাক, সেও চলে গেলো ... </p><p><br /></p><p>এখন আমার দিন কাটে এই স্মার্টফোন নিয়েই৷ যতক্ষন অফিসে থাকি, ভালো থাকি৷ বাড়িতে ফিরলেই শূন্যতা আমাকে গ্রাস করে৷ এই নিস্তব্ধতা সহ্য করা আমার জন্য কঠিন হয়ে যাচ্ছিলো৷ আমার এখন কথা বলার একজন সঙ্গী প্রয়োজন৷ অনেক ভেবে চিন্তে তাই দ্বিতীয় বিয়ের কথা ভাবি৷ </p><p><br /></p><p>একটা বয়সে ছেলে-মেয়েরা বাবা মায়ের গার্জেন হয়ে যায়, আমার ছেলে মেয়েরাও তাই হয়েছে। আমি প্রথমেই কথাটা বললাম আমার মেয়েকে৷ ভাবলাম, ওই আমার সবচেয়ে বেশি আদরের, ও নিশ্চয় বুঝবে৷ কিন্তু ফলাফল হলো ভিন্ন৷ ও কেঁদে-কেঁটে একাকার অবস্থা করে ফেললো৷ জামাই আমাকে বললো "বাবা আপনার বয়স হয়েছে, এখন ধর্ম কর্মে মন দিন৷" সকাল-সন্ধ্যা দুবেলা আহ্নিক করি আমি, পৈতা হওয়ার পর সেই অভ্যাস বাদ দিইনি কখনো৷ আমি যুবক বয়সেও যেমন ধর্ম কর্ম করেছি এখনও তাই করি৷ আমি জানি কোথাও আমার দ্বিতীয় বিয়েতে মানা করবার কেউ নেই৷ তারপরও সবার আপত্তি... আমি আর কথা বাড়ালাম না৷ আমার দুই ছেলে-মেয়েকে বললাম৷ ওরা অবশ্য কাঁদলো না তবে চিল্লামেল্লি করলো অনেক৷ এমনকি এটাও বললো, আমার নাকি ভীমরতি হয়েছে৷ আমার চরিত্রে সমস্যা দেখা দিয়েছে, আরো অনেক কিছু, তাই, আমি আর এ বিষয়ে কথা বাড়ালাম না৷ </p><p><br /></p><p>আমার নিজেরও মনে হলো নাতি-নাতনি হয়ে গেছে এখন আর এসব মানায় না, কিন্তু আমার একাকীত্ব কমলো না৷ সারাজীবন রাত দশটার মধ্যে যে মানুষটা ঘুমাতাম, রাতের পর রাত তার বিনিদ্র রজনী কাটতে লাগলো৷ </p><p><br /></p><p>অফিসের কলিগদের সাথে ব্যাপারটা শেয়ার করলাম৷ তারা সবাই বললো আমার বিয়ে করাই উচিত৷ ছেলে মেয়ে তো আর কাছে এসে থাকছে না বা আমাকে ওদের কাছে নিয়ে যাচ্ছে না৷ তাই, ওদের কথা না ভেবে আমার বিয়ে করাটাই যুক্তিসঙ্গত বলে মনে করলো সবাই৷ </p><p><br /></p><p>তারাই আমার জন্য মেয়েও দেখলো৷ একজনকে আমারও পছন্দ হলো৷ বিধবা, নিঃসন্তান৷ বয়স ৪০+ .. বলা যায় আমার অর্ধেক বয়সী, কিন্তু বয়সটা নিয়ে আমার একটু সংশয় ছিলো৷ বিয়ের কথা বলার আগেই তাই আমি মেয়ের সাথে সরাসরি কথা বললাম৷ তাকে বললাম, "আপনি কম বয়স্ক কাউকে বিয়ে করতে পারবেন৷ আমি যথেষ্ট বয়স্ক, আমার মৃত্যুর পর আপনাকে অনেটা জীবন একা থাকতে হতে পারে৷" উনি বললেন "সমবয়সী-কেই বিয়ে করেছিলাম, তারপরও সে তো চলে গেলো! কখন, কার মৃত্যু হবে কে বলতে পারে! আপনার আগে আমিও চলে যেতে পারি .." </p><p><br /></p><p>বুঝলাম তার আপত্তি নেই৷ আমার কলিগদের উপস্থিতিতে, একদম ঘরোয়াভাবে আমি বিয়ে করে ফেললাম৷ </p><p><br /></p><p>সমস্যাটা শুরু হলো তারপর থেকেই৷ চিরকাল শুনেছি পিতা-মাতা সন্তানকে ত্যাজ্য করে, আমার ক্ষেত্রে ঘটনা হলো উল্টো৷ আমার দুই সন্তান আমাকে ত্যাজ্য করলো৷ গত ছয়-সাতমাসে তারা আমার সাথে কোন যোগাযোগ করেনি, আমি করতে চেয়েও পারিনি৷ আমার বর্তমান স্ত্রী সঙ্গীতা-ও অনেক চেষ্টা করেছে, কিন্তু আমার দ্বিতীয় বিয়ের অপরাধ ক্ষমা করছে না তারা৷ </p><p><br /></p><p>আমার আজকাল কিছুই ভালো লাগে না৷ আমার এখন সর্বক্ষনের কথা বলার মানুষ আছে, আমার অসুখে সেবা করার মানুষ আছে, আমার জন্য ঘরে অপেক্ষা করা মানুষ আছে .. তারপরেও আমার ঘুম হয় না রাতে! আমি সারা রাত জেগে বসে থাকি৷ ফেসবুকে আমার ছেলেমেয়েদের হাসিখুশি ছবি দেখি .. ওদের ছবিতে হাত বুলাই ..</p><p><br /></p><p>আমি কি জীবনকে আরেকটা সুযোগ দিয়ে খুব বেশিই অন্যায় করে ফেলেছি, যে অন্যায় ক্ষমার ও অযোগ্য?"</p><p><br /></p><p>আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম৷ আমার মায়ের কথা মনে হলো৷ মানুষটা তার সারাটা জীবন শুধু আমাদের কথাই ভাবলো৷ আমরা বিনিময়ে তাকে কি দিলাম? সন্তানেরা কিছু কিছু ক্ষেত্রে বড্ড বেশি স্বার্থপর হই৷ তিতলী তো চলেই গেলো, আমারও একসময় বিয়ে হবে৷ তখন আমাকে ও ব্যস্ত হতে হবে তাদের জন্য, হয়তো আলাদা সংসারে যেতে হবে না তবু আরেকটা সংসারের চাপ৷ তখন মায়ের কি হবে? কিভাবে থাকবে মা একা একা আমাকে ছাড়া৷ আজকে আমি বুঝলাম আমি মা কে ছেড়ে কোথাও যেতে পারবো না, মা ও এই একাকীত্বের ভার সহ্য করতে পারবে না৷ তিনি তো আর সজল আঙ্কেলের মতো বিয়েও করবেন না .. কাজেই আমাকে সারাজীবন আমার মায়ের দেখভাল করতে হবে, কাছেই থাকতে হবে তার৷ যদি কোনদিন বিয়ে করি আমার শর্ত থাকবে একটাই, আমার মা আমার সাথেই থাকবে ... সবসময়!</p><p><br /></p><p>আমি ম্যাসেজের রিপ্লাই দিলাম৷ আমি লিখলাম,</p><p><br /></p><p>"..বয়সে আমি আপনার মেয়ের মতোই হবো হয়তো৷ আপনার লেখাটা আমি তাই আপনার সন্তান এবং আপনি দুটো দৃষ্টিকোন থেকেই দেখার চেষ্টা করলাম .. </p><p><br /></p><p>প্রথমেই একটা কথা বলে নিই, আপনি কোন অন্যায় করেননি৷ একজন একাকী মানুষের সঙ্গী পাওয়ার ইচ্ছেটা কোন অন্যায় কখনোই না৷ আপনার সন্তানেরা আপনাকে তাদের কাছে নেওয়ার কোন ব্যবস্থা করেনি৷ আমার ধারনা তারা দেশেও নিয়মিত আসে না৷ একাকীত্ব সহ্য করা সবার পক্ষে সম্ভবও না৷ আপনি যা করেছেন তাতে তাই কোন অন্যায় নেই ...</p><p><br /></p><p>চলবে..</p><p><br /></p><p><b>#ধারাবাহিক_গল্প #সুইসাইডাল_বক্স #পর্ব_৮</b></p>Ushashttp://www.blogger.com/profile/09838650528375231631noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-4370129960529033824.post-35476423154374385942023-10-07T18:06:00.007+05:302023-11-28T11:13:41.268+05:30সুইসাইডাল বক্স - পর্ব: ৭<p></p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiQKlRokqYcyETU2MoEpoHTGYBRMEj5ri4lkQa2sWH0FzyZUjRezi8VS2jb2JI2OvvgoBjvibKqyWN5y51KECyFvoO6eDpD-OdzN0qCXKE-EwmInVftsuGlw3wQFvSo2Idr_7O1wPepKVkg6iGR5qd8JLduXjBKW1oS1YahbHbqoZshPzOJ_PoVrLBL4SHD/s1368/Lipighor_1696681807757.jpeg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1368" data-original-width="795" height="320" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiQKlRokqYcyETU2MoEpoHTGYBRMEj5ri4lkQa2sWH0FzyZUjRezi8VS2jb2JI2OvvgoBjvibKqyWN5y51KECyFvoO6eDpD-OdzN0qCXKE-EwmInVftsuGlw3wQFvSo2Idr_7O1wPepKVkg6iGR5qd8JLduXjBKW1oS1YahbHbqoZshPzOJ_PoVrLBL4SHD/s320/Lipighor_1696681807757.jpeg" width="186" /></a></div><br /> <p></p><p><b>'সুইসাইডাল বক্স'</b></p><p><b>উষস চট্টোপাধ্যায় </b></p><p><b>পর্ব : ৭</b></p><p>_____________________</p><p>..ওই বাড়ি থেকে মিতালী দি-র বের হতে বেশ ঝামেলাই পোহাতে হলো, অনেক নোংরা নোংরা কথাও শুনতে হলো তাকে৷ তারপরও যখন দিদি দৃঢ় ভাবে জানালেন তিনি চলেই আসবেন, তখন তারা তোতনকে আটকে দিতে চাইলো৷ তোতন তাদের মেয়ে, তোতনকে ছেড়ে মিতালী দি যেন যেখানে খুশি চলে যায়!</p><p><br /></p><p>জীবনে প্রথমবার মিতালী দি বোধহয় সাহসের কাজটা করলো৷ সপাটে চড় লাগালো তোতনের কাকার গালে, তারপর বললো "শয়তান, তোর ঐ নোংরা হাতে আমার মেয়েকে ছুঁবি না .. তোর কপাল ভালো যে আমি তোকে পুলিশে দিচ্ছি না ..." মেয়েমানুষ আর মা এ দুয়ে বিস্তর তফাৎ৷ ঈশ্বর যখন কোন মেয়েকে মা বানান, তার মধ্যে যেন শক্তির আধার ঢেলে দেন৷ সন্তানের জন্য মা পারে-না এমন কোনও কিছু নেই এই পৃথিবীতে..</p><p><br /></p><p>মিতালী দি চলে এলেন সকাল দশটায়৷ একটা ব্যাগ হাতে, যার মধ্যে তাদের দুজনের জন্য কিছু কাপড়-চোপড়.. আর কিছুই নেই৷ মা আর সেই ভাড়া বাড়ির আন্টি-আঙ্কেল মিলে তাদের জন্য একটা তোষক, একটা হাড়ি, কড়াইয় খুন্তি ইত্যাদির ব্যবস্থা করে দিলেন৷ মিতালী দির যেন নতুন যুদ্ধ শুরু হলো; বেঁচে থাকার যুদ্ধ, বাঁচিয়ে রাখার যুদ্ধ.... মরে যেতে তো সবাই পারে, বেঁচে থাকতে পারে ক'জন? বাঁচার জন্য লড়াই করতেই হয়৷ একেকজনের লড়াইটা হয় একেক রকমের৷ কারোটা প্রকট আবার কারও টা প্রচ্ছন্ন .. কিন্তু কারও জীবনই সহজ সরল গল্পের মতো হয় না৷ বাস্তব জীবনে সিনেমার মতো তিন ঘণ্টার শেষে ভিলেন ধরা পড়ে না৷ ভিলেনরাই হয়তো জিতে যায় বারবার .. তারপরও যুদ্ধ করে করে নিজেকে আরো শক্তিশালী মানসিকতার করতে যে পারে সেই হলো মহানায়ক অথবা মহানায়িকা..</p><p><br /></p><p>মিতালী দির বিজনেসও শুরু করা হলো৷ ফেসবুকে পেজও ওপেন করা হলো, "তোতন ও টুকিটাকি" নাম দিয়ে৷ এলাকাতেই একটা স্কুলে তোতনতে ভর্তি করানো হলো ক্লাস ফোরে৷ বছরের মাঝামাঝি সময়, তাই খুব ভালো স্কুলে ভর্তি করানো গেলো না৷ তাতে অবশ্য মিতালী দির কোন মন খারাপ নেই, বরং তিনি বেশ হাসিখুশিই আছেন৷ মায়ের সাথে সাথে বেশ ভাব হয়েছে তার৷ মায়ের জন্যেও ভালো হয়েছে, আমি সময় দিতে না পারলেও এখন তোতন আর মিতালী দি, মা-কে সময় দেয়৷ একদিন দেখলাম মা বেশ জমিয়ে আমাদের বাড়ির গল্প করছেন...</p><p><br /></p><p>"জানো তো, সে এক বিরাট হট্টগোলের ব্যাপার.. আমার শ্বশুর ওদের নাম রাখবেন রণজয় আর সমাপ্তি আর ডাকনাম রণি আর তিতলী.. বাড়ির সবার-ই তাতেই মত৷ কিন্তু তোমার মেসোমশাই গোঁ ধরে বসেছে৷ সে তার ছেলে-মেয়েদের নাম রাখবে রবীন্দ্রনাথের কাব্যগ্রন্থের নামে... কবি মানুষ ছিলেন কিনা! তিনি ছেলে-মেয়েদের নাম রাখবেন অমিত আর অমৃতা .. আমার শ্বশুর রাগে সে কী চিল্লামেল্লি শুরু করে দিয়েছেন৷ সবচেয়ে বিপদে পড়েছে আমার শ্বাশুড়ি, না পারছেন ছেলের কথা রাখতে, না পারছেন স্বামীর কথা ফেলতে! শেষে আমাকে এসে বললেন, বৌমা ওরা দুজনই গোঁয়ার, তুমি বরং মাঝের একটা পথ বাতলে দাও ... আমি আর কি বলবো! অনেক ভাবলাম, অনেক ভাবলাম .. ভেবেচিন্তে আমার শ্বশুরের কাছে গিয়ে বললাম, "বাবা, আমার একটা কথা আছে .. আমি চাই আমার ছেলে-মেয়েরা তাদের ঠাকুর্দার দেওয়া নামও পাক আর বাবার দেওয়া নামটাও পাক, দুটো ই থাকুক৷ ওদের নাম হোক অমিত/রণি, আর সমাপ্তি/তিতলী... আমার শ্বশুর আমাকে খুব স্নেহ করতেন৷ আমার কথা ফেললেন না ... রবীন্দ্রনাথের 'শেষের কবিতা' আর 'তিনকন্যা'-র মূল চরিত্র অনুযায়ী আমার পুত্র-কন্যাদ্বয়ের নাম হলো.. হা হা হা .."</p><p><br /></p><p>আমি মুগ্ধ হয়ে শুনলাম .. আমার মা হাসছে! কতদিন পর ঠাকুর আমাদেরকে একটুখানি দয়া করেছে .. আমি মনে মনে অসংখ্য ধন্যবাদ আর কৃতজ্ঞতা জানালাম ঠাকুরের কাছে৷</p><p><br /></p><p>এ সপ্তাহে নতুন কোনো কেস এলো না একটাও৷ এটাও আমার জন্য আনন্দের৷ ভাবলাম সামসুল হকের খোঁজ নেওয়া যাক৷ ছেলেটা সাইকিয়াট্রিস্টের কাছে যাচ্ছে তো..? </p><p><br /></p><p>সার্ফ করতে গিয়ে দেখলাম "জোনাকির আলো" আইডিটা ডিএক্টিভ করা৷ চিন্তায় পরে গেলাম একটু .. আমার সেই পরিচিত সাইকিয়াট্রিস্ট কে কল করলাম৷ উনি বললেন সৌম্য কাউন্সেলিং করাচ্ছে এখন, দুটো সেশন হয়েছে .. তার কথা শুনে ভালোই লাগলো, কিন্তু আরো একবার আমার সৌম্যর সাথে কথা বলা দরকার .. কিভাবে বলবো জানি না .. ওর সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করিনি আমি মনের ভুলেই ..</p><p><br /></p><p>এর মধ্যেই পড়লাম আরেক ঝামেলায়৷ পুলিশি ঝামেলা! কেউ একজন সাইবার ক্রাইমে মামলা করেছে আমার নামে৷ আমি নাকি সুইসাইডকে প্রোমোট করছি.. </p><p>ব্যস, আমি পড়লাম অথৈ জলে! এই অবস্থায় কি করবো বুঝে উঠতে পারছিলাম না.. </p><p><br /></p><p>মনে পড়লো সুমনা রায়ের কথা, একজন স্বনামধন্যা উকিল৷ আমার 'সুইসাইডাল বক্স' গ্রুপের প্রথম দিককার কেস ছিলো ওনারটা.. উপায় না পেয়ে ওনাকেই কল করলাম৷ আমার কথা শুনেই ছুটে আসলেন তিনি আমার সাহায্য করতে৷ একদম বিপদের মুখ থেকে আমাকে বাঁচালেন৷ তবে গ্রুপটি বন্ধ করে দিতে হলো আমার৷ আগের সবকটা সল্ভ করা কেসের প্রমান দেখিয়েও গ্রুপটা বাঁচাতে পারলাম না আমি!</p><p><br /></p><p>বলা যায় আমি ভেঙেই পড়লাম এবার৷ আমার জীবনের উদ্দেশ্য যেন হঠাৎ করেই হারিয়ে গেলো৷</p><p><br /></p><p>*******</p><p><br /></p><p>রিমার সেই দিনগুলোর কথা খুব মনে পড়ছে ..অনার্সের প্রথম বছর৷ শৌভনিক ছিলো এক ব্যাচ সিনিয়র৷ প্রথমে কথা হয়েছিলো নোটের জন্য৷ বেশ সাবলীলভাবে দুজনের কথা হতো..</p><p><br /></p><p>রিমা প্রথম দর্শনেই প্রেমে পড়ে গিয়েছিলো৷ একদিন শৌভনিক-ই ওকে বললো "রিমা, তোমাদের ক্লাসের সমাপ্তি নামের মেয়েটাকে আমার খুব পছন্দ, একটু খোঁজ নাও না, ওর কি কাউকে পছন্দ? বা ও কারো সাথে রিলেশন আছে না কি!"</p><p><br /></p><p>রিমা শৌভনিকের সেই কথা শুনে ভেতরে ভেতরে গুমড়ে গুমড়ে কেঁদে উঠেছিলো৷ ক্লাসের কারো সাথেই তার বন্ধুত্ব নেই৷ সমাপ্তি মেয়েটাকে সে আগে কখনও খেয়ালও করেনি৷ এবার খেয়াল করলো ... ভীষণ দুরন্ত, ছটফটে একটা মেয়ে সমাপ্তি৷ সারাক্ষন হৈ চৈ করছে, বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছে, গলা ছেড়ে গান গাইছে.. ক্লাসে তার বন্ধু-বান্ধবীর অভাব নেই৷ রিমা সবসময় খেয়াল করতো সমাপ্তি কে .. আর মনকে বোঝাতে চাইতো মেয়েটা সুন্দর, দুরন্ত, চটপটে, শৌভনিক তো ওকেই ভালোবাসবে, এটাই স্বাভাবিক!</p><p><br /></p><p>মনকে বোঝাতে চাইলেই কি আর মন বুঝবে! মন বুঝতো না.. ওর প্রচন্ড হিংসা হতো৷ বাড়ি ফিরে সে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাঁদতো৷ তার মাথায় হাত বুলিয়ে দেওয়ার মতো কেউ ছিলো না৷ তাকে সান্ত্বনা দেবারও কেউ ছিলো না, ছিল না তার কষ্টগুলোতে ভালোবাসার মলম লাগিয়ে দেবারও কেউ...</p><p><br /></p><p>ধীরে ধীরে সময় গড়াল, সেকেন্ড সেমিষ্টারের শুরুতেই সবাই জেনে গেলো সমাপ্তি আর শৌভনিকের প্রেম কাহিনী৷ ক্যাম্পাসে তাদের সারাক্ষন একসাথে দেখা যেতো৷ ওরা আবার একসাথে আড্ডাও দিতো সবার সাথে৷ দূর থেকে ওদের দেখতো রিমা! নিজেকে সে আরো চুপচাপ করে ফেললো৷ </p><p><br /></p><p>নিয়মিত ক্লাসে যাওয়া বন্ধ করে দিলো৷ পড়াশোনা ছেড়ে দিলো৷ শুধু পরীক্ষার আগে আগে ক্লাসে যেতো৷ রেজাল্ট খারাপ হয়ে গেলো৷ </p><p><br /></p><p>সেকেন্ড ইয়ার শুরু হলো এভাবেই৷ ইয়ার চেঞ্জের রেজাল্ট দেখে রিমার বাবা খুব রাগারাগি করলেন৷ রিমা তাই চেষ্টা করলো সব ভুলে পড়ায় মন দিতে ... পারলো না! এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করতো সে সমাপ্তি আর শৌভনিক কে, কিন্তু সম্ভব হয়ে উঠতো না! বারবার যেন ওরা দুজনই চোখের সামনে আসতো ঘুরে ফিরে! </p><p><br /></p><p>এক তরফা প্রেম বড্ড বেশি ভয়ঙ্কর হয়৷ এক তরফা প্রেমের আগুনের উত্তাপও থাকে অনেক বেশি৷ সেই উত্তাপ একজন মানুষকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে নিঃশেষ করে দেয়.. </p><p><br /></p><p>রিমাও জ্বলে-পুড়ে একদম শেষ হয়ে গেছিলো ..</p><p><br /></p><p><b>চলবে..</b></p><p><b><br /></b></p><p><b>#ধারাবাহিক_গল্প #সুইসাইডাল_বক্স #পর্ব_৭</b></p>Ushashttp://www.blogger.com/profile/09838650528375231631noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-4370129960529033824.post-22783663531006644972023-09-30T13:41:00.006+05:302023-11-28T10:53:53.526+05:30'সুইসাইডাল বক্স' (পর্ব:৬) <p></p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgYadBvyR8TLVDSNkdv5rQv4yv-2EMxj88Ouo0bDhgpYl2oE3XxaNcJh651xGQYEj6Ulalj16TYrKeITdyw1xYTvgm6LwhuPPXJbnhnCcatG1UZH4ULAKkDiRLM1zdQWLlRoyVVjfSR5FDIjPuVLxCb3805lHu9Dd1SNHflpmbtggy2igpk2-FDFs69ZZlL/s1368/Lipighor_1696061241239.jpeg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1368" data-original-width="795" height="320" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgYadBvyR8TLVDSNkdv5rQv4yv-2EMxj88Ouo0bDhgpYl2oE3XxaNcJh651xGQYEj6Ulalj16TYrKeITdyw1xYTvgm6LwhuPPXJbnhnCcatG1UZH4ULAKkDiRLM1zdQWLlRoyVVjfSR5FDIjPuVLxCb3805lHu9Dd1SNHflpmbtggy2igpk2-FDFs69ZZlL/s320/Lipighor_1696061241239.jpeg" width="186" /></a></div><br /> <p></p><p><b>'সুইসাইডাল বক্স'</b></p><p><b>উষস চট্টোপাধ্যায় </b></p><p><b>পর্ব : ৬</b></p><p>_____________________</p><p><br /></p><p>ব্যালকনি তে বসে ফেসবুক স্ক্রলিং করছিলো রিমা৷ আবার ঐ গ্রুপটা চোখের সামনে পড়ে তার৷ রিমা মোবাইলটা বন্ধ করে রাখে৷ এই গ্রুপটা দেখলেই তার অস্বস্তি হয়, মনে হয় সবাই ওর মনের কথা বুঝে ফেলেছে! সবাই বোধহয় সবটা জানে! </p><p><br /></p><p>রকিং চেয়ারে বসে দোল খেতে খেতে রিমা চোখ বন্ধ করে ফেলল; তারপর মনে মনে ভাবতে থাকে সে আসলে ঠিক কী কারনে সুইসাইড করতে চায়! সে ভীষণ একা, বাবার স্নেহবর্জিত ... এটাই কি একমাত্র কারন? না, এর সবচেয়ে বড় কারন অপরাধবোধ৷ একটা গোপন পাপে পাপী রিমা৷ নিজেকে তাই নিজেই ক্ষমা করতে পারে না সে ...যতবার ঐ দূর্ঘটনার কথা মনে পড়ে, ততবার রিমার নিজেকে সরিয়ে দিতে ইচ্ছে করে এই পৃথিবী থেকে৷ ব্যাপারটা কি ভোলার চেষ্টা রিমা করেনি! করেছে...বহুবার করেছে... কিন্তু আজ অবধি পারেনি, আজকাল রিমার মনে হয় পারবেও না৷</p><p><br /></p><p>শৌভনিক .... ফর্সা, গোলগাল মুখ, বড় বড় কবিতা বলা চোখ ..কোঁকড়া চুল, মুখে খোঁচা খোঁচা দাড়ি-গোঁফ .. আচ্ছা এমন একটা ছেলের প্রেমে পড়া কি খুব অন্যায় ছিলো! শৌভনিকের প্রেমে পাগল হয়ে গিয়েছিলো রিমা .. আর শৌভনিক! সে ছিলো সমাপ্তির প্রেমে অন্ধ৷ দুজন ছিলো কলেজের সবচেয়ে পরিচিত জুটি৷ বেশ মানাতো দুজনকে৷ সবার প্রিয় ছিলো ওরা, শুধু রিমা বাদে! রিমা সহ্য করতে পারতো না ওদের .. অসহ্য লাগতো রিমার! তারপরেও সহ্য করার চেষ্টা করে যাচ্ছিলো৷ </p><p><br /></p><p>কিন্তু, সেদিন যখন লাইব্রেরির পেছন দিকটাতে শৌভনিকের বুকের মধ্যে লতার মতো করে লেপ্টে থাকতে দেখলো সমাপ্তি কে, সেদিন নিজেকে আর কনট্রোল করতে পারেনি রিমা! যে গল্পটায় তার হবার কথা সে ভেবে আসছে শয়নে-স্বপনে, সেই গল্পের নায়িকা যখন অন্য কেউ হয় তা ঠিক কতক্ষন সহ্য করতে পারা যায়? যারা সহ্য করতে পারে তারা বোধহয় মহান মানুষ, রিমা সাধারন মানুষ, সে মহান হতে চায়না৷ রিমা পারেনি ...</p><p><br /></p><p>অসহ্য যন্ত্রনা হচ্ছে রিমার৷ ভয়াবহ সেই গোপন পাপের স্মৃতি রিমাকে বাঁচতে দিচ্ছে না৷ নিজেকে নোংরা মনে হয় ওর .. আচ্ছা তার কি ঐ সুইসাইডাল বক্সটা দরকার? এর আগেও সে চেষ্টা করেছে কয়েকবার, সফল হতে পারেনি, এই সুইসাইডাল বক্স কি তাকে নিশ্চিত মৃত্যু দিতে পারবে! সেখান থেকেও তাকে ব্যর্থ হয়ে ফেরত আসতে হবে না তো?</p><p><br /></p><p>******</p><p><br /></p><p>ছোট্ট একটা ফুলের মতো ফুটফুটে মেয়েকে নিয়ে মিতালী গোস্বামী দেখা করতে এসেছেন৷ এ বয়সের মেয়েরা হবে ছটফটে ফড়িং এর মতো, অথচ মিতালী-র কন্যাটি বড্ড বেশিই চুপচাপ৷ </p><p><br /></p><p>আমাকে দেখে মিতালী বললেন </p><p><br /></p><p>—আপনিই কি আঁধার?</p><p><br /></p><p>—আজ্ঞে হ্যাঁ </p><p><br /></p><p>—ও.. আপনার আসল নামটাকি বলা যাবে? </p><p><br /></p><p>—আমার ডাক নাম রণি৷ আপনি আমাকে রণি বলে ডাকতে পারেন .. </p><p><br /></p><p>—আচ্ছা৷ আমার বক্সটি কি এনেছেন? আমি টাকা নিয়ে এসেছি.. </p><p><br /></p><p>—আমি আপনাকে কিছু কথা বলতে চাই ৷ আপনি যদি আমাকে ভাই ভাবেন, আমি কি কথাগুলো আপনাকে বলতে পারি.. যদি আপনি অভয় দেন তবেই..!</p><p><br /></p><p>—ভাই ভাবলে আর আপনি বলছো কেন? তুমি বলো৷ আর তুমি আমার বেশ ছোটই হবে৷ আমি বেশিক্ষন কাউকে আপনি আজ্ঞে করতে পারিনা৷</p><p><br /></p><p>—বেশ দিদি, আমি আসলে কোন সুইসাইড বক্স বিক্রি করি না৷ আমি চেষ্টা করি মানুষদের সুইসাইড থেকে ফেরাতে৷ টাকার কথাটা বলি যাতে মানুষ কিছুদিন সুইসাইডের চিন্তা বাদ দিয়ে টাকার চিন্তায় থাকে৷ তুমি বলো ..এই কটাদিন তোমার মাথায় কোন চিন্তাটা ছিলো?</p><p><br /></p><p>—টাকা জোগাড়ের চিন্তা.. কিন্তু রণি, আমি তোমাকে বিশ্বাস করেছিলাম! তুমি এভাবে আমাকে ঠকালে?</p><p><br /></p><p>—দিদি, আমার কথাটা শেষ করতে দাও প্লিজ৷ তারপর যা বলবে আমি মাথা পেতে নেবো ..</p><p><br /></p><p>—বলো, কত মানুষের কত কথাই তো শুনলাম! তুমিও বলো না হয়..</p><p><br /></p><p>—আমি সাধারণত কোন কেস সল্ভ করার জন্য তার আপনজনদের সাহায্য নিই, কিন্তু এইবার আমি আমার সেই পুরোনো পদ্ধতিতে কাজ করতে পারিনি৷ দিদি, আমি খুঁজে পেতেও তোমার কোনও আপনজন খুঁজে পাইনি৷ কিন্তু দিদি, তোমার এই ছোট্ট শান্তু টুনটুনিটার আপনজন খুঁজে পেয়েছি, যে ওকে এই বিপদ থেকে উদ্ধার করতে পারে, যে ওর পাশে ঢাল হয়ে দাঁড়াতে পারে ..</p><p><br /></p><p>— ক.. কে, কে!</p><p><br /></p><p>—দিদি, তুমি!</p><p><br /></p><p>—হা হা হা ! রণি, হাসালে তুমি আমাকে .. ঠাট্টা করছো তুমি আমার সাথে?</p><p><br /></p><p>—না মিতালী দি, ঠাট্টা আমি করি না .. যা বলছি ভেবেই বলছি৷ দিদি, মেয়ের জন্য ঢাল হয়ে তোমাকেই দাঁড়াতে হবে৷ একটাবার চিন্তা করে দেখো ... এই নিষ্পাপ বাচ্চাটাকে তুমি মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেবে? একটাবার যুদ্ধের চেষ্টাও করবে না? </p><p><br /></p><p>—আমার কী করার আছে রণি!?</p><p><br /></p><p>—আমি ভেবে রেখেছি৷ বলছি .. শোনো, তোমার হাতে আছে দশহাজার টাকা৷ প্রথমে তুমি মামনিকে নিয়ে ঐ বাড়িটা ছাড়বে৷ একটা ভাড়া বাড়ি আমি দেখে রেখেছি৷ একটা বয়স্ক দম্পতি থাকে৷ একটা রুম ভাড়া দেয়৷ সুন্দর রুম, রুমের সাথে বাথরুম আর বারান্দা আছে৷ ভাড়া তিনহাজার টাকা প্রতিমাসে৷ ওনারা এক মাসের ভাড়া এডভান্স রাখেন৷ কিন্তু আমি ওনাদের বুঝিয়ে দু'হাজার এডভান্সে দেবো বলেছি৷ এরপর তোমার কাছে থাকলো আট হাজার টাকা৷ এর ভেতর থেকে পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে তুমি কাপড়ের ব্যবসা শুরু করবে৷ কিছু কাপড় এনে তাঁতীদের থেকে আরো ছবি নিয়ে আসবে৷ অনলাইন প্লাস অফলাইনে বিভিন্ন স্কুলের সামনে গিয়ে গার্জিয়ানদের কাছে বিক্রির চেষ্টা করবে৷ আমরা প্রথমেই নেবো একদম কমের মধ্যে বাটিক, ব্লক, স্ক্রিন প্রিন্টের থ্রিপিস৷ লাভও রাখবো খুব সীমিত৷ এগুলো এখন বেশ ভালো চলে৷ আমি সব খোঁজ খবর করে এনেছি৷ ছ'টা মাস তুমি শুধু আমাকে বিশ্বাস করো, দেখো ...তারপরও কিছু না হলে তুমি যা বলবে মাথা পেতে নেবো৷ </p><p><br /></p><p>—যত সহজে বললে, এত সহজে কী সম্ভব!</p><p><br /></p><p>—নিশ্চয় সম্ভব৷ এখন ওঠো, তোমাকে এক জায়গায় নিয়ে যাবো৷</p><p><br /></p><p>—কোথায়?</p><p><br /></p><p>—আমাদের বাড়িতে৷ আমার মা তোমার জন্য অপেক্ষা করছে৷</p><p><br /></p><p>আমার মা মিতালী গোস্বামী-র জন্য অপেক্ষা করে আছেন৷ মা এতকিছু জানেন না৷ মা কে শুধু বলেছি, "একজন বিপদগ্রস্তকে সাহায্য করছি মা, তুমি পাশে থেকো৷" </p><p><br /></p><p>মিতালী দির মেয়ের নাম মৌলি, ডাকনাম তোতন! আমার মায়ের সাথে তোতনের বেশ ভাব হয়ে গেলো৷ আমাদের বাড়ির কাছেই মিতালী দিদির জন্য বাড়ি দেখেছি৷ তাকে সেই বাড়িও দেখিয়ে আনলাম ... তারপর দিদি একসময় চলে গেলেন ... যাবার সময় আমাকে জিজ্ঞেস করলেন "বসার ঘরের ছবিটা কি কম্পিউটারে ফটোশপ করেছো? একই মুখ খালি ছেলে আর মেয়ের তফাৎ.. দারুণ হয়েছে... মনে হচ্ছে পাশাপাশি দুটো জেন্ডারে তুমি!"</p><p><br /></p><p>আমি বললাম "দিদি, ওটা আমার জমজ বোনের ছবি৷ ও দু'বছর আগে সুইসাইড করেছে৷ ওর জন্যই আমি আঁধার! ওর মৃত্যু ঠেকাতে পারিনি, তাই চেষ্টা করে যাই যতটা সম্ভব মানুষের সমস্যার সমাধান করতে ..."</p><p><br /></p><p>মিতালী দি আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন, "রণি, তুমি পারবে ..নিশ্চয় পারবে ... আগামীকাল আমি চলে আসবো৷ সকাল সকালই চলে আসবো৷ পাশেই থেকো আমার৷ তুমি থাকলে তোতনের ভার আমি নিতে পারবো, তোতনের ঢাল আমিই হতে পারবো...ভগবান চাইলে ঠিক পারবো .."</p><p><br /></p><p>আমাকে জড়িয়ে ধরলেন মিতালী দি৷ আমার আবার মনে হলো আমাকে জড়িয়ে ধরেছে তিতলী! </p><p><br /></p><p>আচ্ছা ওপারে বসে কী তিতলী দেখতে পায়, আমি, মা, আমরা যে সারাটাক্ষন ওকে মিস করি! পাগলের মত মিস করি! </p><p><br /></p><p>*******</p><p><br /></p><p>রিমার বাবা গেছেন দেশের বাইরে৷ তার কি নাকি জাহাজে কোন সমস্যা হয়েছে, সেই জাহাজের পেছনেই ছুটেছেন তিনি৷ রিমা আজ এসব চিন্তা বাদ দিয়ে একটু মন ভালো করার চেষ্টা করছে৷ </p><p><br /></p><p>মায়ের আলমারি খুলে একটা লাল শাড়ি বের করে রিমা৷ তারপর রান্নাঘরে গিয়ে রাঁধুনি কে বলে আসে ভালো করে কষিয়ে মাংস, মুগের ডাল আর ভাত রান্না করতে৷ সাথে টমেটোর চাটনি৷ বলে এসে নিজের ঘরে না গিয়ে মায়ের ঘরেই ঢোকে৷ মায়ের ঘরটা এখনও আগের মতই আছে৷ মায়ের ড্রেসিং টেবিল, তার সাজ-গোজের জিনিসপত্র .. অবশ্য সাজগোজের জিনিস বলতে শুধু কয়েকটা কাজল, আর একটা হালকা কালারের লিপস্টিক৷ এসবের এক্সপায়ারি থাকার কথা না, তবু.. রিমা জানে, আনোয়ারা তার আশেপাশেই আছে, তাই আনোয়ারা কে ডেকে তার ঘর থেকে তার কাজল আর লিপস্টিকটা আনতে বলে৷ আজ সে মায়ের মত করেই সাজবে ..</p><p><br /></p><p>সময় নিয়ে সাজে রিমা৷ সুন্দর করে শাড়ি পড়ে, চোখে কাজল দেয়, ঠোঁটে হালকা করে লিপস্টিক দেয় ...তারপর মুগ্ধ হয়ে নিজেকে দেখে সে৷ ওর বেশ ভালো লাগতে থাকে৷ এভাবে সেজেগুজেই দীর্ঘদিন পর সে ডাইনিং টেবিলে বসে নিজের সব পছন্দের খাবার তৃপ্তি করে খায়৷</p><p><br /></p><p>তারপর ঘরে এসে নিজেকে এলিয়ে দেয় বিছানায় ....</p><p>ঠিক তখন ওর মনে হয় শাড়িটা জঞ্জাল লাগছে ...শাড়ি খুলে একটা টিশার্ট আর ট্রাউজার পরে ফেলে সে৷ তারপর আবার ক্লান্ত হয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ে সে ... এই রিমা একটু আগে আনন্দে থাকা রিমা না..বরং এ সেই পুরোনো ডিপ্রেসড রিমা..</p><p><br /></p><p>সাজ-গোজ বা খাওয়া-দাওয়া ডিপ্রেশন কমায় না৷ যখন কাউকে বলা হয় খুব মন খারাপ হলে আপনি কি করেন? বেশিরভাগ মেয়েই উত্তর দেয়, আমি তখন সাজি, বা আমি তখন খাই ... এসবই আসলে নিজেই নিজেকে বোকা বানানো, ধোঁকা দেওয়া৷ সাময়িকভাবে নিজেকে ডাইভার্ট করা৷ কিন্তু পরিপূর্ন সমাধান এটা নয়৷ আসলে আমরা ক'জনই সমস্যার পরিপূর্ন সমাধান চাই! আমরা বোধহয় দুঃখবিলাস করতেই বেশি ভালোবাসি ....</p><p><br /></p><p>চলবে..</p><p><br /></p><p><b>#ধারাবাহিক_গল্প #সুইসাইডাল_বক্স #ষষ্ঠ_পর্ব</b></p>Ushashttp://www.blogger.com/profile/09838650528375231631noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-4370129960529033824.post-6370404645974999762023-09-23T17:07:00.000+05:302023-09-23T17:07:08.737+05:30'সুইসাইডাল বক্স' (পর্ব: ৫)<p></p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhXVPYSJkgPjQc3QRqv92TofRNZx95sktnWj_FTVPBPJ3dL-2DWnR9NBYYeLygS86x03IIaERgAXydt-2nFgynMIu22Levv7_EHiP2l8PQexodMXc-5zp0Z97BAhjfko65OZ60NQfAhhxIXPcyk3MGZ1DVkufDo91pQJ7QWsUMt91RPl09_LUClcLSuP7rN/s1350/Screenshot_20230923-165943.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1350" data-original-width="775" height="320" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhXVPYSJkgPjQc3QRqv92TofRNZx95sktnWj_FTVPBPJ3dL-2DWnR9NBYYeLygS86x03IIaERgAXydt-2nFgynMIu22Levv7_EHiP2l8PQexodMXc-5zp0Z97BAhjfko65OZ60NQfAhhxIXPcyk3MGZ1DVkufDo91pQJ7QWsUMt91RPl09_LUClcLSuP7rN/s320/Screenshot_20230923-165943.jpg" width="184" /></a></div><br /> <p></p><p><b>'সুইসাইডাল বক্স'</b></p><p><b>উষস চট্টোপাধ্যায় </b></p><p><b>পর্ব : ৫</b></p><p>_____________________</p><p>.."আমার আইডি দেখে আপনি হয়তো ভাবছেন আমি হয়তো একটা মেয়ে৷ আসলে এটা আমার ছোটবোনের আইডি৷ ওর-ই নাম জোনাকি, ওর আবার ফেসবুকের নেশা নেই৷ আমিই মাঝে মধ্যে ওর আইডিতে ঢুকি৷ সমস্যাটা শুরু হয় এই আইডি নিয়েই৷ আসলে সমস্যা ঠিক তার নয়... ব্যাপারটা হচ্ছে, সমস্যাটা আমি নিজে নিজেই তৈরি করেছি৷ </p><p><br /></p><p>আমার নাম সৌম্য; ভালো নাম, শেখ সামসুল হক। অনার্স শেষ করে মাস্টার্সে ভর্তির অপেক্ষায় আছি৷ যাই হোক, আপনার বেশি সময় নেবো না, প্রসঙ্গে আসি৷ আমার বোন নিজের ছবি প্রোফাইলে দিতে খুব-একটা পছন্দ করে না৷ ইন্টারনেট থেকেই ডাউনলোড করে একজন নায়িকার ছবি দিয়েছিলো প্রোফাইলে৷ সাউথ ইন্ডিয়ান মুভির নায়িকা৷ ও যেহেতু ফেসবুকে সেরকম ঢোকে না, আর আমিই মেনলি ওর আইডি চালাই, তাই খেলাচ্ছ্বলেই সমস্যার শুরুটা আমি করে ফেললাম.. </p><p><br /></p><p>মেয়েদের আইডিতে বিভিন্ন ছেলেরা নানান সময়ে নানা রকম নোংরা ম্যাসেজ করে থাকে.. আদার ম্যাসেজবক্স ওপেন করলে বোঝা যায় যে মানুষের মনের নোংরামির কোন সীমা-পরিসীমা নেই৷ আমার বোনের আইডিতেও এমনই ছেলেদের ম্যাসেজ আসতো৷ নিজেদের বিশেষ অঙ্গের ছবি পাঠাতো ইনবক্সে৷ আমি খুব কড়া ভাষায় রিপ্লাই দিয়ে সেই আইডিগুলোকে ব্লক করে দিতাম৷ এসবেও কোন সমস্যা ছিলো না৷ </p><p><br /></p><p>একদিন একটা ম্যাসেজ আসলো তরুন কুমার নামের একটা আইডি থেকে৷ খুব সুন্দর করে ভদ্রভাষার ম্যাসেজ৷ আমি নোংরা ম্যাসেজ দেখে দেখে এতটাই বিরক্ত ছিলাম, আমার ওনার করা ম্যাসেজ খুব ভালো লাগলো৷ আমি খুব স্বাভাবিকভাবে রিপ্লাই দিলাম৷ তবে ফোনের ওপারের মানুষটা জানতে পারলো না আমি একজন ছেলে ....</p><p><br /></p><p>তরুন প্রতিদিন ম্যাসেজ পাঠাতো- দারুণ সব কবিতা লিখে লিখে.. ওর কবিতা আমার বেশ ভালো লাগতো৷ আমি নিয়মিত কথা বলে যেতে লাগলাম৷ একসময় অবাক হয়ে দেখলাম আমি তরুনের সাথে কথা বলার জন্য অপেক্ষা করছি.. আমি ভীষণ ভালো লাগা নিয়ে অপেক্ষা করছি ...</p><p><br /></p><p>আস্তে আস্তে আমাদের কথা বলার সময় বাড়লো, সারারাত আমরা কথা বলতাম৷ আমার পরীক্ষা থাকলে ও আমার সাথে জাগতো৷ আমি অসুস্থ হলে ও আমাকে ওষুধ খাবার কথা মনে করিয়ে দিতো৷ আমি দিনে দিনে ওর উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়তে লাগলাম৷ </p><p><br /></p><p>আপনি কি বিরক্ত হচ্ছেন আঁধার? অবশ্য বিরক্ত হবার মতোই কথা বলছি আমি! আর বেশিক্ষন নেব না আপনার ..."</p><p><br /></p><p>"না..না, বিরক্ত হওয়ার কোন কারণ নেই, আমি অভ্যস্থ! তারপর কী হলো?"</p><p><br /></p><p>"তারপর যা হবার সেটাই হলো৷ তরুন আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলো৷ ও যেহেতু হিন্দু আর আমি মুসলিম ও নিজ থেকেই বললো ও ধর্ম পরিবর্তন করবে৷ প্রেম না, সরাসরি বিয়েই করতে চায় আমাকে..."</p><p><br /></p><p>"আমি দ্বিধায় পরে গেলাম ! আমি তরুনকে কি বলবো! হিন্দু-মুসলিম এটা সমস্যা না, সমস্যা তো অন্যখানে৷ আমি একজন পুরুষ ... ঠিক একই ভাবে তরুনও একজন পুরুষ৷ তরুনের কাছে আমি নারী হলেও আসলে আমি তো নারী নই!</p><p><br /></p><p>প্রচন্ড দ্বিধা নিয়ে দিন কাটাতে লাগলাম৷ আমি তরুনের সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিলাম... ও আমাকে পাগলের মতো নক করতো৷ আমার সাথে কথা বলার জন্য ও পাগল হয়ে ছিলো৷ আমার অসহায় লাগতো৷" </p><p><br /></p><p>"নিজের সাথে যুদ্ধ করে আর পারলাম না৷ সত্যিটা বলে দিলাম অবশেষে৷ বললাম, 'তরুন আমি একজন ছেলে...' ও বিশ্বাস করতে চাইলো না৷ ও ভাবলো আমি ওকে বিয়ে না করার জন্য মিথ্যে কথা বলছি ..."</p><p><br /></p><p>"আমি অবশেষে ওর সাথে দেখা করতে চাইলাম৷ ওর কান্না আমার সহ্য হচ্ছিলো না৷ আমিও কাঁদছিলাম, কেন কাঁদছিলাম জানি না..আমিও বোধহয় ভালোবেসে ফেলেছিলাম তরুনকে! বোধহয় না, আমি সত্যিই ভালোবেসে ফেলেছিলাম তরুনকে৷ একটা ছেলে হয়েও আমি আরেকটা ছেলেকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম ... হয়তো এখনও বাসি .."</p><p><br /></p><p>"আমি তরুনের সাথে দেখা করলাম৷ ও অবাক হয়ে দেখলো আমাকে .. ঘৃনাভরে দেখলো আমাকে ...কোন কথাই বললো না! শুধু যাবার আগে একদলা থুথু ফেলে দিয়ে গেলো আমার গায়ে .."</p><p><br /></p><p>"এই ঘটণার ছয়মাস হয়ে গেছে৷ এই ছয়মাসে আমি অনেকবার চেষ্টা করেছি পুরো ঘটণাটা ভুলে যেতে, পারিনি৷ আমি এখনও ফেক আইডি দিয়ে তরুনের আইডি ফলো করি, ওকে দেখি৷" </p><p><br /></p><p>"আমি চেষ্টা করেছিলাম কোন মেয়ের সাথে যেন সম্পর্কে জড়াতে পারি৷ সহজ স্বাভাবিক সম্পর্ক ... আমি পারিনি ... কোন মেয়ের প্রতি আমার সেই অনুভূতিটা জন্মায় না .."</p><p><br /></p><p>"তরুন কিন্তু আমাকে মনে রাখেনি৷ ও বিয়ে করেছে গত তিনদিন আগে৷ একদম হিন্দুরীতি তে, খুব ধুমধাম করে এক রূপসী মেয়েকে বিয়ে করেছে .. বিয়ের ছবিতে তরুনের হাসিমুখ আমার বুকে শূলের মতো বিঁধেছে আঁধার .." </p><p><br /></p><p>"আমি জানি, ভুলটা আমার৷ আমিই প্রকৃতির বিরুদ্ধে যাবার চেষ্টা করেছি, মিথ্যা বলেছি .. আমি শাস্তি পাবো এটাই স্বাভাবিক! কিন্তু শাস্তির এই বোঝাটা আমি আর টানতে পারছি না৷ তরুনের বিয়ের আগে পর্যন্ত কষ্টটা অন্যরকম ছিল, কিন্তু এখন কষ্টটা আলাদা৷ আমি চোখ বন্ধ করতে পারি না, চোখ বন্ধ করলেই দেখি তরুন ওর বউয়ের সাথে ......." </p><p><br /></p><p>"আমি আর পারছি না আঁধার! মৃত্যু মনে হয় সবচেয়ে সহজ সমাধান ... আমাকে ঘৃনা করবেন না আঁধার, খুব সাহস সঞ্চয় করে প্রথমবার এই কথাগুলো আমি কাউকে বললাম ...."</p><p><br /></p><p>সামসুলের ম্যাসেজ পড়ে আমি খানিকক্ষন চুপ করে থাকলাম৷ ঠিক কী বলা উচিত আসলে বুঝতে পারছি না .. একটা ছেলে আরেকটা ছেলেকে কীভাবে ভালোবাসে এটা আমার মাথায় ঢুকছে না৷ আমি রিপ্লাই দেওয়ার আগে একটু প্রস্তুতি নিলাম৷ আমি লিখলাম "আপনি যে সমস্যায় পড়েছেন সে সমস্যার সাথে আমি পরিচিত নই৷ তবে এটুকু বলতে পারি, আমার মনে হয় আপনার কোন সাইকিয়াট্রিস্ট দেখানো দরকার৷ এটাও এক ধরনের মানসিক সমস্যা মনে হচ্ছে৷ আমার পরিচিত একজন </p><p>সাইকিয়াট্রিস্ট আছেন৷ আপনি চাইলে আমি তার সাথে কথা বলে আপনার জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে কথা বলে নেবো৷ একটাবার চেষ্টা করে দেখুন৷ ভুল তো মানুষেই করে, তবে ভুল শোধরাবার চেষ্টা তো করা দরকার, তাই না, কি বলেন?"</p><p><br /></p><p>সামসুল চুপ করে থেকে উত্তর দিলো "আমি আমার পরিবারের একমাত্র ছেলে৷ একটা শেষ চেষ্টা আমি করতে চাই ... আপনি অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে দেখুন ..." </p><p><br /></p><p>আমি আচ্ছা বলে কথা শেষ করলাম৷ কথা শেষ করতেই দেখি মিতালী গোস্বামী-র ম্যাসেজ করেছে৷ তার টাকার জোগাড় হয়ে গেছে৷ আমি তাকে কাল দেখা করার সময় দিলাম৷ অন্য কেস আর মিতালী গোস্বামী-র কেস এক নয়৷ আমার আরো কিছু কাজ আছে, কাজগুলো শেষ করতে হবে অতি দ্রুত...</p><p><br /></p><p>ইনবক্সে থাকা দ্বিতীয় ম্যাসেজটা ওপেন করলাম৷ ভদ্রমহিলা তার পুরো গল্পটা বলেই রেখেছেন৷ </p><p><br /></p><p>"আমার নাম অতসি, বয়স পয়তাল্লিশ৷ তিন সন্তানের জননী৷ বড় মেয়ের বিয়েও দিয়েছি৷ ছোট মেয়েটা টুয়েলভ দিলো এবার৷ আর সবচেয়ে ছোটটা ছেলে, ক্লাস নাইনে পড়ে৷ আমার স্বামীর বয়স সাতান্ন, বারো বছরের বড় আমার থেকে.."</p><p><br /></p><p>"বছর দুয়েক আগে আমার জরায়ুতে টিউমার ধরা পড়ে৷ টিউমারটার জন্য অপারেশন করে আমার পুরো জরায়ু ফেলে দিতে হয়৷ এরপর থেকে নানান ধরনের সমস্যা হচ্ছে আমার৷ তার মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা, বয়সের কারনেই হোক আর অপারেশনের কারনেই হোক, স্বামী-স্ত্রী র নিজস্ব সম্পর্কে আমি আর কোন আগ্রহ পাচ্ছি না৷" </p><p><br /></p><p>"এটা নিয়ে অনেক অশান্তি৷ আমার স্বামী, এ বিষয়টি বুঝতে চাইছেন না৷ আর বিষয়টি এতটাই লজ্জার আমি আমার সন্তানদের সাথেও শেয়ার করতে পারছি না .. এটা কি ওদের বলার মতো কথা! বাবা-মা মারা গেছেন আমার৷ শ্বশুর মারা গেছেন৷ আছেন এক শ্বাশুড়ি, বৃদ্ধা ... জাগতিক বোধ-বুদ্ধিশূন্য! আমি আমার এ যাতনা কাকে বলবো! আমি ডাক্তার দেখিয়েছি, এ সমস্যার নাকি সমাধান আসলেই নেই!</p><p><br /></p><p>আমার স্বামী গত পাঁচমাস আগে বিয়ে করেছে৷ ইচ্ছে করলে আমি কেস করতে পারি৷ কিন্তু, আমার নিজেকে এতটাই ক্লান্ত লাগে আমার আর কোন ঝামেলা করতে ইচ্ছে হয় না৷ আমার ছেলে মেয়েরা এখনও জানে না তাদের বাবার এই বিয়ে করার কথা৷ টাকা রেডি আছে আঁধার, আমি কি 'সুইসাইডাল বক্স' টি পেতে পারি? এত কষ্ট করেছি, মৃত্যুটা অন্তত আমার সহজ হোক..."</p><p><br /></p><p>আমি পড়লাম৷ পড়তে পড়তে আমার দুচোখ দিয়ে জল চলে আসছিলো৷ আমি আজকাল দ্রুতই ভেঙে পড়ছি৷ এভাবে আমার ভেঙে পড়লে তো চলবে না ..</p><p><br /></p><p>আমি নিজেকে শক্ত করলাম৷ একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিয়ে রিপ্লাই দিলাম ..</p><p><br /></p><p>"একটা বয়সের পর সন্তানেরা মায়ের বন্ধু হয়ে যায়৷ আপনার সন্তানেরা সেই বয়সে পৌঁছেছে৷ তাদের কাছে লজ্জার কিছু নেই৷ আপনি আপনার সন্তানদের সাথে কথা বলুন, মন খুলে৷ ওদের আপনি জন্ম দিয়েছেন৷ ওদের মতো ভালো করে আপনাকে কেউ বুঝবে না৷ আর একটা কথা, এই খবরটা এক সময় না এক সময় আপনার সন্তানদের কানে ঠিকই যাবে৷ অন্য কারও থেকে শোনার আগে আপনিই বলুন, এটাই ভালো৷ আপনার কোন ভুল নেই৷ আপনি কেন মরবেন? আর একবার আপনার সন্তানদের কথা ভাবুন ...ওদের কি হবে আপনি না থাকলে...?</p><p><br /></p><p>আপনার সমস্যার সমাধান আছে৷ আমি খুবই দুঃখিত আপনার কাছে আমি বক্সটি বিক্রি করতে পারবো না.."</p><p><br /></p><p>উনি উত্তরে বললেন, "আমি কি পারবো, লড়াই করতে..?"</p><p><br /></p><p>আমি অভয় দিয়ে বললাম, "নিশ্চয় পারবেন..."</p><p><br /></p><p>চলবে..</p><p><br /></p><p>***</p><p><br /></p><p><b>#ধারাবাহিক_গল্প #সুইসাইডাল_বক্স #৫ম_পর্ব</b></p>Ushashttp://www.blogger.com/profile/09838650528375231631noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-4370129960529033824.post-54148978079165789442023-09-16T17:56:00.000+05:302023-09-16T17:56:33.405+05:30সুইসাইডাল বক্স (পর্ব: ৪)<p> </p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjUTEnZicYJ6n3iUy5xnW-3hzlbgybwWsmtRExyWXhcRX8b1s4f1VKP9F37Qzo831Osyr6GnyQDpfifMLYY6icZdmV2_dMJvJ-IiWGHKLxZM6zQ4tPods4DPEie7WFe0a8hdi_u6YEIH-ihF6JNHUPVXsTltmQX0Ovkn9Jp947kKlUpeE23-1hiQRpL0qph/s1355/1000075197.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1355" data-original-width="738" height="320" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjUTEnZicYJ6n3iUy5xnW-3hzlbgybwWsmtRExyWXhcRX8b1s4f1VKP9F37Qzo831Osyr6GnyQDpfifMLYY6icZdmV2_dMJvJ-IiWGHKLxZM6zQ4tPods4DPEie7WFe0a8hdi_u6YEIH-ihF6JNHUPVXsTltmQX0Ovkn9Jp947kKlUpeE23-1hiQRpL0qph/s320/1000075197.jpg" width="174" /></a></div><p><br /></p><b>'সুইসাইডাল বক্স'</b><p></p><p><b>উষস চট্টোপাধ্যায় </b></p><p><b>পর্ব : ৪</b></p><p>_____________________</p><p><br /></p><p>আনোয়ারা মেয়েটা রিমার পেছনে দাঁড়িয়ে আছে৷ ভয়ার্ত গলায় সে রিমাকে বললো- </p><p><br /></p><p>—দিদি, চলো ঘরে যাই.. </p><p><br /></p><p>—তুই কীভাবে বুঝিস আমার সবকিছু বলতো? </p><p><br /></p><p>—দিদি, ঘরে গিয়ে কতা বলবো, চলো!</p><p><br /></p><p>—ভয় পাচ্ছিস কেন ? আরে আমি লাফ দেবো না </p><p><br /></p><p>—তা বেশ, চলো ঘরে যাই...</p><p><br /></p><p>—ঠিক আছে বাবা, চল ..</p><p><br /></p><p>রিমা আনোয়ারার সাথে ঘরে চলে যায়৷ রিমা বিছানায় হ্যালান দিয়ে শুয়ে পড়লো, চোখটা বন্ধ করে রিমা৷ ওর আজ খুব কথা বলতে ইচ্ছে করছে৷ আনোয়ারার সাথে কথা বলা খানিকটা দেওয়ালের সাথে বলার মতো; চুপচাপ শুনবে, কিন্তু সচরাচর কোন উত্তরই সে পাবে না! সে শুধু একটা কাজই ভালোমতো করতে পারে, তা হলো ছায়ার মতো রিমাকে ফলো করতে৷ রিমা চোখ মেলে তাকালো, আনোয়ারা সেখানে নেই৷ সে আনোয়ারা বলে ডাক দিতেই সে চলে এলো সাথে সাথেই- হাতে তার এক কাপ কড়া লিকারের চা....</p><p><br /></p><p>রিমা চা হাতে নিলো৷ হাতে নিয়ে বললো; </p><p><br /></p><p>—আনোয়ারা, বাবা তোকে বলেছে না, সারাক্ষন আমাকে ফলো করতে?</p><p><br /></p><p>আনোয়ারা চুপ করে রইলো৷ রিমার বাবা তাকে এই দায়িত্ব দেয়নি; কিছুই বলেনি, কিন্তু গতবারের ঘটনার পর আনোয়ারা নিজেই এ দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়ে নিয়েছে৷ সেবার আনোয়ারা যদি একটু সচেতন হতো তাহলে বোধহয় এমনটা হতো না!</p><p><br /></p><p>—কি রে আনোয়ারা, চুপ করে আছিস কেন? বল! বাবা কি বলেছে তোকে.. আমাকে ফলো করতে?</p><p><br /></p><p>—না তো দিদি..! </p><p><br /></p><p>—সত্যি করে বল! বাবা যদি এমনটা বলে আমার কিন্তু ভালোই লাগবে, মনে হবে মানুষটা অন্তত আমার কথা ভাবছে ..</p><p><br /></p><p>—বাপের কাছে বেটির চাইতে আপন কেউ হয় না গো দিদি..বড়দাদাবাবু আপনাকে অনেক ভালোবাসে, কিন্তু দেখায় না..</p><p><br /></p><p>—হা হা হা! আনোয়ারা, তোকে যে বিক্রি করে দিয়েছিলো বারো বছর বয়সে সে তোর বাবাই ছিলো, তাই না..? বাবা হলেই ভালো হবে, মেয়েকে ভালোবাসবে.. এ ধরনের চিন্তা করাটা হচ্ছে বুলশিট, বুঝেছিস! মানে একদম বাজে কথা...</p><p><br /></p><p>—অভাবের জন্যে এমুন করেছিলো৷ আমার আরো ভাই-বোন ছিলো, নদী ভেঙ্যে ক্ষেত-ফসল সব গেছিলো গাঙের জলে ... এতগুলো মানুষের বাঁচবার আশায় আমাকে বেচেছিলো.. </p><p><br /></p><p>—তার উপর তোর রাগ নেই? এভাবে বলছিস অভাবের জন্য বিক্রি করেছে .. সত্যিই কি রাগ নেই ?</p><p><br /></p><p>—না দিদি ... আমি তো ভালোই আছি৷ খাওয়ার কষ্ট নেই, গায়ের কাপড়ের কষ্ট নেই ... রাগ রেখ্যে কি করবো, নিজেরটা খালি বুঝলে হব্যে! ওদের কষ্টও বোঝা লাগে দিদি ...</p><p><br /></p><p>—তুই ভালো আছিস, কারন তোকে যে কিনেছিলো সে তোকে ব্রোথেলে বিক্রি না করে আমার বাবার কাছে বিক্রি করেছে! ব্রোথেল বুঝিস? নষ্ট মেয়ে মানুষদের আখড়া .. তোর কপাল ভালো বুঝেছিস! আর কিচ্ছু না ..</p><p><br /></p><p>—কপাল যদি ভালোই হয় তাইলে আর রাগ রেখ্যে লাভ কি কও!</p><p><br /></p><p>—যাক গে, তোর সাথে এসব কথা বলা অর্থহীন.. তারপরও বুঝলি আনোয়ারা, তোর বাবা আমার বাবার চেয়ে ভালো৷ তোর বাবা তোকে বিক্রি করে দিয়েছে টাকার কাছে, আর আমার বাবা আমাকে বিক্রি করেছে সময়ের কাছে ...</p><p><br /></p><p>মা মারা যাবার পর আমার কথা বলার মানুষটাও আর কেউ থাকলো না৷ কখনো কোন বন্ধু বানাতে পারিনি, সবসময় নিজেকে সংকীর্ণ লাগতো! আমি তো শুধু বাবার কাছে সময়ই চেয়েছি, বাবা কি এতোটুকুও আমাকে কখনো দিয়েছে..!</p><p><br /></p><p>তুই আর আমি তো একসাথেই বেড়ে উঠলাম এই বাড়িতে! কখনো দেখেছিস বাবাকে আমার মাথায় একটু হাত রাখতে..! আমার যখন জ্বর হতো, আমি জ্বরের ঘোরে কাঁপতাম৷ সুমিতা আন্টিকে জড়িয়ে ধরে আমি বাবাকে খুঁজতাম .. বাবা হয় বিদেশে থাকতো না হয় অফিসে! আমার পাশে ছিলো না কখনো .. সুমিতা আন্টি আমাকে মায়ের মতো ভালোবাসতো জানিস, তোকেও অনেক ভালোবাসতো তোর মনে নেই? সেই আন্টিও একদিন আসা বন্ধ করে দিলো, দিনের দিনের দিন আমি আন্টির জন্য অপেক্ষা করেছি .. অনেকদিন পর জানলাম আমাদের বাড়ির চাকরিটা আন্টি ছেড়ে দিয়েছে৷ কেন ছেড়ে দিলো চাকরিটা বলতে পারিস?</p><p><br /></p><p>আজ আমি বাবার কাছে গিয়ে বসলাম৷ বাবা যদি শুধু একবার জিজ্ঞেস করতো, "রিমা মা ভালো আছো?" আমি কতটা খুশি হতাম তোকে বোঝাতে পারবো না ... কিন্তু বাবা একবারও বললো নারে আনোয়ারা! আমার বাবা একটাবারের জন্যেও বললো না..</p><p><br /></p><p>—দিদি, মেয়্যা মানুষের ধৈয্য ধরতে লাগে অনেক.. বড়দাদাবাবু মানুষ খারাপ না৷ শুধু কাজকামের চাপ বেশি.. এর জন্যি তোমার সাথে গফসফ করতে পারে না৷ এইগুলো মনে নিয়্যা মন ভারি করে রাখল্যে চলব্যে? এরচে বিরাট বিরাট কষ্ট নিয়্যা মানুষে হাসি মুখে বেঁচ্যা থাকে গো.. ধৈয্যের গুণ বড় গুণ</p><p><br /></p><p>—ধৈর্য্য, হা হা হা! হুম ভালো বলছিস ... হা হা হা!</p><p><br /></p><p>******</p><p><br /></p><p>একটা কেস সল্ভ করার আগে আমি অন্য কেস নিতে চাই না৷ মনোযোগ ডাইভার্ট হয়ে যায়৷ কিন্তু মিতালী গোস্বামী আমার সাথে আর যোগাযোগ করছে না! হয়তো টাকাটা এখনো জোগাড় করতে পারেনি৷ তাকে অনলাইনে দেখি, কিন্তু সে আমাকে নক করে না ... চিন্তা হচ্ছিলো, ভাবলাম সব ঠিক আছে তো! নিজে থেকেই তাই 'হ্যালো' বললাম ৷ আমার হ্যালোর জবাবে তিনি লিখলেন, 'আর কটা দিন সময় লাগবে ..' আমি আর কথা বাড়ালাম না, উনিও আর কোন কিছু বললেন না৷ যাক, আমি নিশ্চিন্ত হলাম কিছুটা৷ উনি ভালো আছেন, এটুকুই যথেষ্ট, টাকা জোগাড়ের চেষ্টায় আছে, থাকুক!</p><p><br /></p><p>আজ আমি পেন্ডিং ম্যাসেজগুলো চেক করতে বসলাম৷ তিনটে নতুন ম্যাসেজ! এত মানুষ মরতে চায়.. কেন! মৃত্যুই কি তবে জগতের সব সমস্যার সমাধান? এই যে আমার তিতলী এই মৃত্যুকে সমাধান ভেবে যে চলে গেলো, ও কি জানে যে ওর চলে যাবার পর আমরা কেমন আছি? আমার মা তিতলী চলে যাবার পর থেকে একবারও হাসেনি৷ মায়ের কথা ভাবলে বড্ড অবাক হই৷ আট বছর বয়সী দুটো জমজ ছেলে-মেয়ে রেখে বাবা মারা গেলেন৷ এরপর মা ঐ স্কুলে চাকরি করেই আমাদের ভাই-বোনদুটোকে বড় করলেন৷ বাবা যখন মারা যায় তখন মায়ের আর কতই বা বয়স ছিলো! কিন্তু তারপরও উনি একটাবারও নিজের কথা ভাবেনি৷ দ্বিতীয়বার সংসার করেননি৷ শুধু আমাদের জন্য নিজের জীবনটা উৎসর্গ করে দিয়ে গেলো৷ অথচ বিনিময়ে তার একটা সন্তান তার মুখ থেকে হাসি কেড়ে নিয়ে চলে গেলো সারাজীবনের জন্য৷ মানুষটা বেঁচে আছে ঠিকই, কিন্তু এই বেঁচে থাকাকে ঠিক বেঁচে থাকা বলে কি না, আমার জানা নেই .. বাবার মৃত্যুটাও মা কে এতটা ভেঙে চুরমার করে দেয়নি যতটা দিয়েছে তিতলীর মৃত্যু৷ বাবার মৃত্যুটা ছিলো সহজ, স্বাভাবিক৷ অসুস্থ হয়েছিলেন, দীর্ঘদিন রোগে ভুগেছেন, তারপর মারা গেছেন.. কিন্তু তিতলীর মৃত্যুটা অস্বাভাবিক৷ তিতলীর বয়স ছিলো একুশ ... রোগ ছিলো না, জরা ছিলো না .. শুধু ছিলো হয়তো বুক ভর্তি গোপন অভিমান৷ আমি জানি না সে অভিমানের কারন, জানে না মা-ও ..</p><p><br /></p><p>বসার ঘরের ছবিটা এখনো আগের মতোই টাঙানো আছে৷ মা ঐ ছবি খুলতে দেয় না৷ ছবিতে আমার দাড়ি ধরে টানছে তিতলী .. আমি চিৎকার করছি আর ও খিলখিল করে হাসছে .. আমাদের দুজনেরই বয়স তখন পনেরো-ষোলো হবে.. </p><p><br /></p><p>আমাদের দুই ভাই-বোনের সম্পর্ক ছিলো বন্ধুর মতো৷ আমরা কত রাত গল্প করে পার করেছি, অথচ এত গল্পের পরেও আঁচ করতে পারিনি কি চলছে আমার বোনের বুকের গহীনে .. </p><p><br /></p><p>মানুষ কষ্ট লুকোনোর অভিনয় করতে সবচেয়ে ভালো পারে৷ একজন মানুষ সহজ স্বাভাবিক ভাবে আপনার সামনে হেঁটে বেড়াবে, আপনি বুঝতেও পারবেন না সেই মানুষটার হৃদয়ে কোন ঝড় চলছে ... অভিনয়! সবই অভিনয়! এই অভিনয় না জানলে যে সমাজে মান থাকে না, পরিবারে মুখ থাকে না৷ যে যত ভালো অভিনয় করতে পারবে, মানুষ তাকে তত বেশি সুখী ভাববে৷ আচ্ছা, কেউ যদি কষ্টে থাকে তাহলে তা প্রকাশ করতে দোষ কি! কেন করতে হবে এই লোক দেখানো মিথ্যা অভিনয়! অন্য কারো কাছে না হোক আপন মানুষগুলোকে তো বলাই যায়! আমি কি তিতলীর আপন ছিলাম না? কেন ও আমাকে ওর কষ্টের কথা বলেনি? ভালোবাসা আর বন্ধনের চেয়েও কি তবে দ্বিধার শক্তি বেশি?</p><p><br /></p><p>প্রথম ম্যাসেজটা ওপেন করলাম৷ আইডির নাম 'জোনাকির আলো'.. ফেক আইডি বোঝাই যাচ্ছে৷ ফেক আইডি থেকে আসা কেস এর আগেও সল্ভ করেছি৷ এটা আমার জন্য কোনো বড় ব্যাপার না৷ আইডির নাম যাই হোক, হোক সে পুরুষ অথবা নারী, আমার কাছে সবারই একটাই পরিচয় ..তারা সবাই তিতলী .. আমার বোন..</p><p><br /></p><p>জোনাকির আলো লিখেছে, "সুইসাইডাল বক্স কেনা হয়তো আমার হয়ে উঠবে না আঁধার৷ তবে আপনাকে আমার গল্পটা শোনাতে ইচ্ছে হলো৷ আপনি শুনে শুধু বলবেন আমি যদি আত্মহত্যা করি কারনটা কি যৌক্তিক হবে নাকি অযৌক্তিক! এর কি কোন সমাধান সম্ভব নাকি সম্ভব নয়! ... বক্স না কিনে যদি আমি গল্পটা বলতে চাই আপনি কি শুনবেন..?"</p><p><br /></p><p>আমি লিখলাম, "অবশ্যই শুনবো, আপনি বলুন.."</p><p><br /></p><p>চলবে.. </p><p><br /></p><p><b>#ধারাবাহিক_গল্প #সুইসাইডাল_বক্স #চতুর্থ_পর্ব</b></p>Ushashttp://www.blogger.com/profile/09838650528375231631noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-4370129960529033824.post-10283082008393735142023-09-10T00:17:00.007+05:302023-11-28T10:42:08.313+05:30'সুইসাইডাল বক্স' (৩য় পর্ব)<p></p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiV6maWbhZDi2JAUYtyNX9s4Dg5z9aW2Vc--2gW-3AMZ-JxJnsTU2_-Hr7Tow5NdiZBBMaFe9h10feYQ2jLEpoYeCO1axBJirqLKG2Eh38m_GN9-QdCJCoUz890UtuR-fn47MTBXLKYkd_4gfDu33Zrdb4KVzzepmtou7EwCcsJrMjTGSnfHe5dH_uIV5Jb/s1054/Screenshot_20230909-162116.jpg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1054" data-original-width="864" height="320" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiV6maWbhZDi2JAUYtyNX9s4Dg5z9aW2Vc--2gW-3AMZ-JxJnsTU2_-Hr7Tow5NdiZBBMaFe9h10feYQ2jLEpoYeCO1axBJirqLKG2Eh38m_GN9-QdCJCoUz890UtuR-fn47MTBXLKYkd_4gfDu33Zrdb4KVzzepmtou7EwCcsJrMjTGSnfHe5dH_uIV5Jb/s320/Screenshot_20230909-162116.jpg" width="262" /></a></div><br /><b>সুইসাইডাল বক্স </b><p></p><p><b>উষস চট্টোপাধ্যায় </b></p><p><b>পর্ব : ৩</b></p><p>_____________________</p><p><br /></p><p>ছ'ফুট লম্বা, ভীষণ সুদর্শন অলির সেই স্বামী লোকটির মানসিক বিকারের নাম sexual sadism disorder.. যে মুহূর্তটি আনন্দের হওয়ার কথা ছিলো লোকটি তা অলির জন্য চরম ভীতিকর মুহূর্তে পরিনত করেছিলো৷ অলি যখন আমাকে কথাগুলো বলছিলো আমি ভেতর ভেতর শিউরে উঠেছি! লোকটি রাতে ব্লেড নিয়ে শুতে যেতো৷ শারীরিক মিলনে অলিকে বাধ্য করতো.. সেই সময়ে ব্লেড দিয়ে আঁচড় দিতো ওর গায়ে৷ অলি যত যন্ত্রনায় চিৎকার করতো লোকটা তত বেশি আনন্দ পেতো, অনেকটা ব্রেন অরগাজমের মতো ব্যাপারটা৷ প্রথমবার যখন অলির সাথে দেখা করলাম, আমাকে অনেক কাঠ-খড় পোড়াতে হয়েছে৷ আমি একটা অনলাইন গেমের অপারেটর, যার উদ্দেশ্য সুইসাইডাল বক্স বিক্রি করা এটা একজন শিক্ষিত, বুদ্ধিমতী, ডাক্তার মেয়েকে বিশ্বাস করাতে আমার বেশ বেগ পেতে হয়েছে, কিন্তু বিশ্বাস না করাতে পারলে আমার সাথে ওর দেখা করাটা সম্ভব হয়ে উঠছিলো না৷ আর যে কথাগুলো চোখে চোখ মিলিয়ে সহজে বোঝানো যায় তা কিন্তু ম্যাসেঞ্জারে বা গেমের চ্যাটবক্সে টাইপ করে বোঝানোটা সম্ভব না৷ আর সুইসাইডাল বক্সের এই নাটকটা আমি কেন করি সেটাও বলি৷ "..ধরে নিন কাউকে কিছু একটা আমি করতে বারন করবো, তাতে কি হবে জানেন? তাতে তার ঐ জিনিসের প্রতি আগ্রহ বেড়ে যাবে৷ নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি আকর্ষন আমাদের সব্বারই থাকে৷" </p><p><br /></p><p>আমার ধারনা, সুইসাইড যে করতে চায় তাকে যত ভাবেই বোঝানো হোক ওটা মহাপাপ, ওটা ভালো না, ওটা কোন সমাধান নয়.....দিনের শেষে এসব কোন কথাই তাদের কানে ঢুকবে না৷ কষ্টগুলো এতটাই লাগাম ছাড়া হয় যে এসব নীতিকথা, জ্ঞানের কথা, সেই কষ্টের কাছে ভীষণ তুচ্ছ মনে হয়৷ তাই যখন এমন কাউকে আমি বলি যে, আমি তোমাদের কাছে এমন একটা কিছু বিক্রি করবো যা তোমাদের মৃত্যু সহজ করে দেবে, তখন ঐ হতাশায় ভোগা মানুষগুলো উৎসাহ পায়৷ দামটাও খুব-একটা কম রাখিনি, দশ হাজার খুব ছোট অ্যামাউন্ট নয়৷ দশ হাজার টাকা জোগাড়ের জন্য বেশিরভাগ মানুষকেই ভাবতে হয়৷ অনেক বড়লোক মানুষ যারা তাদের ব্যাপার আলাদা; কিন্তু মধ্যবিত্ত মানুষগুলো তখন মৃত্যুর চিন্তা একপাশে সরিয়ে টাকার জন্য চিন্তা শুরু করে৷ টাকার জন্য চিন্তা, টাকা জোগাড়ের উপায় খুঁজে বের করা মৃত্যুর চিন্তার চেয়েও কঠিন৷ আমি এই সময়টাকেই কাজে লাগাই৷ মরতে চাওয়া মানুষটার ঠিকুজি-কুষ্ঠি, এককথায় আদ্যপান্ত খুঁজে বের করি৷ খুঁজে বের করি মানুষগুলোর আপনজন কারা... ভালোবাসার মানুষ কারা... কে দিতে পারবে একটুখানি মমতার পরশ৷ একটুখানি মমতার পরশ আর মাথার উপর রাখা ভরসার হাত যে এমন কু-চিন্তা মুহূর্তেই উড়িয়ে দিতে পারে, আর কোনোকিছুই এ ব্যথার মলম নয়, জগতের সকল ব্যথার মলম একটুখানি ভালোবাসা ...</p><p><br /></p><p>অলি আমার সাথে দেখা করতে এলো৷ প্রথমেই অবাক হয়ে বললো "আপনি একজন ছেলে..? আমি আশা করেছিলাম মহিলা!" আমি শুধু হেসেছিলাম, আর বলেছিলাম, "আমার নাম আঁধার.." আর কিছু বলিনি৷ সবাই এমন কেন ভাবে আমি জানি না, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রথম সাক্ষাতে আমাকে এই কথাটিই বলে৷ প্রথমে ইতস্তত বোধ করছিল বোধহয়, কিছুক্ষন কথা বলার পর ও খানিকটা সহজ হলো৷ ফুলস্লিভ হাতার জামা পরে এসেছিলো অলি৷ আমাকে জামার হাতা তুলে দেখালো দগদগে নতুন ঘা..! আমি ওর ফর্সা হাতে ব্লেডের ক্ষতগুলো দেখে রীতিমতো কেঁপে উঠেছিলাম৷ আমার মাথা ঝিমঝিম করে উঠেছিলো সে সময়৷ আমি প্রসঙ্গ বদলে ওর বাবা-মায়ের কথা জানতে চাইলে অলি নির্বিকার গলায় বললো "তারা আমাকে ত্যাগ করেছে আঁধার, তাদের সামনে দাঁড়াবার সাহস আমার নেই!" এই একটা ভুল সন্তানেরা সবসময় করে৷ তারা জানে না বাবা-মা এমন মানুষ, তারা সন্তানের পাহাড়সম অপরাধ এক নিমেষে ক্ষমা করে দিতে পারে... অলি দশহাজার টাকা বের করে আমার কাছে সুইসাইড বক্সটা চাইলো৷ আমি আমার পুরোনো ট্রিকটা খাটালাম৷ পুরোদস্তুর ব্যবসায়িকের মতো গলায় বললাম, "শিপমেন্টে আটকে আছে.. আসলে এটা তো লিগ্যালি আনার উপায় নেই, চায়না-তে তৈরি হয়৷ ওখান থেকে অনেক কায়দা করে আনতে হয়, তবে সামনের সপ্তাহেই চলে আসবে৷ আপনি অর্ধেক অ্যাডভান্স করে যান৷ আমার ডিলারকেও দিতে হবে তো, এই মুহূর্তে আমার একদম হাতখালি নাহলে অ্যাডভান্স নিতাম না ..." </p><p><br /></p><p>এই অ্যাডভান্সটা আমি নিই মানুষদেরকে আরো একটু দ্বিধায় ফেলতে৷ অপরিচিত একজন মানুষকে পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে নিশ্চয়ই কেউ নিশ্চিন্তে থাকবে না৷ তার মাথায় তখন সুইসাইডের চিন্তার পাশাপাশি ঘুরবে আরেকটা চিন্তা ...টাকার চিন্তা .... এতগুলো টাকা একজন অপরিচিত মানুষকে দিলো, টাকাটা মার যাবে না তো! জিনিসটা পাবে তো! </p><p><br /></p><p>আমি অলির হসপিটাল থেকে খুঁজে বের করলাম ওর আরেকজন কাছের মানুষ ডাঃ ঋতু কে৷ ডাক্তার ঋতু-র সাহায্য নিয়ে খুঁজে বের করলাম অলির বাবা-মায়ের ঠিকানা ... </p><p><br /></p><p>আন্টি আঙ্কেলের সামনে গিয়ে অলির কথা বলতেই আঙ্কেল দৃঢ় গলায় জানালো, "এই বাড়িতে ঐ মেয়ের নাম নেওয়া নিষেধ ...তুমি চলে যাও ..." আমি আঙ্কেলের হাত ধরে ফেললাম৷ আঙ্কেলের হাত ধরে বললাম, "আঙ্কেল, আপনাদের মেয়েটা ভীষণ কষ্টে আছে... ওর স্বামী ওকে ক্ষতবিক্ষত করে ফেলছে.. আপনাদের মেয়েটা মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে আছে, সুইসাইড করবে যেকোন সময়!" পাশে দাঁড়িয়ে আন্টিও কাঁদছিলেন! এবার আঙ্কেলও ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলেন৷ তারপর তাদের বুঝিয়ে বললাম পুরো ব্যাপারটা... তাদের রাজী করালাম আমার সাথে গিয়ে অলির সাথে দেখা করতে ..</p><p><br /></p><p>অলিকে খবর দিলাম 'সুইসাইডাল বক্স' চলে এসেছে বলে৷ অলি চলে এলো নির্দিষ্ট সময়ে৷ আমি আর এবার সামনে গেলাম না, আন্টি-আঙ্কেলকে পাঠালাম ... তাদের দেখে অলি প্রথমে খানিকটা ঘাবড়ে গেলো৷ তারপর আঙ্কেল যখন জড়িয়ে ধরে কাঁদতে শুরু করলেন এক মুহূর্তের মধ্যেই যেন বরফ গলে গেলো৷ তখন আমি সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম অলির৷ তারপর অলির হাতে সেই অ্যাডভান্স হিসেবে নেওয়া পাঁচহাজার টাকা দিয়ে বললাম, "অলি, জীবনটা যতই জঘন্য হোক.. নিজের জন্য বাঁচো, বাবা-মায়ের জন্য বাঁচো ... গ্রুপ থেকে লিভ নিও৷ ঐ গ্রুপ আর তোমার দরকার নেই ... এ ব্যাপারে আর কারও সাথে, কোনও কথা বলবে না প্লিজ..." </p><p><br /></p><p>আমি চলে আসছিলাম, এমন সময় অলি দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো "আঁধার, আমি মা-বাবার একমাত্র সন্তান, কিন্তু তোমার মধ্যে আজ আমার দাদা বা ভাইকে পেলাম, ভালো থেকো..." আমার তখন মনে হলো আমার তিতলী আমাকে জড়িয়ে ধরেছে, আমার ভীষণ কান্না পেয়ে গেলো.. কিন্তু আমি কাঁদলাম না, কাঁদলে দুঃখ কমে যায়৷ আমি তো এই দুঃখ, এই শোক কখনোই কমাতে চাই না৷ এই শোক থাকুক, না হলে আমি অন্ধকারে থাকা তিতলী দের আঁধার থেকে বের করার শক্তি কোথায় পাবো! </p><p><br /></p><p>মিতালী গোস্বামী-র খোঁজ নিলাম৷ ভদ্রমহিলার সত্যিই কেউ নেই৷ নেই নিজের বলতে কেউ, কোন আপনজন৷ কেউ নেই অলির বাবা-মায়ের মতো তার হাত ধরার ... আমি এবার চিন্তায় পড়ে গেছি৷ কি করবো! </p><p><br /></p><p>অনেক ভেবে দেখলাম, যতই তার কেউ না-ই থাক, কিন্তু তার বাচ্চাটার তো মা আছে! এই মাকেই হতে হবে এতটা শক্তিশালী যেন সন্তানের ভার সে-ই নিতে পারে৷ শুধু অন্ন-বস্ত্রের জন্য যেন কারো লালসার স্বীকার হতে না হয় ঐ নিষ্পাপ বাচ্চাটাকে ...</p><p><br /></p><p>আচ্ছা, দশ হাজার টাকায় কি কোনো ব্যবসা দাঁড় করানো যায় না? নিশ্চয় যায়৷ সেটাই বরং খুঁজি৷ আত্মনির্ভরশীল হতে হবে মিতালী কে৷ হতেই হবে, হতেই হবে !</p><p><br /></p><p>****-****</p><p><br /></p><p>রিমার বাবা আজ বাড়িতে আছে, তার আজ ভালো লাগছে৷ একবার বাবার ঘরে ঢুঁ মারলো রিমা৷ মানুষটার সাথে কথা বললে ভীষণ শান্তি পায় রিমা, যদিও কথা হয় না বেশি৷ রিমার বাবা খুবই সল্পভাষী মানুষ; আজও রিমা বাবার কাছে গেলো ৷ </p><p><br /></p><p>রিমার বাবা সম্প্রতি দুটো জাহাজ কিনেছেন৷ জাহাজদুটোতে তার ইনভেষ্ট করতে হয়ে বেশ মোটা অংকের একটা টাকা৷ এ দুটো জাহাজের একটা এখন আটকা পড়েছে আটলান্টিক মহাসাগরে৷ ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তও হয়েছে অনেক৷ রিমার বাবার প্রেসার বেড়ে গেছে৷ টাকার টেনশন বড় টেনশন! তা সে যত কোটিপতি মানুষই হোক না কেন, টাকার শোক সামলানোর মতো মানসিক শক্তি সবার থাকে না ....</p><p><br /></p><p>রিমা এসে বসলো বাবার পাশে৷ ভদ্রলোক একটু বিরক্ত হলেন৷ এই মুহূর্তে আটকে পরা জাহাজের চিন্তা ছাড়া তার মাথায় অন্য কোন চিন্তা নেই .. তার কথা বলতেও ইচ্ছা করছে না, আর সবচেয়ে বড় কথা মেয়ের সাথে বলার মতো কোন কথাই খুঁজে পান না .. মেয়েটা বড় হয়ে গেছে৷ মেয়ের সাথে তার মানসিক দুরত্ব বেড়েছে ... এখন হঠাৎ কোন কথা বলতে গেলেই কেন যেন তার মনে হয় কথাটা এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে৷ বেশ গুছিয়ে তিনি অপ্রয়োজনীয় এলোমেলো কথাগুলো বলছেন৷</p><p><br /></p><p>রিমার বাবা তাই খানিকটা বিরক্ত গলায় রিমাকে বললেন "মামনি, ইফ ইউ ডোন্ট মাইন্ড, আমি একটু একলা থাকতে চাই এখন..."</p><p><br /></p><p>রিমা কথা না বাড়িয়ে বাবার ঘর থেকে বেরিয়ে এলো .... তারপর সোজা চলে গেলো ছাদে৷ ছাদে গিয়ে একদম কার্নিশ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে রিমার মনে হলো "আচ্ছা, এখান থেকে লাফ দিলে কেমন হবে? বাবা জানার পর ঠিক কি কি করবে...."</p><p><br /></p><p>কল্পনায় রিমা স্পষ্ট দেখছে, রাস্তায় উপুর হয়ে পরে আছে তার লাশ ... রক্তাক্ত.... রিমার বাবা বিরক্ত মুখে তার লাশের পাশে দাঁড়িয়ে আছে...</p><p><br /></p><p>চলবে..</p><p><br /></p><p><b>#ধারাবাহিক_গল্প #সুইসাইডাল_বক্স #৩য়_পর্ব</b></p>Ushashttp://www.blogger.com/profile/09838650528375231631noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-4370129960529033824.post-28024084710662501352023-09-02T23:45:00.004+05:302023-09-03T01:19:18.529+05:30'সুইসাইডাল বক্স' (২)<p></p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEg0K0twNLy6XRqzDuSRwtQ05mMrQneTrei4a1plJguDv2c7ycKkuxdi2jLl1qEmdsrIJaoFhlerkB-twOb-640061c11y47kFttIcgFySt-ssJSTSzXv7yRggN6hmMnrkIiPQZFd5-BT-_vaa69cX187I3-fAZZ3LvAdwpLYfJvBCUayekWKBr_aa9Njnal/s699/Lipighor_1693063920427.jpeg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="699" data-original-width="564" height="320" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEg0K0twNLy6XRqzDuSRwtQ05mMrQneTrei4a1plJguDv2c7ycKkuxdi2jLl1qEmdsrIJaoFhlerkB-twOb-640061c11y47kFttIcgFySt-ssJSTSzXv7yRggN6hmMnrkIiPQZFd5-BT-_vaa69cX187I3-fAZZ3LvAdwpLYfJvBCUayekWKBr_aa9Njnal/s320/Lipighor_1693063920427.jpeg" width="258" /></a></div><br /><p></p><p><b>'সুইসাইডাল বক্স'</b></p><p><b>উষস চট্টোপাধ্যায় </b></p><p><b>পর্ব : ২</b></p><p>_____________________</p><p><br /></p><p>গেমের একটা পর্যায় এসে নিজে থেকে চ্যাটরুম অন হয়ে যায়.. সেই সুত্রে একটা ম্যাসেজের আংশিক ছবি!</p><p><br /></p><p>— হ্যালো, আমি কি 'অন্ধকারের যাত্রি'র সাথে কথা বলছি! আমি সুইসাইডাল বক্সটি কিনতে আগ্রহী ৷</p><p><br /></p><p>—আপনার নাম?</p><p><br /></p><p>— প্রোফাইলে যেই নামটা দেওয়া আছে, মিতালী গোস্বামী৷</p><p><br /></p><p>—প্রোফাইলে তো সবার সঠিক নাম দেওয়া থাকে না, যেমন আমার নিজেরও নেই ৷ যাই হোক, আপনি অ্যানাউন্সমেন্ট পোস্টটি পড়েছেন মন দিয়ে?</p><p><br /></p><p>— আজ্ঞে হ্যাঁ, পড়েছি .. </p><p><br /></p><p>—তাহলে তো আপনি সবটাই জানেন, কি করতে হবে, আর কি করা বারণ, তাই না? </p><p>আচ্ছা বলুন তো, কি কারনে সুইসাইড করতে চান?</p><p><br /></p><p>— কারনটা কি বলতেই হবে? দেখুন আমার কাছে যেটা যৌক্তিক কারন, আপনার কাছে নাও হতে পারে৷ আর কারন বললেই যে আমি জিনিসটা পাবো তার গ্যারান্টি কি?</p><p><br /></p><p>—কোন গ্যারান্টি নেই, কারনটা আমার কাছে যৌক্তিক মনে হতে হবে৷ দেখুন, এটা আমার বিজনেস৷ সবার বিজনেসেরই কিছু রুলস থাকে, আমার রুলস এটাই৷ আপনি বলতে না চাইলে সেটা একান্তই আপনার ব্যাপার, তবে কারন না বললে আমি আপনার সাথে লেনদেন-এ যাবো না৷</p><p><br /></p><p>— হুম , বুঝতে পারছি..</p><p><br /></p><p>—বেশ, তাহলে কী ঠিক করলেন? বলতে চান নাকি চান না ..</p><p><br /></p><p>— আমার বিয়ে হয়েছে বারো বছর আগে, আমার একটা মেয়ে আছে দশ বছর বয়সের৷ </p><p><br /></p><p>—তারপর..</p><p><br /></p><p>— থাক গে, আর বলবো না! আপনাকে বিরক্ত করার জন্য সরি৷</p><p><br /></p><p>—সরির কিছু নেই দিদি৷ তবে, বলতে না চাইলে বলতে হবে না৷</p><p><br /></p><p>— আচ্ছা সুইসাইডাল বক্সে কি একসাথে দুজন ঢোকা যাবে? না মানে.. স্পেস কতটা?</p><p><br /></p><p>—আজ্ঞে... যাবে বলে মনে হয়৷ </p><p><br /></p><p>— আমার মেয়েটাকে ওর নিজের কাকা অ্যাবিউজ করছে ... দিনের পর দিন... বাচ্চাটা আমার কেঁদে কেঁদে বলে "মা, আমার ব্যথা করে, আমার খুব কষ্ট হয় .." </p><p><br /></p><p>—আপনি এই সত্যিটা জানার পরেও চুপ করে আছেন? ব্যাপারটা ঠিক বুঝলাম না!</p><p><br /></p><p>— আমি বিধবা.. আমার বাবা-মা কেউ বেঁচে নেই৷ এক ভাই আছে, সেও আমাকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে আমাদের দায়ভার সে নিতে পারবে না৷ তাই আমাকে এ বাড়িতেই থাকতে হচ্ছে৷ আমি যে কি পরিমান নিঃস্ব, সেটা আপনাকে বলে বোঝাতে পারবো না৷ এই বক্স কেনার টাকা কোথায় পাবো আমি তাও জানি না, তবে কোনো-না-কোনো উপায়ে জোগাড় করে ফেলবো৷ এই কষ্ট সহ্য করে বেঁচে থাকার চেয়ে, মা-মেয়ে মিলে মরে যাওয়াটাই সহজ৷ আমি একা হলে এই ঝামেলায় আসতাম না ... আমার মেয়েটা অলরেডি অনেক কষ্ট পেয়েছে, অন্তত মৃত্যুটা সহজ হোক ওর জন্য!</p><p><br /></p><p>—কিছু মনে না করলে আমি কি জিজ্ঞেস করতে পারি, মানে আপনি লেখাপড়া কতদূর করেছেন?</p><p><br /></p><p>— বি.এ. অনার্স পাশ করেছি, রেজাল্ট ভালো ছিলো না, থার্ড ক্লাস পেয়েছিলাম ৷</p><p><br /></p><p>—রেজাল্ট টা মূখ্য বিষয় না দিদি... আচ্ছা বাদ দিন, আপনি টাকাটা কিভাবে জোগাড় করবেন বল্লেন নাতো, আমি কিন্তু দাম কমাবো না.. ফিক্সড প্রাইস৷</p><p><br /></p><p>— এখনও ঠিক জানি না, দেখি! কিছু যদি না হয় তো স্বামীর শেষ চিহ্ন হিসেবে একটা চেন আছে সোনার, ওটাই বিক্রি করে দেবো না হয়.. </p><p><br /></p><p>—ঠিক আছে৷ আপনি টাকা জোগাড় করে আমাকে নক দেবেন, আজ রাখছি৷ </p><p><br /></p><p>— আমি তাহলে সুইসাইডাল বক্সটা পাচ্ছি তো?</p><p><br /></p><p>—এখনই কনফার্ম বলতে পারবো না, আগে ভেরিফিকেশন করতে হবে, তারপর৷ </p><p><br /></p><p>— ঠিক আছে, আমি টাকা জোগাড় করেই আবার নক দেবো না হয়! </p><p><br /></p><p>মিতালী গোস্বামী! আমার নতুন তিতলী৷ এটাও কি সম্ভব? দশ বছরের বাচ্চাকে শারিরীকভাবে নোংরা করছে তার আপন কাকা! আর কত কষ্টকর গল্প শুনতে হবে আমাকে... আমার যে ভীষণ কষ্ট হয়, বারবারই মনে হয় আমার তিতলী-র বোধহয় এরকমই কোনও এক কষ্ট ছিলো, যা আমার জানা হয়ে ওঠেনি৷ </p><p><br /></p><p>আমার হাতে সময় বেশি নেই৷ আমি জানি মিতালী গোস্বামী খুব তাড়াতাড়ি টাকার ব্যবস্থা করে ফেলবে৷ মরার জন্য টাকার জোগার করতে দেরি হবার কথা নয়৷ অন্তত আমার অভিজ্ঞতা তাই বলে৷ যদিও দশ হাজার টাকা খুব ছোট অ্যামাউন্ট ও নয়, তবু মন বলছে দু-তিন দিন লাগবে বড়ো জোর! এর মধ্যেই আমাকে আমার কাজ করতে হবে৷ </p><p><br /></p><p>******</p><p><br /></p><p>রিমার ঘুম ভাঙলো সন্ধ্যেবেলার দিকে, আকাশটাতে লালচে রঙ ধরতে শুরু করেছে৷ ঘুম থেকে উঠে দরজা খুলে দাঁড়াতেই রিমা দেখলো আনোয়ারা দাঁড়িয়ে আছে, চায়ের ট্রে হাতে করে৷ এই মেয়েটাকে মাঝে মাঝে অতিপ্রাকৃতিক ক্ষমতা সম্পন্ন মনে হয় রিমা-র৷ রিমার ঘুম ভাঙার পর কখনোই অপেক্ষা করতে হয় না, মেয়েটা গরম-গরম চা নিয়ে প্রতিদিন দাঁড়িয়ে থাকে৷ </p><p><br /></p><p>চা খেতে খেতে রিমা ফোনটা অন করলো, একগাদা নোটিফিকেশন এসেছে তাতে৷ একটা নোটিফিকেশনে চোখ আটকে গেলো রিমার৷ অলি পোস্টেড ইন দি গ্রুপ "সুইসাইডাল বক্স" .. এই অলি কে রিমা জানে না৷ তবে তার ফ্রেন্ডলিস্টে আছে৷ এই মেয়েটিই তাকে ঐ গ্রুপে ইনভিটেশন পাঠিয়েছিলো৷ ওখানে বলা ছিলো, যাদের দেখে মনে হয় সুইসাইড করতে চায় শুধু তাদেরই ইনভাইট করতে! কিন্তু রিমা অবাক হয় এই ভেবে, যে তার সোশ্যাল লাইফ দেখে তো এটা বোঝার উপায় নেই, যে সে সুইসাইড করতে চায়, এমনকি ও যে অ্যাটেম্পট নিয়েছিলো সেটাও তো পাবলিক করেনি! ফেসবুকে তো রিমা ভীষণভাবে সুখী৷ রিমা অলির পোস্ট চেক করে৷ তিন লাইনে অলি লিখেছে—</p><p><br /></p><p>"অন্ধকারের যাত্রি-কে চিনেছি বলেই আজ আলোকে চিনতে পারলাম৷ তোমাকে ধন্যবাদ বলে আসলে আমার মনের কৃতজ্ঞতাবোধ প্রকাশ করতে পারবো না, তাই সে চেষ্টাও করলাম না৷ নিয়মানুযায়ী গ্রুপ থেকে চলে যাচ্ছি, ভালো থাকবেন, নমস্কার৷"</p><p><br /></p><p>রিমা এবার একটু ঝটকা খেলো৷ 'অন্ধকারের যাত্রি' নামের ছেলে বা মেয়েটা আসলে কি এমন করেছে অলির জন্য যে অলি এতটা কৃতজ্ঞ! রিমা নিজে থেকে কখনো কাউকে নক দেয় না ইনবক্সে, এতে তার সেলিব্রিটি ইমেজটা একটু কেমন কেমন দেখায়! তবে, আজ সে নিজে থেকেই নক দিলো অলিকে.. অলি যেন জানতো রিমা নক করবে, সাথে সাথেই রিপ্লাই পেলো রিমা ওপার থেকে৷</p><p><br /></p><p>—হ্যালো, ভালো আছেন অলি?</p><p><br /></p><p>—আজ্ঞে হ্যাঁ, খুব ভালো আছি, আপনি কেমন আছেন?</p><p><br /></p><p>—ভালো, আচ্ছা.. আপনি আমাকে একটা গ্রুপে ইনভাইট করেছেন, 'সুইসাইডাল বক্স' নামের!</p><p><br /></p><p>—আজ্ঞে হ্যাঁ, আমি জানি আপনার সুইসাইডাল টেন্ডেন্সি আছে৷ আপনি বোধহয় আমার কথা ভুলে গেছেন৷ আপনার সাথে কিন্তু আমার কথা হয়েছিলো..</p><p><br /></p><p>—আসলে কিছু মনে করবেন না, আমি মনে করতে পারছি না! আর প্রোফাইলে ও কোনো ছবি নেই তো, ছবি থাকলে হয়তো চিনতে পারতাম৷ </p><p><br /></p><p>—কিছুদিন আগে আপনি ট্যাবলেট খেয়েছিলেন, তখন আপনাকে যে হসপিটালে ভর্তি করা হয়েছিলো আমি সেখানকারই ডাক্তার৷ হসপিটালে সাত দিন আমিই আপনাকে অ্যাটেন্ড করেছি৷ মনে পড়েছে এবার?</p><p><br /></p><p>—ও.. আচ্ছা আচ্ছা, মনে পড়েছে৷ সরি..সরি আমি একদম ভুলে গিয়েছিলাম৷ আচ্ছা আমাকে বলো তো গ্রুপটার ব্যাপার কী! </p><p><br /></p><p>—মাফ করবেন, গ্রুপের ব্যাপারে আলোচনা করা তো একদমই নিষেধ৷ বিশেষ করে যারা গ্রুপ থেকে বেরিয়ে চলে আসবে তাদের জন্য একেবারেই নিষেধ৷</p><p><br /></p><p>—আরে না না, কোন সমস্যা নেই, তুমি বলতে পারো, আমি কি কাউকে বলতে যাবো নাকি!</p><p><br /></p><p>—দেখো, তুমি বরং 'অন্ধকারের যাত্রি' আইডিতে ম্যাসেজ করো, যা বলার বা করার ওনারাই করে নেবেন!</p><p><br /></p><p>—ওসব পাগল ছাগলের সাথে কি আর কথা বলবো! থাক বাদ দাও, এই ইস্যু নিয়ে যথেস্ট ভেবে ফেলেছি৷ তুমি বলতে না চাইলে ইটস ওকে৷</p><p><br /></p><p>—তোমাকে আমার ভীষণ ভালো লেগেছে, যদি কখনো আবার এমনটা হয় যে তোমার মনে হচ্ছে পৃথিবীটা বড্ড অর্থহীন, তাহলে প্লিজ ঐ আই ডি টাকে নক দিও! এটা রিকুয়েস্ট৷</p><p><br /></p><p>—তুমিও কি সুইসাইড করতে চেয়েছিলে নাকি? </p><p><br /></p><p>—এসব বলা বারণ আছে রিমা! </p><p><br /></p><p>—ঠিক আছে, করুনাময় তার মঙ্গলময় হাত তোমার দিকে বাড়িয়ে দিক, ভালো থেকো অলি..</p><p><br /></p><p>—তুমিও ভালো থেকো রিমা ..</p><p><br /></p><p>রিমা-র আবার বিরক্তি লাগা শুরু হয়, অযথাই মেয়েটাকে নক করতে গেছে সে! </p><p><br /></p><p>**********</p><p><br /></p><p>মিতালী গোস্বামী-র খোঁজ খবর বের করা খুব একটা কঠিন হলো না৷ আমি বরং এর চেয়েও ঝামেলা করে এর আগের ক'য়েকটা কেসের খোঁজ বের করেছি৷ যেমন আমার লাস্ট কেস অলি, কম হয়রানি হয়নি ওর ডিটেলস বের করতে৷ অলিকে যে শেষ পর্যন্ত ফেরাতে পারবো এটা আমার নিজেরই বিশ্বাস হচ্ছিলো না! এর চাইতে মিতালী-র কেস সহজ হবার কথা!</p><p><br /></p><p>অলির কথা মনে হলে আমার গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে৷ মেয়েটার সর্বনাশ করেছিলো তাকে ভালোবাসি বলা মানুষটাই৷ বাবা ছেড়ে যার হাত ধরে ঘর ছেড়েছিলো, সেই মানুষটি পেশায় একজন ডাক্তার অলির মতোই৷ একই হসপিটালে কর্মরত ছিলো দুজনে৷ অলির সেই ডাক্তার স্বামীটি এর আগেও বিবাহিত ছিলো৷ ডিভোর্স হয়ে গিয়েছিলো দুজনের৷ এরপরই অলি আসে তার জীবনে৷ মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে অলি৷ তার ডাক্তার হবার পথ অতোটা মসৃন ছিলো না, শুধুমাত্র বাবা-মায়ের অক্লান্ত পরিশ্রমে অর্জিত অর্থ আর নিজের অসম্ভব রকমের মেধা অলিকে ডাক্তার বানিয়েছিলো৷ সেই অলি বাবা-মায়ের অবাধ্য হয়ে, ভালোবেসে ঘর ছেড়েছিলো সেই আরেক ডাক্তারের সাথে৷ ঘর ছাড়বার আগে অলির মা শুধু একটা কথাই অলিকে বলেছিলো "যার বউ ছেড়ে গেছে, কোন না কোন কারনেই তো গেছে! ভালোমতো খোঁজ না নিয়ে তুমি তার জন্য পাগল হয়ো না..." </p><p><br /></p><p>অলির তখন পাগল হবার সময়ই ছিলো৷ আমি অন্ধকারের যাত্রি হয়ে যখন শুনেছি অলির গোপনগাথা, তখন শিউরে উঠেছি ভিতরে ভিতরে ... কী নিদারুণ, কী ভয়ানক! আবার নতুন করে বুঝেছি, বাবা-মা যা বলে ভালোর জন্যই বলে, পৃথিবীতে বাবা-মার চেয়ে আপন আর কেউ নয়৷ </p><p><br /></p><p>অলির স্বামীটি ছিলো একজন অসুস্থ মানসিকতার এক রোগী! ডাক্তারের সাদা অ্যাপ্রনের তলায় তার ছিলো একটা কুৎসিত, কালো, কলুষিত মন... মাথায় ছিলো বিকার! ভয়ানক! ভয়ানক সেই বিকার ...</p><p><br /></p><p>চলবে...</p><p><br /></p><p><b>#ধারাবাহিক_গল্প #সুইসাইডাল_বক্স #২য়_পর্ব</b> </p>Ushashttp://www.blogger.com/profile/09838650528375231631noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-4370129960529033824.post-69827286737671992012023-08-26T21:53:00.004+05:302023-08-26T21:53:52.125+05:30"সুইসাইডাল বক্স"..<p> </p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjsov1_0GPfZvBrX72Det-6Q6HEk5LfzuiSbU7R_A3NTXWmO14XxHgtUGE6hDKOjCDTf2clfGAFm8-ylax2iq9XAKbDbXaV0RxJd_RBSJT51-HF1ePuNGMmzlLK7CYWGVurVtgEfOuDsnsXAbMqXa_hpYmDoaBp9aQoxMWXf5QpErfcdGTJl6_yehziOFMO/s699/Lipighor_1693063920427.jpeg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="699" data-original-width="564" height="320" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjsov1_0GPfZvBrX72Det-6Q6HEk5LfzuiSbU7R_A3NTXWmO14XxHgtUGE6hDKOjCDTf2clfGAFm8-ylax2iq9XAKbDbXaV0RxJd_RBSJT51-HF1ePuNGMmzlLK7CYWGVurVtgEfOuDsnsXAbMqXa_hpYmDoaBp9aQoxMWXf5QpErfcdGTJl6_yehziOFMO/s320/Lipighor_1693063920427.jpeg" width="258" /></a></div><br /><p></p><p>'<b>সুইসাইডাল বক্স'</b></p><p><b>উষস চট্টোপাধ্যায় </b></p><p><b>পর্ব : ১</b></p><p>_____________________</p><p><br /></p><p>তিতলী সুইসাইড করেছে, ওর নিথর দেহটা ফ্যান থেকে ঝুলছে৷ আমার মা পাশের ঘরে অজ্ঞান হয়ে শুয়ে আছে৷ একটু পরপর থেকে-থেকেই মায়ের জ্ঞান ফিরছে আর মা চিৎকার করে কেঁদে উঠছে.."ও রে, ও তিতলী রে ...মা রে, আমার মনা.." </p><p><br /></p><p>লোকজনে আর পুলিশে বাড়ি ভর্তি৷ তিতলীর শরীরটা তারা নামিয়ে ফেলেছে৷ প্লাস্টিকে মুড়ে সেই শরীরটা তারা নিয়ে চলে যাচ্ছে, অ্যাম্বুলেন্সে করে৷ মোড়কের বাইরে থেকে তিতলীর পা দুটো দেখা যাচ্ছে .... তিতলী, আমার যমজ ছোট বোন! আমার দশ মিনিট পরে যার জন্ম হয়েছিলো৷ মায়ের গর্ভে আমরা একসাথেই বেড়ে উঠেছিলাম, অথচ আজ তিতলী আমার আগেই কেমন যেন স্বার্থপরের মতো আমাকে একলা করে দিয়ে চলে গেল৷ আমার চোখে জল নেই৷ আমি যেন কান্নাশূন্য এক মানুষে পরিণত হয়েছি৷ বাবা আগে চলে গিয়ে ভালোই করেছে, নয়তো মায়ের মতোই আজকের দিনটা তাকেও সহ্য করতে হতো ...</p><p><br /></p><p>*********</p><p><br /></p><p>সারারাত ঘুমোয়নি রিমা৷ খাটের পাশের ইজি-চেয়ারটাতে বসে ফেসবুক স্ক্রল করছিলো সে৷ ফেসবুকে তার ফ্যান ফলোয়ারের অভাব নেই৷ অপরূপা রিমা মাঝে মধ্যে লাইন চারেকের কবিতা লেখে, ধারাবাহিক গল্প লেখে৷ অবশ্য তার ফলোয়াররা সে সব গল্প-কবিতার কতটুকু বোঝে রিমা নিজেও সে ব্যাপারে সন্দিহান৷ তার ফেসবুক সেলিব্রিটি হবার মূল কারন তার চেহারা৷ রিমা নিজের মনেই হাসে৷ ফ্রেন্ডলিস্টে পাঁচ হাজারের কোটা তার অনেক আগেই পূর্ন হয়েছে৷ এই পাঁচ হাজারের মধ্যে পাঁচশ জনকেও সে চেনে কিনা সন্দেহ৷ তাতে কি, এই ফেসবুকের লাইফটা তার ভালো লাগে৷ পরপর তিনবার সুইসাইড অ্যাটেম্প্ট নেওয়া রিমা ফেসবুকে বেশ হাসিখুশি ৷ </p><p><br /></p><p>ভাবনার বেড়াজাল কাটে ফোনের 'টুং' আওয়াজে৷ নোটিফিকেশন এসেছে ফেসবুকে৷ রিমা নোটিফিকেশন চেক করে দেখে অলি ইনভাইটেড ইউ টু দ্য গ্রুপ- "সুইসাইডাল বক্স" .... </p><p><br /></p><p>প্রতিদিন এমন হাজারও গ্রুপের ইনভিটেশন আসে৷ আজকাল গ্রুপের তো আর অভাব নেই৷ রিমা এ ধরনের নোটিফিকেশন দেখেও দেখে না, কিন্তু আজকে গ্রুপটার নাম দেখেই তার কেমন যেন আগ্রহ জাগলো৷ সে গ্রুপটার জয়েন রিকুয়েস্ট একসেপ্ট করে ফেললো৷ তারপর রাত জাগা ক্লান্তি এক পাশে রেখে স্ক্রল করতে থাকলো গ্রুপের হোম পেজ ...</p><p><br /></p><p>সিক্রেট গ্রুপ, এমন নামের গ্রুপ সিক্রেট হবে এটাই স্বাভাবিক৷ গ্রুপ ডেসক্রিপশনে ছোট্ট করে লেখা আছে, "যারা আত্মহত্যা করতে চান, শুধু তারাই যোগাযোগ করবেন৷" ব্যস এটুকুই... আর কিছু না ! </p><p><br /></p><p>রিমা অ্যানাউন্সমেন্ট পোস্টগুলো দেখতে থাকে৷ গ্রুপের ফাউন্ডার এডমিনের নাম 'অন্ধকারের যাত্রি'... একটা মুখোশের ছবি দেওয়া প্রোফাইল পিকচার হিসেবে৷ রিমা আগ্রহী হয়ে আইডিটাতে ঢোকে৷ আইডিতে কিচ্ছু নেই৷ কোনও ইনফরমেশনই নেই৷ এমনকি মেল না ফিমেল সেটাও দেওয়া নেই৷ তারওপর আইডিটা লক করা! রিমা খানিকটা বিরক্ত হয়ে 'অন্ধকারের যাত্রি' আইডি থেকে বের হয়ে এলো৷ গ্রুপ থেকে লিভ নিতে গিয়েও অ্যানাউন্সমেন্ট পোস্টটা আবার মনোযোগ দিয়ে পড়তে শুরু করলো৷ সেখানে বিশদ ভাবেই লেখা আছে গ্রুপের উদ্দেশ্য কি! ওখানে লেখা—</p><p><br /></p><p>"সুইসাইড করার জন্য যারা সবচেয়ে সহজ এবং কম কষ্টের, ঝুকিহীন কিছু পন্থা খুঁজছেন তাদের সাদরে আমন্ত্রন৷ উন্নত টেকনোলজি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে 'সুইসাইডাল বক্স'৷ এটি একটি চারকোনা ঘর সদৃশ বস্তু যা সহযেই ভাঁজ করে বহন করা যায় সুটকেসের মতো৷ বক্সটি রূপান্তরিত হয় একটি ব্যুথে, সেখানে আছে একটি গ্যাস চেম্বার, সুইচ অন করলে সেখান থেকে নির্গত হবে বিষাক্ত গ্যাস, যা মাত্র চার-পাঁচ মিনিটে আপনার মৃত্যু নিশ্চিত করবে৷ এই মৃত্যু হবে যন্ত্রনাহীন, কিছু বুঝে উঠার আগেই আপনার এপারের যাত্রা সাঙ্গ হবে৷ বক্সের মূল্য মাত্র দশ হাজার টাকা, কোন বার্গেনিং করা যাবে না৷ তবে শুধুমাত্র টাকা দিলেই যে আপনি এই বক্সের মালিক হবেন এমনটা ভাবলে ভুল করছেন৷ এজন্য অবশ্যই আপনাকে নিচের সবগুলো শর্ত পূরন করতে হবে৷ শর্তগুলো হলো;</p><p><br /></p><p>১. প্রথমেই ম্যাসেজে বলতে হবে আপনি কেন সুইসাইড করতে চান৷ আমাদের যদি মনে হয় আপনার সুইসাইডের কারন যথেষ্ট যৌক্তিক, তাহলেই আপনার কাছে সুইসাইডাল বক্সটি বিক্রয় করা হবে, নচেৎ নয়৷</p><p><br /></p><p>২. আপনার বয়স আঠারো প্লাস হতে হবে৷</p><p><br /></p><p>৩. আপনার সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য সঠিকভাবে দিতে হবে৷ এসব তথ্য ভেরিফিকেশন করে যদি মনে হয় ভুল তথ্য দিয়েছেন তাহলে আপনার কাছে 'সুইসাইডাল বক্স' বিক্রয় করা হবে না৷</p><p><br /></p><p>৪. শুধুমাত্র নিজের জন্যই কিনতে পারবেন, অন্য কারও জন্য নয়৷ </p><p><br /></p><p>৫. এ বিষয়ে সকল তথ্য গোপন রাখতে হবে৷ </p><p><br /></p><p>৬. একান্ত পরিচিত যাকে মনে হয় সে আসলেই সুইসাইড করতে চায় শুধু তাকেই গ্রুপে অ্যাড করতে পারবেন, নচেৎ চিরতরে ব্যান করা হবে গ্রুপ থেকে৷</p><p><br /></p><p>৭. অযথা প্রয়োজন ছাড়া অ্যাডমিন আইডিতে ম্যাসেজ করতে পারবেন না, এবং কোন পোস্টও দিতে পারবেন না, প্রয়োজনেই শুধু পারবেন৷</p><p><br /></p><p>রিমা ধৈর্য্য ধরে পোস্টটি পড়লো৷ তারপর নিজে নিজেই বলে উঠলো "পাগল-ছাগলে দেশ ভরে গেছে ... সুইসাইড বক্স নাকি!... এগুলো মানুষে বেচে? পাগলা কোথাকার, খেয়ে-দেয়ে কাজ নেই আর, যত্তসব!..."</p><p><br /></p><p>ফেসবুক থেকে বেরিয়ে সকালের মিষ্টি আলোয় ব্যালকনিতে গিয়ে কয়েকটা সেলফি তুলে ফেলে রিমা৷ এ আলোতে ছবি ভীষণ সুন্দর হয়৷ গায়ের রং থেকে যেন আলো ঠিকরে বের হয়৷ তারপর সেলফিগুলো এডিট করে আরও একটু সুন্দর করে সাজিয়ে পোস্ট করে নিজের প্রোফাইলে ... ছোট্ট একটা ক্যাপশন জুড়ে দেয় তার সাথে! </p><p><br /></p><p>"সুপ্রভাত সুহৃদগন.."</p><p><br /></p><p>মুহূর্তেই লাইক, কমেন্ট আর রিয়্যাক্টে ভরে যায় সেই পোস্ট৷ দশ মিনিটে লাইক, কমেন্ট এক হাজার ছাড়িয়ে যায়৷ রিমা নিজের মনেই হাসে ... হেসে হেসেই আবার বলে "পাগল-ছাগলে দেশ ভরে গেছে.. এই পোস্টে এত লাইক কমেন্টের কি আছে ...পাগলের দল সব ...চিকিৎসার দরকার সবার.."</p><p><br /></p><p>দরজায় নক করছে কেউ৷ রিমা জানে আনোয়ারা বেগম নক করছে৷ বিরক্তি নিয়ে বারান্দা থেকে উঠে গিয়ে দরজা খোলে সে৷ হাতে ট্রে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আনোয়ারা, সে জানে তার দিদি সকালে জলখাবার করেই ঘুমোয়; তাই যতটা দ্রুত সম্ভব খাবার তৈরি করে, মানুষটা যত তাড়াতাড়ি খাবে তত তাড়াতাড়ি ঘুমোবে৷ একটা মানুষ কিভাবে সারারাত জেগে থাকে আনোয়ারা-র মাথায় ঢোকে না !</p><p><br /></p><p>রিমা চুপচাপ সুবোধ বালিকার মতো জলখাবার খেয়ে নেয়৷ তারপর কড়া ডোজের সিডেটিভ খেয়ে বিছানায় শুতে যায়৷ সারারাত বিছানাটা ফাঁকা পড়ে ছিলো৷ কড়া সিডেটিভেও রিমার ঘুম আসতে চায় না৷ জোর করে, চোখ বন্ধ করে ঘুমাবার চেষ্টা করে সে ..</p><p><br /></p><p>রিমার বাবা অমল মজুমদার, এ শহরের সবচেয়ে বড় ব্যবসায়ীদের একজন৷ রিমার মা মারা গেছেন অনেক আগেই৷ ভদ্রলোক মেয়ের কথা ভেবেই হয়তো আর দ্বিতীয়বার বিয়ে করেননি৷ অবশ্য রিমার ধারনা তার বাবা বিয়ে করেননি সময় পাননি বলে৷ ভদ্রলোক সারাদিন ভীষন ব্যস্ত থাকেন৷ মেয়ের সাথে তার দেখা হয় সপ্তাহে একদিন, রবিবার৷ ঐদিন তার বাবা অফিসে যান না, সারাদিন নিজের ঘরেই থাকেন৷ রিমার সাথে তার তেমন বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্ক না, তবুও রবিবার রিমার মন ভালো থাকে৷ বাবা বাড়িতে আছে এই বোধটুকুও স্বস্তির ....</p><p><br /></p><p>সিডেটিভ কাজ করতে শুরু করেছে৷ রিমা ঘুমিয়ে পড়ছে অতি দ্রুত৷ তার চিন্তাগুলো এখন কেমন যেন জড়িয়ে যাচ্ছে৷ তার মনে হচ্ছে সে যেন কোন একটা নৌকায় ... মাঝ নদীতে মাঝিহীন সেই নৌকা দুলছে, সেই দুলুনি যেন ছোটবেলার দোলনার মতো৷ ধীরে ধীরে সে ঘুমিয়ে পড়ে, গভীর শব্দহীন এক অতল ঘুমে...</p><p><br /></p><p>**********</p><p><br /></p><p>তিতলী মারা যাবার কিছুদিন পরেই আমি 'অন্ধকারের যাত্রি' নামের আইডিটা খুলেছিলাম৷ কেন খুলেছিলাম জানি না৷ দুবছর হয়ে গেছে তিতলী আমাদের মাঝে নেই৷ আমার যমজ বোন, আমার দশ মিনিট পরে যার জন্ম হয়েছিলো দু'বছর আগে আমাকে ছেড়ে চলে গেছে৷ ঐ আইডিটার সুবাদে গত দুই বছরে আমি এমন অনেক তিতলী-র সন্ধান পেয়েছি যারা সবাই মরতে চায়৷ মৃত্যু কতটা সহজ শব্দ তাদের কাছে৷ আমি মনোযোগ দিয়ে তাদের কথাগুলো শুনি৷ আমার তিতলী-র কথাগুলো আমার শোনা হয়ে ওঠেনি, আমি জানিনা কোন কষ্ট বুকে নিয়ে আমার বোনটা চলে গেলো, তবে আঁধার জানে আঁধারে থাকা হাজার খানেক তিতলীদের গল্প৷ আমার গ্রুপ "সুইসাইডাল বক্স" জানে তিতলীদের গোপন গাথা৷ 'অন্ধকারের যাত্রি' হয়ে আমি মেয়েদের আঁধারের গল্প শুনি৷ মাঝে মধ্যে কেঁপে উঠে ভাবি পৃথিবী কি সত্যিই এতটা ভয়াবহ! মাঝে মধ্যে অবাক হয়ে ভাবি মৃত্যুর জন্য এত ক্ষুদ্র কারনও কি যথেষ্ট? </p><p><br /></p><p>ম্যাসেঞ্জারে 'টুং' করে শব্দ হলো৷ আবার কেউ 'অন্ধকারের যাত্রি' কে ম্যাসেজ করেছে ....</p><p><br /></p><p>চলবে .....</p><p><br /></p><p><b>#ধারাবাহিক_গল্প #থ্রিলার #সুইসাইডাল_বক্স</b></p>Ushashttp://www.blogger.com/profile/09838650528375231631noreply@blogger.com2tag:blogger.com,1999:blog-4370129960529033824.post-35135627802310208672023-06-26T20:10:00.000+05:302023-06-26T20:10:07.125+05:30Some Quotes, Every Parent Should Read Quite Often!<p> </p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgAOtFIdf3088Vwa4ocYehzB5inWH3TNxDs3cRx6K5JZih2v1ex83CXfXp2yjZJgLpUASAFMf1sVmF1UtmP0dIThCMGn8g_tBwrbp9Jzsgs8VKAkx4L1cD44rp4yuimdcKZnGL-XogpHIiEBiAlcjSl7_2xICun-vnyG68WadUPrF8OxinKDlyxThWJb6oJ/s1104/54c4ce9ea25e42e4c0cd28e8153278c6.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1104" data-original-width="736" height="320" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgAOtFIdf3088Vwa4ocYehzB5inWH3TNxDs3cRx6K5JZih2v1ex83CXfXp2yjZJgLpUASAFMf1sVmF1UtmP0dIThCMGn8g_tBwrbp9Jzsgs8VKAkx4L1cD44rp4yuimdcKZnGL-XogpHIiEBiAlcjSl7_2xICun-vnyG68WadUPrF8OxinKDlyxThWJb6oJ/s320/54c4ce9ea25e42e4c0cd28e8153278c6.jpg" width="213" /></a></div><p></p><p>Perhaps it takes courage to raise children…</p><p><br /></p><p>Our youth can’t possibly know how age thinks and feels. And likewise, as we age we are often guilty of being so busy-brained that we forget what it was like to be young. Spending time with my young son helps me tap into my younger mind — he keeps me on my toes. For that I am grateful, but I still struggle as a parent. I struggle to be present. I struggle to be patient. I struggle to remember. Almost every single day.</p><p><br /></p><p>Truth be told, every parent battles with parenthood in their own way. Because parenting is not easy.</p><p><br /></p><p>What helps me is journaling about the lessons parenthood is gradually teaching me, and then referring back to what I’ve learned when I’m struggling and forgetful.</p><p><br /></p><p>Today, I want to share some quotes from my parenting journal with you. Perhaps they will assist you someday, the way they have assisted me again this morning…</p><p><br /></p><p>• Trust yourself. You know far more than you think you do.</p><p><br /></p><p>• Parenting is unquestionably one of the hardest things you’ll ever do, but in exchange it teaches you about the meaning and power of unconditional love.</p><p><br /></p><p>• Everything involving your children will be painful in some way. The emotions are deep, whether they are happiness, heartache, love or pride. And in the end they will leave you vulnerable, exposed, and yes, in pain. The human heart was not meant to beat outside the human body, and yet you will find that your children carry with them just this kind of surreal phenomena — a loving, emotionally attached parent (YOU), with your heart exposed and beating forever outside of your chest. Breathe… It’s OK.</p><p><br /></p><p>• No one is ever quite ready — every parent is caught off guard, again and again. Parenthood chooses you every day, not the other way around. And perhaps a week in, a month in, or even a year in, you open your eyes, look at what you’ve got, say “Oh, my goodness,” and suddenly awake to the fact that of all the things there ever were to juggle, this is the one you should not drop. It’s not a question of choice. It’s a presence of love.</p><p><br /></p><p>• The nature of being a parent seems thankless sometimes, until you realize and embrace the fact that you are choosing to love your children far more than you have ever loved anyone before them, even more than you love your own parents. And, within this realization that your own children can’t possibly understand the depth of your love, you come to understand the tragic and yet immensely beautiful, unrequited, unconditional love your own parents have for you.</p><p><br /></p><p>• Being a parent is a daily attitude, not a biological relation.</p><p><br /></p><p>• To be in your children’s memories tomorrow, you have to make time to be in their lives today. Every day of our lives we make deposits in the memory banks of our children. The more present we are, the more deposits we get to make.</p><p><br /></p><p>• When you take the time to open your mind and ears, and actually listen with humility to what people have to say, it’s amazing what you can learn. This is especially true if the people who are doing the talking also happen to be your children. </p><p><br /></p><p>• Your children are the greatest gift life will give you, and their souls the heaviest responsibility it will place in your hands. Take time with them, and teach them to have faith in themselves by being a person they can have faith in — a person who listens — a person they can trust without question. When you are old, nothing else you’ve done will have mattered as much.</p><p><br /></p><p>• Walk the talk. Children have never been perfect at listening to their parents, but they have never failed to imitate them in some way.</p><p><br /></p><p>• Your children need you to love them for who they are, not spend all your time trying to fix them.</p><p><br /></p><p>• Children must be taught how to think, not what to think.</p><p><br /></p><p>• Parents can only guide by example and put their offspring on the right path, but the final forming of a person’s character and life story lies in their own hands.</p><p><br /></p><p>• All details aside, if you have never been “hated” by your kid for a short time, you have never truly been a parent. A harsh truth, I know.</p><p><br /></p><p>• It’s absolutely impossible to protect your children against disappointment in life. Some things you just have to live through to learn.</p><p><br /></p><p>• One of the best things you can do for your children as they grow is to let go and allow them to do things for themselves, allow them to be strong and responsible, allow them the freedom to experience things on their own terms, allow them to take the bus or the train and learn from life firsthand — allow them to be better people, allow them to believe more in themselves and do more by themselves. </p><p><br /></p><p>• No matter how great of a job you do parenting — especially if you truly do it right — your children won’t stay with you. They will eventually break away. It’s the one job in life, where the better you do, the more rapidly and surely you won’t be needed as often in the long run.</p><p><br /></p><p>Afterthoughts</p><p>I want to end this post with a famous quote by Walt Disney that I’ve always loved:</p><p><br /></p><p>“Children are people, and they should have to reach, to learn about things, to understand things, just as adults have to reach if they want to grow in mental stature. Life is composed of lights and shadows, and we would be untruthful, insincere, and saccharine if we tried to pretend there were no shadows. Most things are good, and they are the strongest things; but there are evil things too, and you are not doing a child a favor by trying to shield him or her from reality. The important thing is to teach a child that good can always triumph over evil.”</p><p><br /></p><p>Now, it’s your turn…</p><p>I would love to hear from YOU before you go.</p><p><br /></p><p>Please leave me a comment below to let me know what you think of this post and its advice.</p><p><br /></p><p><br /></p><p>Did you have a favorite quote or point? Anything else to share about parenting?</p><p><br /></p><p>Your feedback is truly important to me, cheers! </p><p><br /></p><p>~Ushas ©</p><p><br /></p><p>#Parenthood #Motivation #Mindcoach</p>Ushashttp://www.blogger.com/profile/09838650528375231631noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-4370129960529033824.post-45216006298432021342023-04-21T21:10:00.001+05:302023-04-22T00:18:38.163+05:30How in different language say "When Pigs Fly."<p> <b><span style="font-size: large;">How different languages say “When Pigs Fly.”</span></b></p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><br /></div><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhzxxG3bJv5oix4VGwn9wbhesAJUl24jSkqnaQ7E-3nG2N1u4XPbfoUgXDlVYLp8Te9DYkSl_-OkQx780XuMI137FMIgjp0c4jzmCWyxbT4ldYFekF5BHM8R9ufSnbZ_TMigrChxzKFrpbWAqllI_7VT8C1MtL-Cv3J7siMS6UTnj0C729iMxACg8dhmw/s1176/FB_IMG_1682090976340.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1176" data-original-width="1080" height="320" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhzxxG3bJv5oix4VGwn9wbhesAJUl24jSkqnaQ7E-3nG2N1u4XPbfoUgXDlVYLp8Te9DYkSl_-OkQx780XuMI137FMIgjp0c4jzmCWyxbT4ldYFekF5BHM8R9ufSnbZ_TMigrChxzKFrpbWAqllI_7VT8C1MtL-Cv3J7siMS6UTnj0C729iMxACg8dhmw/s320/FB_IMG_1682090976340.jpg" width="294" /></a></div>Language diversity makes languages fun and interesting. It shows the varied potential of human genius and imagination. Imagine how much fun we would have been robbed of if we had only one language! Having different ways to say something across cultures is a great source of joy and fascination. I always ask my tremendously diverse community on Facebook about how they say stuff in their own languages and the results never stop to fascinate us. Down below is our latest thread of how different languages say “when pigs fly”, i.e. it will never happen. We hope you enjoy what you’re about to read...<p></p><p><br /></p><p><br /></p><p>Welsh:</p><p>When Christmas will be in the summer and goosberries in winter.</p><p><br /></p><p>Turkish:</p><p>When a fish climbs a poplar tree.</p><p><br /></p><p>Ukrainian:</p><p>When the crayfish on the hill whistles.</p><p><br /></p><p>Portuguese:</p><p>On Saint Never’s day.</p><p><br /></p><p>Tai:</p><p>When 7-11 closes.</p><p><br /></p><p>German:</p><p>When Easter and Whistun fall on the same day.</p><p><br /></p><p>On Saint Never’s day / on Saint Never.</p><p><br /></p><p>When Hell freezes over.</p><p><br /></p><p>When it snows in summer.</p><p><br /></p><p>I’ve seen horses puke before.</p><p><br /></p><p>On poodle’s Whitsunday.</p><p><br /></p><p>Serbian:</p><p>When grapes grow on willows.</p><p><br /></p><p>Chinese:</p><p>When the sun would rise from the West.</p><p><br /></p><p>Croatian:</p><p>When grapes rippen the on willow.</p><p><br /></p><p>On St. Nobody’s day.</p><p><br /></p><p>Polish:</p><p>When a cactus grows on my hand.</p><p><br /></p><p>Tagalog:</p><p>When the crow turns white.</p><p><br /></p><p>Finnish:</p><p>When hell freezes over.</p><p><br /></p><p>When cows fly.</p><p><br /></p><p>When flagpoles bloom.</p><p><br /></p><p>Danish:</p><p>When there’s two Thursdays in a week.</p><p><br /></p><p>Swedish:</p><p>When hell freezes over.</p><p><br /></p><p>When pigs fly.</p><p><br /></p><p>When the asphalt blossoms.</p><p><br /></p><p>Spanish:</p><p>When frogs grow hair.</p><p><br /></p><p>When it rains upwards.</p><p><br /></p><p><br /></p><p>Slovenian:</p><p>On Saint Never’s Day.</p><p><br /></p><p>Russian:</p><p>When the crayfish on the hill whistles.</p><p><br /></p><p>French:</p><p>When chickens grow teeth.</p><p><br /></p><p>In the week with 4 Thursdays.</p><p><br /></p><p>On Saint Glinglin’s day (an imaginary saint).</p><p><br /></p><p>Scots:</p><p>When two moons in the sky shall shine.</p><p><br /></p><p>Italian:</p><p>When donkeys fly.</p><p><br /></p><p>When Easter falls in May.</p><p><br /></p><p>In the year of never and the month of then.</p><p><br /></p><p>In the week with two thursdays.</p><p><br /></p><p>When hens piss.</p><p><br /></p><p><br /></p><p>Hungarian:</p><p>When it’s snowing red snowflakes.</p><p><br /></p><p>When Hell freezes over.</p><p><br /></p><p>Romanian:</p><p>when I see the back of my head.</p><p><br /></p><p>English:</p><p>When pigs fly / and pigs might fly.</p><p><br /></p><p>When hell freezes over.</p><p><br /></p><p>On a cold day in hell.</p><p><br /></p><p>Not in a month of Sundays.</p><p><br /></p><p>Occitan:</p><p>When hens pee.</p><p><br /></p><p>Irish:</p><p>When the sky falls to the ground.</p><p><br /></p><p><br /></p><p>Norwegian:</p><p>When it’s snowing in hell.</p><p><br /></p><p>Latvian:</p><p>When the owl’s tail blossoms.</p><p><br /></p><p>Moroccan:</p><p>When a goat flies.</p><p><br /></p><p>Korean:</p><p>The sound of a ghost eating rice seeds.</p><p><br /></p><p>Hindi:</p><p>When the sun rises in the west.</p><p><br /></p><p>Bengali:</p><p>যখন সুর্য পশ্চিমে উদয় হয়/When rise up in the West</p><p><br /></p><p>Dutch:</p><p>If the calves dance on ice.</p><p><br /></p><p>If the owls preach.</p><p><br /></p><p>Danish:</p><p>When there’s two Thursdays in a week.</p><p><br /></p><p>Bosnian:</p><p>When grapes rippen on the willow.</p><p><br /></p><p>Algerian:</p><p>When salt produces flowers.</p><p><br /></p><p>Greek:</p><p>When the sun rises from the west.</p><p><br /></p><p>When the earth stops turning.</p><p><br /></p><p>Brazilian Portuguese:</p><p>When cows cough.</p><p><br /></p><p>There's lot of things to learn through fun, keep following for more, cheers!</p>Ushashttp://www.blogger.com/profile/09838650528375231631noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-4370129960529033824.post-73926155351770554812022-10-24T11:56:00.001+05:302022-10-24T11:56:40.463+05:30দিওয়ালির বোনাস...<div>সবাইকে দীপাবলির শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে আজকের সকালে আমার এই গল্পটা দিলাম, পড়ে দেখুন, ভালো লাগবে আশা করি! </div><div><br /></div><div>জানাতে ভুলবেন না, কেমন লাগল 🙏🏼🙂</div><div><br /></div><div>***********************************</div><div><br /></div><div>এগারো হাজার নশো, এই নিয়ে বার তিনেক গুনলাম। আমি জানতাম এখানে এগারো হাজার নশো টাকাই আছে। তারপরও পর পর দুইবার আবারো গুনলাম। আরও দুই হাজার টাকা লাগবে। অফিসে এসেই অয়ন স্যারের কাছে গেলাম, যদিও আগের পাঁচ'শ টাকা এখনো শোধ করা হয়নি। তারপরও গিয়ে বললাম, 'স্যার হাজার দুয়েক টাকা লাগতো! প্রতি মাসে পাঁচ'শ করে ফেরত করে দেব।' </div><div><br /></div><div>'কী ব্যাপার রজত বাবু, সকাল সকাল টাকা ধার চাইছ, দিওয়ালির বোনাস ও কম পড়ল নাকি?' </div><div><br /></div><div>'সে তো বটেই স্যার, আর একটা কাজ ও আছে স্যার..' </div><div><br /></div><div>'সেটা তো বুঝলুম, তুমি তো কাজ ছাড়া এক টাকাও খরচ করো না! তবে কাজটা কী, শুনি? </div><div><br /></div><div>'মেয়েটার জন্য একটা ফোন কিনব স্যার, স্মার্ট ফোন। মেয়েটা কলেজে ভর্তি হয়েছে কিনা! লেখাপড়ার নানা কাজ এই ফোন ছাড়া নাকি হয় না। মাঝে মাঝে তো নাকি ফোনেও ক্লাস হয়! মেয়ের মামা মোবাইল একটা দিয়েছিল বটে, কিন্তু সেটা অনেক পুরনো। আজ ঠিক তো কাল সারাই করার দোকানে, এটা চলে তো ওটা চলে না। মেয়েটা নাজেহাল হয় ঠিকই কিন্তু আমার আয়ের কথা জানা আছে বলে মুখ ফুটে কিছু বলে না। মেয়ের মা কয়েকদিন ধরে বলছিল, স্মার্ট ফোন কেনার মতো এত গুলো টাকা একসাথে জোগাড় করা বেশ কঠিন। গত কয়েক মাসে মোটামুটি কিছু টাকা জমিয়েও ফেলেছি, আজ বোনাস পেয়ে ও দামে কুলোচ্ছে না..' </div><div><br /></div><div>'ভালো কথা, কিন্তু আমার হাতে এখন নগদ অতোগুলো টাকা তো নেই রজত। লাঞ্চের সময় বাইরে গেলে এটিএম থেকে কিছু টাকা তুলে দেব, তখন না হয় নিও, কেমন?' </div><div><br /></div><div>'ঠিক আছে স্যার, তখন দিলেই হবে।..' </div><div><br /></div><div>অয়ন স্যারের কাছ থেকে ফিরে অপেক্ষা করতে লাগলাম কখন লাঞ্চের সময় হবে। টাকাটা বের করে আরেকবার গুনতে ইচ্ছে হলো। যদিও গুনে কোনো লাভ নেই সেটা আমি জানি। ওখানে এগারো হাজার নশো টাকাই আছে। এদিকে মেয়েটা দু-তিনবার মিসকল দিয়েছে। মিসকল দেওয়ার কারণও আছে। ভেবেছিলাম, সকালে অফিসে এসে অয়ন স্যারের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ঘণ্টা দুয়েকের জন্য ছুটি নেব। মেয়েটাকে তেমন করে বলেও রেখেছি। কথা ছিল অফিসে এসে হাতের কাজ গুছিয়ে আমি ফোন করব। আমি ফোন করলেই দুই মেয়ে আর তার মা বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়বে, দমদম মতিঝিল থেকে ডালহৌসি। সেই ডালহৌসির কাছেই একটা মোবাইল শোরুম থেকে আমরা ফোনটা নেব, ঠিক করে রেখেছি। এদিকে হাতের কাজ গুছিয়ে ফেললেও টাকা জোগাড় হয়নি। ভেবেছিলাম একটু পরে মেয়েদের ফোন করে বলব দুপুরের পর বাড়ি থেকে বেরোতে। কিন্তু তার আগেই মেয়েটার দু-দুবার মিসকল দিয়ে দিয়েছে। আমি জানি, মেয়েরা এই নিয়ে খুব উত্তেজিত। অনেকদিন এতো দাম দিয়ে আমার বাড়িতে কিছু কেনা হয়নি। মেয়েদের সাথে মেয়ের মাও ভীষণ খুশি। মেয়ের মা খুশি কারণ এখন সে মাঝে মাঝে বাড়িতে ভিডিও কল করতে পারবে বলে। তাছাড়া সে শুনেছে, স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে নাকি টাকা ছাড়াও কল করা যায়, কী যেন গুগুলে না স্কাইপিতে। এইটা শোনার পরে সে মহা খুশি। গতকাল অফিস বন্ধের পরে আমি আর বড় মেয়ে শিখা এই ফোনটা একবার দেখে গিয়েছি। মেয়েটা একটু লাজুক প্রকৃতির। কিনব না, কিন্তু দামদর করে দেখতে শোরুমে যেতে একটু ইতস্তত করছিল। আমিই জোর করলাম। বললাম, 'দামি জিনিস। একটু আগে থেকে দেখে শুনে কিনলে ঠকবো না। তাছাড়া আমাদের তো আর জানা শোনা নেই। আগে থেকে দেখে শুনে দামদর করে একটু দেখে আসলে সুবিধাই হবে।' </div><div>আমার কথায় মেয়েটা রাজি হলো। ডালহৌসিতেই দু-চারটে শোরুম ঘুরে ঘুরে দেখলাম। আমাদের বাপ-বেটিকে দেখে দোকানিরা দামি দামি সব ফোন দেখায়। ফোনের নানা সব ফাংশান বলে, ওতসব আমার জানা নেই। মেয়েটা কিছু কিছু জানে বটে; ওইটুকুই ভরসা। কিন্তু দামি ফোন দেখে মেয়েটা কেমন যেন জড়োসড়ো হয়ে থাকে। আমাকে কানে কানে ফিসফিস করে বলতে থাকে, 'বাবা, এখানে দেখার দরকার নেই, চলো এখান থেকে..' </div><div><br /></div><div>আমি বুঝতে পারি, মেয়ে আমার দাম নিয়ে ভয় পাচ্ছে। দোকানের বাইরে এসে বাপ-মেয়ে শলাপরামর্শ করি, তারপর আবার দোকানে যাই। হাজার দশেকের মধ্যে মোবাইল খুঁজি। মেয়েটার কাজ হবে এমন মোবাইল হাজার দশেকের মধ্যে পাওয়া মুশকিল। মেয়েটার মন খারাপ হয়। আমি জানি বার বার এই দোকান সেই দোকান ঘুরতে তার লজ্জা কচ্ছে। তারপরও সেই লজ্জা আমার কাছে লুকিয়ে রেখে মেয়েটা বলে, 'বাবা, আমরা না হয় আর কিছুদিন পরে ফোনটা কিনি!' </div><div>মেয়েটার কথা আমার বুকের ভেতরটা তোলপাড় করে। এত আশা নিয়ে, এতটা পথ এসে ফোন কেনা হবে না ভাবতেই আমার কেমন যেন বুকটা ফেটে যেতে চাইছে। মনে মনে ভেবে রাখলাম আজ ফোন পছন্দ করেই তবে ফিরব। হাজার দুই তিনেক টাকা বেশি লাগে তো লাগুক। মেয়েকে নিয়ে আবার ঘুরতে লাগলাম। শেষে এই তের হাজার আটশো টাকা দামের ফোনটা আমাদের খুব পছন্দ হলো। সেই পছন্দ করা হয়ে গেলে, বাপ-মেয়ে বেশ খোশ মেজাজে বাড়ি ফিরলাম। আমার ছোট মেয়েটা পড়ে ক্লাস সিক্স। সেও বায়না ধরল ফোন কেনার সময় সাথে যাবে। এদিকে মেয়ের মাকেও দেখলাম যেতে রাজি। ভাবলাম ভালোই হলো, একটা ফোন যখন কিনছি তবে সবাই গিয়েই না হয় কিনি। সেই থেকে বাড়িতে উৎসব লেগে আছে। এমনিতেই দীপাবলির অনেক অফার বেরিয়েছে। গতকাল অনেক রাত পর্যন্ত দেখলাম দুই মেয়ে ফিসফিস করে এই ফোন নিয়ে কী সব বলছে। মেয়েদের খুশি দেখে আমার ভীষণ ভালো লাগে। হাজার দশেক টাকা আগেই জমানো ছিল। রাতে মাটির ব্যাংকটা ভাঙলাম। ভেবেছিলাম বাকি টাকা ওখানে পাওয়া যাবে। কিন্তু পেলাম ঐ হাজারের কাছাকাছি। এদিকে মেয়েদের কথা দিয়ে রেখেছিলাম আজই ফোন কিনব। সুতরাং রাতেই ভেবে রেখেছি, অফিসে এসে অয়ন স্যারের কাছ থেকে বাকি দু-হাজার টাকা ধার নিয়ে ফোনটা কিনে ফেলব। বাড়িতে জানিয়ে দিয়েছি, দুপুরের পরেই রওনা দিতে। এদিকে আমি অপেক্ষা করতে লাগলাম কখন লাঞ্চের সময় হবে। বড় স্যারের কাছ থেকে আগেভাগে লাঞ্চের পর থেকে ছুটি নিয়ে রেখেছি। এখন টাকাটা হাতে পেলেই হলো। ডালহৌসির ট্রাভেল এজেন্সির এই অফিসে আমরা লোকজন বলতে জনা দশেক। বড় স্যারের পর ওই অয়ন স্যার। বড় স্যার ধার দেনা পছন্দ করে না। এদিকে অয়ন স্যার ছাড়া বাকি সবার হাতের অবস্থা ঠিক আমার মতো। বিপদে আপদে ওই অয়ন স্যার আমাদের অনেকের ভরসা, আজও তাই। তাছাড়া আমার মতো অফিস পিয়নকে টাকা পয়সা ধার দিতে ও সচরাচর অনেকে ভয় পায়। আমিও খুব একটা বিপদে না পড়লে ধারদেনা পছন্দ করি না। আমার অল্প মাইনে আর শিখার মায়ের সেলাই এর কাজের টাকা দিয়ে টেনে টুনে সংসার চলে যায়, তাই নিয়ে আমরা খুশি। কিন্তু হঠাৎ করে এই ফোনের টাকা জোগাড় করতে এবার বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। </div><div><br /></div><div>লাঞ্চের সময় কিছুটা পেরিয়েছে। অয়ন স্যার একটু আগে বেরিয়েছেন, আমাকে বলে গেলেন লাঞ্চ করে আধ ঘণ্টার মধ্যে ফিরে আসবেন। আমার টাকার কথা তার মনে আছে। যাওয়ার সময় আমাকে আশ্বস্ত করায় আমি কিছুটা সাহস পেলাম। এদিকে আমিও মেয়েদের বলে দিলাম রওনা দিতে। এতক্ষণে এসেও গিয়েছে বোধহয়। শিখা জানে কোথায় দাঁড়াতে হবে। তাছাড়া আমি বলে দিয়েছি যে দোকানটায় ফোন পছন্দ করে রেখেছি সেখানে গিয়ে ফোনটা দেখে রাখতে। আমাকে যেহেতু মিস কল দিয়েছে তাই নিশ্চিত হলাম পৌঁছে গিয়েছে। </div><div><br /></div><div>লাঞ্চের সময় ঘণ্টাখানেক পেরিয়ে গেল। অয়ন স্যার এখনো আসেন নি। আমি একটু বিচলিত হয়ে পড়লাম। এদিকে মা-মেয়েরা এসে দাঁড়িয়ে আছে। বড় মেয়েটা দুবার ফোন দিয়ে জানতে চাইলো আমার আসতে দেরি হবে কি না। তারা নাকি বেশ কিছুক্ষণ ওই দোকানেই ছিল। এখন বাইরে এসে দাঁড়িয়ে আছে। ফোন না কিনে দীর্ঘক্ষন একটা দোকানে দাঁড়িয়ে থাকা বেশ অস্বস্তির। অয়ন স্যারকে ফোন করলাম, তিনি ফোন ধরছেন না। এমন তো হওয়ার কথা নয়.. </div><div><br /></div><div>সময় আরো কিছু পেরিয়েছে। আমার ভীষণ মন খারাপ হচ্ছে। আমার অফিস থেকে মিনিট দশেক হাঁটলেই সেই মোবাইল ফোনের দোকান। এদিকে অয়ন স্যার আসবে আসবে করে আমি কোথাও নড়তে পারছি না। এখন মনে হচ্ছে কোথাও পালিয়ে যাই। মেয়েটার সামনে গিয়ে দাঁড়াতে কষ্ট হচ্ছে। আমি জানি, কিছু টাকা জোগাড় হয় নি শুনেও মেয়েটা হাসি হাসি মুখ করে বাড়ি যাবে; ফোনের কথা একবার ও তুলবে না। মেয়েটা তখন অন্য একটা গল্প জুড়ে দেবে। সেই গল্প শুনে আমার হাসি পাবে, খুব হাসি। মেয়েটা লাজুক হলেও ভীষণ ভালো গল্প বলে। এতো গল্প তার মাথায় কোথা থেকে আসে আমি বুঝি না। আমার শুনতে বেশ ভালো লাগে। মাঝে মাঝে আমার যখন খুব মন খারাপ হয় তখন মেয়েটার কাছে গিয়ে বসি। মেয়েটা খুব বুঝতে পারে, আমাকে মন খারাপের কোনো কারণ জিজ্ঞেস না করেই গল্প বলা শুরু করে। মাঝে মাঝে সেই গল্প শুনে আমি হাসি। বাচ্চাদের মতো করে হাসি। আমার হাসি দেখে বউ বলে আমি নাকি পাগল। কিন্তু আমি জানি, আজ আমার গল্প শুনতে ভালো লাগবে না। একটুও না। আজ গল্প বললেও আমার মন ভালো হবে না। তাই আমি বসে আছি। মনে মনে ভাবলাম আর কিছুক্ষণ দেখি। অয়ন স্যার এসে পড়লে সব সমাধান হয়ে যাবে। মা-মেয়েরা না হয় আরোও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুক। </div><div>কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে আমি রওনা হলাম স্ত্রী এবং মেয়েরা যেখানে দাঁড়িয়ে আছে সেইখানে। যাওয়ার আগে লাজ-লজ্জা ফেলে দু-একজনের কাছে দুই হাজার টাকা ধার চাইলাম, কেউ পারল না দিতে। মোবাইল ফোনের দোকানের কাছে এসেই দেখলাম দোকান থেকে একটু আড়ালে মা-মেয়েরা দাঁড়িয়ে আছে। দূর থেকে তাদের দেখে আমার পা যেন আটকে গেল। আমি তাদের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি কিন্তু পা দুটি যেন অসাড় হয়ে আছে। নিজেকে টেনে নিয়ে যেতে খুব কষ্ট হচ্ছে। আমাকে দেখেই বড় মেয়েটা দ্রুত পায়ে কাছে এসে বলল, 'বাবা, আজকে ফোন নিতে হবে এমন কোনো কথা নেই। আমরা না হয় দুদিন পরে নিই। চলো আজ আমরা কিছুক্ষণ এসপ্ল্যানেডে ঘুরে বাড়ি ফিরি।' </div><div><br /></div><div>আমি কিছু একটা বলতে গেলাম কিন্তু গলাটা কেমন যেন আটকে আসল। মেয়েরা অনেক কিছু বুঝতে পারে। আমার আজকের সীমাবদ্ধতার কারণও নিশ্চয় মেয়েটার জানা হয়ে গিয়েছে। জানা হয়ে গিয়েছে বলেই হয়তো আমারে কাছে কোনো কৈফিয়ৎ জানতে চেয়ে আমাকে কষ্ট দিতে চাইছে না মেয়েটা। </div><div><br /></div><div>ডালহৌসি থেকে আমরা সবাই হাঁটা ধরলাম এসপ্ল্যানেডের দিকে। ভাবলাম সেখানে কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করে সময় কাটিয়ে বাসে করে সবাই মতিঝিল ফিরে যাব। </div><div><br /></div><div>কিছুটা দূর আসতেই দেখি অয়ন স্যার ফোন করছেন। ফোন ধরতেই বলল, 'রজত বাবু, তুমি কোথায়?' </div><div><br /></div><div>'আমি বাড়ি যাচ্ছি স্যার..' </div><div><br /></div><div>'এখন আছো কোথায় তুমি?' </div><div><br /></div><div>'গ্র্যান্ড হোটেলের তলায়..' </div><div><br /></div><div>'তুমি ওখানেই দাঁড়াও, আমি এখুনি আসছি..' </div><div><br /></div><div>পাঁচ মিনিটের মধ্যে অয়ন স্যার এসে হাজির। এসে হাঁপাতে হাঁপাতে বলল, 'তুমি তো দেখলে আমি লাঞ্চে গেলুম। যেইমাত্র খেতে বসেছি অমনি বাড়ি থেকে ফোন এলো যে আমার ছোট মেয়েটা রুমে আটকা পড়েছে। কিছুতেই লক খুলতে পারছে না। এদিকে মেয়েটার আবার শ্বাস কষ্ট আছে, ভয়ে সেই শ্বাস কষ্ট আরো বেড়ে যায়। আমি কিছু না ভেবেই রওনা দিলুম বাড়ির দিকে। জ্যামের কারণে অর্ধেক পথ গেলুম দৌড়ে, এ ছাড়া উপায় ও নেই। আমার খুব আদরের মেয়ে। মেয়ের কথা ভেবে কাঁদছি আর দৌড়চ্ছি। শেষে আমি গিয়ে, দরজার তালা ভেঙে মেয়েকে বের করলুম। এত কিছুর মধ্যে তোমার টাকার কথা বেমালুম ভুলে গিয়েছিলুম রজত। সবকিছু শান্ত হতেই তোমার কথা মনে পড়ল। ভেবেছিলুম আসব না। কিন্তু আমি চাই না আজ তোমার মেয়ের একটুও মন খারাপ হোক।' </div><div><br /></div><div>আমি বললাম, 'আরে, সমস্যা নেই স্যার। আরেক দিন নিয়ে নিতাম।' </div><div><br /></div><div>'আরেক দিন মানে? আমি আবার আসলম ফোন কিনতে আর তুমি বলছ আরেক দিন? চলো কোথায় ফোন দেখেছিলে..' </div><div><br /></div><div>অয়ন স্যারের জোরাজুরি তে আমরা সবাই আবার ফিরে গেলাম সেই দোকানে। ফোন নিয়ে অয়ন স্যার সব টাকা তার কার্ড থেকে পরিশোধ করে দিয়ে বলল, আজ এই ফোন আমার শিখা মায়ের জন্য আমার তরফ থেকে উপহার। এই টাকা তোমাকে শোধ করতে হবে না।' </div><div><br /></div><div>আমি খুব না করলাম কিন্তু অয়ন স্যার বলল, 'এটা আমি খুশি হয়ে দিচ্ছি। তোমার মতো ভালো মানুষের মেয়েকে কিছু দিতে পারলে আমার ভালো লাগবে। তুমি না করলে আমি কষ্ট পাব!' </div><div><br /></div><div>অয়ন স্যারের কথা ওপর কিছু বলার সাহস আমার হলো না। ফোন কিনে অয়ন স্যারের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমরা রওনা দিলাম বাড়ির দিকে। ডালহৌসি থেকে একটা ট্যাক্সি নিলাম, জানি খরচ একটু বেশি হবে; তারপরেও নিলাম। ট্যাক্সিতে মেয়েটা লুকিয়ে কাঁদছে। আমি জানি মেয়েটা খুশিতে কাঁদছে। মেয়েটা চুপচাপ। অন্য সময় হলে কিছু একটা নিয়ে মেয়েটা গল্প করত। আজ করছে না। ছোট মেয়েটা একবার ফোনটা বের করে দেখতে চাইলো। শিখা নিপাট রাগ দেখিয়ে বলল, 'হাত দিবি না এখন, এই ফোন এখন ধরা যাবে না।' </div><div><br /></div><div>বাড়িতে ফিরে সবাই নেড়েচেড়ে ফোনটা দেখলেও এই ফোন দিয়ে কোথাও ফোন করতে দেবে না মেয়েটা। শিখার মা বলল, 'তোমার মামাকে একটা ভিডিও কল করো। অনেকদিন দেখি না ভাইটা কে, সেই সুযোগে বুড়ো বুড়িকেও দেখা হয়ে যাবে..' </div><div><br /></div><div>শিখার এক কথা, 'আজ কোথাও ফোন করা যাবে না, কাউকে ফোন হাতে দেওয়া যাবে না। সবকিছু কাল থেকে হবে।' আমরাও আর জোর করলাম না। মেয়েটা যেমন চায় করুক। তার খুশিতেই আমাদের খুশি। </div><div><br /></div><div>পরদিন সকালে আমি অফিসে এসেছি অফিসে পুজোর গোছগাছ করতে, একটু দেরিতে। পথে ভীষণ জ্যাম ছিল। এরই মধ্যে মেয়ে দুইবার ফোন করেছে। আমি অফিসে এসে বড় স্যারের একটা কাজ করছিলাম অমনি অয়ন স্যার ডাক দিয়ে তার মোবাইল ফোনটা আমার হাতে দিয়ে বলল, 'তোমার তো আবার বাটন ফোন। শিখা তাই আমার ফোনে ভিডিও কল করেছে। নতুন ফোন দিয়ে তোমার সাথে নাকি প্রথমে কথা বলবে। এই কারণে অন্য কারো সাথে এখনো কথা বলেনি। কথা বলো রজত..' </div><div><br /></div><div>ফোনটা হাতে নিতে দেখলাম আমার শিখা মেয়েটার মুখ। মেয়েটা কাঁদছে। আমিও যেন কেমন বাচ্চা হয়ে গেলাম। আমি কাঁদছি। ভিডিও কলে আছি, অথচ আমরা বাপ-মেয়ে কোনো কথা বলছি না। দুজন দুজনের কান্না দেখছি। মেয়ের সেই কান্না দেখে আমার মনে হচ্ছে আমি কোনো এক সুখের গল্প শুনছি। মুখে না বললেও মেয়ের সেই গল্প ঠিকই আমি শুনতে পাচ্ছি। </div><div><br /></div><div>আমাদের বাপ-মেয়ের মধ্যে কোনো কথা না হয়ে সেই ভিডিও কল শেষ হলো। বুঝলাম মেয়েটা কেন গতকাল রাতে আমার ফোন থেকে অয়ন স্যারের ফোন নাম্বার নিয়েছিল। আমি একটু আড়ালে হাতের কব্জি দিয়ে দুচোখ মুছে অয়ন স্যারের দিকে ফোনটা দিলাম। স্যার আমার হাত থেকে ফোন নিতে নিতে বলল, 'পৃথিবীতেও কিছু স্বর্গ সুখ আছে রজত বাবু! আজ তোমাদের বাপ-মেয়েকে দেখে মনে হলো আমি সেই স্বর্গ সুখ দেখছি..' </div><div><br /></div><div>॥ দিওয়ালির বোনাস ॥</div><div><br /></div><div>©Chatujje Moshai - চাটুজ্জে মশাই~</div>Ushashttp://www.blogger.com/profile/09838650528375231631noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-4370129960529033824.post-22762325301455437162022-10-11T18:28:00.001+05:302022-10-11T21:41:43.026+05:30সুখানুভূতির সাথে কিছুক্ষণ!<p> </p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjivaVtIaDVAR13M2ZeJDV-YmRPSUCnr8ho5y68yneacozjfH9qCiUArxdVVhibQZrTfLEpmaxF_OQlTUhPlDqxcNYTUlq-jhEIq4ILCvTP7lq65T1CZgVUwQt4VqeSgt-tHqgLrNMsCXeIcjy8ThK3L4_fwW-V9S__-abXwI8Fbb840ae7kg43XS4BLA/s636/Lipighor_1665492524268.jpeg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="636" data-original-width="518" height="320" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjivaVtIaDVAR13M2ZeJDV-YmRPSUCnr8ho5y68yneacozjfH9qCiUArxdVVhibQZrTfLEpmaxF_OQlTUhPlDqxcNYTUlq-jhEIq4ILCvTP7lq65T1CZgVUwQt4VqeSgt-tHqgLrNMsCXeIcjy8ThK3L4_fwW-V9S__-abXwI8Fbb840ae7kg43XS4BLA/s320/Lipighor_1665492524268.jpeg" width="261" /></a></div><br /><p></p><p>সারাটা দুপুরের উৎকন্ঠার বেড়াজালে কাটিয়ে, আঁধার নামতেই ঘরে নিয়ন আলোটি জ্বেলে টেবিলের ওপর বই খুলে বসলাম আমি। ফাইনাল সেমিস্টার সন্নিকটে, পড়ার চেষ্টা করলাম তাই। কিন্তু আঁখিপল্লব দু'টি বার বার ঝাপসা হয়ে এসে কাজে ব্যাঘাত ঘটালো। কোন বাঁধা-নিষেধ মানলো না অবাধ্য অশ্রুজল। নয়নের কার্নিশ বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে অঝোরে। স্তব্ধ কক্ষে ভাসছে নাক টানার অস্ফুট শব্দ। টেবিলের একপাশে উপেক্ষিত অবস্থায় পড়ে থাকা মুঠোফোনটি জ্বলে উঠছে বারংবার। সাইলেন্ট মোড অন করে রাখা, রিংটোনের বদলে ভাইব্রেট করে উঠছে প্রতিক্ষণে। টেবিলও সে সুবাদে শিহরণ দিচ্ছে তালে তালে। হোমস্ক্রিনে মেসেজ, মিসড কলের স্তুপ জমেছে। অথচ অভিমানি মন অদেখার ভাণ করে আছে। পুনরায় মুঠোফোনটি ভাইব্রেট করে উঠতে ঝাপসা চোখে তাকালাম পাশে, উজ্জ্বল স্ক্রিনে ভাসছে 'অয়ন' নামটি। কান্নার বেগ বাড়লো। বিতৃষ্ণা চেপে ধরতেই বন্ধ করে ফেললাম ফোনটি। প্রিয় মানুষটির নামও দেখতে অসহ্য লাগছে আজ। অথচ এই মানুষটিই আমার প্রিয় তালিকায় শীর্ষে। সহসা মাথায় অবাধ যন্ত্রণা করে উঠতেই বইয়ের ওপর দুই হাত ভাঁজ করে মাথা নুয়ে ফেললাম। নেত্রপল্লব বন্ধ করা মাত্র নোনাজলে ভিজে যেতে থাকলো প্রিন্টের বইটি। কখন যে টেবিলের উপর মাথা রেখেই ঘুমিয়ে পড়লাম খেয়াল নেই। </p><p>ঘুম ভাঙলো আমার মাথায় কারো শীতল স্পর্শ পেয়ে, পিটপিট করে চোখ খুলে তাকালাম। দৃষ্টি মেলার পর সর্বপ্রথম মায়ের চিন্তিত মুখটি সুস্পষ্ট হলো অক্ষিপটে। মা কন্ঠস্বর নামিয়ে বলছে, "টেবিলে মাথা রেখে কেউ ঘুমায়? আর শরীর খারাপ নাকি তোর? চোখ লাল হয়ে আছে কেন? জ্বর এসেছে নাকি?"</p><p><br /></p><p>কথাটা বলেই মা উদ্বিগ্ন হয়ে কপালে, গালে হাত ছোঁয়ালো। গায়ের তাপমাত্রা গরম, জ্বর আসবে আসবে ভাব। আমি দ্রুত দৃষ্টি নামিয়ে ফেললাম, মাকে বুঝতে দেওয়া যাবে না আমি কেঁদেছিলাম। নাহলেই বিপদ। কোনরকম জিভ ঠেলে ঠোঁট দুটো ভিজিয়ে কন্ঠ স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে বললাম, "ঠিক আছি মা।"</p><p><br /></p><p>মা রাগান্বিত ভঙ্গিতে চেঁচিয়ে উঠলো, "কতটা ঠিক আছিস সেতো দেখতেই পাচ্ছি। সকালে বৃষ্টিতে ভিজেছিলিস, তাই না?"</p><p><br /></p><p>আমি উত্তর দিলাম না। আলগোছে দীর্ঘশ্বাস ফেললাম শুধু। মা আমাকে খেতে দেওয়ার আগেই স্নানে যাওয়ার সময় বলে গেছিল খাবার গরম করতে। মা যেতেই অবসন্ন হাতে ফোনটা তুলে নিলাম, ফোনটা অন করবো কী-না দ্বিধাদ্বন্দে কিছুক্ষণ থেকে ফোনটা পুনরায় অবহেলায় ফেলে রাখলাম। খাওয়া দাওয়া হলো, ইত্তস্বরে মাথার যন্ত্রণাটা আবার বেড়েছে। ইচ্ছে করছে মাথাটা কেটে দুভাগ করে ফেলতে। মা নিজের হাতে খাবার, ওষুধ, জল খায়িয়ে দিয়ে বিছানায় ঘুমোনোর আদেশ দিয়ে গেল। আমিও ভদ্রবাচ্চার মত বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লাম, চোখে আবার জ্বালাটা শুরু হয়েছে, মাথাটাও ব্যথায় ছিঁড়ে যাচ্ছে যেন, শরীর দূর্বল হয়ে এসেছে। মনের কোণে কড়া নাড়ছে বিকেলের স্মৃতিটুকু। </p><p><br /></p><p><br /></p><p>[এর আগে..]</p><p>অবসর সময়টুকু ফেসবুক করেই কাটাচ্ছিলাম। এমন সময় একটা পোস্ট চোখে পড়লো যেখানে লেখা, "গেট ওয়েল সুন ব্রো।" </p><p>পোস্টটা সাধারণ, চোখে পড়ার সেরকম কারণ নেই তবে পোস্টটা অয়নের প্রোফাইলের ওয়ালে তারই এক বন্ধু কয়েক ঘন্টা আগেই পোস্ট করেছে। মুহূর্তেই অপ্রীতিকর ভাবনাগুলো চেপে ধরলো আমায়। উৎকন্ঠিত হয়ে তৎক্ষনাৎ ফোন লাগালাম অয়নকে। দুবার রিং হতেই ফোন তুলল সে, "হ্যাঁ বলো.."</p><p><br /></p><p>আমি কাঁপা কাঁপা কন্ঠে জিজ্ঞেস করি, "কি হয়েছে তোমার? তুমি ঠিক আছ তো?"</p><p><br /></p><p>অন্যপাশ থেকে নিরস গলায় উত্তর এলো, "কেন কি হয়েছে?"</p><p><br /></p><p>তার উত্তরে বুঝতে দেরি নেই সে কথা ঘোরাচ্ছে। আমি বললাম, "কথা ঘোরাচ্ছ কেন? সত্যি করে বলো কি হয়েছে? অভ্র দা কেন 'গেট ওয়েল সুন' বলে পোস্ট করলো? তোমার কি কিছু হয়েছে?"</p><p><br /></p><p>ওপাশ থেকে সাথে সাথে উত্তর এলো না। কিছুটা সময় নিয়ে বলল, "আরে... বাইকে ব্যালেন্স রাখতে পারিনি। তাই পড়ে গিয়েছিলাম এই আরকি। হাতের কনুই আর পায়ে গোড়ালির দিকে সামান্য কেটেছে, খুব বেশি না।"</p><p><br /></p><p>মুহুর্তেই আত্মা কেঁপে উঠলো আমার। তটস্থ মন বিষিয়ে গেল অজানা এক ভয়ে। প্রশ্ন জাগলো মনে, কখন হলো এসব? আমাকে জানাল না কেন? বেশি আঘাত পেয়েছে কী? নিজের উৎকন্ঠিত ভাব দমন করে বললাম, "ভিডিও কলে আসবে একটু?"</p><p><br /></p><p>অয়ন উত্তর দেওয়ার আগেই আমি কল কেটে হোয়াটসঅ্যাপে ভিডিও কল করে বসলাম। কারণ এখন ওকে উত্তর দিতে বললেই না করে বসবে, প্রচন্ড একরোখা। অধিকার না খাটালে কোন কাজ আদায় করা যায় না। অয়ন সময় নিয়েই ফোনটা ধরল। পিঠে বালিশ দিয়ে বিছানায় আধশোয়া হয়ে শুয়ে আছে সে, বাড়িতেই যে আছে তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। চোখে মুখে তার বিরক্তির সুক্ষ্ম রেখা। এবার ভাবনা বেড়ে গেলো আমার, ও তো বাড়িতে বসে থাকার মানুষ না। গুরুতর কিছু না হলে অফিস ভুলেও কামাই করে না। তার মানে চোট কী বেশি পেয়েছে? পুনরায় ধক করে উঠলো প্রাণটা। হটাৎ কপালের পাশে দু'টি ওয়ান টাইম ব্যান্ডেজ আড়াআড়িভাবে লেপ্টে থাকতে দেখে নিজের উৎকন্ঠা ভাব লুকাতে ব্যর্থ হলাম। জিজ্ঞেস করে উঠলাম, "কখন হলো এসব? আমায় জানালে না কেন? বেশি ব্যথা পেয়েছ তাই না? কপালও কেটেছে অথচ বলে চলেছে কনুই, গোড়ালিতে ব্যথা পেয়েছে। সত্যি করে বলো তো আর কোথায় কোথায় কেটেছে? ওষুধ খেয়েছ? মলম লাগিয়েছ? দেখি তো একটু।"</p><p><br /></p><p>সে বিরক্তিবোধ করল বোধহয়। মুখ কুঁচকে উত্তর দিল, "সকালে অফিস যাওয়ার সময় হয়েছে। এখন ঠিক আছি আমি, আর ন্যাকামো করতে হবে না।"</p><p><br /></p><p>তার শেষ কথাটুকু শুনে থম মেরে বসে রইলাম। তার কাছে আমার চিন্তা, অস্থিরতা ন্যাকামো লাগছে? আজ তার মেজাজ এতই চটে আছে যে আমার সাথেও খারাপ ব্যবহার করতে পিছপা হচ্ছে না? জানি মানুষটা রগচটা ধরনের তবে আগে কখনো আমাকে তার রূঢ়তার বা কঠোরতার শিকার হতে হয়নি। তবে আজ কেন? বেশি ব্যথা পেয়েছে বলে? আমি নিজের খারাপ লাগাটা একপাশে রেখে বললাম, "রাগ করছ কেন? আমি তো ক্ষতটা দেখতে চাইছিলাম শুধু। আর তোমাকে কতবার না বারণ করেছি বাইক-টাইক চালাতে.. কিন্তু তুমি আমার কথা শুনলে তো? এখন হলো তো এক্সিডেন্ট? ভুগছে এবার কে বলো তো? আর আমাকে ও একটিবার ফোন করে জানালে না। লুকোলে কথাটা। মনে রাখব আমি ও.."</p><p><br /></p><p>হঠাৎ তার কি হলো কে জানে। ও চেঁচিয়ে বলে উঠলো, "আমি কি করবো না করবো তার কৈফিয়ত তোমায় দিতে হবে নাকি, আজব তো! এসব ন্যাকামো নেক্সট টাইম আমার সাথে করতে আসবে না তো। অসহ্য লাগে আমার।"</p><p><br /></p><p>তার কথার প্রেক্ষিতে নীরব থেকে গেলাম। কথার উত্তর খুঁজে পেলাম না কোন। এতদিন যে মানুষটার কাছ থেকে ভালোবাসার মিষ্টি বুলি শুনেছি তার কাছ থেকে আজ তিক্ত কথাগুলো হজম করতেই পারছি না। অন্তঃস্থলে সুক্ষ্ম এক ব্যথার আবির্ভাব আঁচ করতে পারছি। চোখের কোণে জমে আসা জলটুকু আড়াল করতে দৃষ্টি নত করে মেঝেতে স্থির করলাম। অপমানে মুখ থমথমে হলেও জোরপূর্বক হাসি টেনে বললাম, "মা-বাবা না বীরভূম গিয়েছে জমির কাজে? তো দেখাশোনা কে করছে তোমার? আমি কি আসবো?"</p><p><br /></p><p>অয়ন কিছু বলতে যাবে তার আগেই পাশ থেকে এক মেয়েলি কন্ঠস্বর ভেসে এলো। মেয়েটা বলছে, "অয়ন তোর জন্য স্যুপ এনেছি, খেয়ে নে। আমি একটু প..."</p><p><br /></p><p>এদিকে আমি চোখ তুলে তাকাতেই ভিডিও কলে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি অয়ন ভড়কে উঠে চোখের ইশারায় তাকে চুপ থাকতে বলছেন। হয়তো সে ভুলে গিয়েছিল আমরা ভিডিও কলে আছি। তবে কন্ঠের মালিককে আমি স্পষ্ট চিনি, তিনি নীলিমা দি। অয়নের কোন এককালের প্রাক্তন। দুইজনই সমবয়সী, এক-দুই বছরের ডিফারেন্স। ওরা কলেজে থাকাকালীন নীলিমাদির সাথে প্রেমে পড়েছিল তবে সম্পর্কের মেয়াদ ছিল মাত্র দু'মাস। বোঝাপড়ায় সমস্যায় থাকায় তারা বেশি দূর এগোনোর সাহস পায়নি। সম্পর্ক শেষে তাদের সম্পর্ক পুনরায় বাকি আট-দশটা বন্ধুদের মতোই হয়ে যায়। অয়ন নিজেই জানিয়েছিল আমাকে ওদের বিষয়টা। কিন্তু আজ দু'জন একা এক বাড়িতে আছে দেখে অজানা ভয়ে গায়ে শিহরণ দিয়ে উঠলো। রাগ অভিমান গুলো ছুঁয়ে উঠলো আকাশ সমান। যতই তারা বলুক তারা শুধুই বন্ধু এখন, কিন্তু কোন এককালে তো তাদের মাঝে প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল। যদিও নীলিমা দির বিয়ে ঠিক হয়েছে তবুও সে যে অয়নের এক্স এই কথাটার কি পরিবর্তন করা সম্ভব? তাহলে তার পাশে এসময়ে তাকে সহ্য করি কী করে? রাগে মন-মাথা দাউ দাউ করে জ্বলে উঠলো। তার উপর অয়নের এই লুকোচুরি খেলা, কথা লুকানো, রুক্ষ ব্যবহার। সবকিছুতেই বিরক্তি লাগছিল। আমি ঠোঁটের কোণে তাচ্ছিল্যের ভাব ফুটিয়ে তুলে বলি, "কে? নীলিমা দি না?"</p><p><br /></p><p>আমার গলা শুনে অয়ন চোরা চোখে আমার দিকে তাকাল। নীলিমা দি চমকালো কী না জানা নেই, কারণ তার প্রতিচ্ছবি দেখা যায়নি। নীলিমাদি পাশ থেকে হয়তো অয়নকে বলল ফোনটা দিতে, অয়ন ফোনটা দিতে চাইল না বোধহয়, হাবেভাবে তাই বুঝলাম। কিন্তু নীলিমাদি একপ্রকার জোর করেই ফোনটা নিল। মুহূর্তেই আমার স্ক্রিনে নীলিমা দির মুখশ্রীটা ভেসে ওঠে। সে বলল, "কেমন আছো বিতস্তা?"</p><p><br /></p><p>আমি নিজের অনুভূতি চাপা দিয়ে হাসি মুখেই বললাম, "ভালোই আছি, তুমি?"</p><p><br /></p><p>"খুব যে ভালো আছি তা বলতে পারছি না। সকালেই এক্সিডেন্ট করেছি, বা হাতের অবস্থা ততটা ভালো না। অনেক খানি ছুলে গিয়েছে।"</p><p><br /></p><p>নীলিমাদি হয়তো কথাগুলো সরল মনেই বলছিল তবে আমার কানে তীরের মত লাগে কথাটা। কৌতূহল হয়েই জিজ্ঞেস করি, "তোমরা দু'জনে কী একসাথে ছিলে?"</p><p><br /></p><p>দিদি হ্যাঁ সূচক মাথা নেড়ে বললেন, "হ্যাঁ! আমার গাড়িটা খারাপ হয়ে গেছিল বলে আমি অয়নকে বলেছিলাম আমাকে আজ অফিসে নামিয়ে দিতে। যাওয়ার পথেই হঠাৎ একটা অটো সামনে চলে আসায় অয়ন ব্যালেন্স হারায়, আর আমরা মাঝ রাস্তায় পরে যাই। আমার তো মাথায় হেলমেট ছিল বলে এত আঘাত পাইনি, বা হাতটাই ছুলেছে যা। তবে অয়নের কপালে, হাতে আর পায়ে ভালোই চোট পায়। খানিকটা কেটেওছে।"</p><p><br /></p><p>আমি কোন প্রতিক্রিয়া দেখানোর আগেই অয়নের ধমক কানে এলো, "মিলি মোবাইলটা দে আমার, আর তোকে না ভাস্কর নিতে আসবে? আসে নি এখনো নাকি? আসলে যা তো, দূর হ চোখের সামনে থেকে। এসব আদিখ্যেতা আর ভাল্লাগে না আমার।"</p><p><br /></p><p>নীলিমা দি মুখ কালো করে অয়নের দিকে ফোনটা এগিয়ে দিতে গিয়ে বলল, "যাচ্ছি তো! সবসময় এমন করিস কেন? বললাম তো সরি।"</p><p><br /></p><p>কথাটা বলে নীলিমা দি চলে যায়। অয়ন মুখের সামনে ফোনটা ধরতেই আমার ক্রন্দনরত মুখ দেখতে পায়। আমার মনের অবস্থা বুঝতে পেরে এবার হয়তো তার রাগ পড়লো। সাথে সাথে বিচলিত কন্ঠে বলে উঠলো, "মানা, তুমি ভুল বুঝছো। এমন কিছু.."</p><p><br /></p><p>আমি তাকে কথা শেষ করতে না দিয়ে অভিমানী হয়ে বলি, "যেহেতু তোমাকে দেখাশোনা করার মানুষ আছে সেহেতু আমার আসার প্রয়োজনবোধ করছি না। আর চিন্তা নেই, তোমাকে আমি আর ফোন করে বিরক্ত করবো না, রেস্ট করো। খামোখা একজন গুরুত্বহীন মানুষের ন্যাকামো আর সহ্য করতে হবে না।"</p><p><br /></p><p>কথাটা বলেই ফোনটা রেখে দিলাম আমি। আঁখিপল্লব জুড়ে নামলো তীব্র বর্ষণের ঘনঘটা। ঝাপসা চোখেই দেখলাম অয়ন নিজের থেকে কল করছে। কিন্তু ততক্ষণে তার সাথে কথা বলার আগ্রহ, সমস্ত স্পৃহাই যে চলে গিয়েছে আমার। ফোনটা টেবিলের পাশে রেখে এক ভাবে তাকিয়ে রইলাম মেঝের দিকে। </p><p><br /></p><p><br /></p><p>আমাদের দুইজনের ফেসবুকেই পরিচয় এবং সেখান থেকেই প্রেম। টানা তিনবছর প্রণয়ের পরে বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি পরিশেষে। ছ'মাস আগেই দুই পরিবারের সম্মতিতে আমাদের ঘরোয়াভাবে বিয়ে হয়েছে, ফাইনাল পরীক্ষার পরেই আমায় নিয়ে যাওয়ার কথা। আমাদের সম্পর্ক থাকাকালীন কথা কাটাকাটি, মনমালিন্য হয়েছে অসংখ্যবার। কিন্তু অয়ন কখনো এতটা রুক্ষ, এত রূঢ় আচরণ করেননি আমার সাথে। দোষ আমার হলেও না। আমাকে আঘাত দিয়ে কথা বলার অভ্যাস তার নেই। অথচ সেই অভ্যাস আজ বদলে গেল? ভালোবাসা নাকি রঙ বদলায়, আসলেই যে বদলায়, এটাই তার নমুনা? কিভাবে পারল সে আজ আমায় এভাবে কথা শোনাতে? এক তো নিজের এক্সিডেন্ট কথা লুকোল, মিথ্যে বলল। দ্বিতীয় নীলিমাদিকে নিয়ে একাই বাড়িতে থাকল? এতটা অবনতি? যে মানুষটার ভালোবাসায় সিক্ত থাকা আমার অভ্যাস সে মানুষটার তুচ্ছতাচ্ছিল্য কিভাবে সহ্য করি আমি? </p><p>আমার ভাবনার মাঝেই কখন যে সন্ধ্যা গড়িয়ে পড়লো কে জানে? তবে দূরে মন্দিরের মিষ্টি আরতির ধ্বনিতেই হুঁশ ফিরল আমার।</p><p><br /></p><p><br /></p><p>রাত তখন ক'টা বাজে জানা নেই৷ পুরো ঘর আচ্ছাদিত ভয়ঙ্কর আঁধারে৷ আকাশে মেঘ ডাকছে, বৃষ্টি নামবে হয়তো। ঠিক এমন সময় উতপ্ত পেটের কাছে কারো শীতল হাতের স্পর্শ অনুভব হলো, ধীরে ধীরে বাঁধন শক্ত হলো, কেউ আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরলো আমায়। মুহূর্তেই তন্দ্রাভাব কেটে গিয়ে আতঙ্ক ভর করে বুকে। আমি পাশ ফিরে তাকানোর আগেই অতি শীতল অধরযুগলের আলতো ছোঁয়া অনুভব করতে পারি কাঁধের কাছে। ক্ষণেই যেন বিদ্যুৎ খেলে যায় সর্বাঙ্গে। দূর্বল শরীরেই পাশের মানুষটিকে নিজ থেকে দূরে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু তার শক্তির সাথে পেরে উঠতে না পেরে যেই না চেঁচাতে যাবো তখনই ব্যক্তিটি আমার কানে ঠোঁট স্পর্শ করে বলে, "সরি বউ!"</p><p><br /></p><p>কন্ঠটি কানে যাওয়া মাত্রই শান্ত হয়ে যাই আমি। একধাপেই তাপমাত্রা বেড়ে যায় দু ডিগ্রি। আনমনে নিজেকে নিজেই প্রশ্ন করলাম, "ভুল শুনলাম নাকি? অয়ন কী সত্যি এখানে?" আমার ভাবনার মাঝেই অয়ন আবার বলে উঠল, "কী, কথা বলবে না? আর শরীরে এমন ভয়াবহ জ্বর বাঁধালে কী করে? তোমার তাপে পুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছি তো।"</p><p><br /></p><p>দ্বিতীয়বারের মত তার আওয়াজ কর্ণগোচর হতেই ঠোঁট দুটো আপন শক্তিতেই আলাদা হয়ে এলো আমার। তার মানে মানুষটা সত্যি এসেছে? সে তার ক্ষত-বিক্ষত শরীর নিয়েই কলকাতা টু বহরমপুরের সফর করে ফেলল? কেন করল? আমার জন্য কী? মনটা একটু হালকা হলো তখন। আমি হুট করে জিজ্ঞেস উঠলাম, "তুমি এখানে?"</p><p><br /></p><p>সে পুনরায় কাঁধে ঠোঁট ছুঁইয়ে বলল, "তা না হলে আর কে?"</p><p><br /></p><p>মুহূর্তের মধ্যেই বিকেলের ঘটনা মনে পড়ে যায় আমার। তার বলা প্রত্যেকটা কথা সূঁচের মতো বিঁধে উঠলো শরীরে। রাগ-অভিমানের পাল্লা ভারি হলো। আমি তার বাঁধন থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য মোচড়ামুচড়ি শুরু করতেই সে আরও নিবিড়ভাবে আমায় জড়িয়ে ধরল, গা থেকে ভেসে এলো তার নিজস্ব গন্ধ। সে ধীর কন্ঠে বলল, "আমার শক্তির সাথে পারবে না তুমি মানা! এমনিতেই শরীর দূর্বল তোমার, ব্যথা লাগবে।"</p><p><br /></p><p>আমি কন্ঠস্বর খানিকটা উঁচিয়েই বললাম, "কেন এসেছ তুমি? আমার ন্যাকামো দেখতে নাকি আরও কিছু বলার ছিল তোমার? থাকলে বলে বিদায় হোন, আমার মত ন্যাকার সাথে তোমার থাকা শোভা পায় না। তাই যার কাছে ছিলে তার কাছে ফিরে যাও।"</p><p><br /></p><p>"তখন মাথার ঠিক ছিল না, তাই তোমার সাথে ভুলবশত অমন আচরণ করে ফেলেছি মানা; আ'ম সরি মানা।"</p><p><br /></p><p>আমি কান্নারত অবস্থায় বলি, "সরি বললেই বুঝি সব ঠিক হয়ে যায়? তুমি আজ আমায় কত আঘাত করেছ তার কোন ধারণা আছে?"</p><p><br /></p><p>সে অনুতপ্ত কন্ঠেই বলল, "আমি ইচ্ছে করে তোমায় আঘাত করতে চাইনি। আসলে তখনকার পরিস্থিতিটা বলে বোঝাতে পারবো না। আজকে এক্সিডেন্টের জন্য আমার একটা ইমপরট্যান্ট মিটিং মিস হয়ে যায় ফলে কোম্পানিকে কয়েক লাখ টাকার লোকসান ফেস করতে হয়। এর জন্য দুপুর নাগাদ বসের কাছে অকথ্য ভাষায় গালাগালি খেতে হয়, সাথে ওয়ার্নিং দেন, নেক্সট টাইম এমন হলে আমার চাকরিটাই যাবে। এই ঘটনার পর একরকম মন-মেজাজ খারাপই ছিল তার উপর নীলিমা তখন ওষুধপত্র গোছাতে গিয়ে তোমার দেওয়া ঘড়িটাকেও ভেঙে ফেলে। ঘড়িটা আমার কত প্রিয় ছিল সেটা একমাত্র আমিই জানি, দেড় বছর ইউস করেও সামান্য আঁচড় ও পড়তে দিইনি। অথচ ও কিনা ভেঙে ফেললো? মাথা বিগড়নো স্বাভাবিক কী না? আর তারমধ্যে এলো তোমার ফোন, তোমার ঘ্যানঘ্যান করা, বিষন্নতা ভালো লাগছিল না। এতগুলা প্রশ্ন করছিলে যে রাগ উঠে গেছিল আর আগে-পরের সবকিছুর রাগ গিয়ে পড়ে তোমার ওপর। তাই ওভাবে কথা শুনিয়ে ফেলি। কিন্তু পরে বুঝতে পারি যে কত বড় ভুল করে ফেলেছি- আর এর জন্য আমি সত্যি অনুতপ্ত।"</p><p><br /></p><p>তার কথা শেষ হতেই শব্দ করে কেঁদে উঠি আমি। মান-অভিমান সব ভেঙ্গে চুরমার হয়ে পড়ে ফ্লোরে। অয়ন আমাকে তার বুকের মাঝে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে, "কাঁদে না সোনা। সরি বলছি তো!"</p><p><br /></p><p>আমি অস্পষ্ট গলায় জিজ্ঞেস করি, "আমাকে কেন জানালে না আগে এক্সিডেন্টের কথা? লুকালে কেন?"</p><p><br /></p><p>"টেনশনে ফেলতে চাইনি তোমায়।"</p><p><br /></p><p>আমি নাক টেনে জিজ্ঞেস করি, "এই শরীর নিয়ে জার্নি কেন করলে? শরীর খারাপ লাগছে না?"</p><p><br /></p><p>সে হেসে বলে, "এতক্ষণ লাগছিল কিন্তু তোমাকে বুকের মাঝে নেওয়ার পর থেকে আর লাগছে না। আর বউ রুষ্ট হয়ে থাকলে একটু-আধটু কষ্ট করাই যায়।"</p><p><br /></p><p>"পরবর্তীকালে কখনো নীলিমাদির সাথে একা একই কোন বাড়িতে থাকলে একদম খুন করে ফেলবো তোমায়।"</p><p><br /></p><p>"এইরকম দুঃসাহস আর এই বান্দা দেখাচ্ছে না গো। পরবর্তীকালে একা থাকতে হলে বউ নিয়ে থাকবো।"</p><p><br /></p><p>হটাৎ করে একটা প্রশ্ন মাথায় আসতেই জিজ্ঞেস করলাম, "গেট কে খুলে দিল?"</p><p><br /></p><p>অয়ন অপ্রস্তুত হয়ে বলল, "শ্বশুরমশাই! বুঝলে বাবা ভয়ঙ্কর রকমের অভিজ্ঞ একজন মানুষ৷ আমাকে দেখেই চট করে জিজ্ঞেস করে বসলেন, তার মেয়ের সাথে ঝগড়া করেছি কি-না? মানে বুঝতে পারছো একটা মানুষের কতটা এক্সপিরিয়েন্স হলে জামাইয়ের মুখ দেখেই বলে দেয় সমস্যাটা কি?"</p><p><br /></p><p>আমি তার পেটে আস্তে করে গুঁতো মেরে বলি, "চুপ! শ্বশুর হয় তোমার। আর এত রাতে আসলে যে কেউ বুঝবে গল্পটা কি, হুঁ!"</p><p><br /></p><p>অয়ন আকস্মিক ভাবে আমার গালে ঠোঁট ছুঁয়ে দিয়ে বলল, "তা ম্যাডাম, জ্বর কমাতে একটু সাহায্য করবো নাকি?"</p><p><br /></p><p>গলায় তখন তার বদমাইশি। আমি তার থেকে ছাড়া পাওয়ার চেষ্টা করে বলি, "খবরদার!"</p><p><br /></p><p>কিন্তু একরোখা মানুষটা কি আর আমার কথার ধার ধারে? অন্ধকারাচ্ছন্ন ঘরজুড়ে ঘুরতে থাকে আমার অনুভূতিগুলো, যেন কারুর নজর না লাগে। লাগলেই বা কী, আমি আছি আর অয়ন আছে আমার সুখানুভূতির সাথে কিছুক্ষণ!..</p><p><br /></p><p>[সমাপ্ত]</p><p><br /></p><p><br /></p><p>॥ সুখানুভূতির সাথে কিছুক্ষণ ॥</p><p><br /></p><p>©<b>চাটুজ্জে মশাই</b>~</p><p><br /></p><p>[অনেকদিন পর আবার কিছু লিখলাম। জানি না কেমন হয়েছে, যদিও ছন্নছাড়া লাগছে। এখন পাঠকরাই বলবে কেমন হয়েছে? সকলের দুষ্টু-মিষ্টি, ভালোবাসাময় ছোট-বড় মন্তব্যগুলা ভীষণভাবে মিস করছি। </p><p>তা আজ সবাই একটু কষ্ট করে মন্তব্য করবেন কেমন? আবদার আমার। ভালোবাসা রইলো, নমস্কার 🙏🏼❤️]</p>Ushashttp://www.blogger.com/profile/09838650528375231631noreply@blogger.com2tag:blogger.com,1999:blog-4370129960529033824.post-79508137110885787502022-10-02T12:03:00.000+05:302022-10-02T12:03:59.122+05:30গান্ধী, জাতির জনক নাকি...?<p>"গান্ধী জাতির জনক নাকি ভন্ড" </p><p></p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjQA7XyTMINPfrK0OPX89G7lg4FGiZ7verXCDT-PbkeajKXpHGYqLxccSZRQHNJUnG7HLgf8cfdF5nB2fQdJ4OXEBEyyVkxGkQKyPtnducqf4iotnITrJ_skgYhKOSHqXWUOVxLvPfUM5NIBzYR_OGOwe6n-f9bzHRRSzAx3v3T5mXsUtGYFUl2KIZuqA/s225/download%20(2).jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="225" data-original-width="225" height="225" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjQA7XyTMINPfrK0OPX89G7lg4FGiZ7verXCDT-PbkeajKXpHGYqLxccSZRQHNJUnG7HLgf8cfdF5nB2fQdJ4OXEBEyyVkxGkQKyPtnducqf4iotnITrJ_skgYhKOSHqXWUOVxLvPfUM5NIBzYR_OGOwe6n-f9bzHRRSzAx3v3T5mXsUtGYFUl2KIZuqA/s1600/download%20(2).jpg" width="225" /></a></div><br /> - উষস চট্টোপাধ্যায়!<p></p><p><br /></p><p><br /></p><p>গান্ধীজি, জাতির জনক! অর্থাৎ আমরা মানি আর না মানি, জন্মানোর পরপরই যবে থেকে গান্ধীজির কর্ম, নাম এবং কীর্তি র সাথে অবগত হই, তখনই নিজেদের বে.জ.ন্মা গালাগাল দিয়ে থাকি। হয়তো আমার এই কথার অনেক ক্রিয়া বা প্রতিক্রিয়া হতে চলেছে, তবু একটু সময় দিলে, নিজের বিচারবুদ্ধি কে কয়েকটা প্রশ্ন করতে চাই। কিভাবে একটা দেশ শুধু একজনের ই বিচারবুদ্ধির সেবক হলো, আইডিয়োলজির শিকার হলো। না হলে আজ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রী, নাট্যাচার্য শিশির কুমার ভাদুড়ী, অবিভক্ত বাংলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রী লীলা নাগ, চিত্র পরিচালক তপন সিংহ, বা ফুটবলে উন্মাদনা প্রিয় বাঙালির সুভাষ ভৌমিকের ও আজ জন্মদিন। কারোর জন্মদিন নিয়ে এরূপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করিনা, এমনই তাঁর মাহাত্ম্য! </p><p><br /></p><p>স্কুলে যাওয়ার সময় থেকেই শুনে আসছি যে মহাত্মা গান্ধী একজন ব্যারিস্টার ছিলেন। তখন থেকেই ভাবতাম যে উনি নিশ্চয়ই অনেক শিক্ষিত, অনেক জ্ঞানী। পরে জানতে পারলাম যে গান্ধীজি তাঁর সারাজীবনে একটিই মাত্র শিক্ষাগত সার্টিফিকেট অর্জন করতে পেরেছিলেন, তা হল ম্যাট্রিক পাসের সার্টিফিকেট। ১৮৮৭ সালে গান্ধীজি টেনেটুনে কোনমতে থার্ড ডিভিশনে ম্যাট্রিক পাশ করেন! তখনকার দিনে ব্যারিস্টার হতে হলে কোন পরীক্ষাই দিতে হতো না, কিছুদিন কোন বয়স্ক এবং অভিজ্ঞ ব্যারিস্টারের সহকারী হিসেবে কাজ করলেই ব্যারিস্টার হিসেবে বার এসোসিয়েশনের সদস্য হওয়া যেতো। কিন্তু এই সহকারী হওয়ার জন্যও গান্ধীজির ভারতীয় সার্টিফিকেট এবং তার ফলাফল গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হয়নি। এ জন্য গান্ধীজিকে আবার লণ্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যাট্রিক পরীক্ষায় বসতে হয়। প্রথম বার সেই পরীক্ষায় ফেল করার পর গান্ধীজি দ্বিতীয় বারে কোনমতে পরীক্ষায় পাশ করতে সক্ষম হন এবং একজন ব্যারিস্টারের সহকারী হওয়ার মতো যোগ্যতা অর্জন করেন। তখনকার যুগের অনেক মানুষেরই প্রথাগত শিক্ষা খুব বেশি থাকতো না, যেমন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কিন্তু তাঁরা ছিলেন স্বশিক্ষায় শিক্ষিত। কিন্তু গান্ধীজির আচরণে এটা স্পষ্ট হয় যে তাঁর মধ্যে সেই স্বশিক্ষা ছিল না।</p><p><br /></p><p>গান্ধীজির এক গালে চড় মারার থিওরি নিয়ে নানা মানুষ মত দিয়েছেন কিন্তু তিনি নাকি এইটা বলতেন, “একজন সত্যাগ্রহী সব সময় আক্রমণকারীর দ্বারা নিহত হবার কামনা করবে, কিন্তু কাউকে হত্যা করার কামনা করবে না।" ভাবতে পারা যায়? </p><p><br /></p><p>যেখানে পৃথিবীর একটি ক্ষুদ্রতম প্রাণীও আত্মরক্ষার জন্য যুদ্ধ করে এবং পৃথিবীতে টিকে থাকার চেষ্টা করে, সেখানে গান্ধীজির এই নীতির অসারতা সহজেই অনুমেয়।</p><p><br /></p><p>বসন্তের টিকা দেওয়াকে গান্ধীজি পাপ বলে মনে করতেন। এর মূল কারণ হল গান্ধীজি ছিলেন পাশ্চাত্য চিকিৎসা পদ্ধতির বিরোধী। তিনি ইঞ্জেকশন দেওয়াকে ও অপারেশন করাকে হিংসা বলে মনে করতেন। ১৯৪৬ সালে গান্ধীজির স্ত্রী কস্তুরবাইয়ের ম্যালেরিয়া জ্বর হয়। ডাক্তার তাঁকে পেনিসিলিন ইনজেকশন দেওয়ার কথা বলেছিলেন। সেই জন্য বৃটিশ সরকার তাঁর জন্য লণ্ডন থেকে পেনিসিলিন ইঞ্জেকশন নিয়ে আসে, কিন্তু গান্ধীজী হিংসার নাম করে সেই ইঞ্জেকশন প্রয়োগ করতে বাধা দিলেন। এর ফলে গান্ধীজির স্ত্রীর মৃত্যু ঘটে। অথচ ১৯২২ সালে যখন কারাবাসের সময় গান্ধীজির খুব আমাশা হয় এবং ডাক্তার তাঁকে নিয়মিত ইঞ্জেকশন নিতে বলেন, তখন তিনি তাঁর পরামর্শ গ্রহণ করেন এবং সুস্থ হয়ে ওঠেন। এরপর গান্ধীজির এ্যাপেন্ডিসাইটিস হয়, গান্ধীজি তখন অপারেশন ও করান।</p><p><br /></p><p>নেতাজি বলেছিলেন, “বৃটিশের নির্দেশে গান্ধীজি যখনই কোন আন্দোলন তুলে নিতেন, তখনই তিনি নিজের শয়তানীকে চাপা দেওয়ার জন্য বা দেশের মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য অনশন শুরু করতেন।” গান্ধীজির সকল প্রকার অনশন ও কারাবাস ছিল বৃটিশদের পরিকল্পনার অংশ।</p><p><br /></p><p>ড. আম্বেদকরের মতে, “গান্ধীজি ছিলেন শক্তের ভক্ত আর নরমের যম। দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকাকালীন একবার গান্ধীজি হিন্দু, খ্রিষ্টান ও ইসলামের মধ্যে তুলনা করে একটি বক্তৃতা দেন, সেই বক্তব্যে একটি বিশেষ জাতি ক্ষুব্ধ হয় এবং ১৯০৮ সালের ১০ই ফেব্রুয়ারি কয়েকজন 'শান্তিপ্রিয়' মানুষ তাঁর ওপর হামলা করে এবং তাঁকে প্রচণ্ড প্রহার করে। এরপর থেকেই গান্ধীজি সেই বিশেষ জাতির সর্বপ্রকার সমালোচনা করা বন্ধ করে দিলেন এবং তারপর থেকেই তিনি তাদের অত্যন্ত গর্হিত অপরাধকেও অপরাধ বলে মনে করতেন না।</p><p><br /></p><p>মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী অত্যন্ত সাদাসিধে জীবন যাপন করতেন। ১৯২২ সালে যখন তিনি স্বাধীনতা সংগ্রাম করতে গিয়ে গ্রেফতার হয়ে পুনের জেলে ছিলেন তখন তাঁর জন্য জেলের মধ্যে দুটি ঘর বরাদ্দ করেছিল চিরশত্রু ইংরেজ। একটি ঘর শোয়ার জন্য, আরেকটি চরকা চালানো ইত্যাদি কাজকর্মের জন্য। </p><p><br /></p><p>তাঁর রোজকার খাদ্য তালিকায় ছিল: ২৫০ গ্রাম আটার রুটি, মাখন, সওয়া এক কিলোগ্রাম ছাগলের দুধ, চারটে কমলা লেবু, দুটো পাতি লেবু, ৫০ গ্রাম কিসমিস, খাবার সোডা ইত্যাদি। </p><p><br /></p><p>এসব জেনেও প্রাণ কাঁদে! কি কষ্টেই না থাকতেন তিনি! আর চরকা চালিয়েই তো আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছে… তাই জোর করে চাপিয়ে দেওয়া জাতির জনককে শুভ জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আর আরেক দেশের প্রধানমন্ত্রীর কথা আপামর জনসাধারণের মন থেকে মুছে দিতে চলেছি। তিনিও নাকি মৃত্যুর কয়েক মুহূর্ত আগে এক বিরাট কোনো গোপন তথ্য জেনেছেন বলে তাঁর স্ত্রী কে জানিয়েছিলেন রাশিয়া থেকে। সেই গোপন তথ্য যে কী, তা তাঁর রহস্যময় মৃত্যুর সাথে ই চিরতরে হারিয়ে গেছে।</p><p><br /></p><p>শহীদ ভগত সিংকে ফাঁসির মঞ্চে ঝোলানোর সময় “অহিংসা পরম ধর্ম”- এই কথার প্রবর্তক এবং প্রচারক মহান অহিংসাবাদী নেতা মহাত্মা গান্ধী বলেছিলেন, “বৃটেনের বিনাশের বদলে আমরা আমাদের স্বাধীনতা চাই না”। তিনি আরও বলেছিলেন, “ভগত সিং-এর বন্দনার ফলে দেশের সমূহ ক্ষতিসাধন হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। ফাঁসী শীঘ্র কার্য্যকর করা হোক। আর যাতে ৩০শে মার্চ, করাচীতে কংগ্রেসের অধিবেশনে কোনপ্রকার বাধাবিপত্তি না আসে, তার ও ব্যবস্থা করা হোক” অর্থাৎ মহাত্মা গান্ধীর কথা অনুসারে তিনি কাউকে ফাঁসী দেওয়াকে হিংসা বলে গণ্য করতেন না। হিপোক্রিট কত ধরনের হতে পারে..</p><p><br /></p><p>শহীদ উধম সিং যখন ইংল্যণ্ডে জেনারেল ডায়ার'কে হত্যা না করতে পেরে সেই বিচার দেওয়ার আরেক ম্যাজিসেট্রট ডায়ার কে হত্যা করেন, তখন মহাত্মা গান্ধী তাঁকে পাগল আখ্যা দেন। তাই প্রসিদ্ধ লেখক শ্রীযুক্ত নীরদ চৌধুরী লিখেছেন, “গান্ধী পৃথিবীর সবথেকে সফল ভণ্ড.."</p><p><br /></p><p>আরও একজন মহান স্বাধীনতা সংগ্রামী শ্রীযুক্ত যতীন দাসকে যখন ইংরেজরা আগ্রায় মৃত্যুদণ্ড দেয়, তখন মহাত্মা গান্ধী আগ্রাতে ছিলেন। যখন মহাত্মা গান্ধীকে ওনার পার্থিব শরীরে মালা দিতে বলা হয় তখন উনি স্পষ্টতঃ অনীহা প্রকাশ করেন। অর্থাৎ মহান শহীদ যতীন দাসের দেশের জন্য এই আত্মবলিদান মহাত্মা গান্ধীর বিন্দুমাত্র সহানুভূতি আদায় করে নিতে সক্ষম হয় নি। অথচ কংগ্রেস এবং মহাত্মা গান্ধী দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ইংরেজদের সমর্থন করেছিলেন। যতটুকু জানি যুদ্ধক্ষেত্রে কোন সৈনিক অপর পক্ষের সৈনিককে ভালোবেসে মিষ্টি উপহার দিতে আসে না, সেখানে হিংসারই প্রতিফলন ঘটে। আশ্চর্য্য অহিংসাবাদী নেতা ছিলেন আমাদের মহাত্মা গান্ধী! তাই না?</p><p><br /></p><p>যখন ১৯৩৯ সালে কংগ্রেস অধ্যক্ষ পদের নির্বাচনে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু এবং মহাত্মা গান্ধীর মনোনীত প্রার্থী ডঃ পট্টভী সীতারামাইয়া-এর মধ্যে প্রতিদ্বন্দিতা হয় তখন মহাত্মা গান্ধী বলেছিলেন ডঃ পট্টভী সীতারামাইয়া নির্বাচনে পরাজিত হলে তিনি রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নেবেন। বলাবাহুল্য, নেতাজি বিপুল ভোটে নির্বাচনে জয়ী হন (অবশ্য পরে মহাত্মা গান্ধীর সম্মান রক্ষার্থে তিনি পদত্যাগ করেন)। যদিও আমরা দেখতে পাই যে মহাত্মা গান্ধী আমৃত্যু সক্রিয় রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন।</p><p><br /></p><p>তদ্রূপ মহাত্মা গান্ধীর আরও একটি উক্তি ছিল যে, “পাকিস্তান যদি সৃষ্টি হয় তবে সেটা আমার মৃতদেহের উপরে হবে।” যদিও পাকিস্তান তাঁর সামনে সৃষ্টি ও হয়ে গেল আর এখন ও আমাদের পেছনে কাঠি করে চলেছে। এর পরেও কী মনে হয় না, যে এতে তাঁরও (মহাত্মা গান্ধীর) পূর্ণ সমর্থন ছিল। কি অসাধারণ সত্যবাদী ছিলেন আমাদের মহাত্মা গান্ধী তা পাঠকদের বিবেচনা ওপর ছেড়ে দিচ্ছি।</p><p><br /></p><p>মহাত্মা গান্ধী তাঁর জীবনে তিনটি আন্দোলন এর সূচনা করেন এবং নেতৃত্ব দেন। আশ্চর্য্যের বিষয় যে সেই তিনটি আন্দোলনই তিনি মাঝপথে থামিয়ে দেন। তা সত্ত্বেও ভারতবর্ষে প্রচার করা হয় যে চরকা কেটে মহাত্মা গান্ধী ভারতবর্ষ স্বাধীন করেছিলেন। কি হাস্যকর কথা! </p><p><br /></p><p>ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সম্পর্কে ইতিহাসবিদ আর সি মজুমদার লিখেছেন, “ভারতের স্বাধীনতার জয়মাল্য গান্ধীর গলায় পরানো সত্যের সাথে মজা (মস্করা) করার সামিল হবে। এই কথা বলা যে সত্যাগ্রহ এবং চরকা দিয়ে উনি স্বাধীনতা এনেছেন এটা চরম মূর্খতা হবে। সেইজন্য গান্ধীকে স্বাধীনতার ‘নায়ক’ বলা সেইসব স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অপমান করা হবে যারা দেশের স্বাধীনতার জন্য নিজের রক্ত বইয়েছিলেন।” </p><p><br /></p><p>ঋষি অরবিন্দ বলেছিলেন- “ভারতবর্ষ সেদিনই প্রকৃত স্বাধীন হবে, যেদিন দেশবাসী গান্ধীবাদের আদর্শকে যতখানি সম্ভব ঝেড়ে ফেলতে পারবে। ....."</p><p><br /></p><p>ক্লেমেন্ট রিচার্ড অ্যাটলী যিনি ভারতের স্বাধীনতা ঘোষণা সিদ্ধান্তের কাগজে স্বাক্ষর করেছিলেন তিনি ১৯৫৬ সালে একবার ভারত সফরে এসে কলকাতায় পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন রাজ্যপাল জাস্টিস পি বি চক্রবর্তীর গেস্ট হাউসে রাত কাটিয়েছিলেন। পি বি চক্রবর্তী বলেন, ‘আমি ক্লেমেন্ট অ্যাটলীকে প্রশ্ন করেছিলাম, ‘কী কারণে আপনারা এত দ্রুত ভারত ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলেন?’ তিনি আমাকে বলেন, ‘নেতাজির সামরিক কর্মকাণ্ডের কারণে ভারতীয় সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর মধ্যে ব্রিটিশ রাজের প্রতি বিদ্রোহ দানা বাঁধছিল। তারা আর অনুগত থাকছিল না।’</p><p><br /></p><p>পি বি চক্রবর্তী জানান, "আমি আরও জানতে চাইলাম, ভারত ছাড়ার পেছনে গান্ধীর অহিংস আন্দোলনের ভূমিকা কতটুকু ছিলো?’ অ্যাটলী তখন ঠোঁটের কোণে বিদ্রুপের হাসি টেনে বললেন, মি-নি-ম্যা-ল অর্থাৎ (সামান্যই)।"</p><p><br /></p><p>যারা নেতাজীর ভয়ে দেশ ছেড়ে পালালো তারা নিজেরাই স্বীকার করছে তারা নেতাজী সুভাষের কর্মকাণ্ডের ভয়ে পালিয়েছে, আর আমরা ৭৫টা বছর ধরে গান্ধীজীর দর্শন নিয়ে মাথা কুটে মরছি। </p><p><br /></p><p>এতো কিছুর পরেও একটা জিনিসের কথা আমার অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই, গান্ধী ভারতবর্ষের প্রথম সাধারণ ও সার্বিক নেতা, যে দেশবাসীর নাড়ির খবর রেখেছিল। এই পরিমান ব্যাপ্তি, যে দেশে দ্বিতীয় বৃহৎ জনসংখ্যার সকলের কাছের এবং নয়নের মণি হয়ে উঠেছিল, তার কিছু পরিমাণ ক্যারিশমা তো ছিলই, তাই না? </p><p><br /></p><p>আমি গান্ধীর জন্মদিনে এই আলোচনা সবার সামনে রাখলাম, আশা করি লোকজনের চোখ একটু বেশিই উন্মুক্ত হবে, লোকজনের বিচার করার ক্ষমতা একটু বাড়বে, জয় হিন্দ!</p><p> </p><p><br /></p><p>*তথ্যসূত্র:-</p><p><br /></p><p>১). "আম্বেদকর বনাম গান্ধী”, </p><p>২). "গান্ধীজির অপকর্ম”, </p><p>৩). “আমি সুভাষ বলছি”, </p><p>৪). ”সুভাষ ঘরে ফেরে নাই”, </p><p>৫). গান্ধীর আত্মজীবনী “My Experiment with truth”, </p><p>৬). “হস্তান্তর”– শ্রীশঙ্কর ঘোষ, </p><p>৭). নীরদ চৌধুরী ও ঐতিহাসিক আর সি মজুমদার গ্রন্থ। </p>Ushashttp://www.blogger.com/profile/09838650528375231631noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-4370129960529033824.post-61249768164758547442022-02-13T01:52:00.002+05:302022-02-13T01:52:35.796+05:30মোহর ভালোবাসার!<p></p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEii0sdXmlf044W8dGTB9bUaF3gNg2g2VC-NLmWksuvLI4UMvVxI6thw57nbYJCE6TYkJ7CzcKOCeQHFj6_gHsK7-7MSmWYHd3nCPWrOmlpLGgfLTcmxWPGZ_r21Q3LsSOxRFD1juHbMDnCx3lRGIZ1YYgwSEt-9Ig5HkoxeREHn-8zb_262cCfE70pcOQ=s1406" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1080" data-original-width="1406" height="246" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEii0sdXmlf044W8dGTB9bUaF3gNg2g2VC-NLmWksuvLI4UMvVxI6thw57nbYJCE6TYkJ7CzcKOCeQHFj6_gHsK7-7MSmWYHd3nCPWrOmlpLGgfLTcmxWPGZ_r21Q3LsSOxRFD1juHbMDnCx3lRGIZ1YYgwSEt-9Ig5HkoxeREHn-8zb_262cCfE70pcOQ=s320" width="320" /></a></div><br /><span style="font-size: 16px;">#মোহর_ভালোবাসার </span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">[ভালোবাসা উপলক্ষে একটি ছোট্ট পরিবেশনা। শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য।]</span><br />
<span style="font-size: 16px;">................................................... </span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">ছেলেটা অপরাধীর মতো মেয়েটার পাশে দাড়িয়ে আছে। আর মেয়েটা জেরা করে যাচ্ছে অনবরত। </span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">: কি? আমাকে ভালোবাসো?</span><br />
<span style="font-size: 16px;">- হুম।</span><br />
<span style="font-size: 16px;">: খুব বেশী?</span><br />
<span style="font-size: 16px;">- হুম।</span><br />
<span style="font-size: 16px;">: প্রেম করতে চাও?</span><br />
<span style="font-size: 16px;">- হুম।</span><br />
<span style="font-size: 16px;">: আমি কিন্তু ডেঞ্জারাস টাইপের মেয়ে। দুদিন পর প্রেম করার শখ মিটে যাবে নাতো?</span><br />
<span style="font-size: 16px;">- না।</span><br />
<span style="font-size: 16px;">: আমার সাথে প্রেম করতে হলে অনেক শর্ত মেনে চলতে হবে। পারবে?</span><br />
<span style="font-size: 16px;">- পারবো।</span><br />
<span style="font-size: 16px;">: শর্ত না শুনেই পারবে?</span><br />
<span style="font-size: 16px;">- হুম।</span><br />
<span style="font-size: 16px;">: তবুও বলে দিচ্ছি, যখন তখন দেখা করতে চাইবে না!</span><br />
<span style="font-size: 16px;">- আচ্ছা।</span><br />
<span style="font-size: 16px;">: রিকসায় উঠলে আমার চেয়ে চার আঙ্গুল দূরে বসবে, অযথা রোদ, বৃষ্টি, ঠান্ডা বলে রিকসার হুড উঠানোর চেষ্টা করবে না।</span><br />
<span style="font-size: 16px;">- আচ্ছা।</span><br />
<span style="font-size: 16px;">: রাস্তা পারাপারের সময়, রিকসায় ওঠা ইত্যাদি নানান অজুহাতে হাত ধরতে চাইবে না। এতোদিন একাই চলেছি। এসব আমি ভালোই পারি। আমার কেয়ার আমি নিজেই করতে পারি।</span><br />
<span style="font-size: 16px;">- আচ্ছা।</span><br />
<span style="font-size: 16px;">: আর সব শেষের কথা, আমার সাথে প্রেম করবে সে ভালো কথা কিন্তু আলগা পিরিত দেখাবে না। এসব আমার সহ্য হয়না। 'আলগা পিরিত' কি বোঝ তো?</span><br />
<span style="font-size: 16px;">- হুম বুঝি। আচ্ছা দেখাবো না। মাত্র এই ক'টা শর্ত!?</span><br />
<span style="font-size: 16px;">: আপাতত এই ক'টাই, পরে লাগলে আরও দেবো। </span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">ছেলেটা মনে মনে ভাবছে, এই মেয়ে তো দেখি খাঁটি দজ্জাল! দজ্জাল মেয়েদের সাথে প্রেম করার উপায়টা শিখে নিতে হবে। ছেলেটা আর কোন কথা না বাড়িয়ে সকল শর্তে রাজি হয়ে গেলো। </span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">বেশ কিছুদিন পর, এই জুটি রিকসায় করে কোথাও যাচ্ছে। মেয়েটা ছেলেটার হাত আকড়ে হঠাৎ বলে উঠলো,</span><br />
<span style="font-size: 16px;">: এই তুমি কি সত্যিই ছেলে?</span><br />
<span style="font-size: 16px;">- হঠাৎ এ প্রশ্ন কেন? কোন সন্দেহ আছে?</span><br />
<span style="font-size: 16px;">: সন্দেহ নেই, কিন্তু ছেলেরা তো অনেক কেয়ারিং হয়। তুমি মোটেও কেয়ারিং না।</span><br />
<span style="font-size: 16px;">- তোমার আবার কোন কেয়ারের অভাব পড়ল?</span><br />
<span style="font-size: 16px;">: দেখছো না কত ঠান্ডা? হুডটা উঠিয়ে দিলেই তো পারো।</span><br />
<span style="font-size: 16px;">- তুমি তো আমাকে হুড ওঠাতে বারন করেছিলে তো! শর্তের কথা মনে নেই?</span><br />
<span style="font-size: 16px;">: মনে আছে। কিন্তু সব কথা কি শুনতে হবে? কিছু কিছু শর্ত তো না শুনলেও পারো।</span><br />
<span style="font-size: 16px;">ছেলেটি রিকসার হুড ওঠাতে ওঠাতে বললো, "শর্ত ভাঙ্গলে তুমি কি আমাকে আস্তো রাখতে? ঝগড়া করে করে আমাকে শেষ করে দিতে না!"</span><br />
<span style="font-size: 16px;">: সব কথা শুনলেও তো ঝগড়া করি। এইযে, এখন যেমন করছি।</span><br />
<span style="font-size: 16px;">- এতো দেখি উভয় সঙ্কট! কথা শুনলেও ঝামেলা; না শুনলেও ঝামেলা।</span><br />
<span style="font-size: 16px;">: আচ্ছা, এখন থেকে সব কথা শুনতে হবে না। কিছু কিছু কথা না শুনলেও হবে। এখন টিস্যু পেপার দাও তো!</span><br />
<span style="font-size: 16px;">- টিস্যু দিয়ে কি করবে?</span><br />
<span style="font-size: 16px;">: লিপস্টিক মুছবো।</span><br />
<span style="font-size: 16px;">- কেন? কী দরকার? সুন্দর লাগছে তো।</span><br />
<span style="font-size: 16px;">: তাহলে কিন্তু তোমার গালে লাল লিপস্টিক লেগে যাবে। </span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">ছেলেটা এই দজ্জাল মেয়েটাকে আর কিচ্ছু বলার সাহস পেলো না। তবে জীবনে এই প্রথম বার মেয়েটার সাথে 'আলগা পিরিত' দেখাল। টিস্যু বের করে নিজ হাতে ঠোঁটের লাল লিপস্টিক মুছে দিলো। সাদা টিস্যু পেপারে মেয়েটার টকটকে লাল ঠোঁটের ছাপ বসে যাচ্ছে। এই টিস্যু পেপারটা ফেলে দেওয়া যাবে না, যত্ন করে বুক পকেটে রেখে দিতে হবে।</span><br />
<span style="font-size: 16px;">...................................................</span><br />
<span style="font-size: 16px;">[একটা ছেলের ফেসবুক স্ট্যাটাস এরকমই ছিলো। তবে স্ট্যাটাসের প্রথম অংশটুকু তার নিজের জীবনের সাথে মিল থাকলেও পরের অংশটুকু শুধুই কল্পনা।] </span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">কোনো এক ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় সেই ছেলেটি তার জুটিসহ রিকসায় করে ঘুরছিল। মেয়েটি হঠাৎ বলল,</span><br />
<span style="font-size: 16px;">: তুমি ওরকম স্ট্যাটাস যে দিলে, সবাই তো মনে করবে এটা আমাদের ঘটনা!</span><br />
<span style="font-size: 16px;">- প্রথম অংশটুকু তো আমাদের ঘটনাই।</span><br />
<span style="font-size: 16px;">: কী! তার মানে তুমি আমাকে দজ্জাল বলেছ?</span><br />
<span style="font-size: 16px;">- তুমি তো দজ্জালই। সমস্যা নেই, দজ্জাল মেয়েই আমার পছন্দ। আর কেউ কি জানে যে তোমাকে কল্পনা করে লিখেছি?</span><br />
<span style="font-size: 16px;">: জানুক আর না জানুক লিখেছ তো। তুমি এক্ষুনি এই স্ট্যাটাস ডিলিট করবে।</span><br />
<span style="font-size: 16px;">- আচ্ছা, আচ্ছা। করছি।</span><br />
<span style="font-size: 16px;">: থাক, হয়েছে। ডিলিট করতে হবে না। সবাই যা বোঝার বুঝে গেছে। আচ্ছা, সত্যিই তুমি কি টাইপের ছেলে গো? আমি বলা মাত্রই তুমি ডিলিট করতে গেলে কেন? আমার সব কথাই কি তোমার শুনতে হবে? মাঝেমাঝে কোন কথা না শুনে ঝগড়া করতে পারো না?</span><br />
<span style="font-size: 16px;">- কি ব্যাপার? আমার গল্পটা কি মঞ্চস্থ হতে যাচ্ছে নাকি?</span><br />
<span style="font-size: 16px;">: কেন? নায়িকা হিসেবে কি আমি পারফেক্ট না?</span><br />
<span style="font-size: 16px;">- পারফেক্ট, কিন্তু আমার কাছে কিন্তু টিস্যু পেপার নেই তো!</span><br />
<span style="font-size: 16px;">: জানতাম তোমার কাছে থাকবে না, সমস্যা নেই। আমার অনেকদিনের শখ তোমার গালে লাল লিপস্টিক লাগিয়ে দিই। সবাই আমার সীলমোহরযুক্ত তোমাকে দেখবে আর হাসবে। কোন মেয়ে আর কখনো তোমার দিকে তাকাবে না। সবাই জানবে এই সীলমারা পাগল ছেলেটা শুধুই আমার। </span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">অতঃপর ছেলেটি নিজের লেখা গল্পে, নিজেই নায়ক হয়ে গেলো। </span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">(মোহর ভালোবাসার)</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">#প্রেম #শুধু_তোমার_জন্য #প্রাপ্তমনস্কদের_জন্য </span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">©উshaস চttopaধ্যায়~</span><br />
<span style="font-size: 16px;">< তাং- ১৩|০২|২০২২ খ্রিস্টাব্দ ></span><br />
<span style="font-size: 16px;">৷ব্যারাকপুর | কলকাতা৷</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">*-*-*</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">ভালো লাগলে কমেন্ট ও ফিডব্যাক এর মাধ্যমে উৎসাহ দেবেন, পাশে থাকবেন!😊🙏🏼</span><!--/data/user/0/com.samsung.android.app.notes/files/clipdata/clipdata_bodytext_220213_015126_041.sdocx--> <p></p>Ushashttp://www.blogger.com/profile/09838650528375231631noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-4370129960529033824.post-20476391905581777232022-01-09T18:16:00.000+05:302022-01-09T18:16:23.363+05:30Money, is it all bad?<p></p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEgtlIMv-QJM3ATLISgDT5GhzkmavsV-wXrAaUFqwVOuNcfHBgEpNtrpR8itEOrSgMhrpY6hdwlyYG7cQBHu73TFJ5HPf5Gq1tihgeqVhaiRyK1-AljuRTjHPUaPlVn2SxUsuIPZspE8vHDkZw0slc0TdQTVjfmVddAszV3o3Rq4DB8QBkuKfVfRcg3Ykw=s800" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="800" data-original-width="800" height="320" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEgtlIMv-QJM3ATLISgDT5GhzkmavsV-wXrAaUFqwVOuNcfHBgEpNtrpR8itEOrSgMhrpY6hdwlyYG7cQBHu73TFJ5HPf5Gq1tihgeqVhaiRyK1-AljuRTjHPUaPlVn2SxUsuIPZspE8vHDkZw0slc0TdQTVjfmVddAszV3o3Rq4DB8QBkuKfVfRcg3Ykw=s320" width="320" /></a></div><br /><span style="font-size: 16px;">Hey there!</span><br />
<span style="font-size: 16px;">We have been taught some negative things about money 💰 that must be unlearned..</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">Here are some negative phrases that put us into the wrong frame of thinking:</span>
<br /><br /><b><span style="font-size: 16px;">“They must have stepped on someone to get to the top”</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">“Money is the root of all evil”</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">“Money is not everything”</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">“Only the cunning get all the money”</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">“I must fall in this category in order to make a lot of money” </span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">“They were lucky or inherited it from someone”</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">“Only the greedy get all the money”</span>
<br /></b><br /><span style="font-size: 16px;">The list goes on and on…</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">Here is what I want you to know. People with big hearts can have big money. You must decide how much of it you want and “why”.</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">Money is a channel in which we can express ourselves more, see the world, share with our loved ones and do things for our communities and planet 🌎 that lights up our soul. </span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">Money is only energy. ✨ It’s why we call it currency 👍 Your energy will always determine how much of it you earn. If you choose to argue this and make an excuse for an outside force that keeps you from doing that; well that is the kind of energy you don’t want to place upon it. </span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">Money like anything takes time and clarity. See it not as only a means to survive but as a means in which to channel more of your ideas and visions to reach others to spread more of your amazing force throughout your communities and planet. </span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">Money is for everyone. There is plenty of it in abundance. You can have a big 🧡 heart and make some big money 💰 There is nothing wrong with having both! The world needs more who have both. </span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">It starts with your feelings about your worthiness.</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;"><b>#sundaymotivation #MindsetMatters #changeyourthought #SuccessMindset #ChinUpFiGHTERs #money</b></span><!--/data/user/0/com.samsung.android.app.notes/files/clipdata/clipdata_bodytext_220109_181019_257.sdocx--> <p></p>Ushashttp://www.blogger.com/profile/09838650528375231631noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-4370129960529033824.post-59523945155944391862021-12-29T17:02:00.005+05:302021-12-29T17:02:46.895+05:30মাঝি মাল্লার জীবন <p></p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEj044uBsMNugE2FhK8RNbzvz8ryWuAsDcwFfSKPvGwV-nAZf9OaMr1LYSMkG9Jwgsn6tknfagYaap30yJBrq_HHxaEPOmu21QWrrUfVISrp2i79-Wu10_WBEMoUETWJTjhlHd1ZKMWms74IAfuBlv6zFW0_ViGq02DgOEdGFAxaUe7cyeyPNmMQI33LPQ=s1594" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1080" data-original-width="1594" height="217" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEj044uBsMNugE2FhK8RNbzvz8ryWuAsDcwFfSKPvGwV-nAZf9OaMr1LYSMkG9Jwgsn6tknfagYaap30yJBrq_HHxaEPOmu21QWrrUfVISrp2i79-Wu10_WBEMoUETWJTjhlHd1ZKMWms74IAfuBlv6zFW0_ViGq02DgOEdGFAxaUe7cyeyPNmMQI33LPQ=s320" width="320" /></a></div><br /> <span style="font-size: 17px;"><b>মাঝিমাল্লার জীবন</b></span><p></p>
<span style="font-size: 17px;">*****************</span>
<br /><br /><span style="font-size: 17px;">পাল উঠেছে নৌকো ভাসে</span><br />
<span style="font-size: 17px;"> পূর্ণিমার ঐ জ্যোৎস্না হাসে</span><br />
<span style="font-size: 17px;">ঢেউয়ের দোলায় দুলছে জীবন,</span><br />
<span style="font-size: 17px;"> দ্যাখো সময় কাটে রঙ্গরসে।</span>
<br /><br /><span style="font-size: 17px;">তাদের প্রাণের মাঝে তুমি </span><br />
<span style="font-size: 17px;"> বানিয়ে নিয়ে সুখের বাসা</span><br />
<span style="font-size: 17px;">জীবন চাইছে আকড়ে সেথায়</span><br />
<span style="font-size: 17px;"> ভরিয়ে দেবে ভালো বাসা।</span>
<br /><br /><span style="font-size: 17px;">ইচ্ছে গুলো স্বপ্নে রাতে </span><br />
<span style="font-size: 17px;"> ঘুমের জমি দখল করা</span><br />
<span style="font-size: 17px;">বুনছে চারা রঙীন দিনের</span><br />
<span style="font-size: 17px;"> প্রভাত আলোয় ছন্ন ছাড়া।</span>
<br /><br /><span style="font-size: 17px;">হারালে খন তুমিও শেষে </span><br />
<span style="font-size: 17px;"> গেলে যোগ বিয়োগের দেশে</span><br />
<span style="font-size: 17px;">একলা ঘরে আমিও আছি</span><br />
<span style="font-size: 17px;"> বসে ঝরা পাতার বেশে।</span>
<br /><br /><span style="font-size: 17px;">সন্ধ্যা নামল মোহিনী রূপে </span><br />
<span style="font-size: 17px;"> স্থিতধী ঐ নদীর বুকে </span><br />
<span style="font-size: 17px;">আলো আঁধারি তরী মাঝে </span><br />
<span style="font-size: 17px;"> মাঝিরা মাতে গল্পে সুখে!</span>
<br /><br /><span style="font-size: 17px;">উপরে সেতু আলোক সাজে </span><br />
<span style="font-size: 17px;"> নিয়েছে যেন মৌন ব্রত </span><br />
<span style="font-size: 17px;">আঁধার বুকে হাসে উচ্ছ্বল </span><br />
<span style="font-size: 17px;"> তরঙ্গ রাশি অবি-রত।</span>
<br /><br /><span style="font-size: 17px;">নদীর বুকে ভাসে নৌকা </span><br />
<span style="font-size: 17px;"> অপরূপ সাঁঝের রূপ-কল্প</span><br />
<span style="font-size: 17px;">গোধূলি আলোয় মগ্ন দেখো</span><br />
<span style="font-size: 17px;"> মাঝি-মাল্লার জমায় গল্প॥ </span><br />
<span style="font-size: 17px;">_______________________</span><br />
<span style="font-size: 17px;"><b>©উshaস চttopaধ্যায়</b>~</span><br />
<span style="font-size: 17px;"><তাং- ২৯|১২|২১></span><!--/data/user/0/com.samsung.android.app.notes/files/clipdata/clipdata_bodytext_211229_170136_808.sdocx-->Ushashttp://www.blogger.com/profile/09838650528375231631noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-4370129960529033824.post-16046715450478207782021-12-28T17:12:00.003+05:302021-12-28T17:12:42.227+05:30পাহাড় কোলে!<p></p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEgTw9nKgPxP2Xiy72qMGHr9bsQ_sNe7qMh4936CVP1w1HU_RHi0dNSc6LApYlCwgmgYCREe68jQsYlCdhTUJShZQQUv4PtUxVjo-ls_JHPz-jVfbeMyTsaC79l0HlD_uXr7JMJEWlXPnrRdSYsvnmOOcuGBp4j9bBmuV2M48fjUXVVnzPgpGQ9k7Gwgkw=s1901" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1080" data-original-width="1901" height="182" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEgTw9nKgPxP2Xiy72qMGHr9bsQ_sNe7qMh4936CVP1w1HU_RHi0dNSc6LApYlCwgmgYCREe68jQsYlCdhTUJShZQQUv4PtUxVjo-ls_JHPz-jVfbeMyTsaC79l0HlD_uXr7JMJEWlXPnrRdSYsvnmOOcuGBp4j9bBmuV2M48fjUXVVnzPgpGQ9k7Gwgkw=s320" width="320" /></a></div><br /> <span style="font-size: 17px;"><b>#কবিতা</b></span><p></p>
<span style="font-size: 17px;"><b>#পাহাড়_কোলে</b></span><br />
<span style="font-size: 17px;">***************</span><br />
<span style="font-size: 17px;">পাহাড় চূড়ায় মেঘেরা অমন</span><br />
<span style="font-size: 17px;">হুঙ্কার কেনো ছাড়ে, </span><br />
<span style="font-size: 17px;">নানা সূত্রে কলহ ওদের</span><br />
<span style="font-size: 17px;">যেনো যৌথ পরিবারে!</span><br />
<span style="font-size: 17px;"> </span><br />
<span style="font-size: 17px;">গুমরে ওঠে কালো মেঘে, </span><br />
<span style="font-size: 17px;">বৃষ্টি আসছে ঝেঁপে </span><br />
<span style="font-size: 17px;">পাহাড় কোলের ঝর্ণা বয়ে</span><br />
<span style="font-size: 17px;">পুরো পাকদন্ডী কেঁপে। </span><br />
<span style="font-size: 17px;"> </span><br />
<span style="font-size: 17px;">শেষে তুমিও ঝর্না হলে </span><br />
<span style="font-size: 17px;">পড়ছে চরণ যত্র-তত্র </span><br />
<span style="font-size: 17px;">মলিন সেতো স্মৃতি এখন </span><br />
<span style="font-size: 17px;">তোমার পাঠানো শেষ পত্র। </span><br />
<span style="font-size: 17px;"> </span><br />
<span style="font-size: 17px;">ঝর্ণা শাণিত, পাথর কেটে </span><br />
<span style="font-size: 17px;">রাস্তা বানায় নিজে, </span><br />
<span style="font-size: 17px;">তুমিও চালাও ধারালো ছুরি </span><br />
<span style="font-size: 17px;">ঠিক হৃদয়েরই ভাঁজে? </span><br />
<span style="font-size: 17px;"> </span><br />
<span style="font-size: 17px;">পাথর খন্ডে শ্যাওলা জমে</span><br />
<span style="font-size: 17px;">যে খানে জল পড়ে </span><br />
<span style="font-size: 17px;">তুমিও যেমন দুঃখ আঁকো </span><br />
<span style="font-size: 17px;">আমার দর্প চূর্ণ করে। </span><br />
<span style="font-size: 17px;"> </span><br />
<span style="font-size: 17px;">পাহাড়ের ঐ কোলেই দ্যাখো</span><br />
<span style="font-size: 17px;">খোঁজে তাদের বাসা</span><br />
<span style="font-size: 17px;">এখানেই আছে হেঁয়ালি হয়তো </span><br />
<span style="font-size: 17px;">রূপকথার যাওয়া আসা..</span><br />
<span style="font-size: 17px;"> </span><br />
<span style="font-size: 17px;">আরে, তুমি আমি কাছাকাছি </span><br />
<span style="font-size: 17px;">হলেও সাত জন্মের তফাৎ, </span><br />
<span style="font-size: 17px;">বাঁচতে হলে মরতে হবেই </span><br />
<span style="font-size: 17px;">এটাও জানায় জলপ্রপাত।</span>
<br /><br /><span style="font-size: 17px;"><b>©উষস চট্টোপাধ্যায়~</b></span><br />
<span style="font-size: 17px;"><তাং - ২৮|১২|২১></span><!--/data/user/0/com.samsung.android.app.notes/files/clipdata/clipdata_bodytext_211228_005726_915.sdocx-->Ushashttp://www.blogger.com/profile/09838650528375231631noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-4370129960529033824.post-73403489811545985002021-12-26T01:45:00.002+05:302021-12-26T01:45:26.706+05:30ঠুনকো সম্পর্ক! <p></p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEjsySfaCxErqIF33ohhpozSN1UzQVgA8swECLb2lsbkowEmRv1JmbWa5YFze9h86f4Jppu8dTB0y5GOBVN1XAXmmPxBbLRIAihatUr4KmLB3yOMSLt5iZ6ZzaRwDykKIltHXyGnJHRCKoyR6Jlok_JuT-RK0LiXpJA0IZssg1w4foGa15QfLr5aHy8BGQ=s1776" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1080" data-original-width="1776" height="195" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEjsySfaCxErqIF33ohhpozSN1UzQVgA8swECLb2lsbkowEmRv1JmbWa5YFze9h86f4Jppu8dTB0y5GOBVN1XAXmmPxBbLRIAihatUr4KmLB3yOMSLt5iZ6ZzaRwDykKIltHXyGnJHRCKoyR6Jlok_JuT-RK0LiXpJA0IZssg1w4foGa15QfLr5aHy8BGQ=s320" width="320" /></a></div><br /><span style="font-size: 17px;">ঠুনকো সম্পর্ক:-</span><br />
<span style="font-size: 17px;">*************</span><br />
<span style="font-size: 17px;">রানা ছুঁড়ে কাঁচের গ্লাসটা ফেলে ভাঙলো, যাতে ক্রিসমাসের রাতে মদ খাচ্ছিল।</span><br />
<span style="font-size: 17px;">টুকরো টুকরো কাঁচগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রইল মেঝেতে। সেই সাথে রেনুর লাসটাও, রানা ওঠাল না। সে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল ড্রেসিং টেবিলের বিশাল আয়নাটায় ফুটে ওঠা প্রতিচ্ছবিটির দিকে। অবসন্ন, ক্লান্ত, বিধ্বস্ত এক মানুষের প্রতিচ্ছবি যেন। রানা তাকিয়েই রইল। তারপর হঠাৎই পা ফেলে উঠে দাঁড়ালো। হেঁটে গেল ভাঙা গ্লাসের কাঁচের টুকরোগুলোর ওপর দিয়ে। ফোঁটা ফোঁটা রক্ত জেগে উঠছে পায়ের তলায়। কাঁচের টুকরোগুলো পায়ের মাংসে গেঁথে গিয়ে তাকিয়ে আছে! কতটা ভীষণ তীক্ষ্ম, কি ভয়ংকর ক্ষুধার্ত!</span>
<br /><br /><span style="font-size: 17px;">রানা তাও আরেকবার হেঁটে গেল, তীব্র যন্ত্রণায় তার সারা শরীর কেঁপে উঠল। সে বিড়বিড় করে বলল, 'আমি কি পাগল হয়ে যাচ্ছি?'</span>
<br /><br /><span style="font-size: 17px;">ঘরে তো আর কেউ নেই, শুধু রেনুর লাসটা। এই প্রশ্ন সে কাউকে করেও নি। স্রেফ স্বগতোক্তি। কিন্তু অদ্ভুতভাবে আয়নার ভেতর থেকে ক্লান্ত, অবসন্ন, বিধ্বস্ত একটা প্রতিমূর্তি কথা বলে উঠল, 'তুমি পাগল হয়ে যাও নি'!</span>
<br /><br /><span style="font-size: 17px;">রানার অবাক হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু সে একটুও অবাক না হয়ে স্বাভাবিক ভঙ্গীতে জিজ্ঞেস করল, 'তাহলে?'</span>
<br /><br /><span style="font-size: 17px;">আয়নার ভেতর থেকে প্রতিমূর্তিটা বলল, 'তাহলে আর কী? তুমি একটা সত্য আবিস্কার করে ফেলেছো'।</span>
<br /><br /><span style="font-size: 17px;">রানা বলল, 'কী সত্য?'</span>
<br /><br /><span style="font-size: 17px;">সেই রূপটা বলল, 'সম্পর্ক এত ছোট ছোট সন্দেহে টেকে না, মানছি রেনুর মৃত্যু তোমাকে ভাবিত করে তুলেছে কিন্তু ও যেটা দিনের পর দিন করছিল তাও তোমায় ক্রমাগত মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছিলো, সম্পর্ক ভেঙে গেলে এমন খুনে, আততায়ী হয়ে যায়, লুকিয়ে থাকা চেহারাটা বের হয়।'</span>
<br /><br /><span style="font-size: 17px;">রানা বলল, 'কেন?'</span>
<br /><br /><span style="font-size: 17px;">রূপটা বলল, 'খানিক আগে যে গ্লাসটায় ঠোঁট ডুবিয়ে মদ খেলে, কি মোলায়েম, মসৃণ আর পেলবতা ছুঁয়ে দিল তোমার ঠোঁট। অথচ এখন দেখ, সেই গ্লাসটাই ভেঙে গিয়ে কতটা তীক্ষ্ণ আর ধারালো হয়ে উঠেছে, পা কেটে রক্ত অবধি বের করে দিল, তাই না?'</span>
<br /><br /><span style="font-size: 17px;">রানা জবাব দিল না। প্রতিমূর্তিটা বলল, 'অথচ এই ভয়ংকর টুকরোগুলোই কিন্তু আস্ত গ্লাসটার ভেতর লুকিয়ে ছিল! তখন কি একটুও বুঝতে পেরেছো?'</span>
<br /><br /><span style="font-size: 17px;">রানা অবাক গলায় বলল, 'না'।</span>
<br /><br /><span style="font-size: 17px;">রূপটা বলল, 'সম্পর্কগুলোও এমন, ভেঙে গেলেই শুধু পুরোপুরি টের পাওয়া যায়, ভেতরে কি লুকিয়ে ছিল, কি ধারালো, কি তীক্ষ্ণ আর ভয়ংকর!'</span>
<br /><br /><span style="font-size: 17px;">রানা কোনো কথা বলল না। সে তাকিয়ে রইল রেনুর মৃতদেহ আর কাঁচের টুকরোগুলোর দিকে। ঝাপসা চোখের ভেতর সেগুলো ক্রমশই যেন পুরনো সব স্মৃতি হয়ে ফিরে আসছে। খুব দ্রুত ফিরে আসছে স্মৃতিরা। ফিরে আসছে প্রিয় কিছু মানুষ, তাদের মুখ, ফেলে আসা সময়, কিংবা একান্ত নিজের একার কোন মানুষ হয়ে। তার একান্ত কোন স্মৃতি, স্মৃতিময় সময়, সম্পর্ক কিংবা অনুভব হয়ে!</span>
<br /><br /><span style="font-size: 17px;">আহা, সে বলার জন্য উপযুক্ত আর কিছু পেল না! </span>
<br /><br /><span style="font-size: 17px;">রানা আবার উঠে দাঁড়াল। উঠে সে পুলিশকে ফোন করে তার ঠিকানা দেয় আর খবর দেয় যা ঘটেছে, তারপর চট করে ঝাঁট দিয়ে মেঝে থেকে কাঁচগুলো সরিয়ে নিল। সে আর একবার কারুর পা কাটতে চায় না, রক্তাক্ত হতে দিতেও চায় না।</span>
<br /><br /><span style="font-size: 17px;">সে জানে, কিছু সম্পর্ক, সম্পর্কের স্মৃতিও এই কাঁচের মতনই ঠুনকো, তার থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ নয়, যত দ্রুত মুছে ফেলা যায় তত ভালো। না হলে ক্রমাগত এমন করেই কেটে কেটে যেতে হয়, রক্তাক্ত হতে হয়! হয়তো আরও বেশ কয়েকটা বছর...</span>
<br /><br /><span style="font-size: 17px;">©উshaস চttopaধ্যায়</span><span style="font-size: 17px;">~</span><!--/data/user/0/com.samsung.android.app.notes/files/clipdata/clipdata_bodytext_211226_014146_585.sdocx--> <p></p>Ushashttp://www.blogger.com/profile/09838650528375231631noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-4370129960529033824.post-89540199725938800282021-12-19T16:48:00.003+05:302021-12-19T16:49:02.004+05:30The Chaos...<p></p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEgDJrHLVXtqQWZbdWsZRTX3WbqgEx8WygWwnjW_eQGKiOONwV-JXbuxqFcrft_YMXI6Jo6lEXUQ_W3C32uYCf9DTwg38p4lBydd051IlgtC9x4iwQIs0EJq2Nj6KaEqpwd9Wjgka3ZiAmR5l08w5VBqQWr-DsWvGrVFLGQCG14vK4LUxDn_YsFNpqljcQ=s1080" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1080" data-original-width="1080" height="320" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEgDJrHLVXtqQWZbdWsZRTX3WbqgEx8WygWwnjW_eQGKiOONwV-JXbuxqFcrft_YMXI6Jo6lEXUQ_W3C32uYCf9DTwg38p4lBydd051IlgtC9x4iwQIs0EJq2Nj6KaEqpwd9Wjgka3ZiAmR5l08w5VBqQWr-DsWvGrVFLGQCG14vK4LUxDn_YsFNpqljcQ=s320" width="320" /></a></div><br /><span style="font-size: 16px;">Okay I get it. 💁🏻♂️</span><p></p><br /><span style="font-size: 16px;">Life can literally have its shitty moments. It happens to us all. No matter how optimistic one can be, every now and then the f… bombs will fly out of our mouths.. 😄</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">Well maybe it is just me 🤣 </span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">However you choose to release that stress or frustration, chaos will find a way to do its thing. 🙏</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">The thing is this: It pulls things apart that we want to hold on to but don’t need to, in order to bring things together that will eventually workout to something better for us. </span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">This is called CHANGE. And with it comes discomfort 😞</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">We will still kick and scream like children in a toy store not getting what they want, but once the dust settles we actually see what we are now receiving. We get a better playing hand 🤚🏽at life. </span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">In the midst of chaos, hold steady, go with the flow and allow things to take their course. </span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;"><b>#experience #leadership #success #motivation #education #ChinUpFiGHTERs </b></span><!--/data/user/0/com.samsung.android.app.notes/files/clipdata/clipdata_bodytext_211219_151452_377.sdocx-->Ushashttp://www.blogger.com/profile/09838650528375231631noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-4370129960529033824.post-67240828878293805052021-12-09T21:46:00.002+05:302021-12-09T21:46:42.834+05:30সূর্য সেন ও চট্টগ্রামে বিদ্রোহ <p></p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEiLQeB0ka-HS8FykBw8gzMhbEnS0TkK5FCkK5i3AmrDjUmabSdj2TCz8Dc1mWZ0WJAN4MxBTUt7yXe8RVoamlalJAjj0V8dm_rVf1mXbkTYknTezBW9d4QEkGO8ocACcwMs27OdVL65FONEZs3gcfZW8aTwYJklxSsS4EoEHBKjcudvwXOKPJuGNCr9pg=s1903" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1903" data-original-width="1080" height="320" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEiLQeB0ka-HS8FykBw8gzMhbEnS0TkK5FCkK5i3AmrDjUmabSdj2TCz8Dc1mWZ0WJAN4MxBTUt7yXe8RVoamlalJAjj0V8dm_rVf1mXbkTYknTezBW9d4QEkGO8ocACcwMs27OdVL65FONEZs3gcfZW8aTwYJklxSsS4EoEHBKjcudvwXOKPJuGNCr9pg=s320" width="182" /></a></div><br /> <p></p><p dir="ltr">"বাবা, কি দেখছো?" ছেলে জিজ্ঞেস করলো। ছাত্র পড়িয়ে এখনকার কোভিড সময়ের CBSE ও ICSE-র টার্ম-১এর ফাঁকা টাইমে ইউটিউবে দেশাত্মবোধক এটা সেটা সার্চ করতে করতে সূর্য সেন নিয়ে পড়াশোনা করছিলাম, আমার রিসার্চের সেম-টাইমফ্রেমের মধ্যেই পড়ছিল।<br />
উত্তরে আমি বললাম যে, "আজকের দিনে আমরা যে স্বাধীন দেশটি অর্জন করতে পেরেছি, যাদের জন্য পেরেছি, তাদেরই মধ্যে একজনের স্বমন্ধে প্রতিবেদন। এই যেমন গতকাল বিনয়, বাদল, দিনেশ এর জন্য মনে রাখা উচিত..."। বলে দুইজনে হুজুগে দু-দুটি সহজপ্রাপ্য সিনেমাও দেখে ফেললাম সকাল থেকে। ছেলেরও এখন ছুটি, সদ্য অ্যানুয়াল শেষ হওয়ায়। বিভিন্ন ডকুমেন্টারি ও প্রতিবেদন দেখার পরে যে মুভি দুটি দেখলাম তা হল; ১: Chittagong (2012)<br />
২: Khele Hum Jee Jaan Se (2010)<br />
আপনারা আশা করি বুঝতেই পারছেন যে কোন বিপ্লবীর কথা আমরা বলাবলি করছিলাম। হ্যা, সূর্য সেন, 'মাস্টার দা' সূর্য সেন। তা ছেলের ইতিহাস বইতে সেও পড়েছে 'চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন'.. ব্যাস, ওর-ও বেশ ইচ্ছা চেপে বসল। ইতিহাসকে আরো জানার, আরো শেখার! স্বভাবতই প্রশ্ন এলো, "কে এই মাস্টার দা?" তার উত্তরে নিচের প্রতিবেদনটি লেখা রইল! 👇🏼 </p>
<p dir="ltr">বাংলা তথা ভারতের বিপ্লববাদী আন্দোলনের অন্যতম প্রধান সংগঠক হলেন চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহের মুখ্য নায়ক 'মাস্টার দা' সূর্য সেন। ১৯২১ খ্রীষ্টাব্দে অসহযোগ আন্দোলনে যোগদানের মধ্য দিয়ে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের সূচনা হয়। সশস্ত্র অভ্যুত্থানের উদ্দেশ্যে সূর্য সেন তার ছাত্র ও সহযোগীদের নিয়ে 'ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি' গড়ে তোলেন। ১৯৩০ খ্রীষ্টাব্দের ১৮ই এপ্রিল মধ্যরাত্রি অম্বিকা চক্রবর্তী, লোকনাথ বল, গণেশ ঘোষ, অনন্ত সিংহ প্রমুখ ৬৫ জন সঙ্গীকে নিয়ে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার আক্রমণ ও লুন্ঠন করেন। তাঁরা টেলিফোন, টেলিগ্রাফের তার বিচ্ছিন্ন করে চট্টগ্রামে ‘স্বাধীন বিপ্লবী সরকার’ গঠন করেন। এরপর ইংরেজ সৈন্য চট্টগ্রামে প্রবেশ করলে বিপ্লবীরা নিকটবর্তী জালালাবাদ পাহাড়ে আশ্রয় নেন এবং যুদ্ধ শুরু করেন। সশস্ত্র যুদ্ধে কয়েকজন বিপ্লবী নিহত হন ও অন্যান্যরা পলায়ন করে কিছুদিন ধরে গেরিলা আক্রমণ চালিয়ে যান। মাস্টারদার অন্যতম শিষ্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার পাহাড়তলির ইউরোপীয় ক্লাব আক্রমণ করেন এবং পুলিশের হাতে ধরা পরার আগে আত্মহত্যা করেন। অবশেষে ১৯৩৩ খ্রীষ্টাব্দে বিশ্বাসঘাতকতার ফলে সূর্যসেন ধরা পড়েন, বিচারে তাঁর ফাঁসি (১৯৩৪ খ্রীঃ ১৩ ফেব্রুয়ারী) হয়। মাস্টারদা সূর্য সেনের নেতৃত্বে চট্টগ্রামের এই যুব বিদ্রোহ সমগ্র ভারতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে এবং অন্যান্য বিপ্লবীদের উদ্বুদ্ধ করে। চট্টগ্রামের ঘটনার গুরুত্ব বিচার করতে গিয়ে স্যার স্যামুয়ের হোয় একে ‘বিপ্লবীদের ইতিহাসে অভূতপূর্ব' বলে অভিহিত করেছেন।<br />
এই হল সারমর্ম, কিন্তু আমার ইতিহাস আর ক্লাস সিক্সে পড়ার ইতিহাস কিছু হলেও ভিন্ন তো হবে, তাই না? আসুন আরো গভীরে যাওয়া যাক। </p>
<p dir="ltr">একপাশে কালী অপরদিকে বিবেকানন্দের ছবি রেখে যুদ্ধের বার্তা দিতেন মাস্টারদা: </p>
<p dir="ltr">'মৃত্যু কিংবা স্বাধীনতা', এই মন্ত্রে বিশ্বাস করতেন মাস্টারদা, তিনি সবার মাস্টারদা। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম বড় মুখ। সেই মাস্টারদা তাঁর সহ যোদ্ধাদের প্রত্যেকের ঘরে স্বামীজির ছবি রাখার কথা বলেছিলেন। বিবেকানন্দের আদর্শে যেমন উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন নেতাজী, তেমনই উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন মাস্টারদা সূর্য সেনও। সেই তথ্য মেলে বিভিন্ন ঐতিহাসিকদের লেখা থেকে। </p>
<p dir="ltr">শঙ্করীপ্রসাদ বসু তাঁর ‘বিবেকানন্দ ও সমকালীন ভারতবর্ষ’-এর ষষ্ঠ খণ্ডে ‘বিবেকানন্দ ও বিপ্লব আন্দোলন’ অধ্যায়ে বিপ্লবী অনন্ত সিংহের লেখা ‘সূর্য সেনের স্বপ্ন ও সাধনা’ গ্রন্থ থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে লিখেছেন, সূর্য সেন স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শে কতখানি প্রভাবিত ছিলেন সে সম্বন্ধে কিছু তথ্য দিয়েছেন তাঁর আর এক সহকর্মী অনন্ত সিংহ। "মাস্টারদা… বিনয়ের সঙ্গে অথচ অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে চারজন বিপ্লবী বন্ধুকে বললেন, ‘আমরা চট্টগ্রামের বুকে বসে মাত্র এই পাঁচজনে ভারতের স্বাধীনতার জন্য বিপ্লবের পরিকল্পনা করছি। আমার মনে হয় বর্তমানে মূলত আনন্দমঠের আদর্শে বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আমাদের চলা উচিত এবং মা-কালী পূজা, স্বামী বিবেকানন্দের কর্মযোগের বাণী ও গীতাপাঠ কর্তব্য হওয়া প্রয়োজনʼ, ইত্যাদি ইত্যাদি।<br />
সবাই আলোচনার পরে মাস্টারদার এই সমস্ত প্রস্তাবগুলো মেনে নিলেন। প্রত্যেকের নিজের ঘরে মা-কালীর ফ্রেমে বাঁধানো ছবি, স্বামী বিবেকানন্দের ছবি, ও একখানা গীতা রাখাটা নিয়মে পরিণত হল। আমাদের পরে যারা দলভুক্ত হয়েছে তারাও মা-কালী ও স্বামীজীর ছবি ঘরে রাখত এবং গীতা সঙ্গে রাখত।” </p>
<p dir="ltr">রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য স্বামী পূর্ণাত্মানন্দকে প্রদত্ত বিবৃতিতে বলেছেনঃ “চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের অন্যতম নায়ক লোকনাথ বল মহাশয়ের অধীনস্থ কর্মচারী ছিলাম। তাঁর নিজের মুখ থেকেই শুনেছি, মাস্টারদা যেমন আমাদের গীতার মর্মকথা বুঝিয়েছিলেন, তেমনি স্বামী বিবেকানন্দের বীরবাণী, বর্তমান ভারত, কর্মযোগ ও স্বামীজীর উদ্দীপনাময়ী বক্তৃতাবলী পড়তে উৎসাহ যোগাতেন।” </p>
<p dir="ltr">সূর্য সেন ১৮৯৪ সালের ২২ মার্চ চট্টগ্রামের রাউজান থানার নোয়াপাড়ায় অর্থনৈতিক ভাবে অস্বচ্ছল পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম রাজমনি সেন এবং মায়ের নাম শশী বালা সেন। রাজমনি সেনের দুই ছেলে আর চার মেয়ে। সূর্য সেন তাদের পরিবারের চতুর্থ সন্তান। দুই ছেলের নাম সূর্য ও কমল। চার মেয়ের নাম বরদাসুন্দরী, সাবিত্রী, ভানুমতী এবং প্রমিলা। শৈশবে পিতা মাতাকে হারানো সূর্য সেন কাকা গৌরমনি সেনের কাছে মানুষ হন। সূর্য সেন ছেলেবেলা থেকেই খুব মনোযোগী ও ভাল ছাত্র ছিলেন এবং ধর্মভাবাপন্ন ও গম্ভীর প্রকৃতির ছিলেন। </p>
<p dir="ltr">১৯১৬ সালে বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজের ছাত্র থাকাকালীন সময়ে সূর্য সেন সরাসরি রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত হন। বিপ্লবীদের গোপন ঘাঁটি বলে প্রসিদ্ধ, অধ্যাপক সতীশচন্দ্র চক্রবর্তীর সান্নিধ্যে আসেন। তিনি যুগান্তর দলের সাথে যুক্ত ছিলেন। সূর্য সেনকে তিনি বিপ্লবের মন্ত্রে দীক্ষা দেন। সূর্য সেন ১৯১৮ সালে বিএ পাশের সাথে শিক্ষাজীবন শেষ করে চট্টগ্রামে এসে গোপনে বিপ্লবী দলে যোগ দেন ও উমাতারা উচ্চ-বিদ্যালয়ে গণিতের শিক্ষক রুপে যোগদান করেন। সেই শুরু, বাকিটা ইতিহাস। </p>
<p dir="ltr">১৯৩১ সালের এপ্রিল মাসে এক বিশেষ আদালতে রাজদ্রোহ মামলায় অভিযুক্ত ৩২ জন বন্দির বিচার আরম্ভ হয়। সূর্য সেন মাইন ব্যবহার করে জেলের প্রাচীর উড়িয়ে দিয়ে বন্দিদের মুক্ত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। একই সাথে তিনি আদালত ভবন ধ্বংস করারও উদ্যোগ নেন। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন কল্পনা দত্ত। হামলার দিন ধার্য করা হয়েছিল ৩রা জুন। শেষ মুহূর্তে সর্বশেষ মাইনটি বসানোর সময় পুলিশের নজরে পড়ে যাওয়ায় গোটা পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়ে যায়। </p>
<p dir="ltr">সূর্য সেনের দলের অনেকেই গ্রেফতার হয়েছিলেন। কিন্তু সূর্য সেন ধরা ছোঁয়ার বাইরেই থেকে গেলেন। এই সময় তাঁর গ্রেফতারের জন্য ৫০০০ টাকার পুরস্কার ঘোষণাও করা হয়েছিল। এরই ভিতরে ১৩ জুন পটিয়ার ধলঘাটে সাবিত্রী দেবীর বাড়িতে বিপ্লবীরা মিলিত হন। এই বাড়িতে তখন ছিলেন সূর্য সেন, নির্মল সেন, প্রীতিলতা এবং অপূর্ব সেন। সেখানে আচম্বিতে গোর্খা সৈন্য নিয়ে হানা দেয় ক্যাপ্টেন ক্যামেরন। এখানকার যুদ্ধে ক্যাপ্টেন ক্যামেরন নিহত হয়। বিপ্লবীদের পক্ষে শহিদ হয়েছিলেন নির্মল সেন। পরে পালিয়ে যাওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে শহিদ হন অপূর্ব সেন (ভোলা)। </p>
<p dir="ltr">প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার-এর ডায়রি থেকে জানা যায়, এই সময় অপূর্ব সেন জ্বরে কাতর ছিলেন। দোতলার একটি ঘরে প্রীতিলতা, অপূর্ব সেন ও নির্মল সেন ছিলেন। সৈন্যদের আগমনের কথা সূর্য সেন এসে সবাইকে জানান। সূর্যসেন প্রীতিলতাকে নিচের তলার মেয়েদের ভিতর পাঠিয়ে দেন। আক্রমণের শুরুতেই ক্যামেরন নির্মল সেনের গুলিতে আহত হয়। এরপর আরও কিছুক্ষণ উভয় পক্ষের ভিতর গুলি চলে। এক পর্যায়ে নির্মল সেন মৃত্যুবরণ করেন। পরে প্রীতিলতা ও অপূর্ব সেনকে নিয়ে সূর্য সেন সন্তর্পণে এই বাড়ি ত্যাগ করেন। এই সময় সৈন্যদের গুলিতে অপূর্ব সেন মৃত্যুবরণ করেন। </p>
<p dir="ltr">জুলাই মাসে সরকার সূর্য সেনকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য বাড়িয়ে দশ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে। তৎকালীন আনন্দবাজার পত্রিকায় এই বিষয়ে একটি খবর প্রকাশিত হয়।<br />
'সূর্য সেনকে ধরিয়া দিতে পারিলে দশ হাজার টাকা পুরস্কার।' এই ছিল শিরোনাম, নিচে বিস্তারিত খবরের বিবরণ দেওয়া হল। </p>
<p dir="ltr">খবরটি ছিল-<br />
'১৯৩০ সালের এপ্রিল মাসে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন কার্যে বিপ্লবী দলের নেতা বলিয়া কথিত সূর্য সেনকে যে ধরিয়া দিতে পারিবে, বা এমন সংবাদ দিতে পারিবে যাহাতে সে ধরা পড়ে, তাহাকে দশ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হইবে বলিয়া ঘোষণা করা হইয়াছে। বিগত ১৩ই জুন তারিখে পটিয়ার বিপ্লবীদের সহিত যে সংঘর্ষের ফলে ক্যাপ্টেন ক্যামেরণ নিহত হইয়াছেন, সূর্যসেনই নাকি সেই সংঘর্ষের পারিচালক।'<br />
(আনন্দবাজার। ৩রা জুলাই ১৯৩২) </p>
<p dir="ltr">এরপর সূর্য সেন চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে অবস্থিত ইউরোপীয়ান ক্লাব আক্রমণের পরিকল্পনা করলেন। এ অভিযানের দায়িত্ব দেওয়া হল প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারকে। ১৯৩২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে আক্রমণ করা হল ইউরোপীয়ান ক্লাব। সফল আক্রমণ শেষে ফেরার পথে এক ইংরেজ অফিসারের গুলিতে প্রীতিলতা আহত হলেন। ধরা না দেবার প্রত্যয়ে, সঙ্গে রাখা সায়ানাইড বিষ পান করে তিনি আত্মাহুতি দিলেন। ভারতের মুক্তিসংগ্রামের প্রথম নারী শহীদের নাম প্রীতিলতা। </p>
<p dir="ltr">‘ধন্যি ছেলে, দেখিয়ে গেছে আমরাও জবাব দিতে জানি’...তখন সবার মুখে মুখে এই কথা! </p>
<p dir="ltr">সূর্য সেন ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দের ২রা ফেব্রুয়ারি গৈরালা গ্রামে আশ্রয় নিয়েছিলেন। এই সময় ইংরেজ সরকার তাঁর মাথার দাম ধার্য করেছিল দশ হাজার টাকা। এখানে ব্রজেন সেন মাস্টারদাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য নিয়ে আসেন। এই গ্রামের বিশ্বাস-বাড়ির গৃহবধু ক্ষিরোদাপ্রভা বিশ্বাসের ঘরে ছিলেন। ব্রজেন সেনের বাসা থেকে কার জন্য খাবার নিয়ে ক্ষিরোদাপ্রভা বিশ্বাসের ঘরে যাচ্ছে, তা জানার জন্য ব্রজেন সেনের ভাই নেত্র সেন বিশেষ আগ্রহী হয়ে ওঠে। পরে সূর্য সেনের অবস্থানের কথা জানতে পরে, পুলিশকে খবর দেয়। তারপর রাতের বেলা আলোর সংকেত দেখিয়ে নেত্র সেন সৈন্যদের পথ দেখায়। বিষয়টি ব্রজেন সেন বুঝতে পেরে শেষ মুহূর্তে চেষ্টা করেও সূর্য সেনকে রক্ষা করতে পারেননি। ক্যাপ্টেন ওয়ামস্লীর নেতৃত্বে একদল গোর্খা সৈন্য সূর্য সেনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দের ১২ জানুয়ারিতে তাঁর ফাঁসি হয়। </p>
<p dir="ltr">মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগে তিনি সহকর্মীদের উদ্দেশ্যে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন। মূল লেখাটি ছিল ইংরেজিতে। নিচের তারই বাংলা তুলে ধরা হল -<br />
'আমার শেষ বাণী –আদর্শ ও একতা। ফাঁসির রজ্জু আমার মাথার উপর ঝুলছে। মৃত্যু আমার দরজায় করাঘাত করছে। মন আমার অসীমের পানে ছুটে চলছে। এই তো আমার সাধনার সময়। এই তো আমার বন্ধুরূপে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করার সময়, হারানো দিনগুলোকে নতুন করে স্মরণ করার এই তো সময়। </p>
<p dir="ltr">কত মধুর তোমাদের সকলের স্মৃতি। তোমরা আমরা ভাই-বোনেরা তোমাদের মধুর স্মৃতি বৈচিত্রহীন আমার এই জীবনের একঘেয়েমিকে ভেঙে দেয়। উৎসাহ দেয় আমাকে। এই সুন্দর পরম মুহূর্তে আমি তোমাদের জন্য দিয়ে গেলাম স্বাধীন ভারতের স্বপ্ন। আমার জীবনের এক শুভ মুহূর্তে এই স্বপ্ন আমাকে অনুপ্রাণিত করেছিল। জীবনভর উৎসাহভরে ও অক্লান্তভাবে পাগলের মতো সেই স্বপ্নের পেছনে আমি ছুটেছি। জানি না কোথায় আজ আমাকে থেমে যেতে হচ্ছে। লক্ষ্যে পৌঁছানোর আগে মৃত্যুর হিমশীতল হাত আমার মতো তোমাদের স্পর্শ করলে তোমরাও তোমাদের অনুগামীদের হাতে এই ভার তুলে দেবে, আজ যেমন আমি তোমাদের হাতে তুলে দিয়ে যাচ্ছি। আমার বন্ধুরা – এগিয়ে চল, এগিয়ে চল – কখনো থেমো না, পিছিয়ে যেও না। পরাধীনতার অন্ধকার দূরে সরে যাচ্ছে। ঐ দেখা যাচ্ছে স্বাধীনতার নবারুণ। কখনো হতাশ হয়ো না। সাফল্য আমাদের হবেই। ভগবান তোমাদের আশীর্বাদ করুন। </p>
<p dir="ltr">১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ই এপ্রিলের চট্টগ্রাম ইস্টারের দিনের সেই বিদ্রোহের কথা কোনো দিনই ভুলে যেও না। জালালাবাদ, জুলখা, চন্দননগর ও ধলঘাটের সংগ্রামের কথা সব সময় মনে রেখো। ভারতের স্বাধীনতার বেদীমূলে যেসব দেশপ্রেমিক জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাঁদের নাম রক্তাক্ষরে অন্তরের অন্তরতম প্রদেশে লিখে রেখো। আমাদের সংগঠনে যেনো বিভেদ না আসে কখনো– এটাই আমার একান্ত আবেদন। যারা কারাগারের ভেতরে ও বাইরে রয়েছে, তাদের সকলকে জানাই আমার আশীর্বাদ। বিদায় নিলাম তোমাদের কাছ থেকে। বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক। </p>
<p dir="ltr">চট্টগ্রাম কারাগার<br />
১১ই জানুয়ারি, ১৯৩৪<br />
বন্দেমাতরম<br />
সকাল ৭টা। </p>
<p dir="ltr"><span style="color: black;">©</span><span style="color: black;"><span style="background-color: #1877f2;">উshaস চttopaধ্যায়</span></span><span style="color: black;">~</span> </p>
<p dir="ltr">[<span style="background-color: #1877f2;">#তথ্যসূত্র_ঋন</span> 👇🏼<br />
• চিটাগং এন আপরাইসিং: মানিনি চ্যাটার্জি, কলকাতা ও সুবোধ রায়ের সাক্ষাৎকার ২০০৫</p>
<p dir="ltr">• চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন : চারুবিকাশ দত্ত, কলকাতা </p>
<p dir="ltr">• আমি সুভাষ বলছি। প্রথম খণ্ড । শৈলেশ দে। বিশ্ববাণী প্রকাশনী। কলকাতা-৯। অগ্রহায়ণ, ১৩৭৫ <br />
ও শঙ্করীপ্রসাদ বসুর বই এবং উইকিপিডিয়া]</p>Ushashttp://www.blogger.com/profile/09838650528375231631noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-4370129960529033824.post-31831114298848576112021-12-02T17:06:00.001+05:302021-12-02T17:06:36.469+05:30রুজভেল্ট কে অন্যতম সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে গন্য করার কারণ!<p></p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgHBTIEYBS7qywOggGxp-ORaK5o-MkOELyjDo-RJ5z2EeC7wdv1Tzh_gdfu-uOkzZTfvJPSj7i1v1pdWX60CUIhBMmHyxAvO_t_ghrk1wrwA3DDzEMKn2nPH-MAvtNf1vm9FYoxkeKlcJ1g/s1862/PicsArt_12-02-02.41.00.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1080" data-original-width="1862" height="186" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgHBTIEYBS7qywOggGxp-ORaK5o-MkOELyjDo-RJ5z2EeC7wdv1Tzh_gdfu-uOkzZTfvJPSj7i1v1pdWX60CUIhBMmHyxAvO_t_ghrk1wrwA3DDzEMKn2nPH-MAvtNf1vm9FYoxkeKlcJ1g/s320/PicsArt_12-02-02.41.00.jpg" width="320" /></a></div><br /><span style="font-size: 16px;">১৯৩৩-এ অর্থনৈতিক অবস্থা! (</span><span style="font-size: 16px;"><u>রুজভেল্ট-কে সবচেয়ে সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে গন্য করার কারণ</u>)</span><p></p><br /><span style="font-size: 16px;">#৮ম_এপিসোড #৮ম_অধ্যায় #বিশ্ব_পরিস্থিতির_৮ম_ভাগ</span><br />
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">[<b>৮ম এবং এই সিজনের অন্তিম পর্ব</b> ***]</span><br />
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">রুজভেল্টের মুখোমুখি হওয়া সমস্যার একটি অংশ ছিল যে ১৯৩৩ সালে কোন সুস্পষ্ট চুক্তি ছিল না, প্রকৃতপক্ষে কি কারণে হতাশা সৃষ্টি হয়েছিল কোন স্পষ্ট চুক্তি দ্বারা এটা বলা ছিল না যে কেন এটা এতটা খারাপ হয়ে গেছে অর্থনীতি, তাই রুজভেল্টের নতুন চুক্তি, বিভিন্ন উদ্যোগের একটি নীতি শুরু করেন। এমতাবস্থায় রুজভেল্ট ঘোষণা করেছিলেন, "আমাদের অবজেক্টিভস-এর মধ্যে আমি নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ স্থানে রাখি, এবং তা সমগ্র দেশের পুরুষ, নারী ও শিশুদের সর্বপ্রথম।" ৮ই এপ্রিল রুজভেল্ট তার অ্যাডভাইজারদের একথা জানান, এবং এতে তারা যে খুব একটা খুশি ছিলেন, তা কিন্তু নয়। সবাই যে ক্ষেঁপে উঠেছিল তা না হলেও, সার্বিক মতামত ভালো ছিলনা। তার মধ্যে রয়েছে আরো একটি ব্যাপার, কার্যকরভাবে সোনার থেকে ডলারকে মুক্ত করা, মুদ্রার যথেষ্ট অবমূল্যায়ন করে সমগ্র আর্থিক বিশ্বের বিস্ময় ডেকে আনা।</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">অতিরিক্ত টাকা মুদ্রণ, মি. রুজভেল্ট মুদ্রাস্ফীতিকে অবলম্বন করেছিল যা আর আগের মতো ভয়ঙ্কর কার্যকরী কখনোই নয়। স্টক এক্সচেঞ্জের ডাউ, রকেটের মতো ওপরের দিকে উঠে গেল। সেই সময় নতুন যন্ত্রপাতির জন্য ১০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল এবং সামগ্রিক শিল্প উৎপাদন ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল। জাতীয় শিল্প পুনরুদ্ধারের অধীনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হয়ে সে বছর। অনেকেই বলে যে এইসব ১৯৩৩ সালের আইনের অংশ ছিল কিন্তু পুনরুদ্ধারের গল্পের পুরোটা মোটেই এটা নয়, মানে বললে কম বলা হবে। এটি ১২২,০০০ পাবলিক বিল্ডিং, এক মিলিয়ন কিলোমিটারেরও বেশি রাস্তা, </span><span style="font-size: 16px;">৭৭,০০০টি ব্রিজ বা সেতু এবং ২৮৫টি বিমানবন্দর</span><span style="font-size: 16px;"> ছাড়াও আরও অনেক কিছুর মধ্যে অর্থ নিবেশ করেছিল।</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">প্রায় ৪৫০,০০০ আমেরিকান, রাষ্ট্রীয় অফিসে তার প্রথম সপ্তাহে তাদের রাষ্ট্রপতিকে চিঠি লিখেছিলেন এবং প্রতিদিন চার থেকে সাত হাজার আইটেমের মধ্যে মেল বা চিঠি আসতে থাকে। হুভারের প্রেসিডেন্সির সময় যেখানে একজন ব্যক্তি হোয়াইট হাউসের মেল রুমে কাজ করত, সেখানে এফ. ডি. আর.-এর জন্য কর্মীদের সংখ্যা ৭০-এ উন্নীত করা হয়।</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">বেশিরভাগ আমেরিকানরা তাদের রাষ্ট্রপতিকে আগে কখনও কথা বলতে শোনেনি, তাই তারা বিশ্বাস করেছিল যে, তিনি তাদের ভালো করতে চান। এবং যখন তার নীতি ব্যর্থ হয়, তখন তারা এই রূপ বলাবলি শুরু করে যে, আমাদের প্রেসিডেন্টকে ব্যাঙ্কার, কর্পোরেট হেডরা হারিয়ে দিচ্ছে, ওদের দ্বারা ব্যর্থ হচ্ছে ওনার তৈরী করা কর্মসূচী। আমাদের নিজের হাতে কিছু জিনিস তুলে নিতে হবে, নিজেরাই দায়িত্ব নিতে যাচ্ছি কারণ আমরা জানি এই যে রাষ্ট্রপতি আমাদের এগুলি করা দেখতে চান। </span><br />
<span style="font-size: 16px;">১৬ই জুন কংগ্রেসের জরুরি অধিবেশন শেষ হওয়ার সময়, রাষ্ট্রপতি যে অধিবেশনের আহ্বান করেছিলেন</span><br />
<span style="font-size: 16px;">শপথ নেওয়ার সময় অঙ্গীকার ব্যক্ত করে, এফ.ডি.আর. আইনে ১৫টি বিলে স্বাক্ষর করে লাগু করেছিল, আর এতেই একশো দিন পার হয়ে গেছিল!</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">নিউ ইয়র্ক হেরাল্ড ট্রিবিউন-এর মতে যে জিনিস টা পরিচালিত করেছিল </span><span style="font-size: 16px;">সংস্কারক প্যাকেজের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে, </span><span style="font-size: 16px;">যদিও কখনো এর আগে এত ব্যাপকভাবে আমেরিকান কংগ্রেসে </span><span style="font-size: 16px;">আইন প্রবর্তন করা হয়নি, </span><span style="font-size: 16px;">এটি ছিল কৃষি ও খামার বিল! এটি কৃষি খাতে কয়েক দশক ধরে চলা স্লাইডকে আটক করতে চাওয়া, যেটি ১৯৩৩ সাল নাগাদ প্রতি মাসে আনুমানিক ২০,০০০ হারে খামার বন্ধক রাখা, </span><span style="font-size: 16px;">ব্যাংকগুলি এসব বন্ধ করে দিয়েছিল</span><span style="font-size: 16px;">। বিশ্ব অর্থনৈতিক সম্মেলনে এইসব কিছুর জন্য একটি সহযোগিতামূলক আদেশ আনার চেষ্টা করা হয়েছিল লন্ডনের রয়্যাল বরো অফ কেনসিংটনের একটি জাদুঘরে, পাথর এবং জীবাশ্মের মধ্যে সকলে একত্রিত হয়েছিল।</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">১৯৩৩ সালে লন্ডনে দ্বিতীয় বিশ্ব অর্থনৈতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং এটি ডিসার্মামেন্ট সম্মেলনের সাথে মিলে যায়। এটিও </span><span style="font-size: 16px;">কমবেশি </span><span style="font-size: 16px;">একই সময়ে, জেনেভাতে অনুষ্ঠিত হয়। পুরোটা না হলেও আংশিকভাবে, তবে কেন লন্ডনে? কারণ সমস্ত হোটেল জেনেভায় বিভিন্ন দেশের সামরিক বাহিনীর লোকজনে ভর্তি। সম্মেলনে লন্ডনের প্রধানমন্ত্রী (</span><span style="font-size: 16px;">Ramsey Mcdonald</span><span style="font-size: 16px;">) রামসে ম্যাকডোনাল্ডের বর্ণনা দিয়েছিলেন, "T</span><span style="font-size: 16px;">he fate of generations may well depend upon the courage the sincerity width of you which we are to show during the next few weeks. Let the world know, that we can show decision and give leadership অর্থাৎ </span><span style="font-size: 16px;">প্রজন্মের ভাগ্য আপনার আন্তরিকতার ও সাহসের উপর নির্ভর করতে পারে। যা আমরা আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দেখাব। বিশ্বকে জানতে দিন, আমরা সিদ্ধান্ত দেখাতে পারি এবং নেতৃত্ব দিতে পারি।" তারপর এফ.ডি.আর. উদ্যোগটি ভেঙে দেয়, ৩-রা জুলাইয়ের বোমারু বার্তা হিসাবে যার পরিচিতি রয়েছে, তিনি এটি পরিষ্কার করে বলেছেন যে, জাতীয় অর্থনীতি ঠিক করা একটি আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা ঠিক করার চেয়ে তার কাছে অগ্রাধিকার পেয়েছে...</span><br />
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">সুতরাং ১৯৩৩ সালের সারমর্ম, বিশ্ব অর্থনৈতিক সম্মেলনের ট্র্যাজেডি হল এই যে তিনটি প্রধান গণতান্ত্রিক শক্তি একটি অর্থনৈতিক নীতি এবং একটি আর্থিক চুক্তি করতে সক্ষম হয়নি, যারা সেখানে উপস্থিত ছিল। আমি বলতে চাইছি না যে, আপনারা তর্কে যেতে পারেন যে, তাদের সঠিক ধরণের কোনো পরিকল্পনা ছিল না কিন্তু সহযোগিতা করার কোন রকম রাজনৈতিক ইচ্ছা ছিল না। এর ফলে হল যে</span><br />
<span style="font-size: 16px;">এরপরে জার্মানি বা ইতালি বা জাপানের মুখোমুখি হওয়ার চেষ্টা করার পরে যা কিছু হয়েছিল তা অনেক বেশি সমস্যাযুক্ত ছিল। অবশ্যই তাদের অর্থনীতি তার থেকে বিন্দুমাত্র ওপরের দিকে উঠে আসেনি, আরো বিষণ্ণতা ছেয়ে গেছিল, তার থেকে পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়নি যা অতলে তলিয়ে গিয়েছিল, এক কথায় ১৯৩০-এর সম্পূর্ণ দশকে একটি অর্থনৈতিক বিপর্যয় হিসেবে পরিগণিত হয়েছিল!</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">১৯৩৩ সালেই হিটলার চ্যান্সেলর হিসাবে তার প্রথম বক্তৃতা রেখেছিলেন, প্রকৃত ইতিহাস সর্বদা একই সময়ে অনেক কিছু ঘটার গল্পকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। ১৯৩৩ সালে জেনারেল মোলা, যিনি স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধে পরিণত হওয়া ব্যর্থ অভ্যুত্থানের নির্দেশনা দিয়েছিলেন, তিনি লিখেছেন যে, 'হিটলার নিশ্চিত যে তার লোকেরা অর্থাৎ এন্টি সেমাইট জার্মান-রা আবার নিজেরা উপরের দিকে উঠতে পারবে না </span><span style="font-size: 16px;">যতদিন ইহুদি</span><span style="font-size: 16px;"> জাতির লোকেরা তার মধ্যে মিলে মিশে থাকবে। সেজন্য সে তাদের নির্যাতিত করেছে, আর যা করেছে বেশ করেছে।' ১৯৩৩ সালে হিটলার সন্ত্রাসের ব্রাউন বইটি ২৭টি ভাষায় প্রকাশিত হয়েছিল খুবই সন্তর্পণে এবং যাচাইকরণের সাথে নাৎসি শাসনের রেজিমগুলি তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল, যাতে লোকেরা সেগুলো জানতে পারে। ১৯৩৩ সালে একটি জার্মান ক্যাথলিক সংবাদপত্র হিটলারের </span><span style="font-size: 16px;">চ্যান্সেলর হিসেবে</span><span style="font-size: 16px;"> নিয়োগের বর্ণনা দেয় 'অন্ধকারে চলার মতো', কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটি আরো গাঢ় অন্ধকারে লাফেতে পরিণত হয়েছিল কিনা তা গোটা পৃথিবী জানে!!!</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">[<i>১ম সিজন শেষ হল</i>]</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;"><b>©উshaস চttopaধ্যায়~</b></span><br />
<!--/data/user/0/com.samsung.android.app.notes/files/clipdata/clipdata_bodytext_211202_170043_111.sdocx-->Ushashttp://www.blogger.com/profile/09838650528375231631noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-4370129960529033824.post-86310931459239289852021-11-23T12:44:00.006+05:302021-11-23T12:44:58.829+05:30পুতুলদের সংসার!<p></p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhm3lGumY498_-B6h445107NoP6qSWlaRycHab2IeCECcZ3rwe9haZfL_qXm3Ci_MIAGdyFAfJ14hzKuzZY4C-az59N7ff1EvN_jUhrS2NMTVCyNBs6uQUuvIqW-Zp3opLNgQmmHDHyIEah/s1440/PicsArt_11-16-06.13.31.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1440" data-original-width="1080" height="320" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhm3lGumY498_-B6h445107NoP6qSWlaRycHab2IeCECcZ3rwe9haZfL_qXm3Ci_MIAGdyFAfJ14hzKuzZY4C-az59N7ff1EvN_jUhrS2NMTVCyNBs6uQUuvIqW-Zp3opLNgQmmHDHyIEah/s320/PicsArt_11-16-06.13.31.jpg" width="240" /></a></div><br /><span style="font-size: 16px;">পুতুলদের সংসার:</span><p></p><br /><span style="font-size: 16px;">(এক প্রায় ৪০ বছর বয়সী বাবা আর তার ৬ বছরের ছেলের কথোপকথন। তারা প্রায় দিনের মতো সেদিনও বিকেলে বেড়াতে বেরিয়েছে, একথা-সেকথা বলতে বলতে তাদের খিদে পেয়ে গেল। তখনই ছেলে বাবাকে জিজ্ঞেস করে...)</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">-বাবা, আজকে আমরা কি দিয়ে ভাত খাবো?</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">-আজকে আমরা ইলিশ দিয়ে ভাত খাবো বাবা!</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">-ইলিশ মাছ? (উদগ্রীব হয়ে ওঠে সে, কিন্তু পরমুহূর্তে থিতিয়ে যায় উত্তেজনা) তুমি না বলেছো ইলিশ মাছে অনেক কাঁটা বাবা? আমি কি কাঁটাওআলা মাছ খেতে পারব বাবা?</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">-কাঁটা হলেই বা কী! আমি তোকে মাছ বেছে দেবো বাবা!</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">ছেলেকে মাছ বেছে দেয়ার কথা বলেই একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো শ্যামল বাবু! কারণ তিনি শত চেষ্টা করেও ছেলেকে মাছের কাঁটা বেছে দিতে পারবেন না! তিন বছর আগে এক এক্সিডেন্টে তার দুই হাত হারিয়ে এখন প্রায় অচল সে! নিজের এই অসহায় জীবন তার দিনে দিনে খুব অসহ্য হয়ে উঠছে আর তার পা কাটা না থাকলেও খুব একটা শক্তি তার দুই পায়ের একটাতেও এখন আর নেই। নাহলে কবে সে এই জগত সংসারের মুখে লাথি মারে!...</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">-বাবা সত্যিতো, ইলিশ মাছ দিয়ে ভাত খাবো? তুমি রোজ মাছের কথা, মাংসের কথা বলো, কিন্তু মাছ মাংস আর খাওয়াও না। সেদিন বললে মাংস দিয়ে ভাত খাবো; আমি সারাদিন হাত ধুয়ে বসেই ছিলাম আর মা খালি ডাল দিয়ে ভাত খাইয়ে দিলো! আজকে যদি মাছ না খাওয়াও আমি কিন্তু ভাত খাবো না, সত্যিই ভাত খাবো না বাবা!</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">শ্যামলের হাত না থাকলেও, পা দুটো প্রায় অবশ হলেও চোখ দুটো কিন্তু ঠিক সচল! ছেলেটার কথা শুনলে শ্যামলের সেই সচল চোখ সব সময় ভিজে ওঠে! তার কষ্ট আরো বাড়ে যখন এই চোখের জল ছেলেকেও দেখাতে হয়! আর বুকটা ফেটে যায় যখন তার ছয় বছরের ছেলেটা তার ছোট ছোট হাতে বাবার চোখের জল মুছতে মুছতে বলে, 'বাবা ইলিশ মাছ ভালো না, আমি মাছ খাবো না বাবা! মাছে খালি কাঁটা ভরা! আমি আর মাছ খাবো না বাবা!'</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">তবে আজ ইলিশের ব্যবস্থা তার ঘরে হবে! কারণ আজ তার ঘরে অতিথি এসেছে! ঘরে অতিথি আসলে শ্যামল ছেলেকে নিয়ে ঘর থেকে অনেক দূরে কোথাও চলে আসে। </span><br />
<span style="font-size: 16px;">প্রায় সময় ছেলেটা তাকে প্রশ্ন করে, বাবা বাড়িতে ওরা কারা আসে, কেন আসে? সে উত্তর দেয়, বাড়িতে অতিথিরা আসে! তাদের কাজ থাকে মা-র সাথে।</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">-বাবা অতিথিদের সাথে আমরা দেখা করি না কেন?</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">-আমি পঙ্গু মানুষ যে বাবা। তাই অতিথিদের সামনে যাই না বাবা। লজ্জা করে! আমার না গেলেই ভালো...</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">-আমিওতো, অতিথি দের সাথে দেখা করতে যাই না বাবা!</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">-তুমি আমার সঙ্গে না থাকলে আমি গল্প করবো কার সাথে বাবা? তাই তোমাকে আমার সাথে নিয়ে আসি।</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">আজ ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ফিরতে একটু বেশি দেরি হয়ে গিয়েছে শ্যামলের। ঘরে এসে দেখে পুতুল রান্না ঘরের চুলায় রান্না চাপিয়েছে। খুব ইচ্ছা করছে কাছে গিয়ে একটু কথা বলতে, কী রান্না চাপিয়েছে একটু দেখতে! কিন্তু যেদিন ঘরে অতিথি আসে সেদিন পুতুলের মন মেজাজ খুব খারাপ থাকে। অল্প কথায় রেগে যায়। এমনি অবশ্য সে খুব ভালো মেয়ে। নাহলে এত কষ্টের সংসারে কেউ থাকে? কার এত ঠেকা পড়েছে ল্যাংড়া, পঙ্গু লোকের সাথে ঘর করার?</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">ঘরের মেঝেতে মাদুর বিছিয়ে পুতুল ভাতের প্লেট রাখতে রাখতেই তার ছেলে জেনে গিয়েছে আজ তাদের বাড়িতে ইলিশ রান্না হয়েছে! সেই আনন্দে ছেলেটা ছটফট করছে! বারেবারে হাত ধুতে যাচ্ছে আর আসছে সে। ছেলের ছটফটানি দেখে পুতুল একটা ধমক দিতে গিয়েও থেমে গেলো। দু'দিন আগে ছেলেটা জ্বর থেকে উঠেছে, একটু ভালো মন্দ যে ছেলেটাকে খাওয়াবে সেই অবস্থা পুতুলের সংসারে নেই। অতিথি আসলে তার মন মেজাজ খারাপ থাকলেও আজ সে একটু খুশি কারণ আজ সে কিছু টাকা বেশি পেয়েছে। সেই টাকাতেই ইলিশ কিনে আনা হয়েছে। যদিও এই ইলিশ খাওয়ার মত বিলাসিতার ফল অনেকদিন তাকে ভোগ করতে হবে সে জানে। তবুও ছেলেটা একটু পেট ভরে ভাত খাক আজ!</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">পুতুলের ছেলেটা হাত ধুয়ে আসলেও সে তার মায়ের হাতেই ভাত খাচ্ছে। একটা মাছে এত কাটা থাকে যে কিভাবে সে ভেবেই পাচ্ছে না। তার মধ্যে তরকারিটাও হয়েছে ঝাল! তার মা এক দলা ভাত মুখে দেয় আর সে একটু করে জল খায়! যদিও সে ভেবেছিল লঙ্কা খাবে ভাত দিয়ে, তাই হাতে একটা কাঁচালঙ্কা নিয়েছিল সে, কিন্তু তরকারি যে এমন ঝাল হবে বোঝেনি সে, তাই লঙ্কাটা হাতেই রেখে দিয়েছে।</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">শ্যামল চুপচাপ দূরে বসে ছেলের খাওয়া দেখছে। ছেলের খাওয়া শেষ হলেই পুতুল তাকে ভাত বেড়ে খাইয়ে দেবে। ছেলেটার এত আরাম করে খাওয়া দেখে তার খিদেও বেড়ে যাচ্ছে। পুতুলেরও খিদে পাওয়ার কথা, কাল রাতে ভাত খায় নি সে। খিদেতো লাগারই কথা। খুব ইচ্ছা করছে পুতুলকে বলতে, চলো, এই প্লেটেই ভাত আরেকটু বেশি নাও, আমরা তিন জনেই এক সাথে খাই! তবুও বলতে গিয়ে চুপ হয়ে গেলো সে। যদি রাগ করে কিছু বলে বসে পুতুল? ঘরে অতিথি আসলে মেয়েটার মন মেজাজ একটু বেশি খারাপ থাকে! এছাড়া অবশ্য সে খুব ভালো মেয়ে। নাহলে কার এত ঠেকা পড়েছে ল্যাংড়া, পঙ্গু লোকের সঙ্গে সংসার করার?</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;">আধুনিকতা থেকে দূরে, বহু দূরে এক গ্রামে পুতুলের সংসার। সে গ্রামে এখনো বিদ্যুৎ ঢোকে নি, তাই সূর্য ডোবার পরে কুপির আলোতেই আলোকিত হয় পুতুলদের সংসার! সেই আলোতে অতিথি আপ্যায়ন করতে করতে ক্লান্ত ঘামে ভেজা পুতুলের ঝলমলে মুখটা দেখে শ্যামলের খুব ইচ্ছা করে পুতুলের মুখটা একটু মুছে দিতে! আর তা ভাবতে ভাবতেই একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে সে!..</span>
<br /><br /><span style="font-size: 16px;"><b>©উshaস চttopaধ্যায়~</b></span><!--/data/user/0/com.samsung.android.app.notes/files/clipdata/clipdata_bodytext_211123_124213_124.sdocx-->Ushashttp://www.blogger.com/profile/09838650528375231631noreply@blogger.com0