Tuesday, 18 May 2021

টিউশনির সময় ...


এই শহরের প্রতিটা টিউশন করানো ছেলে-মেয়ে মাসে অন্তত একবার করে ভাবে, এভাবে আর সম্ভব না। না জেনেও অভিভাবকদের খবরদারি, অনেক ইচ্ছার স্বার্থত্যাগ করা, যে সময়ে বন্ধুরা আড্ডা দেয়, সেই সময়ে টিউশন অথবা টিউশনের এর জন্য ঘুরতে যাওয়াটা মিস করা; এভাবে আর হয়না আসলে..

এখন কর্পোরেট ট্রেনার হলেও, আদপে তো সেই একই!

তবু দিন শেষে ছেলেমেয়েগুলো টিউশন টা ছাড়েনা। কারণ এটা থেকেই আর্থিক একটা স্বাধীনতা আসে, নিজের ছোট ছোট ইচ্ছেগুলো, সখ-আহ্লাদ পূরণ হয়। আমার তো মনেহয়, বাড়িতে গিয়ে টিউশন করানো হচ্ছে পৃথিবীতে সবচেয়ে কম টাকায় সবচেয়ে কষ্টের পেশা!
তাতে আবার যদি WB বোর্ডের স্টুডেন্ট হয়, তালে তো কথাই নেই, আমাদের সময় অ্যাডভান্সে মাইনের কথাটা ভাবাও যেত না!
তা, এমনিতেই ঘড়ি কম পরা হয়, সময়ের মূল্য আমার কাছে কম বলে, তবে আজ হঠাৎ করে একটি ঘড়ি খুব পছন্দ হয়ে গেল। ছোটো থেকেই ঘড়ি আর জুতোর ব্যাপারে একটু শৌখিন ছিলাম, আগ্রহ নিয়ে ঘড়িটা দেখছিলাম, দামটার দিকে চোখ পড়তেই মনটা খারাপ হয়ে গেল, হাঁটা শুরু করলাম গন্তব্যের পথে।

হাটতে হাটতে পেট্রল পাম্প এর মোড় ক্রস করতেই স্মৃতি চারণ করছিলাম। কলেজের দিনগুলোতে ছুটির পর মাঝে মাঝেই সোদপুরে যেতাম। সেখানে গেঞ্জি, পাঞ্জাবির দোকান গুলোর পাশে ফাস্টফুডের একটা দোকান ছিল। শোয়ার্মা বানানোর মেশিনটা বাইরে থেকে দেখা যেত, অনেক না চেনা খাবারের ঘ্রাণ পেতাম পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়। কোন দিন উঁকি মেরে দেখার ও সাহস হয়নি, মানিব্যাগ ব্যবহার করা হোতোনা তো তাই!

কিছু দিন আগে এক কাজে সোদপুরে যেতে হল। দোকান এর দিকে চোখ পড়তেই ঢুকে পড়লাম। দুই একটা আইটেম টেস্ট করার পর আমার খাওয়ার মত আর কিছু ছিল না, আর এক সময় এখানে খেতে পারা অনেক বিশাল কিছু ব্যপার ছিল 😊

একটা জিনিশ মনে পড়তেই মনটা আবার ভাল হয়ে গেল। আসলেই কোন এক মহাপুরুষ যথার্থই বলছেন-- " If something bothers you, just think. Will it matter in next 5 months, a year even in 5 years? If the answer is no. Then let it go "  

হয়ত এক সময় ৭০,০০০ টাকা দামের ঘড়িও কোন ব্যাপার হবে না 😊 সেই দিনের অপেক্ষায়, আজও টিইশনটা ছাড়া হয় না, কর্পোরেট ট্রেনার হয়েও!!

©উshas~ 

No comments:

Post a Comment