Sunday, 13 February 2022
মোহর ভালোবাসার!
#মোহর_ভালোবাসার
[ভালোবাসা উপলক্ষে একটি ছোট্ট পরিবেশনা। শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য।]
...................................................
ছেলেটা অপরাধীর মতো মেয়েটার পাশে দাড়িয়ে আছে। আর মেয়েটা জেরা করে যাচ্ছে অনবরত।
: কি? আমাকে ভালোবাসো?
- হুম।
: খুব বেশী?
- হুম।
: প্রেম করতে চাও?
- হুম।
: আমি কিন্তু ডেঞ্জারাস টাইপের মেয়ে। দুদিন পর প্রেম করার শখ মিটে যাবে নাতো?
- না।
: আমার সাথে প্রেম করতে হলে অনেক শর্ত মেনে চলতে হবে। পারবে?
- পারবো।
: শর্ত না শুনেই পারবে?
- হুম।
: তবুও বলে দিচ্ছি, যখন তখন দেখা করতে চাইবে না!
- আচ্ছা।
: রিকসায় উঠলে আমার চেয়ে চার আঙ্গুল দূরে বসবে, অযথা রোদ, বৃষ্টি, ঠান্ডা বলে রিকসার হুড উঠানোর চেষ্টা করবে না।
- আচ্ছা।
: রাস্তা পারাপারের সময়, রিকসায় ওঠা ইত্যাদি নানান অজুহাতে হাত ধরতে চাইবে না। এতোদিন একাই চলেছি। এসব আমি ভালোই পারি। আমার কেয়ার আমি নিজেই করতে পারি।
- আচ্ছা।
: আর সব শেষের কথা, আমার সাথে প্রেম করবে সে ভালো কথা কিন্তু আলগা পিরিত দেখাবে না। এসব আমার সহ্য হয়না। 'আলগা পিরিত' কি বোঝ তো?
- হুম বুঝি। আচ্ছা দেখাবো না। মাত্র এই ক'টা শর্ত!?
: আপাতত এই ক'টাই, পরে লাগলে আরও দেবো।
ছেলেটা মনে মনে ভাবছে, এই মেয়ে তো দেখি খাঁটি দজ্জাল! দজ্জাল মেয়েদের সাথে প্রেম করার উপায়টা শিখে নিতে হবে। ছেলেটা আর কোন কথা না বাড়িয়ে সকল শর্তে রাজি হয়ে গেলো।
বেশ কিছুদিন পর, এই জুটি রিকসায় করে কোথাও যাচ্ছে। মেয়েটা ছেলেটার হাত আকড়ে হঠাৎ বলে উঠলো,
: এই তুমি কি সত্যিই ছেলে?
- হঠাৎ এ প্রশ্ন কেন? কোন সন্দেহ আছে?
: সন্দেহ নেই, কিন্তু ছেলেরা তো অনেক কেয়ারিং হয়। তুমি মোটেও কেয়ারিং না।
- তোমার আবার কোন কেয়ারের অভাব পড়ল?
: দেখছো না কত ঠান্ডা? হুডটা উঠিয়ে দিলেই তো পারো।
- তুমি তো আমাকে হুড ওঠাতে বারন করেছিলে তো! শর্তের কথা মনে নেই?
: মনে আছে। কিন্তু সব কথা কি শুনতে হবে? কিছু কিছু শর্ত তো না শুনলেও পারো।
ছেলেটি রিকসার হুড ওঠাতে ওঠাতে বললো, "শর্ত ভাঙ্গলে তুমি কি আমাকে আস্তো রাখতে? ঝগড়া করে করে আমাকে শেষ করে দিতে না!"
: সব কথা শুনলেও তো ঝগড়া করি। এইযে, এখন যেমন করছি।
- এতো দেখি উভয় সঙ্কট! কথা শুনলেও ঝামেলা; না শুনলেও ঝামেলা।
: আচ্ছা, এখন থেকে সব কথা শুনতে হবে না। কিছু কিছু কথা না শুনলেও হবে। এখন টিস্যু পেপার দাও তো!
- টিস্যু দিয়ে কি করবে?
: লিপস্টিক মুছবো।
- কেন? কী দরকার? সুন্দর লাগছে তো।
: তাহলে কিন্তু তোমার গালে লাল লিপস্টিক লেগে যাবে।
ছেলেটা এই দজ্জাল মেয়েটাকে আর কিচ্ছু বলার সাহস পেলো না। তবে জীবনে এই প্রথম বার মেয়েটার সাথে 'আলগা পিরিত' দেখাল। টিস্যু বের করে নিজ হাতে ঠোঁটের লাল লিপস্টিক মুছে দিলো। সাদা টিস্যু পেপারে মেয়েটার টকটকে লাল ঠোঁটের ছাপ বসে যাচ্ছে। এই টিস্যু পেপারটা ফেলে দেওয়া যাবে না, যত্ন করে বুক পকেটে রেখে দিতে হবে।
...................................................
[একটা ছেলের ফেসবুক স্ট্যাটাস এরকমই ছিলো। তবে স্ট্যাটাসের প্রথম অংশটুকু তার নিজের জীবনের সাথে মিল থাকলেও পরের অংশটুকু শুধুই কল্পনা।]
কোনো এক ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় সেই ছেলেটি তার জুটিসহ রিকসায় করে ঘুরছিল। মেয়েটি হঠাৎ বলল,
: তুমি ওরকম স্ট্যাটাস যে দিলে, সবাই তো মনে করবে এটা আমাদের ঘটনা!
- প্রথম অংশটুকু তো আমাদের ঘটনাই।
: কী! তার মানে তুমি আমাকে দজ্জাল বলেছ?
- তুমি তো দজ্জালই। সমস্যা নেই, দজ্জাল মেয়েই আমার পছন্দ। আর কেউ কি জানে যে তোমাকে কল্পনা করে লিখেছি?
: জানুক আর না জানুক লিখেছ তো। তুমি এক্ষুনি এই স্ট্যাটাস ডিলিট করবে।
- আচ্ছা, আচ্ছা। করছি।
: থাক, হয়েছে। ডিলিট করতে হবে না। সবাই যা বোঝার বুঝে গেছে। আচ্ছা, সত্যিই তুমি কি টাইপের ছেলে গো? আমি বলা মাত্রই তুমি ডিলিট করতে গেলে কেন? আমার সব কথাই কি তোমার শুনতে হবে? মাঝেমাঝে কোন কথা না শুনে ঝগড়া করতে পারো না?
- কি ব্যাপার? আমার গল্পটা কি মঞ্চস্থ হতে যাচ্ছে নাকি?
: কেন? নায়িকা হিসেবে কি আমি পারফেক্ট না?
- পারফেক্ট, কিন্তু আমার কাছে কিন্তু টিস্যু পেপার নেই তো!
: জানতাম তোমার কাছে থাকবে না, সমস্যা নেই। আমার অনেকদিনের শখ তোমার গালে লাল লিপস্টিক লাগিয়ে দিই। সবাই আমার সীলমোহরযুক্ত তোমাকে দেখবে আর হাসবে। কোন মেয়ে আর কখনো তোমার দিকে তাকাবে না। সবাই জানবে এই সীলমারা পাগল ছেলেটা শুধুই আমার।
অতঃপর ছেলেটি নিজের লেখা গল্পে, নিজেই নায়ক হয়ে গেলো।
(মোহর ভালোবাসার)
#প্রেম #শুধু_তোমার_জন্য #প্রাপ্তমনস্কদের_জন্য
©উshaস চttopaধ্যায়~
< তাং- ১৩|০২|২০২২ খ্রিস্টাব্দ >
৷ব্যারাকপুর | কলকাতা৷
*-*-*
ভালো লাগলে কমেন্ট ও ফিডব্যাক এর মাধ্যমে উৎসাহ দেবেন, পাশে থাকবেন!😊🙏🏼
Labels:
Short Story
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment