Thursday, 7 October 2021
হিটলারের ক্ষমতায়নের পর...
১৯৩৩-এ জার্মানির অবস্থা! (হিটলারের ক্ষমতায়ন)
#পঞ্চম_এপিসোড #৫ম_অধ্যায় #বিশ্ব_পরিস্থিতির_৫ম_ভাগ
ওয়েইমার রিপাবলিক কে প্রায়ই গণতান্ত্রিক ব্যর্থতার জন্য রাজনৈতিক দুর্বলতার অন্যতম এক উদাহরণ হিসেবে ধরা হয়, কিন্তু যখন এটিকে ইউরোপের অন্যান্য দেশের সাথে তুলনা করতে শুরু করেন, তখন দেখবেন যে এটি আসলে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর দীর্ঘতম বেঁচে থাকা গণতন্ত্রের মধ্যে একটি। তৃতীয় রাইকে রূপান্তরের শুরুর দিকে, ২৭-এ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৩ সন্ধ্যার ঠিক পরেই, পথচারীরা রাইকস্ট্যাগের বা তার কাছেপিঠের থেকে কাঁচ ভাঙার শব্দ শুনতে পায় এবং কিছুক্ষণ পরেই ভবনের অভ্যন্তরে আগুন জ্বলতে দেখে। ঘটনাস্থলে হিটলার, গোয়ারিং এবং গোয়েবলস পৌঁছানোর পর অস্ত্রাগার আক্রমণকে কমিউনিস্ট চক্রান্ত বলে ঘোষণা করেন, যা করা হয়েছিল আগুন এবং সন্ত্রাস কে ব্যবহার করে, এটি গোয়েবেল তার ডায়রিতে লিখেছিলেন, যা কিনা প্রদর্শিত হয় জনসাধারণের আতঙ্ককে ক্রমান্বয়ে বিভ্রান্তি হিসেবে তুলে ধরা এবং নিজেদের জন্য ক্ষমতার উপলব্ধি করানো হয়েছিল, যদিও এ ব্যাপারে দ্বিমত আছে। (Sefton Delmer) সেফটন ডেলমার, একজন নামী সাংবাদিক, যিনি সেদিনের জন্য রিপোর্ট করছিলেন, লন্ডন ডেইলি এক্সপ্রেসের হয়ে। তিনি ঘটনাস্থলে আসার সাথে সাথে, হিটলার তার কাছে আত্মবিশ্বাসী হয়ে বললেন, "you are now witnessing the beginning of a great new epoch in german history, Herr Delmer! অর্থাৎ আপনি এখন জার্মান ইতিহাসে একটি মহান নতুন যুগের সূচনা করতে দেখছেন"।
এ ব্যাপারে ডেলমারের রায়, বার্লিন স্পোর্টস প্যালেসের সমাবেশে, ১৫০০০ অন্যান্যদের সাথে যোগ দেওয়ার পর হিটলারের সম্বন্ধে দিয়েছিলেন এই বলে, "তিনি একজন ক্র্যাকপট মানে বোকা বা অবাস্তব লোক ছিলেন।"
অগ্নিকাণ্ডের ঠিক পরদিন সকালে মন্ত্রিসভা যেটা এখনও নাৎসি দের সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল, একটি জরুরী ডিক্রি তৈরির জন্য বৈঠক করে, যা জার্মানিতে নাগরিক স্বাধীনতা বাতিল করে। এটি বাক স্বাধীনতা, সমাবেশ বা মিটিং-মিছিল করবার অনুমতিকে, বিজ্ঞপ্তি বা সংবাদপত্র প্রকাশের স্বাধীনতাকে বাতিল করে দিয়েছিল, ঠিক আমাদের দেশের ইমার্জেন্সির সময়ের মতো। কয়েক মাসের মধ্যেই, মানে গরমকাল আগমনের আগেই সমস্ত বিরোধী দল চূর্ণ করা হয়ে গিয়েছিল, ১০০,০০০ জনেরও বেশি কমিউনিস্ট, সামাজিক গণতান্ত্রিক দলবলের লোকজন এবং নাজিদের অন্যান্য বিরোধীদের কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছিল। তাদের মধ্যে বেশিরভাগকেই 'Dachau/ডাকাউ' নামে শহরের বাইরে একটি নতুন ক্যাম্পে পাঠানো হয়।
এখন নাৎসিরাই ছিল একমাত্র আইনি দল এবং হিটলার এখনও কোনোভাবেই অসাংবিধানিকভাবে কোনো কাজ করেননি। প্রকৃতপক্ষে, তার ক্রিয়াকলাপ গণভোটে ৯৫ শতাংশ সমর্থন পেয়েছিল।
৩২ এর অক্টোবরে, জার্মানি লীগ অফ নেশনস এবং নিরস্ত্রীকরণ সম্মেলন থেকে বেরিয়ে আসে এবং যার ফলে (Sir Horace Rumbold) স্যার হোরেস রাম্বোল্ড, যিনি হিস ম্যাজেস্টির এম্বাসেডর ছিলেন ও বার্লিনের মহামান্য রাষ্ট্রদূত হিসাবে মন্তব্য করেছিলেন যে, "many in the diplomatic corps have a feeling that we are living in a country where fanatics, hooligans and eccentrics have got the upper hand! যার মানে, কূটনৈতিক মহলের অনেকের মনে এমন ভাবনা আছে যে আমরা এমন একটি দেশে বাস করছি যেখানে ধর্মান্ধ, গুন্ডা এবং খামখেয়ালি ছিটিয়ালরা সর্বোচ্চ স্থান পেয়েছে!"...
'ভয়' এখন জার্মান জনজীবনের মূল চালিত ইঞ্জিনে পরিণত হয়েছিল। ভয়ের চোটে ৫০০ নেতৃস্থানীয় পৌরসভার সিভিল সার্ভেন্ট বা কর্মচারী এবং ৭০ টি শহরের মেয়রকে অফিস থেকে বের করে দিতে বাধ্য করেছিল, এমনই ছিল হঠাৎ করে অচেনা, অজানা আপাতদৃষ্টিতে অযৌক্তিক কিছুর আসল এবং স্পষ্ট ভয় যা, ৫৬ শতাংশ জার্মান, যাদের ভোট নাৎসিদের কাছে যায়নি, তারাও সেটা মেনে নিতে বাধ্য হয়েছিল।
কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে উঠেছিল, কিছু পরিমান সাহসের দেখা দিয়েছিল কিন্তু খুব বেশি মানুষ তাতে অঙ্গভঙ্গিও করেনি, এককথায় সেটাও দাবিয়ে দেওয়া হয়। এখন স্লোগানগুলি তাদের কাছে একজোট হওয়ার দাবি করেছে, কিছু মানুষ সত্যিকারের উৎসাহ নিয়ে করছিল। লোকেরা একে অপরকে, তাদের প্রতিবেশীদের, ইউনিফর্মের ভিতর ফাঁকা ফানুসের মতো ঠগদের ভয় পেতে লাগল...
জনপ্রিয় সংস্কৃতি ও প্রচারের জন্য গোয়েবলসের রাইকমিনিষ্ট্রি বা মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা হয়েছিল, ১৩ মার্চ। আমেরিকান মুভি কোম্পানি ট্রেড প্রেসকে এক দীর্ঘ ফটোশুটের জন্য একটি চুক্তিতে বেঁধে দেওয়া হয়। গোয়েবলস মেশিন, মানে লোকজন, তাদের এককথায় যা ভালো মনে করত তাই ওদের খাইয়ে বা গিলিয়ে দিত, তাই তারা একে প্রপোগান্ডা না বলে 'নাজি-গান্ডা' বলত। তাদের মতে, "হিটলারকে সামনে থেকে, পেছন থেকে, ডানদিকের থেকে, বাম দিক থেকে, প্রতিটি এঙ্গেলস থেকে ছবি তোলা হয়েছিল, যেন সব ছবিতেই মেন আকর্ষণ হিটলার, হিটলার এবং হিটলারের সমাহার!
মিউজিক্যাল কমেডি, 'মাই উইকনেস' নামের এক মুভি, শুধু এই কারণেই জার্মান মুক্তি প্রত্যাখ্যান করা হয়ে যে, মেয়েদের ছোট প্যান্টি বা অন্তর্বাস পড়ানো হয়। গোয়েবলসের অধীনস্থ মন্ত্রীসভার মতে সেটি তৎকালীন নতুন জার্মানির নৈতিকতাকে দূষিত করবে। কিং কং, যা কিনা বছরের অন্যতম উত্তেজনাপূর্ণ সিনেমা, সেটাকেও অনুমোদন দেওয়া হয় নি এই বলে যে, জার্মান জাতি প্রবৃত্তির ঘৃণ্য হিসেবে।
১০ই মে, গোটা জার্মানি জুড়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে, বইয়ের কার্টলোডগুলি অগ্নিকুণ্ডের দিকে নিক্ষেপ করা হয়েছিল পুরো যেন মন্ত্রমুগ্ধের মতো, সামরিক প্রস্তুতির চেতনায় জাতির শিক্ষার জন্য, তার মান আরো উন্নত করার জন্য, কিন্তু লাভের লাভ কিছুই হয় নি।
গোয়েবলস সেদিনের অসাধারণ জার্মান চলচ্চিত্র নির্মাতা (Fritz Lang) ফ্রিটজ ল্যাংকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, জার্মান চলচ্চিত্র শিল্পের প্রধান কার্যনির্বাহী হতে। নিচে তাদের পাওয়া কথোপকথনের অনুবাদ বাংলায় দেওয়া হল, যা ইন্টারনেট থেকে সহজেই পাওয়া যায়;
"তোমার জানা আছে কিনা জানি না" ল্যাং বলে, "যে আমার ঠাকুমা একজন ইহুদি ছিলেন"। নিজের ভয়ে স্বীকার করে বলেন, আর তার প্রত্যুত্তরে "আমি সিদ্ধান্ত নিই যে কে ইহুদি আর কে নয়", গোয়েবল শাসানোর সুরে বলে, ল্যাং ঠিক তার পরপরই জার্মানি ছেড়ে চলে যায় ...
(ক্রমশ)
©উshaস চttopaধ্যায়~
Tuesday, 5 October 2021
শেষের সূচনা!
#শেষের_সূচনা :-
===================
রনি ক'দিন ধরে খুবই উদ্বিগ্ন ছিল। তার বোন কি এখনো তার সাথে কথা বলবে না? এই নিয়ে প্রায় সাত বছর হলো, তার বোন রিনি তার সাথে শেষ কথা বলেছে; দীর্ঘ সাত বছর…
রনি বেঙ্গালুরুর একজন ইন্টেরিয়র ডিজাইনার। তার বয়স ২৫ বছর। সে আর্কিটেকচার ও ডিজাইনে ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করে এবং ক্যাম্পাসিং নিয়োগের মাধ্যমে এক কোম্পানিতে যোগদান করে। তার বোন রিনি তার থেকে মাত্র এক বছরের ছোট ছিল। কেরালার ত্রিচুরে বাণিজ্যে স্নাতকোত্তর করার পর সেও 'পি ডব্লিউ ডি'তে কাজ করছে। আগামী মাসে রিনির বিয়ে।
তাদের মা, রীতা ফোন করে রনিকে জানিয়েছিলেন যে, রিনি এক চমৎকার ছেলের প্রেমে পড়েছিল এবং তারা উভয় পরিবার, তাদের বিষয়ে যৌথভাবে তাদের বিয়েতে সম্মত হয়েছিল।
"তুই কি এখানে তোর বোনের বিয়ের জন্য আসবি? - হ্যাঁ কি না?" রীতা জিজ্ঞেস করল।
"হ্যাঁ মা! আমি যাব” রনি বলল।
“তুই তো এখন অন্তত বলতে পারিস, তোদের দুজনের মধ্যে কি হয়েছে? সে ওর জন্মের দিন থেকে তোরা অবিচ্ছেদ্য, একসাথে সবকিছু, এবং তারপর একটা বাজে দিনের সকালের পর থেকে, তোরা একে অপরের সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিলি। আমি জানি, তুই ওর সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিয়ে ছিলিস, একটা চুরির ঘটনায়, কিন্তু, সেতো অনেক আগে। একটা আধটা ভুল যে কারোরই হতে পারে। কেন তুই ওকে জ্বালাবি আর নিজেও কষ্টে থাকবি, শুধু শুধু তুই ওকে ক্ষমা করতে এবং মিলমিশ করতে পারছিস না?" বলে রিতা কাঁদছিল।
"তুমি বুঝতে পারবে না মা। ওর সাথে কথা বলতে আমার কোন অসুবিধা হয় না। কিন্তু, ও নিজেই কথা বলতে চায় না। আমি অনেকবারই চেষ্টা করেছি। আশা করি আমি যখন ওর বিয়ের জন্য আসব তখন ও কথা বলবে, তুমি দেখো, সব ঠিকঠাক হবে” রনি বলল।
মিলমিশ, ঠিকঠাক এটা সত্যি ছিল, কিন্তু চুরির ঘটনা .... সেটা অন্য কথা। রনি ঠিক যেন গতকালের ঘটনার মতো সবকিছু মনে করতে থাকে।
এই ঘটনাটা ঘটে যখন রনি ১১তম ক্লাসে ওঠে, সে একটি নতুন বন্ধু পেয়েছিল, যার নাম অনিল। তারা যে স্কুলে ভর্তি হয়েছিল সেখানে বেশিরভাগ মধ্যবিত্ত শিশুরাই পড়াশোনা করত। রিনিও একই স্কুলে তার এক বছরের জুনিয়র হিসাবে পড়াশোনা করেছিল। এই অনিলই রনিকে ধূমপানের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। স্কুলের একটি বিশাল ক্যাম্পাস ছিল যেখানে প্রচুর খালি জমি, পিছনের দিকটা জঙ্গল মতো এবং স্কুল-বাড়ির পিছনের অংশে পুরোনো বিল্ডিংটা ছিল ভাঙা ভাঙা গোছের, তাদের পক্ষে লুকিয়ে ধূমপান করাও সহজ ছিল, এবং কেউ দেখলেও লুকিয়ে পড়াটা ছিল আরো সহজ। তারা মজা করার জন্য প্রথমে শুরু করেছিল এবং শীঘ্রই রনি এতে জড়িয়ে পড়ে। তখনই একদিন অনিল ধূমপানের জন্য গঞ্জিকা বা "স্টাফ" নিয়ে আসে।
প্রথমদিকে রনি এটা স্পর্শ করার ব্যাপারেও খুব ভয় পেয়েছিল, খুবই কনশ্যাস ছিল ও। সে ঐটা মুখে নিতে সরাসরি অস্বীকার করে দেয়।
রনির বাবার মা-বাবা অর্থাৎ রনির দাদু-ঠাম্মা মারা যাওয়ার পর থেকে রনির কাকা রনির পরিবারের সাথেই থাকতেন। তার বাবা তার ছোট ভাইকে তার নিজের বাচ্চা হিসাবে মানুষ করেছিলেন। কিন্তু, যখন রনির বাবা জানতে পারলেন, তার কাকা মাদকাসক্ত, তখন তিনি রনির কাকাকে সময় নষ্ট না করে ও বিনা আস্কারায়, করুণায় বাড়ি থেকে বের করে দেন। রনির বাবা সবসময় বলতেন, "আমি মাদক ব্যবহার ছাড়া সব কিছু ক্ষমা করতে পারি। মাদক মানুষকে দিশেহারা, শয়তান করে তোলে।”
রনির কাকা পাঁচ বছর আগে রাস্তায় মারা যান। এমনকি তার বাবা মৃতদেহ গ্রহণ করতেও স্বীকার করেননি। রনির কাকাকে পৌরসভার শ্মশানে দাহ করা হয়েছে, পারিবারিক রীতিনীতি ছাড়াই।
কিন্তু কিছু দিন পর থেকে, রনি শুধু সিগারেট খেয়ে বিরক্ত হয়ে গেল। এবার যখন অনিল অন্য জিনিসপত্রের প্রস্তাব দিল, তখন সে একটা পাফ বা টান লাগাল। তারপর, আস্তে আস্তে সে আরও বেশি করে পাফ নিতে লাগল। কিন্তু, ততদিনে তার, গ্রেস পিরিয়ড শেষ হয়ে গেছে, সে যানে যে কিভাবে জিনিসের লোভ লাগাতে হয় এবং সাথে সাথে অনিলও "স্টাফ" বিনামূল্যে দেওয়া বন্ধ করে দেয়। সে রনিকে জিনিস কিনতে টাকার জোগাড় করতে বলে।
রনির সামান্য যা কিছু সঞ্চয় ছিল, তা খুব তাড়াতাড়ি গ্রাস করা হয়ে যায়। তারপর থেকে যখনই সে বাড়ির কিছু কেনাকাটার জন্য যেত তখন সে জিনিসপত্রের দাম সম্পর্কে মিথ্যা বলতে শুরু করে। তাড়াতাড়ি সে দিনও গেল, এটিও তার জন্য যথেষ্ট ছিল না। তারপর সে বই কেনার অজুহাত করতে লাগল এবং বাবা-মার কাছ থেকে টাকা আদায় করার সুযোগ পেল। যখন সে বুঝতে পারলো, যে তার বাবা তাকে সন্দেহ করতে শুরু করছেন, তখনই সে বন্ধ করে দিলো।
কিন্তু, সে এত সহজে নেশার থেকে বের হতে পারেনি। এক সপ্তাহের মধ্যেই সে আবার ড্রাগ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে। এবার সে রিনির কাছে গেল। সে রিনিকে বলল, সে এবং তার বন্ধুরা ট্রেকিং করতে যেতে চায়। কিন্তু, সে তাদের বাবাকে বলতে পারবে না কারণ, সে নিশ্চিত যে তিনি তা করতে যেতে দেবেন না। সে রিনিকে দিয়ে বাবাকে বানিয়ে বলতে বলেছিল, তাদের স্কুলে কিছু বিশেষ ফি দিতে হবে, সরকারি রেজিস্ট্রেশন, সেকেন্ডারি সার্টিফিকেট হিসেবে। এসব বুজরুকি দিয়ে কিছু পরিমাণে টাকা যাতে তার হাতে আসে!
রিনি প্রথমে বাধা দেয়, কিন্তু সে তার ভাইকে সাহায্য করতে খুব আগ্রহী ছিল। সে মিথ্যা কথা বলে, রনির জন্য টাকা পেয়ে তাকে দেয়। কিন্তু বিকেলে, রিনি এবং বন্ধুরা যখন তাদের স্কুল নাটকের অনুশীলনের জন্য পুরনো বিল্ডিং এ এসেছিল, তখন সে তার ভাইকে এবং তার অন্য দুই বন্ধুকে, আধা অচেতন অবস্থায় দেখতে পায়। তখনই সে জানতে পারে, যে তার ভাই মাদকাসক্ত, আর তার ভাই সেই টাকা ব্যবহার করে ড্রাগস কিনতো, তখন আর দেখে কে!
রিনি তার বাবা -মাকে পুরো বিষয়টা জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে। কিন্তু, তখনই তার কাকার মুখটা তার চোখের সামনে ভেসে ওঠে, সে নিশ্চিত হয়ে গেছিল যে, রনির পরিণতি তাদের কাকার মতো হবে, একই ভাগ্যের শিকার হবে তারা, মুখোমুখি হবে কঠোর শাস্তির, যদি সে তাদের বাবাকে বলে। যখন সে স্কুল থেকে বাড়ি পৌঁছল, সে দেখতে পেল তার বাবা রেগে আগুন। তার বাবা তাকে চড় মেরে জিজ্ঞেস করলেন, "তুই আমার কাছ থেকে ফি বাবদ যে টাকা নিয়েছিলিস তা দিয়ে তুই কী করেছিস? এত টাকা তোর কি কাজে লাগে? তুই আমাকে না বলে আর কি কি করছিস? অনেক বড়ো হয়ে গেছিস? তুই আমাকে ঠকিয়েছিস, নাহলে এতো টাকা তোর কি কাজে লাগে তুই আমায় বল, খুব সহজে আমাদের বোকা বানিয়েছিস তুই, এক কথায় চুরি করেছিস তুই, কেন, বল কেন?"
রিনি বুঝতে পেরেছিল যে, তার বাবা কোনো ভাবে জানতে পেরেছিলেন, সে ফি সম্পর্কে মিথ্যা বলেছে। রিনি মুখ খোলেনি, সে চুপ করে থাকে। যদি সে মুখ খুলত, তাহলে তার ভাই পরিবারের বাইরে থাকত। কিন্তু, সত্যি না বলার অর্থ, তার বাবা তাকে কঠোর শাস্তি দিতে যাচ্ছেন। সে দ্বিতীয়টি বেছে নিয়েছিলো। সে তার বাবার কাছে মার খেয়েছে। পরে তার বাবা রিনিকে তাদের সামনের উঠোনে বালির উপর ২ ঘণ্টা হাঁটু গেড়ে বসিয়ে দেন।
তখনই রনি মাদকের প্রভাব মিটে যাওয়ার ফলে বাড়ি ফিরে আসে। সে রিনিকে জিজ্ঞেস করল কি হয়েছে। রিনি তাকে শুধু একটি কথা বলে,
"আমি জানি তুমি টাকা দিয়ে কি করেছো" এটাই ছিল রনির সাথে কথা বলা শেষ বাক্য।
রনি বিপদ বুঝতে পেরে তাকে অনুরোধ করে, এটা তাদের বাবার কাছে না বলার করার জন্য। পরে রনি জানতে পারে কি ঘটেছে তার মায়ের কাছ থেকে। সে মরিয়া হয়ে রিনিকে যন্ত্রণা ও অপমান থেকে বাঁচাতে চেয়েছিল। কিন্তু, তার মানে, সে তো নিজে জড়িত হবে। রনি কিছু বলল না!
এর পর, রনি মাদক ব্যবহার ছেড়ে দেয়। সে অনেকবার রিনির সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু, রিনি কখনো কথা বলেনি। সময় পেরিয়ে যায়। রনি এবং রিনি তাদের পড়াশোনা শেষ করে চাকরি-বাকরি পেয়েছে এবং নিজের নিজের জগতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
****
বিয়ের দুই দিন আগে রনি বাড়িতে এসে পৌঁছায়। সন্ধ্যায় সে রিনিকে তার সাথে সমুদ্রের সৈকতে, যা তাদের বাড়ির কাছেই ছিল, সেখানে আসতে বলে। তাকে অবাক করে রিনিও রাজি হয়ে গেল। মুখে স্নিগ্ধ হাসি!
যখন তারা সৈকতে হাঁটছিল, রনি আবার রিনির কাছে ক্ষমা চাইল। সাত বছর পর রিনি তার সাথে কথা বলে।
“হ্যাঁ, আমি তোমার উপর রাগ করেছিলাম। কিন্তু, রাগের কারণে আমি তোমার সাথে কথা বলা বন্ধ করিনি। তুমি আমার খুব প্রিয় ছিলে এবং আমিও তোমার আদরেরই ছিলাম। অপমান এবং যন্ত্রণা আমাকে কখনো প্রভাবিত করেনি। কিন্তু, যখনই আমি তোমাকে আমাদের কাকার জায়গায় কল্পনা করতাম, তখন আমি তা সহ্য করতে পারিনি। তাই, আমি ভাবলাম আমি কি আর করতে পারি। আমি চেয়েছিলাম এমন কিছু একটা করতে যাতে তুমি খুব মনে আঘাত পাও, যা তোমার আবার ড্রাগস ব্যবহার করতে বারন করবে। তারপর আমি খুঁজে পেলাম, আমার নীরবতাই সেরা বাজি হবে। আমি চেয়েছিলাম তুমি এটা অনুভব কর, যখনই তুমি আবার ড্রাগস ব্যবহার করতে চাও তখনই যেন তোমার মনে পড়ে যে ড্রাগ ব্যবহারের কারণে তুমি আমাকে হারিয়েছো।"
"আমি খুবই নিশ্চিত, আর দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, এটি কাজ করেছে। আজ, আমি আমার নিজের নতুন জীবনে প্রবেশ করছি। তুমিও সেই খারাপ অভ্যাস থেকে মুক্ত, তুমি সফল। আমি তোমার জন্য খুশি” রিনি বলে!
“আমি ভীষণই খুশি, ইটস আ কজ্ ফর সেলিব্রশন, আমি এটি উদযাপন করব। আমি আমার বোনকে ফিরে পেয়েছি” রনি মুক্ত কন্ঠে ঘোষণা করল।
রিনির বিয়ের আগেরদিন রাতে, রনি একটি ফাইভ স্টার মলে বন্ধুর সাথে উদযাপন করতে বেরিয়েছিল। যেখানে তার সেই পুরনো বন্ধু অনিলের সাথে দেখা হয়, সব বন্ধু বান্ধব দের মধ্যে সেও পড়ে, যে এখন একজন পূর্ণকালীন মাদক ব্যবসায়ীতে পরিণত। যখন অনিল রনিকে আনন্দিত মেজাজে দেখল, তখন সে রনিকে একটি উদ্দীপনার ড্রাগ দিয়েছিল, রনির অজান্তেই, যাতে সে উদযাপনের আসল অনুভূতি পায়। একটা ড্রিঙ্কস এর সাথে সে ওই মাদকটি মিশিয়ে দেয়। রনিও খুবই ভালো মনে আনন্দ উপভোগ করতে লাগে, এটা জেনে যে, তার বোন অন্য পরিবারে যাচ্ছে এবং সে আর যাই হোক স্বাধীন, রনি সেই পানীয় টি নেয় ও তাতে পুরো চুমুক দেয় ..
এবং, এটি ছিল তার জীবনের "শেষের সূচনা"...
উshaস চttopaধ্যায়~
####################
[একটি অনুরোধ: কোনো মিল যদি থাকে তা সাম্প্রতিক বিতর্ক প্রসঙ্গে একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক, ছোটোখাটো ভুলত্রুটি জন্য ক্ষমা প্রার্থী, একটু মানিয়ে নেবেন। যদি আপনি গল্পটি পছন্দ করে থাকেন, তবে অনুগ্রহ করে পেজে ক্লিক করুন এবং লাইক করুন, যাতে একটি নতুন গল্প প্রকাশিত হলে আপনাকে অবহিত করা হয়।] 🙏🏼
Subscribe to:
Posts (Atom)