Tuesday 27 July 2021

সক্রেটিস ও সফলতা ...


সক্রেটিস ধ‍্যান করছেন। নিঃশ্চুপ বসে হয়তো জীবনবোধ নিয়ে ভাবছেন। সে সময় এক তরুণ তার কাছে গিয়ে বসলো। সক্রেটিস টের পেলেন না। অনেকক্ষণ পর সে তরুণকে লক্ষ‍ করলেন। তরুণটি বললো, সক্রেটিস, আমার একটা প্রশ্ন ছিলো।

—কী প্রশ্ন?
—সফলতার রহস‍্যটা কী? What is the secret to success?

সক্রেটিস হাসলো। বললো, কাল সকালে নদীর ধারে এসো। তখন বলবো।

পরদিন সকালেই তরুণ নদীর ধারে গিয়ে হাজির। সক্রেটিস আসলেন। বললেন, চলো নদীতে নামি। জলেতে নামতে নামতে দুজন গলা অবধি নেমে গেলো। তরুণ খুবই বিস্মিত হতে লাগলো! হঠাৎ, সক্রেটিস সে তরুণের ঘাড় চেপে জলেতে ডুবিয়ে দিলেন। তরুণটা ছটফট করতে লাগলো। সক্রেটিসের শক্তির সাথে পেরে উঠছিলো না। বেশ কিছুক্ষণ পর সক্রেটিস তাকে তুললেন। তরুণের চেহারা ফ‍্যাকাসে হয়ে গেছে। বুকভরা নিঃশ্বাস নিয়ে সে যেনো জীবন খুঁজে পেলো।

—সক্রেটিস বললো, কিছু বুঝলে?
—না!
সক্রেটিস প্রাজ্ঞের হাসি হাসলেন।
—তোমাকে যখন জলেতে ডুবিয়ে রাখা হলো তখন তুমি প্রবলভাবে কি চেয়েছিলে?
—বাতাস। শুধুমাত্র একটু বাতাসে নিঃশ্বাস নিতে চেয়েছিলাম!
—এটাই হলো সফলতার রহস‍্য। একটু বাতাসের জন‍্য তুমি যেমন তীব্রভাবে মরিয়া হয়ে উঠেছিলে, ঠিক এমন মরিয়া হয়ে কিছু চাইলেই সফলতা আসবে। এটাই সফলতার রহস‍্য। এই বলে, সক্রেটিস বিদায় নিলেন।

সফলতার প্রথম ধাপ হলো—A burning desire.
আমাদের ইচ্ছেশক্তি হলো শক্তিশালী স্প্রিং-এর মতো। এটাকে টেনে ধরে রাখাই কঠিন। একটু হেলা করলেই ছোট হয়ে যায়।
………………
©উshaস চttopaধ্যায়~
ব্যারাকপুর, ২৭৷৭৷২১ 

Monday 26 July 2021

কার্গিল বিজয় দিবস...


চিন্তা করতে পারেন, আমাদের ভায়েরা, মায়েরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে যে পোষাক বানাবে, তাতে লেখা হবে, মেড ইন পাকিস্তান! পারেন চিন্তা করতে?

চিন্তা করতে পারেন, আমাদের বিরাট কোহলি ম্যাচ জিতে ব্যাট ওঠাবে আর তখন বলা হবে, ম্যান ফ্রম পাকিস্তান! পারেন চিন্তা করতে?

চিন্তা করতে পারেন, বাঘের বদলে আপনার জাতীয় পশু হবে পাঠা! পারেন চিন্তা করতে?

চিন্তা করতে পারেন, "... বিন্ধ্য হিমাচল যমুনা গঙ্গা উচ্ছল জলধিতরঙ্গ ..." গেয়ে স্কুল শুরু করা হবে না! পারেন চিন্তা করতে?

চিন্তা করতে পারেন, আপনি চিৎকার করে গাইতে পারবেন না আপনার নিজের ভাষায়, বাংলা, হিন্দি, পাঞ্জাবি বা কন্নড় ভাষায়!

চিন্তা করতে পারেন, ডিডিএলজে, শোলে, ২২শে শ্রাবন-এর আগে বসবে পাকিস্তানি চলচ্চিত্র! আহারে বুকটা ফেটে যায় চিন্তা করতেই পাঠকদের প্রিয় লেখক পাকিস্তানের আমিশ ত্রিপাঠী, চেতন ভগত এরা!

চিন্তা করতে পারেন, বারো লাখ ঊনসত্তর হাজার বর্গ মাইলের মালিক হয়েও মাথা উচু করতে পারবেন না আপনি! পারেন চিন্তা করতে, প্রায় তেরো লক্ষ বর্গ মাইলের মালিক হয়েও আপনি পরাধীন কোনো দেশের কাছে?

সৌরভ কালিয়া, অনুজ নায়ার বা বিক্রম বাত্রারা পারেন নি চিন্তা করতে, তাইতো হৃদস্পদন থামার আগে পর্যন্ত মেশিনগান চালিয়ে গিয়েছিলেন মেড ইন ইন্ডিয়ার জন্য।

চিন্তা করতে পারেন নি অজয় আহুজার বা কে. নচিকেতা রাও-এর মতো লোকেরা। তাইতো মিগ ২১ বিমান নিয়ে আকাশে উড়ে ছিলেন, নির্যাতন সহ্য করেছিলেন ধোনি, কোহলির দের মত নতুন ম্যান ফ্রম ইন্ডিয়ার জন্য।

বাঘের জাতের জাতীয় পশু হবে পাঠা? কোনদিনও না! তাইতো বোমায় কত সৈনিকের একহাত উড়ে গেলেও একাই যুদ্ধ চালিয়ে গিয়েছিল আরেক হাতে। বিধ্বস্ত কতকেউ ঝাঁপিয়ে পরেন পাহাড়ি উপত্যকায়! অপেক্ষায় থাকা পাকিস্তানি সৈন্যরা বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে মারে দেশের এক আহত বাঘকে, সৌরভ কালিয়াকে, তাইতো তাদের জাতীয় পশু আজ পাঠা।

সহযোদ্ধাদের পিছেয়ে যেতে বলে সেদিন একাই মেশিন গান চালিয়ে গিয়েছিলেন বিক্রম। তার মেশিন গানের গুলি বন্ধ হলে সব সাথীরা মারা পরবে তাইতো একাই সেদিন পাকিস্তানিদের তিনটে ক্যাম্প গুঁড়িয়ে দেন। দেড়শত সহযোদ্ধার জীবন সেদিন বিক্রম বাত্রা বাঁচিয়ে দেন মর্টারের গোলায় শহীদ হয়ে। আমি সিওর শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করার আগ পর্যন্ত তার কানে বেজে ছিল, "ইয়ে দিল মাঙ্গে মোর" যা পরে একটি পানীয়ের ট্যাগলাইন হয়!

আহত যোদ্ধাকে কাঁধে তুলেই এল.এম.জি চালিয়ে যান ক্যাপ্টেন বিজয়ন্ত থাপার। মর্টারের গোলায় নিজে আহত হয়েও সেদিন গুলি করা থামাননি। জানেন সেদিন বন্ধুদের বাঁচাতে পারলেও নিজে নিহত হন পাকিস্তানি সৈন্যদের হাতে। যিনি নিজে চিঠি লিখেছিলেন তার বাবা-মাকে, মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে, যে তিনি হয়তো জীবিত থাকবেন না যখন তারা সেই চিঠি পড়বেন, তিনি স্বর্গ থেকে দেখবেন! আবার যদি মানুষ হয়ে জন্মানো, তবে ইন্ডিয়ান আর্মি হিসেবে দেশের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করবেন।

তিনি চাইলেই পালিয়ে যেতে পারতেন কিন্তু হয়তো জানতেন তিনি পিছিয়ে গেলে আর কোনো যুবক উদ্বুদ্ধ হবে না জে. পি. দত্তের বর্ডার সিনেমার ঐ এক গানে "সন্দেশে আতে হ্যায়", এল ও সি কার্গিল সিনেমায় তার স্থান হলেও আর কেউ অনুপ্রাণিত হবে না সৈন্যদলে নিজের নাম লেখাতেে। তাইতো এঁরা এল.এম.জি চালিয়ে গেছিলেন শত্রুর গুলি এসে লাগার আগে পর্যন্ত, তাইতো কয়েকজন ছাড়া বিশ্ব চেনে এনাদেরকে এখনো, মৃত্যুর ২২ বছর পরেও!

বীরের গুলি লাগে মাথায় কিংবা বুকে, বীর গুলি করতে করতেই সামনে এগিয়ে যায়। শত্রুদের শেষ করতে সেদিন মনোজ পান্ডে সাহেব গুলি করতে করতে এগিয়ে যান। তিনি কি জানতেন তার কারনে একদিন গোটা ভারত এগিয়ে যাবে। আমার মনেহয় তিনি জানতেন! তাইতো হাসতে হাসতে শত্রুর গুলি তিনি সেদিন মাথায় ও বুকে নেন। তাইতো আজ এত লক্ষ হাজার বর্গ মাইলের মালিক আমি স্বাধীন।

তারা চিন্তা করেছিলেন বলেই আজ আমরা এখনো স্বাধীন, নতুন করে কোনো পরাধীনতার আড়ালে... আচ্ছা আমরা চিন্তা করিতো এই স্বাধীনতার রক্ষার কথা? ভাবার সময় এখনো আসেনি কি?

©উshaস চttopaধ্যায়~

#কার্গিল_বিজয়_দিবস 

Thursday 22 July 2021

অভিশপ্ত পা*-এর কাহিনী ...

 


'অভিশপ্ত পা*-এর কাহিনী'

একবার এক দেশের একজন রাজনীতিবিদ গাড়ি করে এক সেমিনারে বক্তৃতা দিতে যাচ্ছিলেন তখন রাস্তায় ট্রাফিক সিগন্যালে তার গাড়ি দাঁড়ালে গাড়ির গ্লাসে এক বৃদ্ধ ভিক্ষুক এসে টোকা দিয়ে কিছু বলতে থাকেন, যেন ভিক্ষা চেয়ে চলেছেন!

বৃদ্ধ গ্লাসে টোকা দিতেই থাকলে রাজনীতিবিদ মহোদয় বিরক্ত নিয়ে গ্লাস নামিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,
-কী সমস্যা তোমার, কি হয়েছে?

তখন বৃদ্ধ বললেন,
-কয়টা ট্যাকা দেবেন! ক্ষুধা লাগিছে! খাবার খাবো!

রাজনীতিবিদ মহোদয় বিরক্ত নিয়ে বললেন,
-টাকা নেই! মাফ করো!

বৃদ্ধ লোকটি রাজনীতিবিদ মহোদয়ের কথা শুনে রাগে কাঁপতে কাঁপতে বললেন,
-'খাইলাম না তোর ট্যাকায় ভাত! কিন্তু মিথ্যা কথা কইলি না আমার লগে? তোর পকেটে পনেরো হাজার তিনশো বাষট্টি ট্যাকা আছে তাও মিথ্যা কইলি আমারে? তোরে অভিশাপ দিলাম আমি! এখন থেকে তুই জীবনে যতবার মিথ্যা বলবি ততবার আওয়াজ কইরা পাদ দিবি! ফুঁ!

বৃদ্ধের কথা শুনে রাজনীতিবিদ মহোদয়ের পাশে বসা পিএ বৃদ্ধকে জোরে ধমক দিলেন! বৃদ্ধ আবার রাগ নিয়ে বললেন;
-কুত্তার বাচ্চা চামচার ঘরে চামচা! চামচামি করছ ওটার? তোরেও অভিশাপ দিলাম! এখন থেকে তোর স্যার মিথ্যা বললে পাদ দেবে আর সে যতবার মিথ্যা বলবে ততবার তুই হাইগ্যা দিবি প্যান্টে! ফুঁ!

সিগন্যাল ছাড়লে রাজনীতিবিদ মহোদয়ের গাড়ি চলতে শুরু করলো কিন্তু রাজনীতিবিদ মহোদয় আর তার পিএ লজ্জায় কেউ কিছু বলছেন না তবে তিনি সত্যি সত্যি ভয় পেয়েছেন কারণ বৃদ্ধের কথা সত্যি! তার পকেটে পনেরো হাজার টাকা আর কিছু ভাংতি আছে! তিনি পকেট থেকে সেগুলো গুনে দেখেন সত্যি পনেরো হাজারের সাথে খুচরো তিনশো বাষট্টি টাকা আছে!

বৃদ্ধ নিশ্চয় ঝড়ে বক মেরেছেন! তিনি সেমিনারে পৌছে সেমিনারে বক্তব্য কী দেবেন তা ভাবতে ভাবতে বৃদ্ধের কথা সাময়িকভাবে ভুলে গেলেন।

সেমিনারে গিয়ে রাজনীতিবিদ মহোদয় ষ্টেজে বক্তৃতা দিতে উঠে সবাইকে সম্বোধন জানিয়ে বললেন,

-বিরোধী দল আমার নামে নানান কথা ছড়াচ্ছে! তারা বলছে আমার নাকি সিঙ্গাপুরে বাড়ি আছে, সুইস ব্যাঙ্কে টাকা আছে যা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা!

এইটুকু বলতেই রাজনীতিবিদ মহোদয় সেমিনার হল কাঁপিয়ে শব্দ করে পাদ মেরে বসলেন আর তার পাশে দাঁড়ানো পিএ প্যান্টে হাগু করে দেন!

সেমিনারে থাকা মানুষজন রাজনীতিবিদ মহোদয়ের পাদের শব্দে হো হো করে হেসে দিলে রাজনীতিবিদ মহোদয় দৌড়ে হল ছাড়েন আর তার পিএ দৌড়ান বাথরুমের দিকে!

রাতে বাড়িতে ফিরে তিনি ব্যাপারটা কারো সাথে শেয়ার করবেন ভাবছেন কিন্তু লজ্জায় শেয়ার করতে পারছেন না! তবুও স্ত্রীকে ডেকে বললেন,
-আমাকে একটা প্রশ্ন করোতো! যেকোনো প্রশ্ন করো!

তার স্ত্রী অবাক হয়ে বললেন,
-কী হয়েছে তোমার?

রাজনীতিবিদ মহোদয় ধমক দিয়ে বললেন,

-আরে যেকোনো প্রশ্ন করো না!

তার স্ত্রী বললেন,
-তোমার নাম কী?

রাজনীতিবিদ প্রথমে সত্যি নাম বলেও পরে মনে পড়লো তাকেতো মিথ্যা বলতে হবে তখন তিনি একটা মিথ্যা নাম বলতেই ঘর কাঁপিয়ে আবার অপকর্ম করলে তার স্ত্রী অবাক হয়ে বললেন,

-এইটা কী করলে তুমি?
রাজনীতিবিদ মহোদয় সাথে সাথে তার পিএ কে ফোন করে বললেন,
-তুমি কি প্যান্টে হাগু করে ফেলেছো?

পিএ কাঁদো কাঁদো গলায় বললেন,
-আজ্ঞে হ্যা স্যার! আপনি নিশ্চয় আবার মিথ্যে বলেছেন?

রাজনীতিবিদ মহোদয় বৃদ্ধের অভিশাপে সত্যি সত্যি মিথ্যা কথা বললেই পাদ মারেন আর তিনি যতবার মিথ্যা বলেন তার পিএ ততবার প্যান্টে হাগু করেন!

তিনি দেশ বিদেশে বড়ো বড়ো ডাক্তার দেখালেন তবুও কেউ তার এই সমস্যার সমাধান করতে পারলেন না!

কিন্তু রাজনীতিতে থাকতে হলে মিথ্যা না বলে উপায় নেই! আর এতদিনের মিথ্যা বলা অভ্যাস ত্যাগ করতেও পারছেন না তিনি! তবুও অনেক চেষ্টা করেও তিনি মিথ্যা বলা ছাড়তে না পারলে অসুস্থ হয়ে পড়েন আর তার এই ঘটনা দেশ বিদেশে ছড়িয়ে পড়লে তার বাড়ির সামনে সাংবাদিকরা ভিড় করে তাকে একনজর দেখার জন্যে!

এরইমধ্যে দেশের বিভিন্ন পত্রিকা তার এই পাদ দেওয়া নিয়ে নিউজ করা শুরু করলে তিনি মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ে একদিন আত্মহত্যা করে বসলেন!

তার আত্মহত্যায় সবচেয়ে বেশি খুশি হন তার পিএ কারণ এখন তার স্যার এখন নেই, তাই মিথ্যে বলতেও পারবেন না তাই প্যান্টে আর হাগু করতে হবে না তাকে! এই খুশিতে তিনি বাড়িতে ছেলেমেয়েদের সাথে আনন্দ করতে থাকা অবস্থায় হঠাৎ প্যান্টে হাগু করে দেন!

বেচারা ছেলেমেয়েদের দিকে তাকিয়ে কাঁদো কাঁদো গলায় বললেন,
-'জীবনেও তোমরা রাজনীতিবিদ হয়ো না, মরে গিয়েও এরা মিথ্যা বলা ছাড়ে না!'....

©উshaস চttopaধ্যায়~

Thursday 15 July 2021

প্রশ্ন করতে হবে ...

মানুষের এক অনন্য ক্ষমতা হলো—তার ভিতর প্রশ্ন জাগে। পৃথিবী জুড়ে মানুষের প্রশ্নগুলোই, সভ্যতাকে এতদূর এগিয়ে এনেছে।

বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন প্রশ্ন করেছিলেন ‘বিদুৎ চমকানো’ (Lightning) নিয়ে। নিউটন প্রশ্ন করেছিলেন, পৃথিবীমুখী বস্তুর গতি নিয়ে। আইনস্টাইন প্রশ্ন করেছিলেন, বস্তু যদি আলোর গতিতে চলে—তাহলে কী হবে? কালে কালে মানুষের এইসব প্রশ্ন, বহু অজানা থেকে আমাদের মুক্তি দিয়েছে। মানুষ যখন অজানা থেকে বেরিয়ে আসে, সেটা অন্ধকার থেকে আলোক প্রাপ্তির তুল্য। প্রশ্ন, সভ্যতাকে আলোকিত করেছে।

ইউরোপে যে জাগরণের (রেঁনেসা) কথা বলা হয়, সেটা জিজ্ঞাসা থেকে হয়েছে, প্রশ্ন থেকে হয়েছে। ইউরোপের সমাজ ব্যবস্থায় প্রশ্ন করা একটা সংস্কৃতির অংশ হয়ে আছে। বাইরের যে কোনো ইউনিভার্সিটিতে দেখেছি ছেলে-মেয়েরা কী করে প্রফেসরের সাথে প্রশ্নবাণে জড়িয়ে যায়। তর্ক চলে। শিক্ষার্থীদের মাথায় কোন ভয় বা দ্বিধা থাকে না। কিংবা প্রফেসররাও চিন্তা করে না, ‘ও পুঁচকে’ বলে। এই যে আবহ, রবীন্দ্রনাথ এটাকেই হয়তো বলেছিলেন ‘চিত্ত যেথা ভয় শূণ্য’। আইনস্টাইন বলেছিলেন, প্রশ্ন করা থেকে বিরত থেকো না। ভলতেয়ার নাকি বলেছিলেন, একজন মানুষকে বিচার করো তার প্রশ্ন থেকে, উত্তর থেকে নয়।

আমাদের স্কুলগুলোতে প্রশ্ন নেই। কোমলমতি শিশু-কিশোরগুলো শিক্ষকের ভয়ে কুঁচকে থাকে। অথচ ওরাই হয় খুব উৎসুক। ওদের মনের ভিতর জাগে অসংখ্য প্রশ্ন। সেসব প্রশ্নকে বের করে আনার চেষ্টা নেই শিক্ষকদের। সমাজের নীতির প্রতি প্রশ্ন করা উঠে গেছে!

আমাদের মহাবিদ্যালয়গুলিতে প্রশ্ন নেই। রাজনৈতিক নেতাদের প্রশ্ন করা যায় না। ধর্ম নিয়ে প্রশ্ন করা যায় না। ডাক্তারদের প্রশ্ন করা যায় না। আমেরিকায়, রোগীর প্রশ্ন শোনা ডাক্তারের জন্য আবশ্যক। রোগীকে সচেতন করা, ডাক্তারের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। অথচ আমাদের সমাজে, প্রশ্ন করাই যেনো এক অপরাধ। প্রশ্ন না করে করে, আমাদের মগজগুলো কী ভয়ংকরভাবে নেতিয়ে যায়। শৈশব থেকেই আমরা প্রশ্ন করা ভুলে যাই, বা কেউ করতে উদ্যত হলেও তাকে বাধা দি, থামিয়ে দি।

এই যে প্রশ্ন করা, আলোচনা করা, আস্থা নিয়ে তর্ক করা—সেটা মানুষের মনের জানালা খুলে দেয়। সেসব জানালা দিয়ে মানুষ, একই বিষয়কে বহুভাবে কল্পনা করতে শেখে। তার ভাবনার জগৎ বিস্তৃত হয়। সেসব জানালা দিয়ে ঢুকে যাওয়া আলোয় আলোকিত হয় পুরো সমাজ।

প্রশ্নহীন সমাজে জঙ্গমতা থাকে না। সেখানে গতি হ্রাস পায়। এমিবিয় গতি আসে। একসময় স্থানু হয়ে যায়।

প্রশ্ন করুন, প্রশ্ন। তুমুল প্রশ্ন হবে ক্লাসরুমে। ময়দানে, অফিসে, ডাক্তারখানায়, মন্দিরে, মসজিদে, গির্জাতে। আলোকিত সমাজের জন্য প্রশ্ন যে অপরিহার্য...

©উshaস চttopaধ্যায়~ 

Tuesday 13 July 2021

সংসার সংগ্রাম ...


সংসার সংগ্রাম:-

সন্ধ্যায় রাহুলের হাতে বিশাল কাতলামাছ দেখে রিমার চোখ বড়ো বড়ো হয়ে যায়! ছেলেমেয়ে দুটো লাফালাফি শুরু করে বাবার হাতে মাছ দেখে!

গত চার মাসে আজকে তারা এত বড় মাছ দেখলো চোখে! গত চার মাসে শাক, আলু, সোয়াবিন আর ডিম এই ছিলো তাদের বাড়ির খাবার!

একদিনতো রাহুলের ছেলেটা মাকে বলেই বসলো, 'মা মুরগী আমাদের জন্যে ডিম পাড়তে পাড়তে ব্যথায় না কবে মারাই তো যাবে, তো সেই মরা মুরগির মাংস করলে হয় না!'

রিমা ছেলের কথা শুনতে হাসতে হাসতে মাটিতে গড়াগড়ি খেলেও তার ভেতরটা কষ্টে ফেটে যাওয়ার অবস্থা!

তার স্বামীর চাকরী গেছে করোনায়, লকডাউনে! নয় মাস ধরে চাকরী নেই! সাত মাসের বাড়ি ভাড়া বাকি পড়েছে! দোকানেও বাকি জমতে জমতে লাখ খানেক টাকার কাছাকাছি হয়েছে! রাহুল যে পার্টি করত, সেও বিশেষ সুবিধা করে উঠতে পারেনি। এমনিতেই ভোটে হেরে গিয়ে নাজেহাল অবস্থা ...

বাড়িওয়ালা কয়েকবার টাকা টাকা করলে শেষ সম্বল তার এক জোড়া সোনার কানের দুল, আর ছিল এক নাকছাবি। তা বিক্রি করে সাথে আরো কিছু টাকা মিলিয়ে দুই মাসের বাড়ি ভাড়া দিয়ে সময় চেয়ে নেয় বাকি ভাড়া শোধ করার!

গ্রামেও তাদের কেউ নেই যে বাড়ি ছেড়ে গ্রাম গিয়ে উঠবে তারা!

অনেকের কাছেও ধারদেনা হয়ে আছে!

আগের লকডাইন উঠে কিছুদিন আগে নতুন একটা রেস্টুরেন্টে ম্যানেজারের চাকুরী পায় রাহুল, সেটাও এখন আবার বন্ধ নতুন করে দেশে লকডাউনের কারণে! বেশি কথাও বলতে পারে না রাহুল, কারণ যে পার্টি সমর্থন ও করে, তাদেরই কেন্দ্রে চলে! এ রাজ্যে না চললেই বা!

মাত্র দুই সপ্তাহ চাকরী করে বিদায়! এই বাজে অবস্থায় রাহুলের হাতে মাছ দেখে রিমা জিজ্ঞেস করলো কোনো খুশির খবর আছে? টাকা পেয়েছো কোথা থেকে?

রাহুল মুখে হাসি দিয়ে বললো, 'রিমা ঝাল করে মাছটা রান্না করো। আমি স্নান করে আসি। আজ সবাই মিলে এক সাথে ভাত খাবো!'

রান্না শেষ রিমাও স্নান করে আসে! মাছের গন্ধ গায়ে নিয়ে ঘুরতে কেমন ঘিনঘিন লাগতো তার। রিমার স্নান শেষে সবাই ভাত নিয়ে বসলো টেবিলে! আলু টমেটো দিয়ে রান্না করা মাছ দিয়ে ভাত পেয়ে তার ছেলেমেয়ে দুটো কী আরামেই না ভাত খাচ্ছে! অথচ দুপুরে ভাতে আলু আর সোয়াবিন দেখে প্লেট সরিয়ে উঠে যাচ্ছিল ছেলেটা!

রিমা চোখের জল আড়াল করে স্বামীকে জিজ্ঞেস করলো, 'কী ব্যাপার বললে না? কোনো সুসংবাদ আছে নাকি? হঠাৎ মাছ? আর এত দাম দিয়ে মাছ কিনেছোই বা কিভাবে?'

রাহুল খাওয়া থামিয়ে বললো, 'সকালে বের হওয়ার সময় বাড়িওয়ালার সাথে দেখা হয় রিমা। বাড়ি ভাড়া দিতে না পারলে এই মাসের মধ্যে বাড়ি ছেড়ে দিতে বলেন তিনি আর আসবাবপত্র যা আছে তা যেন কিছু না নিই সাথে করে! ওগুলো বিক্রি করে তিনি ভাড়া বুঝে নেবেন!'

'খুব লজ্জা লাগছিলো রিমা! খুব লজ্জা লাগছিলো বাড়িওয়ালার কথা শুনে! কিন্তু বেচারাকে দোষ দিয়েইবা লাভ কী? তার নিজেরও চলতে হবে, তারও তো সংসার আছে! নিত্যনৈমিত্তিক খরচ, কারেন্ট, ট্যাক্স কিছু কী আর সরকার মাফ করেছে? অনেক দিনইতো ধৈর্য ধরেছেন আর কত, তাই না?'

কিছুক্ষণ থেমে মাছের কাঁটা ফেলতে ফেলতে রাহুল বলল, 'সাহেবের কথা মনে আছে তোমার? আমার বন্ধু? তার কাছ থেকে তিন হাজার টাকা ধার করে বাজার করি আজকে। ছেলেমেয়ে দুটো কতদিন ভালোমন্দ খায় না! কত অকর্মা একজন স্বামী ও বাবা আমি! আমাকে তোমরা ক্ষমা করে দিও রিমা!'

দেশে করোনায় প্রতিদিনে সংক্রমণ আর মৃত্যুর নতুন নতুন রেকর্ড করছে! আবার তৃতীয় ঢেউয়ের মোকাবিলা করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে।

আজকে যেই শোনা যাচ্ছে যে সংখ্যা কমেছে, সঙ্গে সঙ্গে মাস্ক ছেড়ে ঘোরাঘুরি চালু আর পরেরদিনে একশোজনের মৃত্যুর নতুন রেকর্ড! এত বিধি-নিষেধ, তবু লাভ হচ্ছে না, আখেরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মানুষ, মূলত মধ্যবিত্ত ..

বড়ো করে লাল করে করোনায় একশোজনের মৃত্যুর ব্রেকিং নিউজের নিচে, "স্ত্রী সন্তানদের খাবারে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে নিজেও আত্মহত্যা করেন একজন বাবা!" সংবাদটি অনেকের চোখ এড়িয়ে গেছে!

পুলিশ রাহুলের ঘর থেকে ছোটো একটা চিরকুট পায় সেখানে লেখা, 'সংসার সংগ্রামে আমি হেরে গেলাম! আমাদের লাশেরতো আপনারা কেউ না কেউ সৎকার করবেন, শুধু একটি অনুরোধ, পারলে আমায় কবর দেবেন, এই আমার শেষ ইচ্ছা! আমার কবরে একটা নেমপ্লেট লাগিয়ে সেখানে আমার নামের জায়গায় "মধ্যবিত্ত" লিখে দেওয়ার শেষ একটা অনুরোধ রইলো আপনাদের কাছে!'...

©উshaস চttopaধ্যায়~

Saturday 10 July 2021

আত্মশ্লাঘা ...

মানুষের চেয়ে ভয়ংকর বুঝি আর কেউ নেই! অথচ এই মানুষ নাকি সৃষ্টির সেরা জীব। ভাবতেও ঘেন্না হয়। ছোটবেলা থেকে এই স্বাস্থ্য নিয়ে যে পরিমাণ কথা শুনে আসছি! আমার ইনফেরিওরিটি কমপ্লেক্স হয়ে গেছিলো! বেশ কিছুদিন পর্যন্ত আমি জানতাম, আমি থপথপে, মোটা, চেহারা ভালোনা। কেউ কি আদতে বেছে নেবে আমাকে, তখন তো গার্লফ্রেন্ডের না হলে লাইফটাই কেমন ফাঁকা! আসলে ব্যাপারটা মোটা বা স্লিম বা কালো নিয়ে না ব্যাপারটা হচ্ছে অন্যের মাথাব্যথা! নিজেকে অন্যের থেকে উন্নত ভাবার আত্মশ্লাঘা নিয়ে থাকতে আমাদের খুব ভালো লাগে। যারজন্য এই মিডিওকার চিন্তাভাবনা নিয়ে আমরা প্রতিনিয়ত আরেকজন মানুষকে ছোট করতে উঠেপড়ে লেগে থাকি! এই যেমন দশম শ্রেণীতে পড়া একজন ছাত্রকে খুন করা হয়েছে বাংলাদেশে! 'সামিন' নামের বাংলাদেশি ছেলেটার দোষ ছিলো তার স্বাস্থ্য ভালো! দেখতে নাদুসনুদুস তাই তাকে খুন করা হয়েছে!

ময়না তদন্তে বেরোলো তাকে খুন করেছে তার সহপাঠীরা, তার আত্মীয় স্বজন, তার শিক্ষক ও সমাজ মিলে!

খুনের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিলো নিচের ধারালো অস্ত্র গুলো;

-তুমি মোটা!

-হে হে এই চেহারা নিয়ে রিকশায় উঠবে কেমন করে?

-মেয়েদের মতন তার বুকে বানিয়েছে!

-কোন গোডাউনের চাল খাস?

-খাট ভাঙ্গে না তুই খাটে উঠলে?

-এই দানবের মতন স্বাস্থ্য নিয়ে তুমি খেলবে ফুটবল? মাটি কাঁপবে না?... ইত্যাদি!!!

সামিন এই অস্ত্রের হামলায় এনোরেক্সিয়া নার্ভোসা নামের এক বিরল রোগে আক্রান্ত হয় যে রোগে রোগী তার ওজন কমানো নিয়ে মানসিক ভাবে এমন ভাবে বিধ্বস্ত হয় যে ভয়ানক ভাবে তার ওজন কমাতে থাকে কারণ সে মোটা! সে সমাজে অচল এবং এক সময় সে ওজন কমাতে কমাতে মারা যায়!

সমাজে এমন আরো কিছু খুনি রয়েছে যারা মানুষ খুন করতে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে;

-তুমি কালো!

-ও বৌদি আপনার পেট এমন বেড়েছে কেন, ক'মাস চলছে?

-এ মা, বৌদি র দাড়ি আছে রে!

-বিয়ে দেবো কিভাবে তোমাকে মেয়ে, শরীরে মাংস কই? এমন শুকনো মানুষে হয়?

-এই মেয়ে ক্রিম ব্যবহার করতে পারো না ফর্সা হতে?

-বুকে মাংস নেই কেন তোমার? তুমি ছেলে না মেয়ে না বিপিএল?

-দেখ দেখ ছেলেটা কেমন কেটলির মতন হাটে! লেডিস কোথাকার!

-এ এমন বাঁটকুল কেন?

-এ এমন লম্বা কেন?

-এর দাঁত উঁচু কেন?

-এ এমন খায় কেন?

-এর গায়ের রঙ টিকটিকির মতন ফর্সা!...

Congrats! আপনারা সামিনকে আপনাদের মুখের অস্ত্রে খুন করতে পেরেছেন।

এমন অনেককেই আপনারা মুখের অস্ত্র দিয়ে মানুষ খুন করে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন, নিশ্চিন্তে! আপনাদের মতন এমন ভাগ্য কয়জন খুনির হয়, শুনি? কোর্ট, গোয়েন্দা, পুলিশ সব ফেল...

কংগ্র্যাচুলেশনস এগেন একজন মায়ের বুক খালি করার জন্যে, যার যায় সেই বোঝে।
সামিন, তুমি যেখানেই থাকো, সুখে থাকো!...

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=4161119110604453&id=100001192143675

©উshaস চttopaধ্যায়~

১০|৭|২১ < কলকাতা > 

Thursday 8 July 2021

নুন কেলেঙ্কারি! ...


নুন কেলেঙ্কারি


-ও বউ, বউ! দরজা খোল বউ! আরে পাগল আমার দরজা বন্ধ ফোবিয়া আছে তুমি জানো না? দেখ না কোনো রুমের দরজা আমি লাগাই না! এরজন্য বাথরুমেও আমি খুব একটা যাই না! আর গেলেও বাথরুমের দরজা লাগাই না! ও বউ! আরে পাগল দরজা খোল!

-না! আমি দরজা খুলছি না! আমি দরজা কিছুতেই  খুলবো না! থাকো আরো কিছুক্ষন ভিতরে! মজা বোঝ!

-আরে পাগলি, স্টোর রুম ভর্তি মাকড়শা! দরজা খোল, খোল না প্লিজ! মাকড়শা কামড়ে দিলে আমি কিন্তু স্পাইডারম্যান হয়ে যাবো! হাত কাত করলেই সুতো বের হবে তখন!

-বেরোক সুতো! আমি দরজা খুলছি না!

-আচ্ছা দরজা খুলো না কিন্তু আমি করেছি টা কী তাতো বলবে?

-কী করেছো? কী করেছো তুমি? পাশের ফ্ল্যাটের বৌদির জন্য এত প্রেম তোমার কোথা থেকে আসলো?

-আরে পাগলি বৌদি মায়ের সমান! পূজনীয় মহিলা! প্রেম আসবে কেন? হা ভগবান! তাকে আমি অনেক শ্রদ্ধা করি! তুমি খালি খালি আমাকে সন্দেহ করলে! ছিঃ ছিঃ...

-ছিঃ ছিঃ করবে না! তোমাকে আমি চিনি না ভেবেছ? তোমাদের ভাই ব্রাদার বন্ধু একজন পাশের বাড়ির বৌদির ব্লাউজ চুরি করে, একজন কাকের ছবি তোলার নাম করে ক্যামেরায় জুম করে পাশের ছাদের বৌদির যোগা দেখে! আরেজনের নামে বৌদির পেটিকোট চুরি নিয়ে বিচার বসেছে পাড়ায়! তোমাদের চিনতে বাকি আছে আমার? তুমি বৌদিকে নুন দিতে গেছো কেন?

-ও আচ্ছা, এই কথা? আগে বলবে তো? পাশের ফ্ল্যাটে থাকেন ওনারা, একটা আন্তরিকতার ব্যাপার আছে না? তরকারি রান্না করবে তার বাড়িতে নুন শেষ! নুন আনলেই আবার ফেরত দিয়ে যাবে বলেছে! এর জন্য তুমি আমাকে স্টোর রুমে আটকে রাখবে? তোমার পোষা স্পাইডার দিয়ে কামড় খাওয়াবে?

-নুন চাইছে তো তুমি আমাকে ডাকতে! তুমি তাকে কেন নুন দিতে গেলে? আমি কী মরে গেছি?

-ছিঃ ছিঃ বউ ওই কথা মুখেও আনবে না! শ্বশুর মশাইয়ের বিষয় পত্র ভাগাভাগির এখনো কিছুই হয় নিই যে! ভাগাভাগির আগে এগুলা মুখেও আনবে না!

-কী বললে তুমি? কী বললে?

-বউ অন্ধকারে ভয়ে কী বলতে গিয়ে কী বলে ফেলেছি! বিশ্বাস করো বউ, মন থেকে কিচ্ছুটি বলি নি! আমি বোকাসোকা মানুষ কী না কী বলে ফেলেছি ভয়ে!

-চরম লেডিকিলারকেও বিশ্বাস করা যায়, কিন্তু তোমাকে না! ইটিস পিটিস লম্পট!

-ছিঃ বউ ছিঃ তুমি এমন বললে? এমন? ছিঃ ... হে স্পাইডার তুমি আমাকে কামড় দাও! দাও কামড়! এই জীবন আমি আর রাখবো না!

-আবার ছিঃ ছিঃ করো! নুন চেয়েছে, তুমি আমাকে কেন ডাকলে না? বলো কেন?

-আরে তুমিতো ছিলে বাথরুমে, আধা স্নান করে কি তুমি বেরিয়ে বৌদিকে নুন দিতে? তোমাকে আধা উলঙ্গ আধা কাপড়ে দেখলে বৌদি কী ভাবতো! ছিঃ আমারতো ভাবতেই ভয় করছে! এমন করে না বউ, দরজা খোল!

-নুন দিয়েছো দিয়েছো কিন্তু বাড়িতে কী বাটির অভাব হয়েছে? তোমাকে জন্মদিনে গিফট করা তোমার আমার ছবি বসানো মগটায় কেন তাকে নুন দিলে? ওই মগটা আমার কত প্রিয় তুমি জানো না?

-ওই মগ তুমি আমাকে গিফট করছিলে? মগে ওটা তোমার আমার ছবি ছিল নাকি?

-কী বললে তুমি? কি বললে?

-বউ আবার ভয়ে উলটা পালটা বলে ফেলেছি! বিশ্বাস করো, মন থেকে বলি নি! আমি বোকাসোকা সহজসরল মানুষ কী বলতে কী বলে ফেলেছি! দরজা খোল আমি এখনই গিয়ে মগ নিয়ে আসছি! বৌদির কত্ত বড়ো সাহস তোমার আমার ছবি বসানো মগে নুন নেয়! হাও ডেয়ার ইজ সী!

-এখনি যাবেতো?

-এখনই যাবো বউ! দেখ না গিয়ে কী তুলকালাম টাই না ঘটাই! ফাজলামি করে তারা? আমার বউয়ের মগে নুন নেয়!

বৌদির কলিং বেল বাজিয়ে...

-কী ব্যাপার দাদা আপনি এমন ঘামছেন কেন?

-আরে বলবেন না বৌদি, বাড়িতে থাকলে বউকে কাজকর্মে একটু সাহায্য করিতো! বউয়ের কষ্ট আমার আবার সহ্য হয় না! পুরুষ শুধু অফিস জব করবে কেন? ঘরের কাজেও হাত লাগানো উচিত! আজকে স্টোর রুমটা পরিষ্কার করছিলাম তো, তাই টায়ার্ড হয়ে গেছি!

-ইসস আপনি কত লক্ষি! আর আমার জনকে দেখুন না! বন্ধের দিন, কই একটু বাড়িতে থাকবে, তা না সে গেছে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে, আর একা একা আমাকে ঘরের সব আজ করতে হয়!

-একা একা করবেন কেন বৌদি? কী করতে হবে, আমাকে বলুন, আমি করে দিচ্ছি!

-ছিঃ ছিঃ দাদা, আপনি বসুন, চা করছি, চা খেতে খেতে গল্প করি!

-বৌদি মনতো চায় গল্প করতে কিন্তু বাড়িতে অনেক কাজ! বউকে গিয়ে হেল্প করতে হবে! আরেকদিন এসে সারাদিন গল্প করবো ক্ষন! আরেকটা কথা বৌদি, ওই যে নুন এনেছেন না?

-নুন ফেরত লাগবে?

-না! না! বৌদি! ছিঃ নুন ফেরত লাগবে কেন? নুনটা রেখে মগটা যদি একটু দিতেন!

-দাদা, একটু পরে আমিই যেতাম আপনার ফ্ল্যাটে! আমার কাজের মেয়েটা নুনটা ঢালতে গিয়ে হাত থেকে মগটা ফেলে দিয়েছে! দুই টুকরো হয়ে গেছে মগটা! বাচ্চা মানুষতো রাগতো আর করতে পারি না!!

বৌদির জবাব শুনেই মাথাটা কেমন যেন ঘুরে গেল!

-কী হল দাদা? আপনি এমন করছেন কেন? আরে মাথা ঘুরোচ্ছে নাকি আপনার? এই যে দাদা!

-বৌদি আমি আসি! ভালো থাকবেন! শ্রাদ্ধে অবশ্যই যাবেন! আসি এখন!

-কিসের শ্রাদ্ধ দাদা? কী বলেন?

-জানবেন, বিকালের ভিতরেই জেনে জাবেন বৌদি!


তারপর....

-ও বউ! একটা জলের বোতলই না হয় দাও!

-চুপ, একদম চুপ!

-স্টোর রুমের লাইটটা নাহয় একটু জ্বালিয়ে দাও!

-চুপ, একদম চুপ!

-হাত পায়ের বাঁধনটা না হয় খুলে দাও!

-চুপ, একদম চুপ...

©উshaস চttopaধ্যায়~

Saturday 3 July 2021

ফ্রেন্ড আনফ্রেন্ড ...

ফ্রেন্ড-আনফ্রেন্ড:


হঠাৎ করে People You May Know তে মেয়েটার আইডি দেখে চোখ আটকে গেলে;

দুইদিন আগেও যে মেয়ে আমার লিষ্টে ছিলো, সে ঐখানে কেন?

মেয়েটাকে নক দিলাম! (যদিও আমি কোন মেয়েকে নক দিই না, বিয়ের পর থেকে)

আমি- আজ্ঞে, আপনি মনে হয় আমাকে ফ্রেন্ডশিপ রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছিলেন, আমি এক্সেপ্ট করেছিলাম, তারপর আবার আনফ্রেন্ড করেছেন, কারনটা জানতে পারি?

মেয়ে- আমি যশকে ভালোবাসি, আপনি আমার যশকে নিয়ে ট্রোল করেছেন, তাই আপনাকে আনফ্রেন্ড করে দিয়েছি।

সবাই বলে আমি নাকি চার অক্ষরের বোকা** টাইপের। মেয়েটার রিপ্লাই পড়ে আরো কঠিন টাইপের বোকা*দা হয়ে গেছি।

©উshaস চttopaধ্যায়~

#অনুগল্প #ফ্রেন্ড_আনফ্রেন্ড